নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এসো গল্প করি anjanroysnextworld.blogspot.com

anjanroysnextworld

পেশায় আমি একজন ম্যানেজমেন্ট কর্মী। সাইকোলজি ও হিউম্যান বিহেভিয়ার আমার প্রিয় বিষয়। আমি একজন ট্রেইনড হিপ্নোথেরাপিষ্ট। লেখালেখি, বিভিন্ন নতুন জায়গায় বেড়াতে যাওয়া ও ভিন্ন সংস্কৃতিতে মানুষের জীবন শৈলী পর্যবেক্ষণ করা আমার প্রিয় নেশা।

anjanroysnextworld › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিৎকার-চেচামিচি নয়, ভেতরের রাগ কে প্রকাশ করো সুনিয়ন্ত্রিত ভাবে, জীবন পাল্টে যাবে

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৫৮

এই প্রসঙ্গে দুটো গল্প বলি , বিহারের গয়া জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে দশরথ নামে একজন গরীব, শ্রমিক ছিলো। সে পাথর ভাঙ্গার কাজ করতো। ঐ গ্রামের বেশীরভাগ মানুষ পাথরের খাদানে পাথর ভাঙ্গার কাজ ই করতো। পাথুরে পাহাড়ি অঞ্চল , চাষ বাসের তেমন সুযোগ ছিলো না। একদিন দুপুরে দশরথের স্ত্রী খাবার নিয়ে যাবার সময় পাহাড়ের উপর থেকে পা পিছলে নীচে পড়ে যায়। প্রচন্ড আঘাতে রক্ত ক্ষরণ শুরু হয় এবং অচৈতন্য হয়ে পড়ে। গ্রাম্য চিকিৎসক শত চেষ্টা করেও ওকে বাঁচাতে পারে নি। দশরথ শোকে পাথর হয়ে যায় । অন্যেরা বলাবলি করে, শহরের বড়ো হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৌটা কে বাঁচানো যেত । কিন্তু নেবে কী করে ? রাস্তাই তো নেই। গ্রাম আর শহরের মাঝে দাড়িয়ে আছে এই প্রকান্ড পাহাড়। ঘুর পথে গেলে দুরত্ব অনেক বেশী, সুতরাং এই গ্রামের মানুষের কাছে শহরে গিয়ে চিকিৎসা করানো অসম্ভব ব্যপার। ভীষণ রাগে দুঃখে দশরথ চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো। ওর সমস্ত রাগ গিয়ে পড়লো ওই পাহাড় টা র উপর। ওই রাক্ষুসে পাহাড় টা কে সরাতেই হবে। সকালে সবাই দেখ্লো একটা সামান্য ছেনি আর হাতুড়ি নিয়ে দশরথ যাচ্ছে পাহাড় কাটতে! সবাই ভাবলো বৌ এর শোকে লোক টা পাগল হয়ে গেছে। দিনভর দশরথ হাতুড়ি চালাত, রাতে বিশ্রাম। পরের দিন আবার শুরু। একটা ই লক্ষ্য , যে পাহাড় ওর বৌ কে মেরেছে সেই পাহাড়কে ও কেটে সরাবে। সম্পূর্ণ একক প্রচেষ্টায় একদিন পাহাড়ের বুক চিড়ে ও রাস্তা বানিয়ে ফেললো। এখন থেকে এই গ্রামে আর কেউ কোনোদিন বিনা চিকিৎসায় মরবে না। শহরে এখন খুব তাড়তাড়ি পৌছানো যায়। এই বিশাল পরিমাণ পাথর কেটে সরাতে ওর 22 বছর সময় লেগেছিলো। রাগের মধ্যে কতো বিশাল শক্তি লুকানো থাকে তা সহজেই অনুমান করতে পারছো । Dasharath Majhi - The mountain man

দ্বিতীয় গল্প। পরাধীন ভারত । ব্যবসায়ী পরিবারে বেড়ে ওঠা এক পার্সী যুবক। চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলা। ভারতীয় দের পক্ষে ব্যবসা করা টা তখন সহজ ছিলো না। এর মধ্যেই নিজের ইচ্ছা শক্তি , একাগ্রতা ও মেধার জোড়ে তৎকালিন বণিক মহলে ধীরে ধীরে নিজের জায়গা করে নিচ্ছিলেন। ব্যবসার পাশাপাশি সুযোগ পেলেই দেশের জন্য কিছু করতেন সাধ্য মতো। এর মধ্যেই একদিন কোনো এক প্রয়োজনে উনাকে ' ওয়াটসনস ' হোটেলে যেতে হয়েছিলো। এটি ছিলো পরাধীন ভরতের সবচেয়ে বিলাশ বহুল হোটেল। ইয়ুরোপিয়ো মালিকানাধীন এই হোটেলে ভারতীয় দের প্রবেশ ছিলো নিষিদ্ধ। নিজের পরিচয় দেয়ার পরেও ওই যুবক কে সেদিন হোটেল কর্তৃপক্ষ প্রবেশের অনুমতি দেয় নি, শুধু সে ভারতীয় বলে। ভীষণ অপমানিত বোধ করেন। স্বভাবতই তাঁর যথেষ্ট রাগ ছিলো ওই হোটেল গোষ্ঠী ও তাদের ' ওয়ার্ক এথিকস ' নিয়ে।এতো বৈষম্য !! সেদিন ই সিদ্ধান্ত নেন তৈরী করবেন এমন এক হোটেল যা বৈভবে ' ওয়াটসনস ' থেকেও বড়ো হবে, যেখানে থাকবে না কোনো বৈষম্য। যেকোনো দেশের নাগরিকেরা পাবে প্রবেশাধিকার। 1903 সালে জন্ম নিল তৎকালিন বম্বেতে " তাজ হোটেল "।। অচিরেই টাটা গোষ্ঠীর এই হোটেলের সুনাম দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়লো। আলাদা করে আর ওই পার্সী যুবকের পরিচয় দিলাম না। Taj Hotel - A sweet revenge


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.