![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবেগের চোখে নয়, সম্ভাবনার চোখে
শীত বাংলাদেশে ঝেঁকে বসলেই নগরবাসীরা অতিথি পাখির জন্য , অতিথি পাখি দর্শনের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন। আমিও তাদের একজন। জাহাঙ্গীরনগরের জলাশয়ে পাখিরদের কলরব উপভোগ করার জন্য বন্ধুসমেত চলে যাই সাভারে। অতিথি পাখি, শহরতলীর নির্জন সজীব ক্যাম্পাস, মুখরিত বন্ধুমহল সবকিছু যেন ভীষণ উপভোগ্য! সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আগত অতিথি পাখি গুলো চারিদিক থেকে যেন এ সবুজ ক্যাম্পাসকে ঘিরে রাখে।
গতকাল আমার এক বন্ধু ফোনে জানালো তাদের পরিকল্পনার কথা। সবাই মিলে আবার জাবি তে যাবে। আমার ওই বন্ধু আবার বিবাহিত। আমি আবার একটু মজা করার জন্য জিজ্ঞেস করলাম, কিরে তোর বউয়ের অনুমতি নিয়েছিস? উত্তরে বন্ধু জানালো, হ্যাঁ..হ্যাঁ সেটা তো নিয়েছি!
আমার বেশির ভাগ বন্ধুদেরই বিয়ে হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের আবার বাবা হবার সৌভাগ্যও হয়েছে। কিন্তু বিবাহিত জীবনের কতোগুলো বিসর্জন থাকেনা! স্বাধীনতা, স্বাধ, শখ ইত্যাদি বিসর্জন, এগুলো বেশির ভাগ বন্ধুই দিয়ে ফেলেছে। এখন বিভিন্ন জায়গায় আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তি বিলিয়ে বেড়ায়। ওরা আবার বলে, আরে চান্দু নিজের বেলায় দেখা যাবে!!
আমিও বিয়ের একজন সম্ভাব্য পাত্র!! কিন্তু ভয় হচ্ছে, আমাকেও কি শেষ পর্যন্ত লেফট্ - রাইট করতে হবে কিনা!!
অতিথি পাখিকে নানান ভাবে অভ্যর্থনা জানায় দর্শক রা। আমার বিবাহিত বন্ধু সস্ত্রীক , বালবাচ্চা সহ যাবে, আমি যাবো একাকী। ওরা ওদের যুগল অনুভূতি আর আমি আমার নিঃসঙ্গতা দিয়ে অতিথি সাইবেরিয়ান পাখীদের অভ্যর্থনা জানাবো। আমার সাথে বয়ে বেড়ানো এম.পি থ্রি তে বাজাবো প্রিয় গান...
"মানুষ আমি আমার কেন পাখির মতো মন,
তাইরে নাইরে নাইরে গেলো
সারাটা জীবন!"
গ্রীষ্ম আগমনের আগে ভাগেই ওরা চলে যাবে। তাই এবার অভ্যর্থনা ও বিদায় এক দর্শনেই জানিয়ে আসবো। অপেক্ষায় থাকবো আরেক মাঘের, আরেক দর্শনের।
শুধু অতিথি নয়, আমি বরাবরই পাখি পাগল লোক। পাখি বিষয়ক নানান বই পত্র আমি কোথায় পেলেই কিনে ফেলি। আমার একটা ব্যান্ড আছে নাম কার্নিশে ম্যাগপাই। ম্যাগপাই কাকপ্রজাতির পাখি কিন্তু আমাদের দেশে অরিজিনাল ম্যাগপাই পাখি নেই। আছে ম্যাপপাই রবিন- দোয়েল।
আমাকে এখনো অনেকে জিজ্ঞেস করে, কার্নিশে ম্যাগপাই কেন? আমি আত্মদর্শনে মুগ্ধ হয়ে বলি, আমরা সবাই জগতের অতিথি। এসেছি চলে যাবো। টু লিভ ইজ টু ডাই! তবু আমাদের জীবনের কার্নিশে এসে কখনো কখনো মুগ্ধতা এসে বসে, অতিথি হয়ে। সে আসে নতুন কিছু বার্তা নিয়ে, ভাবনার নতুন খোরাক দিতে!
আমাদের দেশে আমেরিকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জুনিয়র মিস আমেরিকা নোরা আলী এসেছেন। শিশুকিশোরদের সংগঠন কচিকণ্ঠের এ্যাম্বাসিডর হয়ে। তিনি এসেছেন ১০ দিনের সফরে। এখন এই সফরে তিনি দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্কুল প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিশু কিশোরদের সাংস্কৃতিক কসরত দেখছেন। আমাদের ফটোসাংবাদিকরা ভুরি ভুরি ছবি তুলে আনছেন মিস নোরা আলীর। প্রতিদিন তার বিভিন্ন ভ্রমণের সংবাদ কভার করছেন। নোরা আলীও তার বিভিন্ন স্পিচে দেশাত্মবোধক কথা বার্তা বলছেন! এ দেশের প্রতি তার টান কতোটুকু ভেতরের সেটা আমি জানিনা। উত্তরাধিকারের টানে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন সেজন্য তাকে ধন্যবাদ। কিন্তু নোরা আলী তার দেশ সম্পর্কে কতোটুকু জানেন বা আদৌ কিছু জানেন কিনা সেটা নিয়ে আমি সন্দিহান! তার এই সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিক ভ্রমণে তিনি দেশের কতোটুকুই বা জানবেন!
কলকাতার আনন্দনগরের হাওরা বস্তিবাসীদের সাথে দীর্ঘদিন বসবাস করে ফ্রেঞ্চ অধিবাসী দেমিনিক লেপিয়ের ১৯৮৫ তে লিখেছেন
" সিটি অফ জয়"। সেখানে তার দীর্ঘ পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে বিভিন্ন শ্রেণীর , বিভিন্ন পেশার মানুষের জীবনকে জয় করার কথা, সংগ্রামের কথা, পরাজয়ের কথা, বঞ্চনার কথা।
হাওরা বস্তির একজন রিক্সাচালক হাসারি পালকে, তার বঞ্চনার কথা বইটিতে তুলে আনতে লেপিয়েরকে অনেক কিছু কষ্ট করতে হয়েছে। সেখানে উঠে এসেছে মাদার তেরেসার কথা যিনি কলকাতার সর্বজন স্বীকৃত ও শ্রদ্ধেয় মানবী। আমাদের দেশে সি আর পির (সেন্টার ফর রিহ্যাবিলিটেশান প্যারালাইজড ) প্রতিষ্ঠাতা বৃটিশ নাগরিক ভেলরি টেইলর এদেশে দীর্ঘদিন থেকে দুস্থ ও পঙ্গুদের সেবা প্রদান করে আসছেন। তার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে বাংলার প্রান্তিক মানুষের নানান বঞ্চনার কথা, সংগ্রামের কথা। এদের সাথে তিনি মেলামেশা করেছেন, আনুষ্ঠানিকতার বেড়াজাল ছিঁড়ে ছুটে গিয়েছেন মানুষের কাছে। ১০ দিনের প্রমোদভ্রমণ হলে সেটা সম্ভব হতো কিনা আমি জানিনা!
নিজেকে অন্যের জন্য বিলিয়ে দিতে অনেকেই চান কিন্তু ক'জন পারেন? কেবলমাত্র অন্তরের টান থাকলেই কাজটা অনেক সহজ হয়, শত প্রতিবন্ধকতা সত্বেও। অন্তরের টান অবাধ মেলামেশাতেই অনুভব করা যেতে পারে। দূরের অতিথি সেজে, সংক্ষিপ্ত ভ্রমণে সেই টান বাড়েনা।
নোরা আলী এসেছেন, ভালো কথা। তাকে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতার বেড়াজাল ছিড়ে বাংলার প্রান্তিক দুখী মানুষের কাছে যেতে হবে। প্রত্যেকের অন্তরের আহ্ববানে তাকে আসতে হবে, তাদের পাশে থাকতে হবে। দেশে অনেকেই আছেন যারা অকাতরে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের সংগ্রামের কথা তাকে জানতে হবে।
নোরা আলী হাভার্ড ইউনিভার্সিটিতে ফিনান্স এন্ড বিজনেসে গ্রাজুয়েশান করছেন। পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশ বাংলাদেশের জন্য তার অনেক কিছু করার আছে। অতিথি নয়, এদেশের একজন প্রতিনিধি হয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের কথা জানাবেন, অন্তরের টানে বারবার এদেশে আসবেন - এরকমই প্রত্যাশা করি আমরা।
২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:৪১
অন্যআনন বলেছেন: সব এমন কেন? কিসের বিপদ?
৩| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:৫৯
মইন বলেছেন: অতিথি নয়, এদেশের একজন প্রতিনিধি হয়ে তিনি বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের কথা জানাবেন, অন্তরের টানে বারবার এদেশে আসবেন - এরকমই প্রত্যাশা করি আমরা।
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:০২
অন্যআনন বলেছেন: ইয়েস মিস্টার মইন। ধন্যবাদ।
৪| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:১৫
সামী মিয়াদাদ বলেছেন: হুমমমম....গতকালই দেখছিলাম আপনার পোষ্ট। মাগার পড়তে পারিনাইক্যা। এখন পড়লাম।
দমিনিক পুরা একখান বই লেইখা ফালাইসেন......কিন্তু নোরা তো আর এইসব কিছু করবেন না। তাই মনে হয় সংক্ষিপ্ত সফর।
এই রকম সংক্ষিপ্ত সফর তিনি ঘন ঘন দেবেন এই আশা করি।
প্রত্যেক সৌন্দর্য প্রতিযোগীতা আমার কাছে একটা ধনতান্ত্রিক ষড়যন্ত্র বইলা মনে হয়।
আননদা আছেন কেমন? সব ভাল তো? অনেকদিন ব্লগে দেখিনা?
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:২৮
অন্যআনন বলেছেন: আছি সামী। আসলে অনেকদিন পরে এলাম। এখন থেকে নিয়মিত থাকবো আশা রাখি। আপনি ভালো তো! অনেকদিন পর আমার ব্লগে আপনার উপস্থিতি ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন!
৫| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৩৯
সামী মিয়াদাদ বলেছেন: আমিও আছি মোটামোটি। ঘন ঘন পোষ্ট আশা করছি আপনার কাছ থেকে। ভাল থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:১৫
তাজুল ইসলাম মুন্না বলেছেন: রেটিং দিলেও বিপদ। অন্য ব্লগাররা উল্টাপাল্টা কথা কইবো। ভাইবা নেন। কি দিছি?