নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নযাত্রার প্রতিধ্বনি

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

অনন্ত আরেফিন

এ এক ভয়ংকর খেলা, কবিতার রাশান রোলেট- যিনি সবচে ভালো পদ লিখবেন তাকে তৎক্ষণাৎ মেরে ফেলা হবে। আমার হাতে কলম কম্পমান সবচে সুন্দর পদ এসে গেছে আমার মুঠোয়।

অনন্ত আরেফিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ হুমায়ুন আজাদের সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে

৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮

এই পোস্টের উদ্দেশ্য কোন ধরণের রিভিউ দেয়া নয়, পাঠ প্রতিক্রিয়া বলা যেতে পারে। সামগ্রিকভাবে হুমায়ুন আজাদ পড়ে আমার যে অনুভূতি গুলো হয়েছে তা লেখার চেষ্টা করেছি।

হুমায়ুন আজাদ আমার প্রিয় না অপ্রিয় লেখক সে বিষয়ে আমি ঠিক নিশ্চিত নই। তবে তাঁর উপন্যাস ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল’ আর ‘মানুষ হিশেবে আমার অপরাধসমূহ’ সহ বেশ কিছু প্রবন্ধ আমার পড়া হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় পড়লাম ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’।

বইটা শেষ করার পর প্রথম যে চিন্তাটা আমার মাথায় ঘোরাফেরা করছে তা হল, বই এর ওপরে প্যারেন্টাল গাইডেন্স বা কে বা কারা পড়তে পারবে সে সম্পর্কিত চিহ্ন বা কথা থাকা দরকার। বইটির প্রাসঙ্গিক/ অপ্রাসঙ্গিক এডাল্ট কন্টেন্টের জন্য এ কথা তুলছিনা, সত্যি বলতে যৌনতা কোথায় প্রাসঙ্গিক আর কোথায় তা অপ্রাসঙ্গিক সে সম্বন্ধে আমার ধারণা পরিস্কার নয়। আমার কাছে মনে হয়েছে স্বভাবের দিক থেকে আজাদের প্রত্যেকটি বই-ই বিষন্নতায় পরিপূর্ণ। মানুষের বাচ্চা বিয়ানোর প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে তার প্রত্যেকটি আচার-আচরণ, চলাফেরা লেখকের অপছন্দনীয় এবং তা থেকে পাঠকের মনে বিষয়গুলো আদতেই কুৎসিত এমন ধারণা জন্মাতে পারে। এটা অবশ্য ঠিক যে হুমায়ুন আজাদের লেখার যা ধরণ তাতে একজন মাইনর হয়তো পুরো বইটা পড়ার আগ্রহ পাবেনা কিন্তু অতি আগ্রহী কোন শিশু পাঠক যদি দুর্ভাগ্যক্রমেও তার একটা বই পড়ে ফেলে তবে সেটা ঐ পাঠকের জন্য খুব একটা সুখকর অভিজ্ঞতা হবে বলে মনে হয় না। লেখকের ‘মানুষ হিশেবে আমার অপরাধসমূহ’ আমি পড়েছিলাম মানসিকভাবে পরিপূর্ণ হয়ে বেড়ে ওঠার আগে। বইটা নিতে আমার বেশ কষ্টই হয়েছিল। একই কথা পরিণত কিন্তু মানসিক ভাবে অপ্রাপ্তবস্ক পাঠকের বেলাতেও প্রযোজ্য।

এবার আসি ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’র ব্যাপারে। বই এর সারকথা এর নামের মধ্যেই আছে। সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে মানুষের সম্পর্ক, তা সে পারিবারিক কিংবা অপারিবারিক যেটাই হোক না কেন, কত ঠুনকো তা তুলে ধরাই এর প্রধান উদ্দেশ্য বলে মনে হয়েছে। বাবা মা, স্বামী স্ত্রী কিংবা প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্কগুলোর আড়ালে মানুষগুলো মূলতঃ একা। সম্পর্কের ভিত্তিটা যত মজবুতই হোক না কেন, যে কোন কাঠামোর মতই একটি নির্দিষ্ট সময় পর সম্পর্কের কাঠামোটাও ভেঙ্গে পড়বে প্রকৃতির নিয়মেই।



গোটা বইটা পড়তে বেশ সময় লেগেছে। হুমায়ুন আজাদের অন্যান্য বইগুলোর মতই এ বইও অনেক হেয়ালিতে ভরা কিন্তু তার চাইতেও বেশি সমস্যা উৎপাদন করেছে হুমায়ুন আজাদের সরল ও সরাসরিভাবে বলা সত্য কথাগুলি। বই এর মূল মজাটাও সেখানেই মনে হয়েছে। পাঠক হিসেবে আমি বেশ দুর্বল চিত্তের। তাই, আজাদের সরল কিন্তু ধারালো বক্তব্য গুলো নিতে আমার বেশ সময় লেগেছে বৈকি। হুমায়ুন আজাদের বই পড়লে আমার নিরর্থক মানব জীবন আরো বেশি অর্থহীন মনে হয়। আশেপাশের সবাইকে অসৎ আর কুটিল মনে হতে থাকে। বই এর সব কিছুকে মিথ্যা ভাবতে ভালো লাগে কিন্তু পরক্ষণেই মনে হয় এমন কিছু কি আমি কখনো আমার আশেপাশে ঘটতে দেখি নাই? লেখকের অন্যান্য বই এর মত এই বই ও আমাকে এ নিয়ে ‘ডিলেমা’র মধ্যে ফেলেছে।

বরাবরের মতই হুমায়ুন আজাদের নিজস্ব ভঙ্গিমায় লেখা এ বই বিষয়বস্তুর দিক থেকে আমার পছন্দ হয় নাই (লেখকের অন্যান্য বই গুলোর মতই), কিন্তু অপ্রিয় কথা গুলো কাউকে বলতে দেখলে ভালো লাগে। অন্তত এই কথা গুলো আর কেউ এভাবে বলে নাই। অপ্রিয় সত্য গুলো বলার জন্য কারো থাকার প্রয়োজন রয়েছে।

হুমায়ুন আজাদের বই হিসেবে ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে’ গতানুগতিক। আমার কাছে উপন্যাসটির এমন কোন কিছু চোখে পড়েনি যা দ্বারা এটিকে লেখকের অন্য উপন্যাস থেকে আলাদা করা যাবে। কিন্তু হুমায়ুন আজাদ পড়তে যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য এটি রিকমেন্ডেড।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৫৭

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

আসলে সব ধরনের চিন্তা আর এর যৌক্তিক সমালোচনার দরকার আছে। কুপাকুপির দরকার নাই।

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:১২

মামুন রশিদ বলেছেন: ভিন্নমত প্রকাশের প্রক্রিয়াটা ভালো লেগেছে ।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৩৪

অনন্ত আরেফিন বলেছেন: আমি কিন্তু এখানে কোন ভিন্নমত প্রকাশ করি নাই, একটা বই এর আলাপ আলোচনা করলাম মাত্র!

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:২৯

আহসানের ব্লগ বলেছেন: হুম

৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৪২

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: হুমায়ুন আজাদের লেখাতে শুধু অপরাধ চিহ্ন খুজে পাওয়া যায়।
ভাল কাজের পেরনা কোন দিন পাইনি।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৩৫

অনন্ত আরেফিন বলেছেন: সেটা ঠিক! এজন্য আমার নিজের ও মাঝে মধ্যে একঘেয়ে লাগে

৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:০০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হুমায়ুন আজাদ ছিলেন নেতিবাচক মানসিকতার লেখক। মানুষের নানামুখী সম্পর্কের মধ্যে তিনি ইতিবাচক কোন কিছু দেখেছেন বলে আমার মনে হয় না। এটা লেখক হিসাবে তাঁর আলাদা বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে। এখন পাঠক তাঁকে কীভাবে নেবেন, সেটা একান্তই পাঠকের ব্যাপার।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৩৫

অনন্ত আরেফিন বলেছেন: আমার ও তাই মনে হয়

৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৩

অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: কুৎসিত, অপ্রিয় সত্য কথা বলার জন্য কারো থাকা উচিৎ।

৭| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:১৮

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

জী :)

৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৪২

অনন্ত আরেফিন বলেছেন: What's so funny?

৮| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৫৩

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: ​কিন্তু তার মতো কী কখ​নো আমি আপনি ভাবতে পেরেছি?

৯| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৩১

হাসান মাহবুব বলেছেন: উনার এই বইটি পড়া হয় নি। এখন খুব পড়তে ইচ্ছে করছে।

১০| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
সামু’তে স্মিত হাসি’র চিহ্ন “: এবং )” দিলে অট্টহাসি দেখায়।

আমি ফানি হবার হাসি দিই নি, ভাইজান। ভুল বুঝবেন না।

‘জী’ বলে সম্মতি দিয়েছি।

ভালো থাকা হোক.....

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

অনন্ত আরেফিন বলেছেন: ধন্যবাদ!

১১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০২

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আমি আরেকটা ব্যাপার খেয়াল করেছি । আজাদের বই একটানে পড়া যায় না । মাথায় প্রেসার দেয় । আপনার রিভিউ ভাল লেগেছে ।
আআবার আস ব আপনার ব্লগে ।
আপনি কি চট্টগ্রামের :) ?
ভাল থাকবেন ।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:২৭

অনন্ত আরেফিন বলেছেন: আমি চট্টগ্রামের না, তবে জন্মের পর থেকে চট্টগ্রাম শহরেই বড় হয়েছি। কিভাবে বুঝতে পারলেন? পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.