নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইশতিয়াক চয়ন

আমাকে একটি কথা দাও যা আকাশের মতো সহজ মহৎ বিশাল ও গভীর............

অ্যানোনিমাস

facebook.com/Ishtiak.chayan

অ্যানোনিমাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্ষণা: এক ক্ষণজন্মার ইতিকথা

১০ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:১১



এই পোষ্ট টি ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে নিরবে আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়া অভিমানী ব্লগার নোবেলবিজয়ী_টিপু facebook id কে উৎসর্গ করলাম!!



আজ থেকে ১৫০০ বছর পূর্বে জন্ম নেওয়া ইতিহাসের এক কিংবদন্তি খনা বা ক্ষণা। কোন এক শুভক্ষণে তার জন্ম বলে নাম দেওয়া হয় ক্ষণা। আর 'ক্ষণা' থেকেই 'খনা' নামের উৎপত্তি বলে মনে করা হয়। খনা ছিলেন সিংহল রাজার কন্যা। কথিত আছে, উনার আসল নাম লীলাবতী। খনা ছিলেন জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী। খনার রচিত ভবিষ্যতবাণীগুলোই মূলত খনার বচন নামে আমরা জানি।



খ্রিস্টীয় ৫০০ অব্দে প্রাচীন ভারতবর্ষের অবন্তী রাজ্যের রাজা ছিলেন বিক্রমাদিত্য। তার রাজপ্রাসাদের প্রসিদ্ধ জ্যোতির্বিদ ছিলেন বরাহমিহির। বরাহের ঘরে পুত্রসন্তান জন্ম নিলে নাম রাখেন মিহির। শিশুটির কষ্ঠি বিচার করে তিনি দেখলেন, শিশুটির পরমায়ু মাত্র এক বছর। তাই বরাহ একটি পাত্রে মিহিরকে রেখে সমুদ্রজলে ভাসিয়ে দেন। পাত্রটি ভাসতে ভাসতে এসে উপস্থিত হয় সিংহল দ্বীপের উপকূলে। পরে রাজা তাকে তুলে নিয়ে লালন-পালন করেন এবং খনার সঙ্গে বিয়ে দেন। দু'জনই জ্যোতিষশাস্ত্রে পারদর্শিতা লাভ করেন। মিহির খনাকে নিয়ে নিজ জন্মভূমিতে ফিরে আসেন। পিতার মতো মিহিরও বিক্রমাদিত্যের রাজসভায় প্রতিপত্তি লাভ করেন।



খনা



পুত্রবধূর এমন ঝলমলে উত্থান মেনে নিতে পারেন নি বরাহ। অন্যদিকে খনা মুক্ত প্রাণের টানে বাধনহারা হয়ে মিশে চলেন নতুন দেশের নতুন মানুষদের সাথে। লেখ্য ভাষ্যহীন প্রাকৃতদের কৃষি সংক্রান্ত জ্ঞানের রাজ্যকে বিকাশে গেঁথে চলেন বচনের পর বচন, যা কৃষকের মুখে আজো টিকে আছে তার শাশ্বত প্রাণ নিয়ে। গণনা করে খনার দেওয়া পূর্বাভাস রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হতো বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে দশম রত্ন হিসেবে আখ্যা দেন। বরাহ চেষ্টা করেন খনাকে বশে আনার। কিন্তু খনা চলেন নিজের ইচ্ছেমতো। খনার অবাধ্যতায় ক্রুব্ধ বরাহ পুত্রকে আদেশ করেন খনার জিহ্বা কর্তন করে তাকে যেন উৎসর্গ করা হয়। বাবার আদেশ এবং রাজসভায় প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে প্রতিহিংসায় মিহির খনার জিহ্বা কেটে দেন। এর কিছুকাল পর খনার মৃত্যু হয়। রক্তক্ষয়ী এই ঘটনার পর মেয়েটির নাম হয় খনা, উড়িয়া ভাষায় যার মানে বোবা। এমন বর্বরোচিত নির্মম পরিণতি খনারর, একি শুধু নারী হয়ে তিনি চাষাভুষোর সাথে মিশেছেন বলে!! কেবলই সত্যের পথে দাঁড়ানোর যে মৃত্যুনেশা তার, সে নেশা কি একরোখা জেদ? এভাবে খনা নিজেকে নিজেই করেছেন প্রশ্নের সম্মুখীন।



কোলকাতা শহরের ৪০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে বারাসাত নগরীর কাছে বীরচম্পা নামক জায়গায় গেলে দেখা যাবে প্রাচীন এক ভগ্নাবশেষ। ধারণা করা হয়, এখানেই ছিল রাজা চন্দ্রকেতুর সাম্রাজ্য। কৃষিকাজ বা অন্যান্য খননকাজে মাটির নীচ থেকে প্রায়ই বেরিয়ে আসে নানা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন : মুদ্রা, পুঁতি, প্রস্তর ও পোড়ামাটির ভাস্কর্য, গজদন্ত প্রভৃতি।



২৪ পরগনা জেলায় অবস্থিত এই এলাকাটিতে ১৯৫০ এর দশকে কিছু খননকার্য হয়েছিল। রোমান ও ভূমধ্যসাগরীয় মুদ্রা পর্যবেক্ষণ করে ঐতিহাসিকদের অভিমত, এখানকার স্থাপনাসমূহ খ্রীষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকের। পুরাতত্ত্ববিদগন এখানে মৌর্য্য ও গুপ্ত শাসনামলের নিদর্শনও আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু তৈজসপত্রের টুকরা এবং গোলাকার সিলমোহরের উপর খোদাইকরা অভিলিখন এর মর্মোদ্ধার করা এখনও হয়ে উঠেনি, ফলে রাজা চন্দ্রকেতুর সঠিক পরিচয় এবং সেই এলাকার ইতিহাস এখনও আলো-আধাঁরিতে খেলা করে।

আর এখানেই, মহাসড়কের উত্তর পাশে শায়িত সমাধিফলকের মত এক ইঁটের স্থাপনা। বহুভুজাকৃতির উঁচু এই স্থাপনাটি কৌতূহল জাগানোর মত উত্তর-দক্ষিণে সুবিন্যস্ত, পাশে আরো কিছু স্থাপনা। এটিই খনা-মিহিরের মূড়া (Mound of Khona-Mihir) নামে পরিচিত। কিছু কিছু ঐতিহাসিক মূড়াটিকে গুপ্ত যুগের মন্দির হিসেবে অনুমান করলেও মন্দিরের পক্ষে জোড়ালো কোন নিদর্শন পাওয়া যায়নি এখানে।



খনা-মিহিরের মূড়া (Mound of Khona-Mihir)



কিন্তু এই কিংবদন্তি কাহিনী সত্য কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, বিক্রমাদিত্যের শাসনামলে বরাহমিহির একজনই ছিলেন। তবে খনার বচনগুলোর অধিকাংশ লিখিত হয়েছে বাংলায়। বচনগুলোর ভাষা বিশ্লেষণ করে গবেষকরা বলেছেন, এগুলোর রচনাকাল ৪০০ বছর আগের নয়। কিন্তু বরাহমিহিরের আবির্ভাবকাল প্রায় দেড় হাজার বছর আগে! বরাহমিহিরের জাতক প্রভৃতি জ্যোতিষ গ্রন্থের সঙ্গে খনার বচনের কতগুলো অদ্ভুত মিল পাওয়া যায়। কৃষিসংক্রান্ত নানা বিষয় সম্পর্কে খনার বচনগুলো অমূল্য সম্পদ এবং কৃষিজীবীদের কাছে খুবই আদরণীয়।



খনার বচন, দেখুন না একটু পড়ে.......................



কপালে নাই ঘি



কপালে নাই ঘি,

ঠকঠকালে হবে কি!



নিজের বেলায় আটিঁগাটি



নিজের বেলায় আটিঁগাটি,

পরের বেলায় চিমটি কাটি।



মেয়ে নষ্ট ঘাটে



মেয়ে নষ্ট ঘাটে,

ছেলে নষ্ট হাটে।



আল্লায় দিয়া ধন দেখে মন



আল্লায় দিয়া ধন দেখে মন,

কাইড়া নিতে কতক্ষণ।



যদি থাকে বন্ধুরে মন



যদি থাকে বন্ধুরে মন

গাং সাঁতরাইতে কতক্ষণ।



ফুল তুলিয়া রুমাল দিলাম যতন করি রাখিও



ফুল তুলিয়া রুমাল দিলাম যতন করি রাখিও।

আমার কথা মনে ফইল্লে রুমাল খুলি দেখিও।



একে তে নাচুনী বুড়ি



একে তে নাচুনী বুড়ি,

তার উপর ঢোলের বারি



চোরের মার বড় গলা



চোরের মার বড় গলা

লাফ দিয়ে খায় গাছের কলা



ভাই বড়ো ধন



ভাই বড়ো ধন, রক্তের বাঁধন

যদি ও পৃথক হয়, নারীর কারন।



সকাল শোয় সকাল ওঠে



সকাল শোয় সকাল ওঠে

তার কড়ি না বৈদ্য লুটে



আলো হাওয়া বেঁধো না



আলো হাওয়া বেঁধো না

রোগে ভোগে মরো না।



যে চাষা খায় পেট ভরে



যে চাষা খায় পেট ভরে

গরুর পানে চায় না ফিরে

গরু না পায় ঘাস পানি

ফলন নাই তার হয়রানি



খনা ডেকে বলে যান



খনা ডেকে বলে যান

রোদে ধান ছায়ায় পান



গাছগাছালি ঘন সবে না



গাছগাছালি ঘন সবে না

গাছ হবে তার ফল হবে না



হাত বিশ করি ফাঁক



হাত বিশ করি ফাঁক

আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ



বিশ হাত করি ফাঁক



বিশ হাত করি ফাঁক,

আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ।

গাছ গাছি ঘন রোবে না,

ফল তাতে ফলবে না।



যদি না হয় আগনে বৃষ্টি



যদি না হয় আগনে বৃষ্টি

তবে না হয় কাঁঠালের সৃষ্টি



যত জ্বালে ব্যঞ্জন মিষ্ট



যত জ্বালে ব্যঞ্জন মিষ্ট

তত জ্বালে ভাত নষ্ট



যে না শোনে খনার বচন



যে না শোনে খনার বচন

সংসারে তার চির পচন৷



শোনরে বাপু চাষার পো



শোনরে বাপু চাষার পো

সুপারী বাগে মান্দার রো৷

মান্দার পাতা পচলে গোড়ায়

ফড়ফড়াইয়া ফল বাড়ায়৷



মঙ্গলে ঊষা বুধে পা



মঙ্গলে ঊষা বুধে পা

যথা ইচ্ছা তথা যা।



চাষী আর চষা মাটি



চাষী আর চষা মাটি

এ দু'য়ে হয় দেশ খাঁটি।



গাছে গাছে আগুন জ্বলে



গাছে গাছে আগুন জ্বলে

বৃষ্টি হবে খনায় বলে।



জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা



জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা

শস্যের ভার সহে না ধরা।



আষাঢ় মাসে বান্ধে আইল



আষাঢ় মাসে বান্ধে আইল

তবে খায় বহু শাইল।



আষাঢ়ে পনের শ্রাবণে পুরো



আষাঢ়ে পনের শ্রাবণে পুরো

ধান লাগাও যত পারো।



তিন শাওনে পান



তিন শাওনে পান

এক আশ্বিনে ধান।



পটল বুনলে ফাগুনে



পটল বুনলে ফাগুনে

ফলন বাড়ে দ্বিগুণে।



ফাগুনে আগুন



ফাগুনে আগুন, চৈতে মাট

বাঁশ বলে শীঘ্র উঠি।



ভাদ্রের চারি, আশ্বিনের চারি



ভাদ্রের চারি, আশ্বিনের চারি

কলাই করি যত পারি।



লাংগলে না খুঁড়লে মাটি



লাঙ্গলে না খুঁড়লে মাটি,

মই না দিলে পরিপাটি

ফসল হয় না কান্নাকাটি।



সবলা গরু সুজন পুত



সবলা গরু সুজন পুত

রাখতে পারে খেতের জুত।



গরু-জরু-ক্ষেত-পুতা



গরু-জরু-ক্ষেত-পুতা

চাষীর বেটার মূল সুতা।



সবল গরু, গভীর চাষ



সবল গরু, গভীর চাষ

তাতে পুরে চাষার আশ।



শোন শোন চাষি ভাই



শোন শোন চাষি ভাই

সার না দিলে ফসল নাই।



হালে নড়বড়, দুধে পানি



হালে নড়বড়, দুধে পানি

লক্ষ্মী বলে চাড়লাম আমি।



রোদে ধান, ছায়ায় পান



রোদে ধান, ছায়ায় পান।



আগে বাঁধবে আইল



আগে বাঁধবে আইল

তবে রুবে শাইল।



গাছ-গাছালি ঘন রোবে না



গাছ-গাছালি ঘন রোবে না

গাছ হবে তাতে ফল হবে না।



খরা ভুয়ে ঢালবি জল



খরা ভুয়ে ঢালবি জল

সারাবছর পাবি ফল।



ষোল চাষে মূলা



ষোল চাষে মূলা, তার অর্ধেক তুলা

তার অর্ধেক ধান, তার অর্ধেক পান,

খনার বচন, মিথ্যা হয় না কদাচন।



ডাঙ্গা নিড়ান বান্ধন আলি



ডাঙ্গা নিড়ান বান্ধন আলি

তাতে দিও নানা শালি।



কাঁচা রোপা শুকায়



কাঁচা রোপা শুকায়

ভুঁইয়ে ধান ভুঁইয়ে লুটায়।



বার পুত, তের নাতি



বার পুত, তের নাতি

তবে কর কুশার ক্ষেতি।



তাল বাড়ে ঝোঁপে



তাল বাড়ে ঝোঁপে

খেজুর বাড়ে কোপে।



গাজর, গন্ধি, সুরী



গাজর, গন্ধি, সুরী

তিন বোধে দূরী।



খনা বলে শোনভাই



খনা বলে শোনভাই

তুলায় তুলা অধিক পাই।



ঘন সরিষা পাতলা রাই



ঘন সরিষা পাতলা রাই

নেংগে নেংগে কার্পাস পাই।



বারো মাসে বারো ফল



বারো মাসে বারো ফল

না খেলে যায় রসাতল।



ফল খেয়ে জল খায়



ফল খেয়ে জল খায়

জম বলে আয় আয়।



কলা-রুয়ে কেটো না পাত



কলা-রুয়ে কেটো না পাত,

তাতে কাপড় তাতেই ভাত।



চাষে মুলা তার



চাষে মুলা তার

অর্ধেক তুলা তার

অর্ধেক ধান

বিনা চাষে পান



বিপদে পড় নহে ভয়



বিপদে পড় নহে ভয়

অভিজ্ঞতায় হবে জয়



উত্তর দুয়ারি ঘরের রাজা



উত্তর দুয়ারি ঘরের রাজা

দক্ষিণ দুয়ারি তাহার প্রজা।

পূর্ব দুয়ারির খাজনা নাই

পশ্চিম দুয়ারির মুখে ছাই।।



পুকুরে তে পানি নাই



পুকুরে তে পানি নাই, পাতা কেনো ভাসে

যার কথা মনে করি সেই কেনো হাসে ?



ভাত দেবার মুরোদ নাই



ভাত দেবার মুরোদ নাই,

কিল দেবার গোসাঁই।



নদীর জল ঘোলাও ভালো



নদীর জল ঘোলাও ভালো,

জাতের মেয়ে কালোও ভালো



খাঁদা নাকে আবার নথ



খাঁদা নাকে আবার নথ!



থাক দুখ পিতে



থাক দুখ পিতে,(পিত্তে)

ঢালমু দুখ মাঘ মাসের শীতে।



কি কর শ্বশুর মিছে খেটে



কি কর শ্বশুর মিছে খেটে

ফাল্গুনে এঁটে পোত কেটে

বেড়ে যাবে ঝাড়কি ঝাড়

কলা বইতে ভাংগে ঘাড়।



ভাদরে করে কলা রোপন



ভাদরে করে কলা রোপন

স্ববংশে মরিল রাবণ।



গো নারিকেল নেড়ে রো



গো নারিকেল নেড়ে রো

আমা টুকরা কাঁঠাল ভো।



সুপারীতে গোবর



সুপারীতে গোবর, বাশে মাটি

অফলা নারিকেল শিকর কাটি



খনা বলে শুনে যাও



খনা বলে শুনে যাও

নারিকেল মুলে চিটা দাও

গাছ হয় তাজা মোটা

তাড়াতাড়ি ধরে গোটা।



ডাক ছেড়ে বলে রাবণ



ডাক ছেড়ে বলে রাবণ

কলা রোবে আষাঢ় শ্রাবণ।



পূর্ব আষাঢ়ে দক্ষিণা বয়



পূর্ব আষাঢ়ে দক্ষিণা বয়

সেই বৎসর বন্যা হয়।



মংগলে উষা বুধে পা



মংগলে উষা বুধে পা

যথা ইচ্ছা তথা যা।



পুত্র ভাগ্যে যশ



পুত্র ভাগ্যে যশ

কন্যা ভাগ্যে লক্ষী



উঠান ভরা লাউ শসা



উঠান ভরা লাউ শসা

ঘরে তার লক্ষীর দশা



বামুন বাদল বান



বামুন বাদল বান

দক্ষিণা পেলেই যান।



ব্যাঙ ডাকে ঘন ঘন



বেঙ ডাকে ঘন ঘন

শীঘ্র হবে বৃষ্টি জান।



আউশ ধানের চাষ



আউশ ধানের চাষ

লাগে তিন মাস।



যদি বর্ষে গাল্গুনে



যদি বর্ষে গাল্গুনে

চিনা কাউন দ্বিগুনে।



যদি হয় চৈতে বৃষ্টি



যদি হয় চৈতে বৃষ্টি

তবে হবে ধানের সৃষ্টি।



চালায় চালায় কুমুড় পাতা



চালায় চালায় কুমুড় পাতা

লক্ষ্মী বলেন আছি তথা।



আখ আদা রুই



আখ আদা রুই

এই তিন চৈতে রুই।



চৈত্রে দিয়া মাটি



চৈত্রে দিয়া মাটি

বৈশাখে কর পরিপাটি।



দাতার নারিকেল



দাতার নারিকেল, বখিলের বাঁশ

কমে না বাড়ে বারো মাস।



সোমে ও বুধে না দিও হাত



সোমে ও বুধে না দিও হাত

ধার করিয়া খাইও ভাত।



জৈষ্ঠতে তারা ফুটে



জৈষ্ঠতে তারা ফুটে

তবে জানবে বর্ষা বটে।



বাঁশের ধারে হলুদ দিলে



বাঁশের ধারে হলুদ দিলে

খনা বলে দ্বিগুণ বাড়ে।



গাই পালে মেয়ে



গাই পালে মেয়ে

দুধ পড়ে বেয়ে।



শুনরে বাপু চাষার বেটা



শুনরে বাপু চাষার বেটা

মাটির মধ্যে বেলে যেটা

তাতে যদি বুনিস পটল

তাতে তোর আশার সফল।



মাঘ মাসে বর্ষে দেবা



মাঘ মাসে বর্ষে দেবা

রাজ্য ছেড়ে প্রজার সেবা।



চৈতের কুয়া আমের ক্ষয়



চৈতের কুয়া আমের ক্ষয়

তাল তেঁতুলের কিবা হয়।



আমে ধান



আমে ধান

তেঁতুলে বান।



পারেনা ল ফালাইতে



পারেনা ল ফালাইতে

উইঠা থাকে বিয়ান রাইতে।



যদি বর্ষে মাঘের শেষ



যদি বর্ষে মাঘের শেষ

ধন্যি রাজা পুণ্যি দেশ



সূর্যের চেয়ে বালি গরম



সূর্যের চেয়ে বালি গরম!!

নদীর চেয়ে প্যাক ঠান্ডা!!



সমানে সমানে দোস্তি



সমানে সমানে দোস্তি

সমানে সমানে কুস্তি।



হোলা গোশশা অইলে বাশশা



হোলা গোশশা অইলে বাশশা,

মাইয়া গোশশা অইলে বেইশশা



কাল ধানের ধলা পিঠা



কাল ধানের ধলা পিঠা,

মা'র চেয়ে মাসি মিঠা।



পরের বাড়ির পিঠা



পরের বাড়ির পিঠা

খাইতে বড় ই মিঠা।



ঘরের কোনে মরিচ গাছ



ঘরের কোনে মরিচ গাছ

লাল মরিচ ধরে,

তোমার কথা মনে হলে

চোখের পানি পড়ে!



সোল বোয়ালের পোনা



সোল বোয়ালের পোনা

যার যারটা তার তার কাছে সোনা।



ছায়া ভালো ছাতার তল



ছায়া ভালো ছাতার তল,

বল ভালো নিজের বল।

(বিয়াই'র পুত নিয়া সাত পুত গুণতে নাই।)



যা করিবে বান্দা তা-ই পাইবে



যা করিবে বান্দা তা-ই পাইবে।

সুই চুরি করিলে কুড়াল হারাইবে।



খালি পেটে পানি খায়



খালি পেটে পানি খায়

যার যার বুঝে খায়।



তেলা মাথায় ঢালো তেল



তেলা মাথায় ঢালো তেল,

শুকনো মাথায় ভাঙ্গ বেল।



চৈত্রে চালিতা



চৈত্রে চালিতা,

বৈশাখে নালিতা,

ভাদ্রে তালের পিঠা।

আর্শ্বিনে ওল,

কার্তিকে কৈয়ের ঝুল



মিললে মেলা



মিললে মেলা।

না মিললে একলা একলা ভালা!



সাত পুরুষে কুমাড়ের ঝি



সাত পুরুষে কুমাড়ের ঝি,

সরা দেইখা কয়, এইটা কি?



না পাইয়া পাইছে ধন



না পাইয়া পাইছে ধন;

বাপে পুতে কীর্তন।



কাচায় না নোয়ালে বাশ



কাচায় না নোয়ালে বাশ,

পাকলে করে ঠাস ঠাস!



যুগরে খাইছে ভূতে



যুগরে খাইছে ভূতে

বাপরে মারে পুতে।



দশে মিলে করি কাজ



দশে মিলে করি কাজ

হারি জিতি নাহি লাজ।



যাও পাখি বলো তারে



যাও পাখি বলো তারে

সে যেন ভুলেনা মোরে।



জ্যৈষ্ঠে শুকো আষাঢ়ে ধারা



জ্যৈষ্ঠে শুকো আষাঢ়ে ধারা।

শস্যের ভার না সহে ধরা।



যদি হয় সুজন



যদি হয় সুজন

এক পিড়িতে নয় জন।

যদি হয় কুজন

নয় পিড়িতে নয় জন

(যদি হয় সুজন, তেতুল পাতায় ন'জন।)



হাতিরও পিছলে পাও



হাতিরও পিছলে পাও।

সুজনেরও ডুবে নাও।



গাঙ দেখলে মুত আসে



গাঙ দেখলে মুত আসে

নাঙ দেখলে হাস আসে (নাঙ মানে - স্বামী)



ক্ষেত আর পুত



ক্ষেত আর পুত।

যত্ন বিনে যমদূত।



গরু ছাগলের মুখে বিষ



গরু ছাগলের মুখে বিষ।

চারা না খায় রাখিস দিশ ।



আকাশে কোদালীর বাউ



আকাশে কোদালীর বাউ।

ওগো শ্বশুড় মাঠে যাও।

মাঠে গিয়া বাঁধো আলি।

বৃষ্টি হবে আজি কালি।



যদি ঝরে কাত্তি



যদি ঝরে কাত্তি।

সোনা রাত্তি রাত্তি।



আষাঢ়ের পানি



আষাঢ়ের পানি।

তলে দিয়া গেলে সার।

উপরে দিয়া গেলে ক্ষার।



গাঁ গড়ানে ঘন পা



গাঁ গড়ানে ঘন পা।

যেমন মা তেমন ছা।

থেকে বলদ না বয় হাল,

তার দুঃখ সর্ব্বকাল।



যে চাষা খায় পেট ভরে



যে চাষা খায় পেট ভরে।

গরুর পানে চায় না ফিরে।

গরু না পায় ঘাস পানি।

ফলন নাই তার হয়রানি।।



গরুর পিঠে তুললে হাত



গরুর পিঠে তুললে হাত।

গিরস্থে কভু পায় না ভাত।

গাই দিয়া বায় হাল

দু:খ তার চিরকাল।



দিন থাকতে বাঁধে আল



দিন থাকতে বাঁধে আল।

তবে খায় তিন শাল।

বারো পুত তেরো নাতি।

তবে করো বোরো খেতি।



মেঘ করে রাত্রে হয় জল



মেঘ করে রাত্রে হয় জল।

তবে মাঠে যাওয়াই বিফল।



যদি থাকে টাকা করবার গোঁ



যদি থাকে টাকা করবার গোঁ।

চৈত্র মাসে ভুট্টা দিয়ে রো।



হলে ফুল কাট শনা



হলে ফুল কাট শনা।

পাট পাকিলে লাভ দ্বিগুণা।



পাঁচ রবি মাসে পায়



পাঁচ রবি মাসে পায়,

ঝরা কিংবা খরায় যায়।



খনা বলে শুন কৃষকগণ



খনা বলে শুন কৃষকগণ

হাল লয়ে মাঠে বেরুবে যখন

শুভ দেখে করবে যাত্রা

না শুনে কানে অশুভ বার্তা।

ক্ষেতে গিয়ে কর দিক নিরূপণ,

পূর্ব দিক হতে হাল চালন

নাহিক সংশয় হবে ফলন।



ভরা হতে শুন্য ভাল যদি ভরতে যায়



ভরা হতে শুন্য ভাল যদি ভরতে যায়,

আগে হতে পিছে ভাল যদি ডাকে মায়।

মরা হতে তাজা ভাল যদি মরতে যায়,

বাঁয়ে হতে ডাইনে ভাল যদি ফিরে চায়।

বাঁধা হতে খোলা ভাল মাথা তুলে চায়,

হাসা হতে কাঁদা ভাল যদি কাঁদে বাঁয়।



কি করো শ্বশুর লেখা জোখা



কি করো শ্বশুর লেখা জোখা,

মেঘেই বুঝবে জলের রেখা।

কোদাল কুড়ুলে মেঘের গাঁ,

মধ্যে মধ্যে দিচ্ছে বা।

কৃষককে বলোগে বাঁধতে আল,

আজ না হয় হবে কাল।



বার বছরে ফলে তাল



বার বছরে ফলে তাল,

যদি না লাগে গরু নাল।



এক পুরুষে রোপে তাল



এক পুরুষে রোপে তাল,

অন্য পুরুষি করে পাল।

তারপর যে সে খাবে,

তিন পুরুষে ফল পাবে।



নিত্যি নিত্যি ফল খাও



নিত্যি নিত্যি ফল খাও,

বদ্যি বাড়ি নাহি যাও।



চৈত্রেতে থর থর



চৈত্রেতে থর থর

বৈশাখেতে ঝড় পাথর

জ্যৈষ্ঠতে তারা ফুটে

তবে জানবে বর্ষা বটে।



সাত হাতে, তিন বিঘাতে



সাত হাতে, তিন বিঘাতে

কলা লাগাবে মায়ে পুতে।

কলা লাগিয়ে না কাটবে পাত,

তাতেই কাপড় তাতেই ভাত।



দিনের মেঘে ধান



দিনের মেঘে ধান,

রাতের মেঘে পান।



বেল খেয়ে খায় পানি



বেল খেয়ে খায় পানি,

জির বলে মইলাম আমি।



আম খেয়ে খায় পানি



আম খেয়ে খায় পানি,

পেঁদি বলে আমি ন জানি।



শুধু পেটে কুল



শুধু পেটে কুল,

ভর পেটে মূল।



বৎসরের প্রথম ঈশানে বয়



বৎসরের প্রথম ঈশানে বয়,

সে বৎসর বর্ষা হবে খনা কয়।



শুনরে বেটা চাষার পো



শুনরে বেটা চাষার পো,

বৈশাখ জ্যৈষ্ঠে হলুদ রো।

আষাঢ় শাওনে নিড়িয়ে মাটি,

ভাদরে নিড়িয়ে করবে খাঁটি।

হলুদ রোলে অপর কালে,

সব চেষ্টা যায় বিফলে।



পান লাগালে শ্রাবণে



পান লাগালে শ্রাবণে,

খেয়ে না কুলায় রাবণে।



ফাল্গুনে আগুন চৈতে মাটি



ফাল্গুনে আগুন চৈতে মাটি,

বাঁশ বলে শীঘ্র উঠি।



ভাদ্র আশ্বিনে বহে ঈশান



ভাদ্র আশ্বিনে বহে ঈশান,

কাঁধে কোদালে নাচে কৃষাণ।



বৈশাখের প্রথম জলে



বৈশাখের প্রথম জলে,

আশুধান দ্বিগুণ ফলে।



বাড়ীর কাছে ধান পা



বাড়ীর কাছে ধান পা,

যার মার আগে ছা।

চিনিস বা না চিনিস,

ঘুঁজি দেখে কিনিস।



শীষ দেখে বিশ দিন



শীষ দেখে বিশ দিন,

কাটতে কাটতে দশদিন।

ওরে বেটা চাষার পো,

ক্ষেতে ক্ষেতে শালী রো।



খনা ডাকিয়া কন



খনা ডাকিয়া কন,

রোদে ধান ছায়ায় পান।



তপ্ত অম্ল ঠাণ্ডা দুধ



তপ্ত অম্ল ঠাণ্ডা দুধ

যে খায় সে নির্বোধ।



ডাক দিয়ে বলে মিহিরের স্ত্রী



ডাক দিয়ে বলে মিহিরের স্ত্রী, শোন পতির পিতা,

ভাদ্র মাসে জলের মধ্যে নড়েন বসুমাতা।

রাজ্য নাশে, গো নাশে, হয় অগাধ বান,

হাতে কাটা গৃহী ফেরে কিনতে না পান ধান।



ফাল্গুনে আট, চৈতের আট



ফাল্গুনে আট, চৈতের আট,

সেই তিল দায়ে কাট।



বি: দ্র: তথ্য উপাত্ত উইকি এবং নেট থেকে সংগৃহীত।



একই সাথে চতুরেও প্রকাশ করা হল।



গতকাল রাতে যখন এ খবরটা শুনলাম, মনটা খুব খুব খারাপ হয়ে গেল। মনে হচ্ছে, সবকিছুই ক্ষণস্হায়ী, আমিও হয়ত এভাবে কোন একদিন চলে যাব...........................থেকে যাবে আমার ব্লগ !! টিপুর ব্লগে যেতেই মনটা কেমন ফাকা ফাকা লাগছে। আমি টিপুকে কখনো দেখি নাই, তারপরও সামুর ব্লগার হিসাবে আকটা টান অনুভব করছি। অভিমানী ব্লগার বন্ধুটা চলে গেল কাউকে কিছু না বুঝতে দিয়েই। হয়ত জানলে আমরা তাকে আর্থিক না হোক কোন না কোনভাবে সাহায্য করতে পারতাম অন্তত মানসিক শক্তি দিয়ে হলেও!! সামুর ব্লগারদের পক্ষ থেকে ব্লগার টিপুর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আর টিপুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।



আর রোজলীন টাইপের ব্লগারদের জন্যেও প্রচন্ড ঘৃণা প্রকাশ করছি, টিপুর কাছে সবার শিক্ষা নেয়া উচিৎ !!



ভালো থেকো টিপু !!!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.