নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যেসব ঘটনা মনে দাগকাটে টুকে রাখি। জানি, বেশীর ভাগ লেখাই অখাদ্য হয়; তারপরও লিখি, ভালোলাগে। তবে ইদানিং একটু সংকোচে থাকি, মনে হয়; কখন কি বলি, আর কার কোন অনুভূতিতে গিয়ে আঘাত লাগে!

অনুভব সাহা

যদি দেশের ভালো চান, ভেদাভেদ ভুলে যান। মনটা করি পবিত্র, গড়তে মোদের চরিত্র। চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস করে দেশের সর্বনাশ। ক্যাডার চাইনা মানুষ গড়ো, দলের চেয়ে দেশ বড়। সবার জন্য অধিকার, শিক্ষা স্বাস্থ্য সুবিচার। দূষণমুক্ত পরিবেশ, সুস্থ মানুষ সবুজ দেশ।

অনুভব সাহা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোহঙ্গিা সমস্যা: সমাধানরে বদলে সংকটময় হচ্ছে

২৫ শে আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৬

২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যেসামরিক বাহিনীর এক অভিযানের পর বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ৭ লাখ ৪৫ হাজার। এর আগে একই কারণে ১৯৭৮-৭৯, ১৯৯১-৯২, ১৯৯৬ ও ২০১২-১৬ সালেও মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এখন সব মিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ ১৮ হাজার ৪১৭ জন রোহিঙ্গা বাস করছে উখিয়া ও টেকনাফে। যা সেখানকার স্থানীয় জনসংখ্যার চেয়েও বেশী। বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি, বেকারত্ব ও প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস হয়ে স্থানীয়দের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এদিকে মিয়ানমারের সাথে প্রত্যাবাসন চুক্তি করা হলেও নানা কারণে সেটা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এমনিতেই এদেশে নানা সমস্যা, তার উপর রোহিঙ্গারা এসে আরো উটকো ঝামেলার সৃষ্টি করেছে। অনিশ্চয়তার মাঝে নিমজ্জিত সবাই।



রোহিঙ্গা সমস্যায় বাংলাদেশের জড়ানোটা কী ঠিক হল?
বেশ কিছু কারণে প্রশ্নটা মাথায় এসেছে। ইদানিং বেশ কিছু লোক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় সরকারের সমালোচনা করছে/বলছে "তাদের আশ্রয় দেয়া ঠিক হয় নি"।
কিন্তু যদি পেছনে ফিরে দেখি, দেখা যাবে: বাংলাদেশ অনিচ্ছা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা সমস্যায় জড়িয়ে পড়েছে, পুরোটাই অপ্রত্যাশিতভাবে। এর প্রধান কারণ দুটো: অবস্থানগত; ধর্মীয়। ২০১৭-১৮তে দেখেছি সবাই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবার পক্ষে ছিল, নানাভাবে টাকা তুলে ওদের সাহায্যও করেছে। মানবিক কারণে সেটা যুক্তিযুক্ত। তখন আমিও চেয়েছি ওরা আসুক, কিছুদিন থাকুক; পরিস্থিতি শান্ত হলে চলে যাবে। কিন্তু ওরা যে এতদিন থাকবে/শেষে এসে এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে, ভাবিনি।

রোহিঙ্গাদের এখনো ফেরত পাঠানো গেল না কেন?
২০১৭র ২৩শে নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি সাক্ষরিত হয়। কথা ছিল, প্রত্যাবাসন শুরু হবে ২০১৮ এর ২৩শে জানুয়ারি থেকে। চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার প্রতিদিন তিনশ করে প্রতি সপ্তাহে ১৫শ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে এবং দুই বছরের মধ্যে এই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শেষ করা হবে। এর পর অনেক জল গড়িয়েছে, নানা অজুহাতে তারিখ পিছিয়েছে কিন্তু একজনকেও ফেরত পাঠানো যায় নি।
সর্বশেষ চলতি মাসের ২২তারিখ(গত বৃহস্প্রতিবার) কিছু পরিবারকে ফেরত পাঠানোর কথা ছিল। তাদের নেবার জন্য বাস-ট্রাকও রেডি ছিল। কিন্তু তালিকাভূক্তরা শিবির ছেড়ে পালিয়েছিল, এমন পরিসি্থতিতে তারা যেতে ইচ্ছুক না।
প্রত্যাবাসন নিয়ে কয়েশ পরিবারের মতামত নেয়া হয়, তাদের একজনও ফেরত যেতে রাজি নয়। কারণ, মিয়ানমার সেই আস্থার জায়গাটা তৈরী করতে পারে নি। এই দায় শুধু মিয়ানমারের একার নয়, এর দায় UNHCRএর, এর দায় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর, এর দায় বিশ্ব মোড়লদের, এর দায় আমাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির।

♦ আদৌ কী রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে?
পুরোটাই নির্ভর করছে মিয়ানমারের আন্তরিকতা আর সদিচ্ছার উপর। এর আগে ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তির একটি বিবেচ্য বিষয় ছিল, রোহিঙ্গারা যাতে আর পালিয়ে না আসে সে জন্য যথাযথপদক্ষেপ নেবে মিয়ানমার। মিয়ানমার বারবার সেটা ভঙ্গ করেছে। ১৯৮২সালে রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব হারিয়েছে, ২০১৪সালের আদমশুমারিতে তাদের গণনা করা হয় নি, ভোটাধিকার নেই। সবমিলিয়ে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদেরকে তাদের অংশই মনে করে না। আর কোন বিষয়ে গুরত্ব না থাকলে সেটার সমাধান করা মুশকিল।

রোহিঙ্গারা তাহলে কী বাংলাদেশেই থেকে যাবে?
এর উত্তর বলা কঠিন। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এ সমস্যার সমাধান সহজে হচ্ছে না/হবে না।

রোহিঙ্গারা ফেরত যাবার জন কয়েকটা শর্ত দিয়েছে-
* তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে
* নিজ নিজ জায়গাজমি ফেরত দিতে হবে
* ক্ষতিপুরণ দিতে হবে
* তাদের উপর সংঘঠিত অপরাধের যথাযথ বিচার করতে হবে
*সর্বপরি তাদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে
কিন্তু বাস্তবতা হল, প্রতাবাসন চুক্তিতে মিয়ানমার এর কোনটাই উল্লেখ করে নি। চুক্তিতে আছে, প্রত্যাবাসন হবে স্বেচ্ছামূলক। ফেরার পর রোহিঙ্গাদের নির্মাণাধীন ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে। তার মানে রোহিঙ্গাদের পুরোনো জমি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি নেই। এই পরিস্থিতিতে কেউই যেতে আগ্রহী হবে না।

দ্বিপাক্ষিক চুক্তি কার্যকর করা যাচ্ছে না, আবার মিয়ানমারের উপর সেভাবে আন্তর্জাতিক চাপও দেখছি না। ভূরাজনৈতিক কারণে ভারত, চীন, রাশিয়া মিয়ানমারের পক্ষে(মুখে যাই বলুক)। রোহিঙ্গাদের পক্ষে যেহেতু শক্ত কেউ নেই। পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠছে..


সহায়ক লিংক:
রোহিঙ্গাদের ইতিহাস
জটিল হয়ে উঠছে রোহিঙ্গা সমস্যা
হঠাৎ রোহিঙ্গাদের নিয়ে উল্টো সুর কেন!
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চুক্তির বিষয়ে চারটি গভীর সংশয়
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: কাটাতে হবে আস্থার সংকট
মানবিকতার সব দায় কি বাংলাদেশের?
রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের ভিজিবিলিটি ক্রাইসিস
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের দায়বদ্ধতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ
* রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে ৮ হাজার একর বন ক্ষতিগ্রস্ত
* রোহিঙ্গাদের পেছনে ২ বছরে বাংলাদেশের খরচ ৭২ হাজার কোটি টাকা!
* ৩৪ রোহিঙ্গা শিবিরে ইয়াবা বিক্রির পাঁচ শতাধিক আস্তানা
* পুরনোদের সহায়তায় ছড়িয়ে পড়ছে নতুন রোহিঙ্গারা
রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর কাছে বাংলাদেশি স্মার্টকার্ড!
রোহিঙ্গা নির্যাতনের নামে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া ছবি ও আসল ছবি

রোহিঙ্গা সংকট: মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গ্রাম ধ্বংস করে তৈরি করা হচ্ছে পুলিশ ব্যারাক, সরকারি ভবন - BBC News বাংলা

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


রোহিংগাদেের ফেরত পাথানো গেল না কেন, এই প্যারাগ্রাফে, আপনি অনেক কারণের মাঝে একটা কারণ হিসেবে বলেছেন, "আমাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীত"।

-আমাদের সরকারের পররাষ্ট্র নীতি'কে আপনি "নতজানু পররাষ্ট্রনীত" কেন বলেছেন?

২৫ শে আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৪

অনুভব সাহা বলেছেন:

নতজানু মানে মেরুদন্ডহীন, হাঁটু গেড়ে বসা জ্বীহুজুর পার্টি-

Read it...
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: চুক্তি শেষ, এখন কী?

২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৩৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংলদেশের একটা প্রোফাইল আছে; উহা অনুসারে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি পাকিস্তান,বার্মা, আফগানিস্তান, বা নেপালের কাছাকাছি হওয়ার কথা।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৪১

অনুভব সাহা বলেছেন:

এগুলার চাইতেও খারাপ

৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: ফেরত না যাওয়ার পেছনে এনজিও গুলোর চেয়ে অন্য কেউ বেশি দায়ী আছে। তাদের খুঁজে বের করতে হবে।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৯

অনুভব সাহা বলেছেন: রোহিঙ্গারা কী খায়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.