নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যেসব ঘটনা মনে দাগকাটে টুকে রাখি। জানি, বেশীর ভাগ লেখাই অখাদ্য হয়; তারপরও লিখি, ভালোলাগে। তবে ইদানিং একটু সংকোচে থাকি, মনে হয়; কখন কি বলি, আর কার কোন অনুভূতিতে গিয়ে আঘাত লাগে!

অনুভব সাহা

যদি দেশের ভালো চান, ভেদাভেদ ভুলে যান। মনটা করি পবিত্র, গড়তে মোদের চরিত্র। চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস করে দেশের সর্বনাশ। ক্যাডার চাইনা মানুষ গড়ো, দলের চেয়ে দেশ বড়। সবার জন্য অধিকার, শিক্ষা স্বাস্থ্য সুবিচার। দূষণমুক্ত পরিবেশ, সুস্থ মানুষ সবুজ দেশ।

অনুভব সাহা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাজের জন্য প্রবাস যাত্রা, কিছু স্বপ্নের অপমৃত্যু

০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:২৩

ঘটনা-১:
মি: গ. । শুনেছে বিদেশে নাকি ভালো ইনকাম হয়। বিদেশ যাবার জন্য জায়গা জমি বিক্রি করে। কাগজপত্র তৈরী করতে একজনের(দালাল, যার মাধ্যমে বিদেশ যাবে) হাতে টাকা দেয়। টাকা নিয়ে লোকটা উধাও। জমি, টাকা দুটোই বেহাত।

ঘটনা-২:
মিনহাজ, অল্প শিক্ষিত ছেলে। ভালো আয়ের জন্য বিদেশ যাবার পরিকল্পনা করে। টাকা জোগাড় করতে কয়েক বিঘা জমি বিক্রি করে। পাসপোর্ট -ভিসা পেতে দেরী হওয়ায় কম্পিউটারের দোকান দেয়। কয়েকমাস পর কাগজপত্র হাতে পায়। নামমাত্র মূল্যে জিনিসপাতি সমেত দোকানটা বিক্রি করে দেয়। বিদেশ যায় কিন্তু শূন্য হাতে ফিরে আসে। এখন অটোরিকশা চালায়। [তাকে টুরিস্ট ভিসা দেয়া হয়েছিল। কিছুদিন জেলেও থাকতে হয়েছিল]

ঘটনা-৩:
রতন। পেশায় দর্জি। মোড়ের উপর কয় ভাই মিলে টেইলার্সের একটা দোকান দিয়েছে। দু পয়সা বেশী ইনকামের আশায় বিদেশ যায়, কিন্তু কাজ করতে পারে না। কারণ সে কাপড় সেলাই করা দর্জি কিন্তু তাকে দেয়া হয়েছে রাজমিস্ত্রির কাজ।

ঘটনা-৪:
নাইম। এসএসসি পাশ করে বিদেশ যায়। কয়েক বছর ভালোই কাটে কিন্তু একদিন তার কম্পানি বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে দেশে ফিরে আসে। এখন সে করবে কী?

ঘটনা-৫:
মি: X. স্ত্রী ও দু সন্তানকে রেখে বিদেশ গিয়েছে। একজন তার স্ত্রীর সাথে পরকিয়া করতে গিয়ে প্রতিবেশীদের হাতে ধরা পড়ে। বিচার হবে(গ্রামবাসীরা এসব বিচারে খুব মজা পায়)। সংসারে ফাটল ধরে।

ঘটনা-৬:
মি. একরাম। স্ত্রী সন্তান সহ গেরস্থ পরিবার। দিন মন্দ চলছিল না, তারপরও কি মনে করে বিদেশ যায়। হালের বলদ দুটো বিক্রি হয়। টাকা কত আসে জানি না তবে সে ফিরে আসে লাশ হয়।


উপরের ঘটনাগুলো আমাদের গ্রাম ও তার পাশের গ্রামের। প্রবাসে কাজ করতে গিয়ে শত শত মানুষ এমন অনেক বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। অনেকে ফিরছে নিঃস্ব হয়ে, অনেকে লাশ হয়ে। যাদের ঘাম ঝরানো টাকায় আমাদের অর্থনীতি মজবুত হচ্ছে তাদের এমন পরিণতি দেখলে বেশ কষ্টই লাগে।


[ গত ছয় বছরে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার শ্রমিক লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন, যাঁদের ৯৪ শতাংশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর শিকার। যাদের মধ্যে পুরুষের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারীও আছে। এসবের তদন্ত সেভাবে হয় না, ক্ষতিপুরণও দেয়া হয় না। রাষ্ট্রটা মানবিক হবে কবে?]

সংযুক্তি-
পাঁচ বছরে ১৫ হাজার বাংলাদেশী শ্রমিকের বিদেশে মৃত্যু(২০১৪) - BBC News বাংলা
রয়টার্সের প্রতিবেদন: বিদেশে কেন এত বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু
প্রবাসী শ্রমিকদের মৃত্যুর নেপথ্যে
লাশ পেলেও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না অধিকাংশ প্রবাসী শ্রমিক পরিবার

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৫৭

মা.হাসান বলেছেন: মানবিকতার জন্য সরকার প্রধান নিয়মিত আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাচ্ছেন, এর পরেও অভিযোগ কেন?

ছোট বেলায় দেখেছি তথ্য মন্ত্রনালয় থেকে সচেতনতামূলক বিভিন্ন ডকুমেন্টারি করে গ্রামে গ্রামে প্রজেক্টরের সাহায্যে তা দেখাতো। তবে তখন অগনতান্ত্রিক সরকার ছিল তাই এসব ভুজুং ভাজুং দিত। এখন গনতান্ত্রিক সরকার তাই ওসবের দরকার নাই, এখন তথ্য মন্ত্রনালয় নেতাদের জীবনী নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করে -- জীবনী দেখুন, জীবন গড়ুন। তাতেই সব সমস্যার সমাধান।

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: চাকরির খোঁজে বিদেশ পাড়ি দেওয়া বাংলাদেশিদের জন্য নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়কে আরো দক্ষ হতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.