নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন। বাংলাদেশী লেখক। দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক বাংলা ও কিশোর বাংলায় গল্প লিখি। প্রকাশিত গল্পের বইঃ প্রত্যুষের গল্প (পেন্সিল)\nউপন্যাসঃ এমনি এসে ভেসে যাই (তাম্রলিপি)।

আনু মোল্লাহ

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন এর ব্লগ

আনু মোল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঠেলা

২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৪

গত বছর শীতের সময়ের কথা। আমি একটা বড়লোকদের এলাকার ভেতর দিয়া যাইতেছিলাম। বড়লোকদের এলাকায় গেলে আমি হাঁটতে হাঁটতে যাই। ওইসব এলাকায় হাঁটতে মজা আছে। রাস্তাঘাট পয়পরিষ্কার, ঝকঝকে তকতকে থাকে। যাইতে যাইতে আমার চায়ের নেশা উঠে গেল।
বড়লোকদের এলাকায় চা দোকান থাকে না। রাস্তার পাশে চা দোকান একটা নোংরা ছোটলোকি ব্যাপার-স্যাপার। এইজন্য থাকে না। সেখানে দামী দামী চায়ের দোকান থাকে। সেইসব দোকানে চা খাইতে গেলে এক কাপ চা দেড়শ-দুইশ টাকা দিয়া কিন্যা খাইতে অয়। চায়ের যতই পিপাসা লাগুক দেড়শ-দুইশ টাকা খরচা কইরা চা খাইবার ইচ্ছা আমার নাই।
ভাগ্য ভাল বলতে হবে। কারণ একটা ফুটপাতের কোনায় দেখি এক টেম্পোরারি চাওয়ালা ফ্লাস্ক নিয়া বইসা চা-পান বেচতেছে। সাথে দুইটা বিস্কিটের প্যাকেট আর সিগারেট-বিড়ি। মনটা বড় ভাল হয়া গেল। বড়লোকদের এলাকা যত খারাপ ভাবছিলাম তত খারাপ না। বেশ নিরিবিলি। প্রায়-বাড়িতে গাছ-পালা আছে। আমাদের গ্রামের বাড়ির মত পুরানা বড়-সড় গাছ-গাছালি দেখতে দেখতে চা খাইতে খাইতে মনটা বড় হইয়া উঠল। মন বড় হয়ে গেলে অনেকের অনেক কিছু করতে ইচ্ছা হয়। কেউ গান গায়, কেউ প্রেম করে।
আমার যে ঠিক কি ইচ্ছা হইল, এইটা বুঝবার আগেই একটা মেয়ে আইসা কইল, এক্সকিউজ মি।
মেয়েটা সুন্দরী। একটা শাদা টি-শার্ট পরা। বড়লোকদের এলাকার মতই নাইস এন্ড এট্রাক্টিভ। আমি একটা ঢোক গিলে, চেহারায় একটা কোশ্চেন মার্ক নিয়ে তার দিকে তাকাইলাম।
সে একটা হাসি দিয়ে বলল, একটু হেল্প করবেন প্লিজ। এরকম হাসি দিলে হেল্প করবে না কোন শালা? বললাম, জ্বী জ্বী।
সে বলল, একটু আসেন না, আমার সাথে।
চায়ের কাপ রাইখা তার পিছু নিলাম। একটু সামনে তার গাড়ির কাছে নিয়ে গেল। স্টার্ট বন্ধ। একটা বুইড়া ড্রাইভার ড্রাইভিং সিটে।
মেয়েটি এবার আমাকে বলল, আমার গাড়িটা স্টার্ট নিচ্ছে না। একটু ঠেলা দিতে হবে।
মানে?
গাড়ির পেছনে ধরে একটু ধাক্কা দিন। বেশি না অল্প একটু দিলেই হবে।
কি আর করা, গাড়ির পেছনে গিয়ে ঠেলা শুরু করে দিলাম। জীবনে কোন দিন রিকশার পেছনেও ঠেলিনি। আজ জ্বলজ্যান্ত গাড়ি ঠেলতে হচ্ছে। জানা নেই শোনা নেই একটা মেয়ে শুধুমাত্র মুখের কথায় একটা ছেলেকে কোথায় নামাতে পারে!
আমার ক্ষীণ আশা ছিল মেয়েটি অন্তত আমার সাথে হাত লাগাবে। তা না, সে গাড়ির পেট বরাবর হাটতে লাগল। কি আর করা। সুন্দরী মেয়েরা একটু অভদ্র হতেই পারে। এতে দোষের কিছু নাই।
বেশি ঠেলতে হল না। গাড়ি স্টার্ট নিয়ে ফেলেছে। মেয়েটি গাড়ির দরজা খুলে ওঠার আবারো সিগারেট ভোলানো হাসি দিয়ে বলল, থ্যাংক ইউ। ইউ আর ইনক্রেডিবলি স্ট্রং। ভালো ঠেলা দিতে পারেন।
তারপর আবার একটু হেসে বলল, এরপর কোনদিন যদি রাস্তায় আপনার গাড়ি স্টপ হয়ে যায় আমি গিয়ে ঠেলে দিয়ে আসব।
আমার গাড়িই নাই। স্টপ হবে কোথা থেকে?
আচ্ছা আপনার চোখের সামনে অন্য কারো গাড়ি বন্ধ হলে আমাকে ইনফর্ম করবেন।
আচ্ছা, একটা কথা বলুন তো, ওখানে তো আরো লোকজন ছিল। এনার্জিটিক লোকজন। ওদের কাউকে না ডাইকা আপনি আমারে ডাকলেন ক্যান?
সত্য কথা বলব?
অবশ্যই সত্য বলবেন।
আপনারে দেইখা মনে হইছে আপনারে ঠেলা দিতে বললে শুনবেন।
কেন?
আপনার চেহারায় একটা বলদা বলদা ভাব আছে। হা হা হা।
সুন্দরী মেয়েরা এত নিষ্ঠুর হতে পারে!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৩

কিরকুট বলেছেন: ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখশ কিনা এর পর থেকে রাস্তায় নামবেন ।

২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

আনু মোল্লাহ বলেছেন: এই বুদ্ধিটা খারাপ না।
অনেক ধন্যবাদ ভাই।

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখার ধরনটা আমার ভালো লাগে নাই।

২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৬

আনু মোল্লাহ বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
প্রমিত বাংলায় লিখতে এখন আর এনজয় করি না।

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:২২

আজব লিংকন বলেছেন: হা হা হা।
আহারে বেচারা।।
উপকারি গাছের বাকলা থাকে না। তবুও আমি মানুষের উপকার করি।
লেখাটা পড়ে মজা পেয়েছি।।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৪

আনু মোল্লাহ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
'পরের কারণে কাষ্ঠাহরণে যাইয়া ব্যাঘ্রের মুখে পতিত হওয়া যাহাদের স্বভাব তাহারা বারংবার পরের জন্য কাষ্ঠাহরণে যাইবে। তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?'[কপালকুন্ডলা]

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.