![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুপেয়ের পরিচয়ে এসেছি মাটির ধামে, মানুষের রূপ পেতে হৃদয়ে কামনা করি রোজ। পরিচয় নেই কিছু আর, এর ভালো যদি খুজে পাই! এই আশাটাই মন সম্বোঝ।
বিলাসী গল্পে আমাদের জাত চিনিয়ে ছিলো শরত চন্দ্র। রাজনের ঘটনায় আমরা প্রমান করলাম আমরা সেখানেই আছি। আসলে রাজনের মত অনেককেই নির্যাতন করে হত্যা করা হচ্ছে । কিন্তু খবরে আসেনা বলে তেমন গুরুত্ব পায়না। রাজনের ঘটনা সাড়া জাগিয়েছে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ এবং প্রথম আলো মর্মস্পর্শী একটি প্রতিবেদনে। আমরা সোচ্চার হয়েছি বিচারের দাবিতে। তার পরও থেমে নেই এমন ঘটনা। কিন্তু কেনো ঘটছে এমন ঘটনা?
এর পর পর প্রায় চারটা ঘটনা ঘটলো, কাউকে ডাকাত বানিয়ে, কউকে চুর বানিয়ে। মাছ চুরির দায়ে তুলে নেয়া হলো চোখ, এবং হত্যা করা হলো একটি ১১ বছরের শিশুকে, নিশ্চয় সেও বাঁচার জন্য চিতকার করে সাহায্য চেয়েচে, কিন্তু ঘটনার ভিডিও ফোটেজ নাই তাই হয়তো আমরা রাজনের মত বেদনাটা বুকে উপলব্ধি করছিনা।
একজন মহিলাকে পেটালো তার গ্রামের সব গন্যমান্য বেক্তিরা। এক চেয়ারম্যান তাকে ভোট না দেয়ার অপরাধে স্ত্রী এবং শিশু কন্যার সামনে পেটালো তার বাবাকে। এই সবই নির্মমতার জঘন্য পর্যায়। কখনো আমরা ক্ষমতার অপব্যাবহার করছি আর কখনো সুযোগ পেলেই আাইনকে তোলেনিচ্ছি নিজের হাতে। এমন সব সময়ই ঘটতো, রাজনে ঘটনার পর এইসব ফোকাসে আসছে আর আমরা চিন্তে পারছি আমাদের মানবীক মূল্যবোধ কী জঘন্য, কিন্তু কেনো?
একটু ঘাটাযাক কী তার কারণ:
আমরা সাধারণত যা দেখি তা হলো আমাদের দেশে কোন ঘটনা ঘটলে যে কোন কারনেই তার কোন বিচার হয়না বা বিচারের দীর্ঘসুত্রীতার কারনে এর যে একটা আবেদন তা আর আমাদের মাঝে কাজ করেনা। তাই--- আমাদের মঝে দুইটা জিনিস কাজ করছে, এক, আমরা ভাবছি বিচার নিজেদেরকেই করতে হবে আদালত বিচার করবেনা। দুই আমরা জানি আমাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে যদি আমরা যা ইচ্ছা তাই করি তাতে কিছুই হবেনা। কারণ আমাদের আদালত আছে ঘুমিযে। সরকার আছে ক্ষমার হাত বাড়িয়ে, খাল সঠি তুলসি গাছ চিনে জল ঢালতে হবে।
আর একটি বিষয় বলতেই হয়, কারণ অনেক ক্ষেত্রে ধর্মের দুহাই দিয়েও নির্যাতন করা হয়। এর কারণ ধর্মীয় বিধি বিধান না জেনে মানা এবং যতটুকু জানি তার চাইতে বেশি পালন করতে চেষ্টা করা।
এই ব্যপার টা একটু ব্যাখ্যার দাবি রাখে। প্রত্যেকটা ধর্মেই জীবনের জন্য সুন্দর ব্যবস্থা প্রদান করা আছে, অপরাধ এবং সাজার ব্যপারে আছে সুস্পষ্ট বিধান। আমরা খুব বেশি ধর্ম মানি, কিন্তু সে অনুপাতে জানিনা। নাজেনেই আমরা ধর্ম মানি। উদাহরণ সামনেই আছে, রাজন। রাজনকে নির্যাতন করা হয় কতিথ চুরির অপরাধে। কিন্তু অপরাধ প্রমাণিত নয়। ধর্মে চুরির অপরাধ কঠিন সাজা, তাই আমরা ভাবি চুরতেই ত সাজা দিচ্ছি, এটিত ধর্মেরই বিধান, পাপতো আমাদের হবেনা, বরং একটি পাপের বিচার করছ সেখানে বরং পুন্যই হবে। তাই আমাদের মাঝে সহ মর্মিতার কোন ছাপ থাকেনা। খালি জানি চুরের সাজা হাত কাটো। কিন্তু সেটি কী রকম এবং কখন প্রযোয্য তা আমরা জানিনা, এবং যারা জানে তারা মনেহয় মান্তে চায়না। কিন্তু ধর্মীয় সাজা কেউকে দিতে হলে সেই সাজা সে পাবে না আমরা পাব সেটিই হচ্ছে মূল বিবেচনার বিষয়।
ধরলাম একটি শিশুর অপরাধ প্রমাণিত, কিন্তু আমরা কি জানি কোন শিশুকে সাজাদেবার একতিয়ার ধর্মে আমাদের দেয়কিনা? অর্থাত একটা সমাজে কে একজন অপরাধীকে সাজা দেবে। ইসলাম শাসন ব্যবস্থায় সাজা দেবার এখতিয়ার কেবল কাজির জন্য সংরক্ষিত। মানে মনোনিত বিচারক। রাষ্ট ব্যবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালিত আদালত। এছাড়া আর কোন ব্যক্তি সাজা দেবার একতিয়ার রাখে না। হাতে নাতে কোন চুর ধরলেও তাকে সাজাদেবার এখতিয়ার কোন সাধারণ জনগনের হাতে নাই। কেবল মাত্র আদালতই পারে সেই সাজা দিতে।
আর তাছাড়া নির্দোষ প্রমানিত কোন ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ সাজা দিতে পারেনা কোন অপরাধীকে। : একবার একজন অপরাদীকে পাথর মারা হবে। সবাই পাথর নিযে তৈরি, কিন্তু সবাই অপেক্ষায় কখন পাথর মারার অনুমতি দেয়া হবে। ঠিক তখন, ইসা আলাইহিস সালাম ঘোষনা করলেন তোমাদের মাঝে যে কোন পাপ করোনি সে প্রথম পাথরটি মারবে। কিন্তু নির্দূষ কোন লোক পাওয়া গেলোনা। তাই আর সেই পাথর মারা আর হলোনা।
আমরা যারা নিজেদের মুসলমান দাবি করি, এবং সুযোগসন্ধানি সাজাবাজ, বিভিন্ন বিভিন্ন অজোহাতে মানুষকে সাজা দিতে ততপর তাদের ইসলাম ধর্মের আর একটি বিধান সম্পর্কে জানা দরকার। সেটি হলো আপনি যখন কাউকে সাজাদিতে যাবেন তখন অপরাধী যে অপরাধ করেছে সেটির উতসমূল কী, অর্থাত সে অপরাধটি কেনো করেছে সেটি জেনে নিতে হবে। তা ছাড়া একজনকে যাচাই বাছাই ছাড়া সাজা দেয়া বৈধ নয়। কারণ কাজটা সে করলেও পাপটা অণ্যের ঘাড়ে বর্তাতে পারে, এমনকি আপনার নিজের ঘাড়েও।
যেমন রাজন যদি চুরি করেও থাকে তবে সে অপরাধের সাজা সে একা পাবেকেনো? তার দায়ভাড় আমাদের পুড়া সমাজের কারণ রাজনের মত হাজার হাজার ছেলে মেয়ে আছে আমাদের সামাজিক অবহেলা তাদেরকে বিভিন্ন অপরাধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, এবং তাদের অপরাধের দায়ভার সমস্তটাই আমাদের।
নবীকরিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম বলেছে তোমরা বিভিন্ন ব্যপারে মধ্য পন্থা অবলম্বন করো। কখনোই প্রয়োজনের অধিক কঠোর হইওনা। আমরা সব সময় থাকি কঠোর অবস্থানে, কখনোই মধ্য পন্থা অবলম্বন করিনা।
বাদশা হারুনুর রশিদের আমলের একটি বিচারের ঘটনা প্রায় সাবারই জানা। সেটি হলো, একজন বুড়ি এক রুটির দোকান থেকে রুটি চুরি করে ছিলো। বুড়ির বিচার হবে, যে কোন কারনে বিচার সভার বিচারক বাদশা নিজে। কেউ বাদশাকে চিনতে পরছেনা। বিচার শুরু হলো বাদশা বুড়িকে ঘটনার সত্যতা জিজ্ঞাসা করলে বুড়ি চুরির অপরাধ স্বিকার করে এবং বলেন যে সে তিন দিন যাবত উপোস, যে কারণে সে চুরি করতে বাদ্য হয়েছে। বাদশা সব শুনে রাজ্যের গভর্নরকে ডাকলেন ডাকলেন সকর ধনি ব্যক্তিকে।
বিচারক তার রাই প্রদান করলেন, বুড়ি হিসাবে তাহার হাত টাকা মাফ করা হলো, কিন্তু সে যেহেতো চুরি করেছে তাই তার সাজা হিসাবে ৮০ টা বেত্রাঘাত তার উপর দার্য করা হলো। কিন্তু সেই বেত্রাঘাত থেকে ২০ টি পাবে রাজ্যের গভর্নর, কারণ তার রাজ্যের একজন মানুষ ৩ দিন না খেয়ে আছে এটি তার ব্যর্থতা। ২০টি পাবে সেনা প্রধান কারন এই ব্যর্থতার দায় তারও প্রাপ্য। ২০ টি পাবে মালখানার প্রধান কারণ মালখানার দায়ীত্বে থাকার পরও সে এই উপবাসি বৃদ্ধার কোন খোজ নেয়নাই। আর আমি বাদশার পক্ষ থেকে ২০টি বেত্রাঘাত গ্রহন করালাম, কারণ বাদশার রাজ্যে একজন মানুষ/ প্রজা না খেয়ে থাকবে আর তার দায় বাদশা নেবেনা তাহ হবেনা্!!!
এটিই হলো ইসলামের বিচার।
মানুষ জন্ম থেকে অপরাধ প্রবণ। জবাব দিহিতা না থাকেলে মানুষের অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যায়। বাংলাদেশের তো রাষ্টীয় জবাব দিহিতা বলতে আর অবশিষ্ট কিছুই নাই।
কিন্তু আমরা যারা বিভিন্ন ধর্ম মানি আমরা তো বিশ্বাস করি যে আল্লাহ পাক এর কাছে আমাদের একদিন জবাব দিহি করতে হবে। তবে আমরাও কেনো এইসকর নৃশংস কাজ কর্মে জড়িতো?
সাত কোটি বাংগালির হে মুদ্ধ জননী
জনম দিয়েছো ঠিক মানুষ করোনি।
কেনো রবীন্দ্রনাথ এই কথা বলেছিলো তা ওনিই ভালো জানেন তবে আমরা যে আজও মানুষ হয়নি তা হয়তো রবীন্দ্রনাথ জানেনা।
আমাদের কে যা জান্তে হবে এবং অন্যদের কে জানাতে হবে।
== অন্যের মন বেদনা এবং মর্ম উপলব্ধি করা জান্তে হবে। তাহলেই আমরা নির্যাতিত ’রাজন’দেন আহাজারি উপলব্ধি করতে পারবো। এর জন্য দরকার উচ্চশিক্ষা নয়, সুশিক্ষা।
== অপরাধের মূল উদ্ধাটনের মত জ্ঞান এবং দক্ষতা তাকা। নাহলে কোন অপরাধের সঠিক বিচার পাবেনা।
দন্ডিতের সাথে দন্ডদাতা কাঁদেজবে সর্ব শ্রেষ্ঠ সে বিচার। আমাদের মনে রাখতে হবে বিচার এবং নির্যাতন এক না।
©somewhere in net ltd.