![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলা ও হিন্দি বর্ণমালার তুলনামূলক পর্যালোচনা। আজকে আমি এ নিয়ে কিছু আলোচনা করবো। আমাদের মাতৃভাষা বাংলা যেটার উদ্ভব হয়েছে সংস্কৃত থেকে আর আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের প্রধান ভাষা হচ্ছে হিন্দি যেটার উদ্ভব সংস্কৃত থেকে কিন্তু লেখা হয় দেবনাগরী অক্ষরে। সেটাকে আমরা এই প্রবন্ধে হিন্দি বর্ণমালা বলবো। তবে হিন্দি আর উর্দুর মধ্যে একটা পার্থক্য রয়েছে সেটা হচ্ছে উর্দু লেখা হয় ফার্সি বর্ণমালায় এবং তার মধ্যে ফার্সি ও আরবি শব্দ বেশি। পক্ষান্তরে হিন্দি লেখা হয় দেবনাগরী অক্ষরে এবং তাতে সংস্কৃত শব্দ বেশি। তারপরেও খুব উচ্চাঙ্গের কিছু আরবি শব্দ ব্যাবহার করা হয়। ভারতের বর্তমান এই ধরণের একটা লক্ষ্য আছে যেন হিন্দি ভাষায় সংস্কৃত শব্দ বেশি ব্যাবহার হয়। ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে একমাত্র উত্তরাখণ্ডের সরকারি ভাষা হচ্ছে সংস্কৃত। এখানে একটা কথা, আমাদের দেশের অনেক বুদ্ধিজীবীরা এ মর্মে আশংকা প্রকাশ করেন যে, আমাদের তরুণ প্রজন্ম হিন্দি বলতে পছন্দ করে, যার দ্বারা বাংলা ভাষা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। আমার মতামত হচ্ছে, চিন্তার কোন কারণ নেই, হিন্দি ভাষাই ক্রমশ বাংলা ভাষার মত হয়ে যাচ্ছে সংস্কৃত শব্দ অধিক ব্যাবহার করার কারণে। হিন্দি পত্রিকায় আওর এর বদলে ‘এবং’ পর্যন্ত ব্যাবহার হতে দেখেছি। আর কি চাই! হিন্দি পত্রিকায় সংস্কৃত হিসেবে লেখে নরেংদ্র মোদী। আজকে আমার আলোচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে হিন্দি বর্ণমালা যা বাংলার মতই। আমাদের দেশের প্রচুর মানুষ প্রতি বছর ভারত যায়। কাজেই আপনার যদি হিন্দি বর্ণমালাটা আয়ত্ত থাকে তাহলে আপনার সুবিধা হবে। যদিও সব জায়গায় ইংরেজিতে নির্দেশনা থাকে। কিন্তু আপনি একটা ভাষা পারেন, এটাতো কোন দোষ না বরং গুণই তাইনা। যাই হোক আমি অক্ষরগুলো দেখাচ্ছি।
अ-অ आ-আ इ-ই ई-ঈ उ-উ ऊ-ঊ ऋ-ঋ ए-এ ऐ-ঐ ओ-ও औ-ঔ अ ं-ং अः-ঃ
क-ক ख-খ ग-গ घ-ঘ ङ-ঙ च-চ छ-ছ ज-জ झ-ঝ ञ-ঞ ट-ট ठ-ঠ ड-ড ढ-ঢ ण-ণ त-ত थ-থ द-দ ध-ধ न-ন प-প फ-ফ ब-ভ भ-ভ म-ম य-য় र-র ल-ল व-ব श-শ ष-ষ स-স ह-হ
प-প पा-পা िप-পি पी-পী प ु-পু प ू-পূ प ृ-প্র प े-পে प ै-প্যা,পৈ पो-পো पौ-পৌ प ं-পং पः-পঃ पा
०-০ १-১ २-২ ३-৩ ४-৪ ५-৫ ६-৬ ७-৭ ८-৮ ९-৯
এছাড়া ‘ক্ষ’ ও অন্যান্য অক্ষরগুলো রয়েছে সাপোর্ট না করার কারণে দেখাতে পারলামনা। এবার কিছু অক্ষর নিয়ে আলোচনা করি। হিন্দিতে ‘য়’ এর মধ্যে ফোঁটা নেই। যেটা দেখতে আমাদের ‘য’ এর মতো। এখন কোন বাঙ্গালি যদি না জেনে হিন্দি পড়ার চেষ্টা করে, তাহলে সে ‘য়’ কে ‘য’ পড়বে। এই কারণে কিনা জানিনা হিন্দি যে শব্দেই ‘য়’ ব্যাবহার করা হয়েছে বাংলায় সে শব্দে ‘য’ ব্যাবহার করা হয়েছে। যেমন তারা বলে য়ামুনা, আমরা বলি যমুনা। তারা বলে য়ুবরাজ আমরা বলি যুবরাজ। অবশ্য বাংলাদেশেও যারা পত্রিকা পড়েনা শুধু অনলাইন মিডিয়া ও টিভিতে চোখ রাখে তারা বলে য়ুভরাজ সিং। হিন্দিতে শুধু ‘য’ ফলা এর ব্যাবহার নেই বরং সে স্থানে ‘য়’ ব্যাবহার করে। যেমন আমরা বলি অযোধ্যা, ওরা বলে অয়োধয়া। আমরা বলি রাজ্য আর ওরা বলে রাজয়। তবে ‘য’ ফলা+া কার এর ব্যাবহার আছে। যেমন पै-প্যা, তবে হিন্দিতে ‘ৈ’ কার নেই। যার কারণে তারা ক্যামেরা আর কৈলাশ একইভাবে লেখে তবে তারা উচ্চারনে পার্থক্য কিভাবে করে তা জানিনা। যুক্তাক্ষরের ব্যাপারটা একটু চেষ্টা করে বুঝে নিতে হবে। আর দুটি অক্ষরের ব্যাবহার বুঝে উঠতে পারিনি। অক্ষর দুটি হচ্ছে ब ও भ দুটির উচ্চারণই ‘ভ’ তবে পার্থক্য করা হয় এভাবে যে, ‘ব’ এর মতো দেখতে অক্ষর বিশিষ্ট শব্দকে ইংরেজিতে ‘ভি’ দ্বারা লেখা হয়। যেমন ইংরেজিতে ‘ভি’ দ্বারা লেখা হয় ভিশাখাপত্তম, কিন্তু ঐ অক্ষরের ক্ষেত্রে বাংলায় ‘ব’ ব্যাবহার করা হয়। যেমন লেখা হয় বিশাখাপত্তম। আর ম এর মতো দেখতে ‘ভ’ কে ইংরেজিতে লেখার সময় ‘বি এইচ’ ব্যাবহার করা হয় যেমন ভারত। এ অক্ষরটার ক্ষেত্রে বাংলায় লেখার সময় ‘ভ’ ব্যাবহার করা হয়। আর হিন্দি ‘জ’ এর ক্ষেত্রে কখনো ফোটা ব্যাবহার করা হয় আবার কোনো কোনো স্থানে ব্যাবহার করা হয়না। এ ব্যাপারটা বুঝে উঠতে পারিনি। ভিসাকে অনেকে ভিজা বলে থাকেন, কিন্তু ভারতীয়রা হিন্দিতে লেখেন বীজা। আসামের ভাষা হচ্ছে অহমীয়া যেটা শুনতে অনেকটা সিলেটের ভাষার মতো। বর্ণমালাও একই তবে দুটো অক্ষর ভিন্ন। তারা ‘র’ এর বদলে ‘ৰ’ ও ‘ষ’ এর বদলে ‘ৱ’ ব্যাবহার করে। এছাড়া উত্তর ভারতের অন্যান্য ভাষা যেমন পাঞ্জাবি, মারাঠি, গুজরাটি ও উড়িয়ার বর্ণমালা হিন্দি বর্ণমালার কাছাকাছি। কিন্তু দক্ষিন ভারতের ভাষা তামিল, তেলেগু, কানাড়ি ও মালায়লাম এর বর্ণমালা সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের।
বিঃ দ্রঃ লেখাটা আমার ব্যাক্তিগত অনুসন্ধাননির্ভর। বাস্তবে এর থেকে ভিন্ন হতে পারে।
©somewhere in net ltd.