নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খিলাফতের স্বপ্ন দেখি । মুক্তির এক পথ ইসলামী খিলাফত ।
ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খিলজি ১২০৪ সালে বাংলা বিজয় করার পর এ বাংলায় মুসলিম শাসন ৫৫০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়, যা শেষ হয় ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজ উদ্দৌলার পরাজয়ের মাধ্যমে । এ দীর্ঘ সময়ে বাংলায় মুসলিম শাসক গন বিচক্ষণতার সাথে শাসন কার্য পরিচালনা করেছিলেন । যাদের মধ্যে রয়েছে শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ, গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ,আলাউদ্দিন হোসেন শাহ, নাসিরউদ্দিন নুসরাত শাহ, শের শাহ সুরি, মুর্শিদ কুলি খান ।
শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহের সময়ে বাংলায় প্রশাসনিক এবং বাংলার শাসন ব্যবস্থার ব্যপক উন্নয়ন হয় । তিনি বাংলায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রাজস্ব সংগ্রহের কার্যকর ব্যবস্থা চালু করেন । তবে এ রাজস্ব কখনই বাংলার কৃষকদের জন্য অসহনীয় ছিল না । জনগনের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী গঠন করেন । ফলে সহজেই তিনি জনগনের মন জয় করে নেন এবং মানুষের মাঝে শান্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসেন ।
আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এবং মুর্শিদ কুলি খান বাংলায় কৃষি ও বাণিজ্য প্রসারে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করেন । বাংলায় মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল একথা শাসকগন ভালভাবেই জানতেন তাই তারা কৃষকের কথা ভেবে সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন করার জন্য খাল এবং নদী খনন করেন । তারা কর ব্যবস্থা সহজ করেন যাতে কৃষকেরা কৃষি উৎপাদন আরো বাড়াতে উতসাহী হন । শের শাহ সুরি সড়ক নির্মান করে বানিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব আনেন । তার নির্মিত গ্রান্ড ট্রাংক রোড জনগনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সুফল বয়ে আনে । এসময়ে ডাকব্যবস্থার চালু করা হয় এবং সরাইখানা প্রতিষ্ঠা করা হয় ।
আলাউদ্দিন হোসেন শাহ হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি করেন । তার সময়ে তিনি হিন্দুদের গুরুপুর্ন দায়িত্বে নিয়োগ করেন ।
শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসারে কাজ করেন গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ এবং অন্যান্যরা, তাদের সময়ে এসবের ব্যাপক উন্নয়ন হয় । এসময়ে মসজিদ, মাদরাসা এবং নির্মান করা হয় । আজম শাহ পারস্যের বিখ্যাত কবি হাফিজকে বাংলায় আমন্ত্রণ জানান । সাহিত্য এবং আরবি, ফারসি ও বাংলা ভাষার প্রসার ঘটান ।
আর আমরা মুঘল সম্রাজ্যের শাসকগন বা শায়েস্তা খা এর কথা তো সবাই জানি । আশা করছি নতুন করে তাদের সম্পর্কে কিছু বলতে হবে । কিন্তু হায় হয়ত ভবিষ্যতে ইংরেজদের গোলাম খাটাশ এলিট শ্রেনী ( ইংরেজদের গোলাম ) ও গোড়া হিন্দু দের জন্য তারা আমাদের কাছে অপরিচিত হয়ে যাবে ।
প্রত্যেক মুসলিম শাসক বাংলার জনগনের কথা ভেবে জনগনের জন্য যথাসাধ্য উন্নয়নের চেষ্টা করে গেছেন । এসময়ে বাংলা এতটাই উন্নত হয় যে বিদেশী বনিকরা বাংলায় বাণিজ্য করার জন্য আসত । বাংলার বিখ্যাত মসলিন কাপড় এ সময়েই তৈরি করা হত । এ বাংলায় প্রথম দিকে পর্তুগিজরা বানিজ্য করার পর ইংরেজরা মুসলিম শাসকের অধীনে কিছু বেতনে চাকরি করার জন্য এসেছিল । কিন্তু হায় বর্তমানে আমাদের এমন অবস্থা আমরা ইংরেজদের কাছে চাকরি ভিখারি । হায়, সেসব শাসক যদি আমাদের বর্তমান অবস্থান জানত তাহলে কি করত আমি জানিনা । যা তাদের ও আমাদের জন্য অন্ত্যান্ত লজ্জাজনক ।
যাইহোক কালের পরিক্রমায় ১৬১৫ সালে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর ইংরেজদের বাণিজ্য করার জন্য অনুমতি দেন । ফলে তারা বাংলার বিভিন্ন বন্দরে বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করে ।
কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য বাণিজ্য ছিল না । তাদের লোভের চোখ ছিল আমাদের উন্নত সমৃদ্ধ অর্থনীতির দিকে । আমাদের সহজ সরল মানুষদের গোলাম বানানোর তাগিদে তারা ছিল বদ্ধপরিকর ।
সেই থেকে আমাদের পায়ে পরল গোলামীর জিঞ্জীর ।
চলবে ..................
©somewhere in net ltd.