নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রিয় মানুষেরা

জীবনের এই গতিপথ...পূর্ব-পশ্চিমে যেন এক নিছক অন্বেষণ

আরাফাত৫২৯

দূর থেকে দূরে, আরো বহুদূর......... চলে যেতে হয়, কত স্মৃতির ছায়ায়, এই রোদ্দুরের নীচে, নীল সবুজের খেলাঘরে জীবন মেতে থাকে কত নিয়মের প্রতীক্ষায়...

আরাফাত৫২৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার ইসরাইল আর প্যালেস্টাইনি নিয়ে অভিজ্ঞতা

০৯ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:২৪

বাংলাদেশের জন্য খুবই সেনসেটিভ ইস্যু। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ খুব ইমোশোনাল এবং বাংলাদেশ বলয়ের বাহিরে তেমন অভিজ্ঞতা রাখেন না। তাই আমার নিজের কিছু অভিজ্ঞতা এই বিষয়ে শেয়ার করলাম। যে কেউ আমার সাথে ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন। কিন্তু মাথায় রাখবেন, এইখানে আমি আমার নিজের কোন মতামত দেইনি। শুধুমাত্র, আমার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছি। যারা শুধুমাত্র বাংলাদেশ বলয়ের ভিতরে থাকেন, তাদের মতের সাথে পুরোপুরি না মিললেও নতুন চিন্তার খোরাক পেতে পারেন।

১/
মালয়শিয়ায় থাকার প্রথমদিককার সময়ে সেই ২০০৮ সালে আমাদের বাধ্যতামূলকভাবে মালয়শিয়া ভাষাশিক্ষা কোর্স করতে হত। ইউনিভার্সিটি সেই কোর্সটা ফ্রি অফার করত। ইউনিভার্সিটির যুক্তি এমন ছিল যে আমি মালয়শিয়াতে লেখাপড়া করলাম, কিন্তু মালয়শিয়ার কৃষ্টি-কালচার সম্পর্কে কিছুই জানলাম না তাহলে তো ব্যাপারটা কেমন যেন বেখাপ্পা হয়ে যায়। আমার যদি মালয়শিয়াতে দুই-চারটা বন্ধু-বান্ধব না থাকে তাহলে দেশে গিয়ে আমি কি গল্প করব? অথবা আমি যদি অন্য কোন দেশে গিয়ে থিতু হই, তাহলে আমি যেন একটু হলেও মালয়শিয়াকে রিপ্রেজেন্ট করতে পারি।

আমার মত অনেক বিদেশীরা মালয়শিয়ায় এসে ফ্রি পড়ালেখা করে, থাকা-খাওয়ার জন্য একটা ভালো অংকের টাকা মাস শেষে ব্যাংকের একাউন্টে চলে আসে। এর বিনিময়ে মালয়শিয়া কি পাবে? মালয়শিয়া যেটা পাবে সেটা হল একটা ‘গুড ইমেজ’। এটা আসলে মালয়শিয়ার নিজের দেশের ব্রান্ডিং তৈরি করার এক প্রকার ইনভেস্ট। মালয়শিয়া চায় এইসব বিদেশীরা একদিন নিজ দেশ অথবা অন্য কোথাও চলে গেলেও যেন মালয়শিয়ার জন্য একটা সফট-কর্নার নিজের ভিতর রেখে দেয়। সুদে-আসলে এই ইনভেস্ট একদিন বিশাল পরিমাণে মালয়শিয়ায় ফিরে আসবে – এটাই ওদের আশা। এই জন্যই ভাষাশিক্ষা কোর্সটা সব বিদেশীকে করতে হত যাতে তারা মালয়শিয়ার মূল-স্রোত কিছুটা হলেও ধরতে পারে।

আমাদের ভাষাশিক্ষা ক্লাসে হরেক রকমের ছেলে-মেয়ে ছিল। সবার কালচারাল ব্যাকগ্রাউন্ড আলাদা। একেকজন এক ডিসিপ্লিন থেকে এসেছে। এক কোর্সের শিক্ষক ছাড়া কোন মালয়শিয়ান ক্লাসে ছিল না।

আমাদের ক্লাসে জ্যাকব নামে জার্মানির একটা ছেলে ছিল। সে উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে মাস্টার্স করতে মালয়শিয়া এসেছিল। তাকে একবার বলছিলাম, জার্মানির মত একটা উন্নত দেশের শিক্ষা ছেড়ে সে কেন মালয়শিয়া এসেছে? তার উত্তর ছিল, জার্মানীর অর্থনীতি অলরেডি অনেক উন্নত এবং সাসটেইনেবল। সেখানে আসলে শেখার তেমন কিছুই নাই। অন্যদিকে মালয়শিয়ার মত দেশগুলো তখন তরতর করে উন্নতি করছিল। এই অর্থনৈতিক ট্রানজিশনটা ছিল জ্যাকবের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। সেই কারণেই সে মালয়শিয়ায় পড়তে এসেছিল। তার আগ্রহের কারণেই সে মালয়শিয়া ছাড়াও সে অনান্য মধ্যম আয়ের দেশ ভ্রমণ করেছে। এমনকি, সে নাকি একবার বাংলাদেশে এসেও কয়েক মাস ছিল।

আমি জানতাম জ্যাকব একজন ইহুদী। সেই সময়ে বাংলাদেশের পাসপোর্টে পরিস্কারভাবে লেখা ছিল যে, ইসরাইলের দরজা আমাদের জন্য এবং বাংলাদেশিদের দরজা ইসরাইলিদের জন্য বন্ধ। কেন জানি ২০০৮ সালের আগে আমার মাথাতে কখনো আসেনি যে ইসরাইলের জন্য বাংলাদেশের দরজা বন্ধ হলেও ইহুদীদের জন্য দরজা আসলে বন্ধ না। ইহুদীরা তো পৃথিবীর অনেক দেশেই আছে এবং তাদের পাসপোর্ট ইসরাইলি না। সেই দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে তো তারা চাইলেই বাংলাদেশে আসতে পারে। জ্যাকব তার জার্মানির পাসপোর্ট ব্যাবহার করে বাংলাদেশে এসেছিল এবং কোন সমস্যা ছাড়াই বাংলাদেশে অবস্থান করেছিল। পরে জেনেছিলাম, আমাদের দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়া ডেভিড বার্গম্যানও একজন ইহুদী ছিলেন। উনার বৃটিশ পাসপোর্টের কারণে বাংলাদেশে আসতে এবং উনার গাওয়া সাফাই নিতে বাংলাদেশের তথাকথিত ইসলামিক দলগুলোর তো কখনো কোন সমস্যা হয়নি।

আরো অবাক হয়ে পরে জেনেছিলাম যে ইসরাইলে অনেক মুসলিম আছে, অনেকে সেখানে চাকরিও করে। কিন্তু ইসরাইলি মুসলিমরা চাইলেও বাংলাদেশে আসতে পারে না শুধুমাত্র ইসরাইলি পাসপোর্ট থাকার কারণে। বাংলাদেশে ইসরাইলি পার্সপোর্ট ব্যান থাকার কারণে আসলে অনেক মুসলিমও বাংলাদেশে চাইলেও আসতে পারত না। সম্ভবত, ‘নাস ডেইলি’ বাংলাদেশে আসতে চেয়েও আসতে পারে নাই ওর ইসরাইলি পাসপোর্টের কারণে। আদতে সে কিন্তু জন্মসূত্রে একজন মুসলিম।

অন্যদিকে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ইহুদী কিন্তু ইসরাইলে থাকে না। সবচেয়ে বেশি ইহুদী থাকে আমেরিকাতে। পরিসখ্যান দেখতে চাইলে উইকিপিডিয়া ঘাটতে পারেন। আর ইসরাইল-প্যালেস্টাইন ইস্যুর মূল কারিগর কিন্তু আমেরিকাই। পারবেন আমেরিকার ভিসা ঠেকাইতে?

নাকি উল্টো ভিসা স্যাংশন খেয়ে নিজেই ভিসার জন্য কান্নাকাটি করছেন।

২/
একবার এক প্যালেস্টাইনি পরিবারের সাথে পরিচয় হয়েছিল। ওরা মালয়শিয়াতে থাকত। প্রথমবার যখন ওদের বাসাতে গিয়েছিলাম তখন তাদের বাসার চাকচিক্য দেখে আমি রীতিমত থতমত খেয়ে গিয়েছিলাম। এর ঘটনার আগ পর্যন্ত আমার মনে ফিলিস্তীনি মানুষ সম্পর্কে ধারণা এমন ছিল যে, যুদ্ধবিধ্বস্ত হবার কারণে ফিলিস্তিনের সবাই বেশ গরীব। কিন্তু সেই বাড়ির কর্তা আমাকে অবাক করে দিয়ে বলেছিল, ইসরাইলিরা নাকি অতটা বর্বর না যতটা মিডিয়াতে আসে। উনি আমাকে উপদেশ দিয়েছিলেন যে মিডিয়াতে যা আসে তার সব বিশ্বাস না করতে।

তখন প্রথম জেনেছিলাম যে, প্যালেস্টাইন আসলে দুইটা ভাগে বিভক্ত। একটা পশ্চিম তীর আর আরেকটা গাজা। পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা বেশ স্বাধীণতা উপভোগ করে এবং সেখানে কিন্তু এইসব হামলা-মামলা হয় না। মূলত ফিলিস্তিনে সকল হামলা হয় গাজাতে, যেটা মূলত হামাসের আস্তানা। খুব অবাক হয়ে জেনেছিলাম যে পশ্চিম তীরে বসবাস করা ফিলিস্তিনিদের এক বিশাল অংশ এবং ইসরাইলে থাকা অনেক মুসলিম আসলে মনে-প্রাণে ইসরাইলের পক্ষে।

সেই মনে-প্রাণে আসলে কতটা পক্ষে সেটা বাংলাদেশে বসে আপনার পক্ষে চিন্তা করার ধারণারও বাহিরে। জানি কথাটা হজম করা অনেক কষ্টের। আমার কথা বিশ্বাস না হলে পশ্চিম তীরে বসবাস করা বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনির সাথে কথা বলে দেখেন। দেখবেন, বেশিরভাগের কথার ধরণ আপনার মতের সাথে মিলবে না। মানতে কষ্ট হলেও এটা সত্য। এটা বুঝতে হলে আপনাকে বাংলাদেশের বলয়ের বাহিরে এসে মানুষের সাথে কথা বলতে হবে।

৩/
২০১২ সালের দিকে ইউনিভার্সিটি অব মালায়ায় একটা কোর্সের কো-অর্ডিনেটর ছিলাম। সেখানে আমার এক ফিলিস্তীনি ছাত্র ছিল যে কিনা গাজা থেকে এসেছিল। খুবই অমায়িক এবং মোটাসোটা সেই ছেলেটাকে দেখলে খুবই ভালো মানুষ মনে হত। সে আমাকে খুব পছন্দ করত, এমনকি সে এখনো আমার ফেসবুকে ফ্রেন্ড হিসাবে আছে। ওর সাথে আমার কিছু ছবিও আছে। সংগত কারণেই তার নাম বলছি না। নিজের নিরাপত্তার কারণে সেই ছবিও পাবলিশ করছি না।

২০১৮ সালে যখন দেশে ছিলাম তখন হঠাৎ বাংলাদেশের এক পত্রিকায় ওর ছবি দেখি। কুয়ালালামপুরে তার নিজের বাসার কাছের এক মসজিদে ফজরের নামায পড়তে যাবার সময় দুইজন লোক মোটরসাইকেলে চেপে এসে তাকে গুলি করে ঝাঁঝড়া করে দিয়েছিল। সে সেখানেই মারা যায়। আমি এই খবর পড়ে এতটাই হতভম্ব ও বিচলিত হয়ে গিয়েছিলাম যে নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। পরে ওর ফেসবুকে গিয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হই।

পরে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি যে আমার ছাত্রটি নাকি হামাসের এক বড় নেতা ছিল যেটা ওর চালচলন আর কথাবার্তায় আমি ঘূর্ণাক্ষরেও কল্পনা করি নাই। সে ড্রোন বিষয়ক টেকনোলজিতে বিশেষ পারদর্শী ছিল। কোন কারণে কোন এক বিশেষ মহল তাকে বিপদজনক মনে করায় তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে হয়েছিল। মালয়শিয়ান সরকার চাইলেও এই খুনের কোন সুরাহা করতে পারে নাই। তারা শুধুমাত্র ‘বিশেষ বিদেশী শক্তির কাজ’ বলে বিবৃতি দিয়েছিল।

ব্যাপারটা বুঝতে হবে। আশাকরি, আপনারাও বুঝতে পারছেন।

৪/
২০১৯ সালে যখন আবার মালয়শিয়ার ফিরে আসি তখন আবার একই কোর্সের টিউটর ছিলাম। সেই সময় আরেক ফিলিস্তীনি ছেলে আমার ছাত্র ছিল। একদিন ক্লাশ শেষে কথা প্রসঙ্গে সে বলে যে তার কোন পাসপোর্ট নাই। মালয়শিয়ায় তারা একটা বিশেষ ডকুমেন্ট দেখিয়ে অবস্থান করে। মালয়শিয়ান সরকার ফিলিস্তীনিদের জন্য এই সুবিধা বহাল রেখেছে যাতে তারা এই দেশে এসে পড়াশোনা করতে পারে।

সেই ছেলের পরিবারসহ সবাই সৌদি আরবে শরনার্থী। সে কোনদিন ফিলিস্তীনে যায় নি। আমার পাসপোর্টে ‘ইসরাইলের জন্য দরজা বন্ধ’ লেখা দেখে সে একেবারে কেঁদে দিয়েছিল। সে নাকি বাংলাদেশের এই উদারতার ব্যাপারটা জানত না। এবং এটা জানার পর বাংলাদেশ নাকি তার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশে পরিণত হয়েছিল।

অবশ্য শুনলাম, আমাদের নতুন পাসপোর্টে এই লেখাটি নাকি পরিমার্জন করা হয়েছে।

৫/
এবার একটু অন্য কয়েকটা দেশ নিয়ে কথা বলি।

আমার একেবারে কাছের এক লিবিয়ান বন্ধুর নাম মাহের। মাহেরের আর তার এক সিরিয়ান বন্ধুর সাথে একদিন কথা প্রসংগে আমি বলছিলাম, “গাদ্দাফিতো লিবিয়ার মানুষের জন্য অনেক কিছু করেছে।”

সাথে সাথে মাহের আর তার সিরিয়ান বন্ধু “রা-রা” করে উঠে। সে বলেছিল, লিবিয়াতে অথবা লিবিয়ার বাহিরেরও গাদ্দাফির বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। চারিদিকে নাকি গাদ্দাফির চর বসে থাকে। এমনকি নিজের একান্ত বন্ধুর সাথেও গাদ্দাফির বিরুদ্ধে কিছু বললে পরেরদিন তাকে আর তার পরিবারের কাউকে খুঁজে না পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেই সময় গাদ্দাফি বেঁচে ছিলেন।

মাহের আর তার সিরিয়ান বন্ধু আমাকে আরো বলেছিল, গাদ্দাফি আর আব্বাসী লিবিয়া ও সিরিয়ার এমন অবস্থা করেছিল যে ওদের বিরুদ্ধে যদি খোদ শয়তানও ভোটে দাঁড়াত, তাহলে মানুষ শয়তানকে ভোট দিত। আমেরিকা কেন সুযোগ নিতে পারছিল ব্যাপারটা হয়ত এখানে থেকে আঁচ করা যেতে পারে। আর লিবিয়া অথবা সিরিয়ার কেউ এমন কথা বলতে পারে সেটা অনেকের জন্য অবাক হবার কারণ হলেও এটাই বাস্তবতা। বাংলাদেশে বসে ফেসবুকের আবেগী পোস্ট দেখে চোখ ভাসালে হবে না।

এদিকে আরেকবার এক ইরাকি ছেলের সাথে পরিচয় হয়েছিল। কোন কারনে সে আমার সাথে অনেক খাতির করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু যখনই শুনল আমি “সুন্নি মুসলিম” ওর চেহারাটা দেখার মত হয়েছিল। চোখ মুখ কাল করে সে আমার সাথে চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলা শুরু করেছিল। এবং এর পরে যতদিনই ওর সাথে দেখা হত ততবারই তার চোখে-মুখে আমি ঘৃণার পাহাড় দেখতে পেতাম।

মাহের না বললে আমি কোনদিনও জানতাম না যে আমার ‘সুন্নী’ পরিচয়টাই ওর এই পাহাড়সম ঘৃণা ও বিদ্বেষের কারণ।

অবাক হলেও এটাও বাস্তবতা যে বেশিরভাগ বাংলাদেশির ‘সুন্নী’ পরিচয়ের কারণে অনেক মুসলিম ভাইয়ের চোখে ঘৃণার পাহাড় দেখতে পারেন। সে এমন ঘৃণা আপনি কম্পনাও করতে পারবেন না।

(চাইলে চলতে পারে।)

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:৫৭

আমি নই বলেছেন: পুরো লেখাটার সারমর্ম কি এটা ইসরাইল আসলে খুব উদার আর ভাল রাস্ট্র? আমি একটু কনফিউজড তাই জিজ্ঞাসা করলাম।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:১৪

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: ঠিক কোন জায়গাটাতে আপনার মনে হইল আমি দুইটা রাস্ট্রের যেকোন একটাকে ভালো বা খারাপ বলছি? সব কিছুতেই বায়াসনেস থাকতে হবে এমন না। বাংলাদেশের বলয়ের বাহিতে দুনিয়াটা কেমন, নিউট্রাল পয়েন্ট অব ভিউ থেকে দুনিয়াটা দেখলে কেমন অভিজ্ঞতা হতে পারে সেটাই মূল বিষয়।

২| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:০২

সোনাগাজী বলেছেন:



১৯১৭ সাল থেকে ১৯৪৮ সাল অবধি আরবী গাধারা গাধামী করায় ফিলিস্তিন দেশে পরিণত হতে পারেনি; সেটার মুল্য দিচ্ছে এখন নতুন জেনারেশনের গাধারা।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:১৮

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: আপনার কথায় অনেক সহমত। অন্যান্য পোস্টে অনেককেই দেখলাম এই বিষয়ে বেশ এনালিটিক্যাল পোস্ট দিয়েছেন। আর ভুল এখনো অনেক করছে। কিন্তু এটাও ঠিক যে ফিলিস্তিনের পাশে আসলে কেউ নেই। ধরেন, আপনি ক্ষুধায় মরে যাচ্ছেন। আর আমি আপনাকে একটা ফল দিলাম। ফলটা মাটিতে রোপন করলে একদিন গাছ হত। সেই গাছে অনেক ফল হত। সেইসব ফল থেকে আরো গাছ হত। কিন্তু আপনি এমন এক পজিশনে আছেন যে আপনাকে আগে ফল খেয়েই বাচতে হবে। পরে গাছের চিন্তা।

৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:২৩

নিমো বলেছেন: আপনি নিয়মিত লিখেন না কেন ? এই ব্লগের নানা বিষয়ে বোকা বোকা লেখার ভেতর এরকম লেখাগুলো মনি-মুক্তার মত। অসাধারণ লিখেছেন। খালি চললে চলবে না, দৌড়াতে হবে। ব্লগের কূপমন্ডুকদের খানিকটা আক্কেল হবে, এমন লেখা পড়লে।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০৬

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। চেষ্টা থাকবে নিয়মিত হওয়ার।

৪| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:০১

রাজীব নুর বলেছেন: বিশ্বে কোথাও শান্তি নেই।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০৬

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: কথা সত্য।

৫| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:৩৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার এই লেখাটা খুব ভালো লাগলো। ফিলিস্তিনি ঐ ছেলেটি যাকে হয়তো মোসাদের লোকেরা মেরে ফেলেছিল তার জন্য খারাপ লাগলো।

মধ্যপ্রাচ্যে থাকার সময় যে কজন ফিলিস্তিনির সাথে ভালো পরিচয় হয়েছে, তাদের কারো নিজের দেশের পাসপোর্ট আছে বলে শুনিনি। তাদের বেশিরভাগের পাসপোর্ট ছিলো জর্ডানের। আবার জর্ডানের নাগরিক হলেও তাদের কেউ নাগরিক সুযোগ সুবিধা পেতো না।

আমার মতে ইহুদীদের মধ্যে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মেধাবী মানুষ অজস্র আছে, এবং ভালো মানুষও অজস্র আছেন। তবে দেশ হিসেবে ইসরাইল সেইসব সেরা ইহুদিদের প্রতিনিধিত্ব করে না।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০৭

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: ইসরাইলিরা অবশ্যই খারাপ কাজ করছে।

৬| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:৪৪

মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ বলেছেন: /বাংলাদেশের প্রথম টিভি ঘোষকের নাম মর্ডিকাই হেইম কোহেন, একজন ইহুদি ধর্মাবলম্বী। যার জীবনের অনেকটা অংশ কেটেছে রাজশাহীতে।
মর্ডিকাই হেইম কোহেন

/ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ছিলেন একজন ইহুদি।
ফিলিপ জোসেফ হার্টগ

ইহুদি প্রসঙ্গ শুধুমাত্র ইসরায়েল ফিলিস্তিন সমস্যার কারনেই আলোচনার বিষয়বস্তু তা কিন্তু নয় বরং বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথেও তাদের একটা যোগসূত্র আছে।

/যার বুদ্ধিমত্তার কারনে জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পনে বাধ্য হন সে জেনারেল জে এফ আর জ্যাকবও ছিলেন একজন ইহুদি।
জেনারেল জে এফ আর জ্যাকব



১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০৮

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। অনেক অজানা তথ্য জানলাম।

৭| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ ভোর ৫:১৩

রানার ব্লগ বলেছেন: রাস্ট্র হিসাবে ইজরাইল ইহুদী মৌলবাদী সন্ত্রাসী কিন্তু সাধারিন ইজরাইলিরা অনেক শান্ত স্বভাবের এবং মিস্টভাষী।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:০৯

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: বাসে ট্রেনে এদের সাথে কথা হয়েছে বটে। ইনারা আমাদের দেশের মোল্লাদের মত প্রচন্ড ধার্মিক।

৮| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৮:১৭

অহরহ বলেছেন: আমি যে দেশে থাকি, সেখানে অনেক ফিলিস্তিনি, লেবানিজ, ইজিপ্টশিয়ান আছে। কিন্তু ওদের অধিকাংশই ভালো না। বছর বছর বাচ্চা পয়দা করে সরকারের দেয়া বেনিফিট abuse করে। under the table নগত পয়ফকসায় কাজ করে, আবার সরকারের দেয়া বেনিফিট হজম করে।

অথচ আমার next door প্রতিবেশি একজন ইহুদী মহিলা কে চিনি, তিনি অত্যন্ত অমায়িক, ভদ্র, সৎ। একবার, আমার অসুখ হয়েছে জানতে পেরে তিনি অনেক ফল, খাবার, জ্যুস, ফুলের তোড়া নিয়ে আমার বাসায় হাজির। প্রতিবেশির এমন সহমর্মিতা দেখে আমি তো হতবাক।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:১১

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: আমিও এমন দেশেই আছি যেখানে বাংগালিরাও বেনিফিট খাওয়াতে কম যায় না। তবে প্যালেস্টাইনিদের এমন হবার পিছনে হয়ত ট্রমা কাজ করছে।

৯| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৮:৩০

ঢাবিয়ান বলেছেন: আসলে সব দেশেরই জনগনের মুল পরিচয় হচ্ছে - মানুষ। সব জাতির মাঝেই ভাল মন্দ সকল ধরনের মানুষ আছে। দুই নাম্বার পয়েন্টে আপনি যেটা বলেছেন যে ''পশ্চিম তীরে বসবাস করা ফিলিস্তিনিরা মনে প্রানে ইজরাইলের পক্ষে'' , এই কথাটা ফিলিস্তিন ও আল আকসা মসজিদ নিয়ে ফ্যন্টাসিতে ভোগা মানুষজনের হজম করা কঠিন। এটা ঠিক যে, মনে প্রানে না হলেও অন্তত মৌখিকভাবে যে তারা ইজরাইলের পক্ষে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারন মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়। ফিলিস্তিনের বাইরে বসে ফিলিস্তিন নিয়ে ফ্যন্টাসিতে ভোগা খুব সহজ কিন্ত সেই পরিবেশে বসবাস করা সহজ নয়। যে অসম যুদ্ধে মৃত্যূ ছাড়া দ্বীতিয় আর কোন বাস্তবতা নেই সেটা মানুষের পক্ষে কতদিন মেনে নেয়া সম্ভব ?

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:১২

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: আপনার কথা হয়ত ঠিক। আপনি বলেছেন যে অসম যুদ্ধে মৃত্যূ ছাড়া দ্বীতিয় আর কোন বাস্তবতা নেই সেটা মানুষের পক্ষে কতদিন মেনে নেয়া সম্ভব ?

১০| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:০৫

তানভির জুমার বলেছেন: ইসরাইল-প্যালেসটাইনের ইতিহাস কতটুকু জানেন? আপনাদের ভাষায় ইহুদীরা বিশাল কিছু তাই তাদের সব অপকর্ম বাদ শুধু বন্দনা করতে হবে?

আপনার এলাকার মাতবর আপনার বাড়ীর পাশে মানবতার ইস্যু তুলে রিফিউজি হিসাবে কাইকে জায়গা দিল। পরে তারা আপনার সমস্ত অঞ্চলের জমি দখল করল কোন কারণ ছাড়াই বোম্ব মেরে ঐ অঞ্চলের নিরহ মানুষ হত্যা করলো তাদর বাড়ী দখল করলো তাদের ধর্মের মানুষ দিয়ে। চিন্তা করেন তো রোহিঙ্গারা আমাদের মানুষদের হত্যা করে পুরা দেশ দখল করলো কেমন হবে?

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:২৭

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: ভাই আপনার কাছে আমার দুইটা প্রশ্ন।

১/ আপনি নিজে ইতিহাস কতটুকু জানেন? নিজের বাংলাদেশি বলয়ের বাহিরে কি কোন কিছু কোনদিন শুনছেন? আর এখানে তো আমি জাস্ট অভিজ্ঞতা বর্নণা করছি। নিজের কোন অপিনিয়ন দেই নাই। আপনার কি ধারণা দুনিয়ার সবাই আপনার ওয়াজি মার্কা জিনিস শুনে ইতিহাস বুঝে? ঠিক কোন পয়েন্টে এই দুইটা রাস্ট্র দুইটা আলাদা এনটিটি হইতে গিয়াও হইল না, সেইখানে হামাস কি করছিল সেই ইতিহাস একটু জানলে ভালো করতেন। এইখানে প্রচুর গ্রে এরিয়া আছে। দুনিয়ার সবাই যে আপনার চোখের লেন্স দিয়া এই সমস্যা দেখতেছে না সেটা কি বুঝা জরুরি না?

২/ বাংলা পড়তে পারেন? আমার লেখাতে কি ইসরাইলকে ভালো বলছি? নাকি ৩ নাম্বার পয়েন্টে ওরা কেমন বর্বর সেটা তুলে ধরছি? একবার পড়ে বুঝতে না পারলে আবার পড়েন। এই লেখাতে কি প্যালেস্টাইনের প্রতি হামলাকে কোনভাবে জাস্টিফাই করা হইছে? আবার পড়েন। পড়ে বুঝতে না পারলে আরেকজনের কাছ থেকে বুঝে নেন।

আপনি রোহিঙ্গাদের উদাহরণ দিলেন। আচ্ছা আমি পাহাড়িদের উদাহরণ দিলাম। বাংগালি সেটেলাররা ওদের পাহাড় থেকে উচ্ছেদ করল। কাপ্তাই লেক হইল। আপনি ঢাকাতে বইসা বিদ্যুৎ পাইলেন। এখন একদল বিদ্রোহী পাহাড়ি ধরেন ঢাকাতে আইসা একটা স্কুলের ৬০০ বাচ্চাকে মাইরা ফেলল। আপনার বাচ্চাও এর ভিতরে আছে। আপনি কার পক্ষ নিবেন? এইখানে কি সহজ হিসাবে কোন পক্ষ আসতে পারে? যার যেই দৃষ্টিকোন থেকে ব্যাপারটা যেমন সে সেই পক্ষে থাকবে। এখন পাহাড়ির জায়গায় প্যালেস্টাইন আর বাংগালি সেটেলারের জায়গায় ইসরাইল বসাইয়া আবার পড়েন।

১১| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:০৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আপনার পোস্টটি পড়ে যথেষ্ট আরাম পেলাম।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:২৭

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

১২| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৭

খাঁজা বাবা বলেছেন: আমার পরিচিত ২ জন প্যালেস্টাইনি আছেন, আমি যে কম্পানিতে কাজ করি সেই কম্পানির ইম্পোর্টার। সামনা সামনি তাদের সাথে আমার কথা হয়েছে কয়েকবার। সে পশ্চিম তিরের বাসিন্দা। ইসরায়েল সম্পর্কে আপনার ভাষ্য আর তাদের কথার কোন মিল নেই।

পশ্চিম তীরে সবাই শান্তিতে থাকলে তাদের ভূমি দিনে দিনে ছোট হয়ে যাচ্ছে কিভাবে? তাদের যায়গা জমি কেড়ে নেয়া হচ্ছে। এর পরেও কিভাবে তারা শান্তিতে আছে? শান্তিতে থাকলে বলতেই হবে, ইসরায়েলিদের থেকে পশ্চিম তীরের লোকজন অনেক উদার।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:৩০

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: ভাই আপনার পরিচিত দুইজন প্যালেস্টাইনি বা আমার পরিচিত দুইজন প্যালেস্টাইনি দিয়ে এত বড় একটা ঘটনার বিচার করা সম্ভব না। এই সমস্যা প্যাচ খাইতে খাইতে এত বিশাল হইছে যে এইখানে পার্সোনাল অভিজ্ঞতা থেকে কোন কনক্লুশন টানা সম্ভব না। আমি জাস্ট আমার অভিজ্ঞতা বলছি। আপনি আপনার অভিজ্ঞতা বলেন। আমার অভিজ্ঞতার সাথে আপনার অভিজ্ঞতা নাই মিলতে পারে। তারমানে এই না যে, আপনি ভুল বা আমি ঠিক। এইখানে প্রচুর গ্রে এরিয়া আছে।

১৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: এই বিষয়ে ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে বাংলায় এরকম লেখা আগে কখনও পড়ি নি। মাস্ট রিড। অনেককেই পড়াবো এটা।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:৩০

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আমি জাস্ট আমার এক্সপেরিয়েন্স বললাম।

১৪| ১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:২৯

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। অসাধারণ লিখেছেন।

১০ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:৩১

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই।

১৫| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:২৩

শার্দূল ২২ বলেছেন: প্রায় চার দিন হয়ে গেলো ইসরায়েল আর হামাসের যুদ্ধ। আমার আশে পাশে যারা আছে সবাই আমাকে প্রশ্ন করছে এই নিয়ে আমার বক্তব্য কি, আমি যাষ্ট বলেছি নো কমেন্ট। এখানেও অনেক পোষ্ট আসছে, মানুষ আবেগে ভাসছে, আমি না ভাসলেও পাড়ে দাড়িয়ে মানুষের ইমোশান কে ছোট করছিনা কিছু বলে। ভাবলাম মানুষ গুলো দিন দিন পাথর হয়ে যাচ্ছে । এই সুযোগে একটু মন নরম করে ন্যায় হোক আর অন্যায় কোন একটা পক্ষ নিয়ে কাদুক। জীবনে অনেক গুলো দেশে ভ্রমণ করলেও আমাদের ডিপ্লোম্যাটিক জটিলতায় ইসরায়েল যাওয়া হয়নি আমার। কিন্তু খুব ইচ্ছে জীবনে একবার ঘুরে আসা এই দেশটা।

তবে ফিলিস্তিনিদের আত্মচিৎকার আমাকে কাপিয়েছে বহুবার। বিশেষ করে কোন শিশু বা বুড়োে থর থর করে কাপুনি দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়া দৃশ্য আমার চোখ ভিজিয়েছে. বহুবার। সবকিছু ছাড়িয়ে একটা ভিডিও আমার চোখ আটকে গেলো - একজন ইসরায়েল নারী সৈন্যের মৃত নগ্ন দেহর সাথে আল্লাহু আকবার ধ্বণী। আরেকজন নারী সৈনিকের পশ্চাৎ থেকে রক্তক্ষরণ সাথে আল্লাহু আকবার ।

আমার কাজের সুবাধে আমি ইসরায়েলিদের সাথে এত বেশি মেশা হয়েছে ইনফেক্ট আমি যেখানে থাকি সেটা আশে পাশে সবাই ইহুদি। গত ১০ বছরে এদের সাথে থেকে ব্যবসা করে আমার কোনো বাজে অভিজ্ঞতা নেই। বরং এমন কিছু বিষয় আছে যা আমাকে সারা জীবন মনে রাখতে বাধ্য। এমন কিছু কাজ ওরা আমার জন্য করেছে সেগুলো আমার বন্ধুবান্ধব আত্মীয়রাও করেনি এখানে।হয়তো মানুষ বলবে আমার জন্য করেছে বলেই আমি ওদের সাফাই গাইছি। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো তাহলে আমরা মানুষকে বিচার করবো আর কি দিয়ে? সমাজে একে অন্যের জন্য আগিয়ে আসার মানসিকতা মানবতাই তো প্রকৃত মানুষ। তাইনা? যদিও জানি সবাই এক রকম না, সেটা তো আমাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তবে ওরা আমার জন্য যা করেছে সেটা আমি আমার মানুষদের থেকে কোনদিন পাইনি পাবোনা সিওর। একটা নমুনা দেই-

তখন এই দেশে আমি একদম নতুন। আবেগের বশত আমি ম্যনহাটনে টাইম স্কয়ারে একটা দোকান খুলে বসি। প্রায় দশহাজার স্কয়ারফিট এর ফ্লোর। চিন তাইওয়ান ভারত সহ অনেক দেশ থেকে আইটেম গুলো আমি নিয়ে আসি বিক্রি করতে কিন্তু এত বড় দোকান যে কোন ভাবেই ভরাট হয়নি। দোকান খালি খালি লাগছে। একজন ইহুদির সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক হলো । সে আসলো আমার দোকান দেখেতে, আমাকে বললো কিরে দোকান খালি খালি লাগছে কেন। আমি বললাম পুজি যা ছিলো সব শেষ। তখন সে বললো আর কত আইটেম লাগবে। আমি বললাম এখনো এক লক্ষ ৫০ হাজার ডলারের লাগবে মিনিমাম। সে চলে গেলো কিছু না বলেই, সন্ধ্যায় আমাকে কল দিয়ে বললো মোটামুটি ১লক্ষ ২০ হাজার ডলারের আইটেম আমার লোক গাড়িতে উঠিয়ে নিচ্ছে তোমার জন্য তুমি থাকো। শুধু ইনভয়েসে সাইন করে দিও। আমি আর কিছু বলতে পারিনি। পরের বার সে যখন দোকানে আসলো আমি আমার অফিস রুমে আমার চেয়ারে বসিয়ে বললাম তুমি আমাকে বিশেষ জানোনা, নট ইভেন আমার ঠিকানা, যতটুকু পরিচয় হয়েছে তাতে এত বড় ঝুকি কেন নিলে? সে বললো আমি ফেইস রিডার। সেই থেকে তার সাথে আমার সম্পর্ক বেড়ে গেলো। তার সমাজের সাথে আমার উঠা বসা আরো গভীর হলো। আমার ধর্মের ভালো সব দিক তার জানা, আমাকে সেই বলতো তোমাদের এই গুন গুলো আমার অনেক ভালো লাগে,।তাকে দেখতাম তার লাভের ১২ ভাগ সে তার দেশে পাঠাতো, যেটাকে আমরা যাকাত বলি, শুধু সে নয় এই দুনিয়াতে যে যেখানে বসবাস করুক না কেন যত ইহুদি আছে সবাই তার আয়ের ১২ ভাগ ইসরায়েলে পাঠায়। একটা গরীব ইহুদি থেকে যত বড় লোক হোকনা কেন। এই বার ভাগ তারা সততার সাথেই হিসেব করেই ইসরায়েল পাঠায়। এটাই ওদের রুল। কেউ ফাঁকি দেয়না বলেই আমার মনে হয় কারণ যত গুলো ইহুদিকে আমি চিনি তারা সবাই এমন করে।
যেই গুন আমাদের মুসলিমদের হবার কথা।
যাইহোক যদিও একজনকে দিয়ে গোটা সমাজ বিচার করা যায়না তবুও বলি কোরাণের বর্ণীত চরিত্র যদি আমাদের সবার হতো তাহলে মুসলিম নাম শুনলেই আমাদের জন্য দুনিয়ার সব দরজা খোলা হয়ে যেত এতটাই স্বচ্ছ সুন্দর জীবন ব্যবস্থা আমাদের কোরাণ এবং আমাদের নবী রেখে গেছেন। কোরাণের চরিত্র আমাদের হলে এই দুনিয়াতে আমাদের ভিসা লাগতোনা, কারণ আমরা মুখে যাই বলবো তাই দলিল হবার কথা। আমরা যদি কোন দেশের ইমিগ্রেশানে দাড়াতাম আর যদি বলতাম ৩০ দিন থাকবো এরপর চলে যাবো তার তাই বিশ্বাস করে আমাদের দেশে ঢোকার অনুমতি দিয়ে দিতো। এটাই আমাদের কোরাণের রুল।

আমি কোন ভাবেই যুদ্ধ সমর্থণ করিনা, যুদ্ধ তো দুরের কথা কাউকে অপমান করে কথাও আমার শুনতে ভালো লাগেনা, সে যেই ধর্মের হোক।

পৃথিবীতে সবাই শান্তিতে থাকুক। আমীন

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩০

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ এত ডিটেইলস লেখার জন্য। আমারো ইচ্ছা আছে জীবনে অন্তত ইসরাইল, উত্তর কোরিয়া, তিব্বত, সাউথ আফ্রিকা, গ্রীনল্যান্ড, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া, সুরিনাম এই দেশগুলো দেখা।

আপনার বড় কমেন্টের প্রেক্ষিতে বলতে চাই, আমাদের দেশে এখন এই অবস্থা যে জাস্ট অভিজ্ঞতা বললেও সেটা ব্লাসফেমির পর্যায়ে চলে যায়। আবারো ধন্যবাদ।

১৬| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৭:৩৩

অপ্রচলিত বলেছেন: অনেক বেশিই সুন্দর আর ব্যতিক্রমী একটি পোস্ট। চমৎকার লেখনী এবং নিউট্রাল চিন্তাধারা। আফসোস এটাই যে খুব কম মানুষই আপনার মত ভাবতে পারবে। বাংলাদেশের মধ্যে তো নয়ই, এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যেও। আসলেও ইসরায়েল পালেস্টাইন সংঘাতে গ্রে এরিয়া অনেক বেশি।

None of them are demons, nor are they angels. Rather both demons and angels exist in abundance amongst both of them, just like any of us.

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩১

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য। আপনার কথা ধরেই বলতে চাই None of them are demons, nor are they angels. Rather both demons and angels exist in abundance amongst both of them, just like any of us.

১৭| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:৪১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

মালয়েশিয়াতে প্যালেস্টাইন দূতাবাস ভবন তৈরী করে দিয়েছে মালয়শিয়ান সরকার।
দূতাবাস চালানোর টাকাও নাকি দেয় তারাই।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩৩

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: হতে পারে। আমার কোন ধারণা নেই। অনেক আগে একবার ওদের এম্বাসীর পাশ দিয়ে গিয়েছিলাম। তখন বাংলাদেশের এম্বাসী ঐ এম্বাসীর কাছে ছিল। পরে বাংলাদেশ এম্বাসী সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। তাই আর যাওয়া হয়নি। আর আমিও মালয়শিয়া ছেলে অন্য দেশে থিতু হয়েছি।

১৮| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১:০০

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: আপনাকে মনে হচ্ছে অনেকে ইহুদীদের দালাল বলবে। আসলে আমাদের দেশে এমন একটা ইমেজ তৈরি হয়েছে যে ইহুদি মানেই খারাপ। কাল খবরে পড়লাম এক ইহুদি খেলোয়াড় মারা গেছেন। সে খবরে হাসির বন্যা বয়ে গেছে। ইহুদি নারী-শিশু মরলেও হাসি। আমেরিকায় টুইন টাওয়ারে হামলার পরও এরা হেসেছিল। যদিও আমেরিকার ভিসা পেলে দৌড় দেবে। মানুষ তো মানুষই। ইহুদি কী, আর মুসলিম কী। মানবিক হওয়া জরুরি।

চিন নিয়ে একটা লেখা লিখবেন আশা করি। চিন সরকার উইঘুরদের ওপর চড়াও হলেও অন্য এক অঞ্চলে মুসলিমরা নাকি বহাল তবিয়তে আছে।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩৬

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আসলে আমাকে কে কি বলল তাতে কি আসে যায়। যারা বলবে তাদের এড়িয়ে চলব। আর আমি তো আসলে এমন কিছু বলিও নাই, নিজের কোন অপিনিয়নও দেই নাই।

চীন নিয়ে সামু ব্লগে আমার একটা সিরিজ আছে। আপনি চাইলে পড়তে পারেন। নিজের অভিজ্ঞতায় চীনকে যেমন দেখছিলাম সেটার গল্প। সিরিজের প্রথম পর্বের লিংক দিলাম। বাকি পর্বগুলোর লিংক প্রতি পর্বের শেষে দেয়া আছে।

https://www.somewhereinblog.net/blog/arafat529/30335579

১৯| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৩:০৩

বিষাদ সময় বলেছেন: ব্লগ ভরে গেছে আগাছায়। আপনার লেখাটা দেখে মনে হচ্ছে যে না ব্লগে এখনো বৃক্ষ আছে।

প‌্যালেস্টাইনিদের প্রতি আমাদের আবেগ, ভালবাসা, সহমর্মিতা অবশ্যই থাকবে। সাথে থাকবে ইসরাইলিদের অন্যায় আচরণের প্রতি ঘৃণা। সেই সাথে থাকা উচিত নিরপেক্ষ বিবেক। ইহদিদের প্রতি ঘৃণার পিছনে আমাদের যুক্তি তেমন কাজ করেনা এখানে মূল প্রভাবক হল ধর্ম। ধর্মই আমাদের ইহুদি, নাসারাদের ঘৃণা করা শিখিয়েছে। তাই এখানে নিরপেক্ষ চিন্তা বলে তেমন কিছু নাই পুরোটাই অন্ধ আবেগ নির্ভর।

জেরুজালেম ছিল ইহুদিদের আদি বাসস্থান সেখান থেকে প্রথমে খৃষ্টানরা পরে মুসলমানরা তাদের মেরে কেটে বিতাড়িত করেছে। তাই ওখানকার অধিকার কাদের বেশি আসলেই সেটাকে আপনার ভাষায় গ্রে অঞ্চল বলা যায়। আমাদের অনেকের ধারণা ইসরাইলি সেনাবাহিনী সবচেয়ে বর্বর । অথচ পাকিন্তান সেনাবহিনী আমাদের দেশে মাত্র ৯ মাসে যে পরিমাণ হত্যা, ধর্ষন এবং আগ্নি সংযোগ করছে তার ভগ্নাংশও মনে হয় ইসরাইলী বাহিনী ৫০ বৎসরে করতে পারেনি। তারপরও বাংলাদেশে পাকিস্তান ক্রিকেট খেলতে আসলে তারা অনেক সময় এটাকে হোম গ্রাউণ্ড বলে ভুল করে কারণ এখনও এ দেশের কোটি কোটি মানুষ তাদের অন্ধ সমর্থক। কেন সমর্থক? কারণ আমরা ভাই ভাই। এর মানে এই নয় যে আমি ইসরাইলি বাহিনীকে খুব ভাল বলছি। তারাও কিছুটা বর্বর এবং মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগকারী । তারপরও তারা কিছু রুলস এন্ড রেগুলেশন মানে যা অনেক দেশের সেনাবাহিনীকেই মানতে দেখা যায়না।

আমার ব্যাক্তিগত ধারণা ইহুদিরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান, মেধাবী এবং সাথে কুটকৌশল জানা জাতি তবে তারা খুব ভাল যোদ্ধা না।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩৮

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আপনি যদি বাংলাদেশে গ্রে অঞ্চল নিয়ে কোন কথা বলেন বা নিদেনপক্ষে নিজের সাধারণ অভিজ্ঞতার কথাও বলেন আর সেটা যদি পাবলিক অপিনিয়নের বিপরীতে হয় তাহলে সেটা রীতিমত ব্লাসফেমি এই দেশে।

২০| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:


আপনার পোস্টে বুঝলাম আপনার অভিজ্ঞতা অনেক মিশ্রী। কিন্তু আপনি আপনার অবস্থান বর্ণনা করেনি। এটা ঠিক বুঝলাম না কেন? যদিও এটা আপনার সম্পূর্ন ব্যক্তিগত মতামত।

আমি শুধু যুদ্ধের বদলে শান্তি চাই। এখন সেটা কিভাবে আসবে সেটা দেখার বিষয়। আবার ভাল খারাপ সব জায়গাতেই আছে তাই একজন কে দিয়ে পুরো জাতিকে বিচার করা যায় না।

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৪০

আরাফাত৫২৯ বলেছেন: ধন্যবাদ। আসলে আমার অবস্থান কি সেটা কি গুরুত্বপূর্ণ? আমি জাস্ট নিরেপক্ষভাবে অভিজ্ঞতার কথা বললাম।

দুই একজনকে দিয়ে অবশ্যই একটা জাতিকে বিবেচনা করা যায় না। এবং আমি কখনো বলিও নাই যে আমার লেখা বা আমার বলা দুই একজনকে দিয়ে কিছু বিচার করতে। এটা জাস্ট অভিজ্ঞতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.