নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্যক্তিগত ব্লগসাইট : www.akterRhossain.blogspot.com \n \nফেসবুক আইডি : Akter R Hossain \n\n\nফেসবুক আইডি লিংক: www.facebook.com/ARH100

আকতার আর হোসাইন

খেলাধুলো করতে ও বই পড়তে প্রচন্ড ভালবাসি। আর মাঝেমধ্যে শখের বসে লেখার ক্ষুদ্র চেষ্টা করি।

আকতার আর হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

টাইগার বাম টিম মাশরাফি

১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ১২:৫২

লেখাটি প্রথম আলো থেকে সংগৃহীত। অসম্ভব ভাল লেগেছে লেখাটা।
তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
....................

চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের চেয়েও দ্রুত ছড়াচ্ছে
ক্রিকেটজ্বর। টিম মাশরাফি সেমিফাইনালে উঠে
ক্রিকেট-দুনিয়ার কল্কে উল্টিয়েই দিয়েছে প্রায়।
কিন্তু ওস্তাদ মাশরাফির শেষ রাতের মাইর এখনো
বাকি। খেলাটা হওয়ার কথা ১৫ তারিখ সন্ধ্যায়।
সে সন্ধ্যায় বাংলাদেশ যদি জিতেই যায়,
আক্ষরিকভাবেই সেটা হবে ভারত-পাকিস্তান-
ইংল্যান্ডের জন্য কলির সন্ধ্যার অশুভ সূচনা।
সাফল্য সাফল্য ডেকে আনে। সেমিফাইনালে
উত্তরণের আত্মবিশ্বাস বাংলাদেশ দলকে সাহসী
করে তুলছে। সে রকম মুডই দেখা যাচ্ছে। ক্রিকেট
দলে যতটা, তার চেয়েও বেশি দর্শক-ভক্তদের
মধ্যে।
ক্রিকেটীয় পরাশক্তিদের জন্য কলির সন্ধ্যা আশা
করা তাই পাতলা খোয়াব না, তা রীতিমতো
সম্ভাবনা। কেননা, ক্রিকেটের নিয়তি এবার
র্যাঙ্কিংয়ের নিচের দলের পক্ষে। ভাগ্যের
সহায়তায় অস্ট্রেলিয়াকে এবং দারুণ নিপুণতায়
নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করে বাংলাদেশ উঠে এল
সেমিফাইনালে। সেখানেই শুরু। এর পর থেকে
র্যাংকিংয়ের ওপরের দলগুলি নিচের দলকে আর
হারাতেই পারছে না। পাকিস্তানও জয়ের শিখর
থেকে ফেলে দিল র্যাঙ্কিংয়ে ওপরে থাকা
শ্রীলঙ্কাকে। অঘটন গোড়া থেকেই হয়ে আসছে।
তাই বাংলাদেশের পক্ষে মধুর অঘটনের সম্ভাবনায়
বিভোর দেশবাসী। সে উত্তেজনায় ফেসবুক
ঘুমাচ্ছে না। রাত জেগে গবেষণা চলছে, কী থেকে
কী হবে আর না হবে। আশার পারদ এক লাফে
মগডালে উঠে বসে আছে। উঠে দেখে, আরও উঁচা
উঁচা ডালে বসে আছে ইংল্যান্ড, ভারত, এমনকি
পাকিস্তানও। বসে চোখ টিপছে আমাদের দিকে।
আশা-ভরসা তাদের আরো বেশি।
জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলে জাতির পুরুষ-স্বভাবের
প্রতিফলন দারুণভাবেই দেখা যায়। বাঙালি এমনই।
আবেগে-উত্তেজনায় কখনো বিরাট কিছু করে বসে।
জলোচ্ছ্বাসের মতো আবেগ জাগে, আমরা লার্জার
দ্যান লাইফ কিছু করে ফেলি। আবার দেখা যায়,
আবেগের বেলুন বুদ্ধির ফেরে পড়ে চুপসে যায়।
আমরা হেরে যাই। লক্ষ্যে পৌঁছানোর ‘কিলার
ইনস্টিংক্ট’ আমাদের কম। দুর্ধর্ষ শিকারি পুরো
পাখিটাও দেখে না, দেখে শুধু তীর বিঁধাবার
জায়গাটা। নিশানার দিকে একমনে তাকিয়ে
থাকার ধৈর্য আমরা হারিয়ে ফেলি। আমাদের
আবেগ যত, ইচ্ছাশক্তি ও সংকল্পের জোর ততটা নয়।
কিন্তু মাশরাফি আলাদা হয়ে উঠেছেন।
বাঙালিসুলভ ‘আমি’ ভাব তাঁর কম, একটানা লেগে
থাকা বেশি। তাঁর গুণটা দলের মধ্যেও সংক্রমিত
হচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব-
মাহমুদুল্লাহ যে সংকল্প ও দুর্দমনীয় নৈপুণ্য দেখাল,
তাও বাঙালি স্বভাবে বিরল। এসব দেখে আশায়
বসত করতে কার না ইচ্ছা হবে? জ্বি শেবাগ, এই
বাংলাদেশকে গোণায় ধরতে হবেই।
ভারতীয় দলের তারকা খেলোয়াড় শেবাগের মন্তব্য
নিয়ে দিকে দিকে শোরগোল। ওদিকে রটানো
হলো, ইমরান খানও আমাদের কটু কথা বলেছেন। কে
শুনেছে, কে দেখেছে তার বালাই নেই, দম মওলা
বলে দল বেঁধে ইমরানের গুষ্টি উদ্ধারের পর দেখা
গেল, তিনি আসলে ভারতের কাছে পরাজয়ের জন্য
পাকিস্তানকেই গঞ্জনা দিয়েছেন। বাংলাদেশ
নিয়ে মুখ খোলার ফুরসত তিনি পাননি। রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের ছেলেভুলানো ছড়ার কথা মনে পড়ল,
‘কে মেরেছে, কে ধরেছে, কে দিয়েছে গাল।
তার সঙ্গে গোসা করে ভাত খাও নি কাল॥
কে মেরেছে, কে ধরেছে, কে দিয়েছে গাল।
তার সঙ্গে কোঁদল করে আসব আমি কাল॥’
কাল নয়, কোঁদল ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আগেকার
দিনের মানুষেরা শিকারের আগে দেয়ালে দাগ
কেটে তির ছুড়ে ছায়াশিকার করতেন। আর
ভাবতেন আসল শিকারও এমন অব্যর্থ হবে। ফেসবুকে-
গণমাধ্যমে সেই ছায়াযুদ্ধের উদ্বোধন ঘটে গেছে।
একদিকে ব্রিটিশ পরাশক্তি, অন্যদিকে
উপমহাদেশের তিন প্রতিদ্বন্দ্বী: ভারত,
পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। ঔপনিবেশিক আমলেও
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্য ছিল না, আজও
নাই। ইংল্যান্ড নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না
ত্রিদেশীয় ভক্তরা। তাদের যাবতীয় গোস্যা
উপমহাদেশীয় ভাই-বেরাদরদের বিরুদ্ধে। ‘আমরা
সবাই শত্রু আমাদেরই সবার বিরুদ্ধে’—এই নিয়মে
ফেসবুকীয় ছায়াযুদ্ধ চলছে। ইন্ধন জোগাচ্ছে কিছু
দায়িত্বজ্ঞানহীন অনলাইন পোর্টাল। পেশাদার
ধুনকরেরাও নিজ নিজ ধুনে টাইট দেওয়া শুরু
করেছেন। প্রতিপক্ষকে কথা দিয়ে তুলাধুনা করায়
তাঁরা অনুপম। ব্যাপক আয়োজন, তুমুল মনোভাব।
কিসের নির্মল বিনোদন, এ তো পুরোদস্তুর যুদ্ধের
ডামাডোল।
জার্মান সমরবিদ ক্লসেভিৎজ বলেছিলেন,
রাজনীতি হলো অন্য উপায়ে চালানো যুদ্ধ। যুদ্ধকে
তিনি শিল্পের মর্যাদাও দিতেন। আন্তর্জাতিক
ক্রিকেটে যে যুদ্ধের আমেজ, ভক্তদের রেষারেষি,
তা বোঝাচ্ছে ক্রিকেট হলো অন্য উপায়ে
চালানো যুদ্ধ এবং ইহাও শৈল্পিক। তবে
খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতায় যে শিল্প থাকে,
ভক্তদের অনেকের ভাষা তার সম্পূর্ণ বিপরীত। গত
বিশ্বকাপে ভারতীয় পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে
নিয়ে করা অবমাননাকর ‘মওকা মওকা’ বিজ্ঞাপন,
ফেসবুক ট্রলে এর ভূরি ভূরি প্রমাণ ছিল। জবাবে
আমরাও কম যাইনি। এবারও হিংসার হাওয়া উড়ু উড়ু
করছে। জেগে উঠেছে ক্রিকেটীয় জাতীয়তাবাদ।
ফরাসি রাষ্ট্রনেতা চার্লস দ্য গ্যল বলেছিলেন,
নিজের দেশকে ভালোবাসা দেশপ্রেম, আর অপর
জাতিকে ঘৃণা করা হলো জাতীয়তাবাদ।
ক্রিকেটের বেলায় এই বক্তব্য ষোলো আনাই
ফলেছে। খেলা তাই শুধু খেলা নয়, তা
জাতীয়তাবাদের কোমল অস্ত্র এবং অস্ত্রটি অতীব
ধারালো। এ এক দুধারী তলোয়ার, যার হাতল নেই।
নিজের হাত রক্তাক্ত না করে এ দিয়ে
প্রতিপক্ষকে আঘাত করা যায় না।
গত বিশ্বকাপের ঘটনা। ইংল্যান্ডকে দুর্দান্ত
দাপটে হারিয়ে লাল-সবুজ পতাকা মাথায় বেঁধে
তরুণ অধিনায়ক মিডিয়া-মঞ্চে এলেন। তাঁকে দেখে
অনাস্বাদিত সুখে বিহ্বল হয়ে গিয়েছিল বিদেশে
জন্মানো ও বড় হওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত
তারুণ্য। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি, লোকে যাকে
দেশপ্রেম বলে। কিন্তু প্রতিপক্ষকে ঘৃণা করে বলা
কথায় চাঙ্গা হয় জঙ্গি জাতীয়তাবাদ। আজকের
দুনিয়ার অনেক দুর্দশার জন্ম এ রকম ঘৃণা থেকেই।
কিন্তু একজন অন্য রকম। তাঁর নাম মাশরাফি
মুর্তজা। তাঁর কথাগুলোই আবার মনে করিয়ে দিই,
‘কিছু হলেই আমরা বলি, এই ১১ জন ১৬ কোটি
মানুষের প্রতিনিধি। আন্দাজে! তিন কোটি লোকও
হয়তো খেলা দেখেন না। দেখলেও তাঁদের জীবন-
মরণ খেলায় না। মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন
রাজনীতিবিদেরা, তাঁদের স্বপ্ন ভবিষ্যৎ অন্য
জায়গায়। এই ১১ জন মানুষের ওপর দেশের মানুষের
ক্ষুধা, বেঁচে থাকা নির্ভর করে না।
ক্রিকেটারদের দিকে নয়, দেশের মানুষকে
তাকিয়ে থাকতে হবে একজন বিজ্ঞানী, একজন
শিক্ষাবিদের দিকে। ক্রিকেটাররা নন,
মুক্তিযোদ্ধারাই হচ্ছেন এ দেশের প্রকৃত বীর।
চিকিৎসক, শ্রমিক, কৃষকেরা হচ্ছেন প্রকৃত তারকা।
দেশের তুলনায় ক্রিকেট অতি ক্ষুদ্র একটা
ব্যাপার।’
বলে যান মাশরাফি, ‘খেলা কখনো একটা দেশের
প্রধান আলোচনায় পরিণত হতে পারে না। দেশের
অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আছে যার সমাধান বাকি।
সেখানে ক্রিকেট নিয়ে পুরো জাতি, রাষ্ট্র
এভাবে এনগেজ হতে পারে না। আজকে আমাদের
সবচেয়ে বড় তারকা বানানো হচ্ছে, বীর বলা
হচ্ছে, মিথ তৈরি হচ্ছে। এগুলো হলো বাস্তবতা
থেকে পালানোর ব্যাপার।’
হ্যাঁ, আমাদের পালানোর জায়গা দরকার হয়। কারণ,
আমাদের বাস্তবতাটা সুখকর নয়। এই যে অভাবী
লোকের না খাওয়ার দিন আবার শুরু হচ্ছে,
পাহাড়ধসে ৩৫ জনেরও বেশি মানুষের মর্মান্তিক
মৃত্যু হলো। সবদিকেই আশা মরে যাচ্ছে।
বিশালসংখ্যক শিক্ষিত তরুণ বেকার, তারাই আবার
মাতিয়ে রাখছে ফেসবুক। ব্যক্তিগত হতাশা থেকে
তাদের অনেকে রাগী ভাষায় তর্কে জড়াচ্ছে।
খেলায় না জিতলে যে জাতি সম্মিলিত অবসাদে
পতিত হয়, তারা আশা করে, ক্রিকেট তাদের সব
দুঃখ-দুর্দশা ভুলিয়ে দেবে। বাইপোলার
ডিজঅর্ডারে ভুগে আমরা একবার বিরাট আশায় বুক
বাঁধি, আবার পরক্ষণেই ব্যর্থতার হতাশার হাত-পা
ছড়িয়ে গর্তবাসী হই। অতি আনন্দ আর বিপুল দুঃখের
এই চরমভাবাপন্ন জাতিকে সুখী করার দায়িত্ব
ক্রিকেটারদের একার নয়। এ দায়িত্ব প্রধানত
যাঁরা সংসদে বসে সিদ্ধান্ত নেন, দেশ চালান,
তাঁদের। খেলার জয় আমাদের একদিনের সুখ দেয়,
কিন্তু সারা বছরের বাঁচা-মরা তো তাঁদের ওপরই
নির্ভরশীল। দেশপ্রেমের প্রমাণ শুধু
খেলোয়াড়েরাই রাখবেন, আর সবাই নিজেরা কিছু
করবেন না, এমনটা অন্তত আমাদের ক্যাপ্টেন
মাশরাফি মনে করেন না।
মাশরাফি বলেন, ‘আমি ক্রিকেটার, একটা জীবন
কি বাঁচাতে পারি? একজন ডাক্তার পারেন। কই,
দেশের সবচেয়ে ভালো ডাক্তারের নামে কেউ
তো হাততালি দেয় না! তাঁদের নিয়ে মিথ তৈরি
করুন, তাঁরা আরও পাঁচজনের জীবন বাঁচাবেন।
তাঁরাই তারকা। তারকা হলেন শ্রমিকেরা, দেশ
গড়ে ফেলছেন। ক্রিকেট দিয়ে আমরা কী বানাতে
পারছি? একটা ইটও কি ক্রিকেট দিয়ে বানানো
যায়? একটা ধান জন্মায় ক্রিকেট মাঠে? যারা ইট
দিয়ে দালান বানায়, কারখানায় এটা-ওটা বানায়
বা খেতে ধান জন্মায়, তারকা হলেন তাঁরা।’
আমাদের জাতীয় কল্পনার প্রতিচ্ছবি ক্রিকেট
হোক, কিন্তু তা যেন অবাস্তব ফ্যান্টাসি হয়ে না
ওঠে। আমাদের বনের বাঘ বাঁচানোর খবর নাই,
কিন্তু মনের বাঘ খামাখাই হুংকার দেয়। মাশরাফি
তাই বলে চলেন, ‘এই যারা ক্রিকেটে দেশপ্রেম
দেশপ্রেম বলে চিৎকার করে, এরা সবাই যদি
একদিন রাস্তায় কলার খোসা ফেলা বন্ধ করত,
একটা দিন রাস্তায় থুতু না ফেলত বা একটা দিন
ট্রাফিক আইন মানত, দেশ বদলে যেত। এই প্রবল
এনার্জি ক্রিকেটের পেছনে ব্যয় না করে নিজের
কাজটা যদি সততার সঙ্গে একটা দিনও সবাই মানে,
সেটাই হয় দেশপ্রেম দেখানো। আমি তো এই
মানুষদের দেশপ্রেমের সংজ্ঞাটাই বুঝি না!’
আমাদের আজ সর্বাঙ্গে ব্যথা। ব্যথা দূর করবার
জন্য বাম (Balm) বা মলম ব্যবহার করা হয়। এই বাম
তিন প্রকার, এক প্রকার হলো মিল্লাত বাম। এই
বাম অল্প ব্যথায় কার্যকর। আরেক প্রকার হলো
বিধিবাম, সবকিছু ভাগ্যের ওপর ছেড়ে
দেনেওয়ালারা এই বাম সেবন করেন। আর কঠিন
ব্যথা সারায় টাইগার বাম। সব বামের বড় বাম হলো
টাইগার বাম।
মাশরাফির কথাগুলো আমাদের দুঃখ-হতাশা,
উগ্রতা, আত্মপ্রেমের অসুখে টাইগার বামের কাজ
করুক। ক্রিকেট বাস্তবতা ভোলানোর আফিম না
হয়ে, দেশপ্রেমের টনিক হোক। বাংলাদেশ
ক্রিকেটকে আর তুচ্ছ করা যাবে না, মাশরাফির
হাত ধরে আমাদের ছেলেরা আরও উঠে আসবে।
মেয়েরাও পাল্লা দিচ্ছে তো। সঙ্গে সঙ্গে
আমরাও যেন মনে, চিন্তায় এবং আচরণের সভ্যতায়
ওপরে উঠে আসি। টাইগার মাশরাফি পথ দেখাক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.