![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশ্ব উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও উন্নত হচ্ছে । একই সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে পুরনো ধ্যান ধারনা। আগে যেখানে ভাবা হত পড়াশোনা শেষ করে একটি ভাল চাকরী করব। সেখান থেকে চিন্তা-ভাবনা পরিবর্তিত হয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু আয় করার মানসিকতা তৈরি হয়েছে আমাদের মধ্যে। কিছু আয় করা বলতে এখানে আমি টাকা আয় করার কথা বলেছি। পড়াশুনার পাশাপাশি কিছু করার ভাবনা এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। কারো হয়ত পারিবারিক অবস্থা ভাল নয়। পরিবার থেকে পড়াশুনার খরচ মেটানোর কোন উপায় নেই। কিন্তু নিজের প্রচন্ড আগ্রহ পড়াশুনা চালিয়ে যাবার তাই এমন ছোট খাট কিছু একটা করা যার মাধ্যমে কিছু আয় হবে পাশাপাশি পড়াশুনারও কোন ক্ষতি হবে না। আবার কেউ আয় করতে চান এই জন্যে যে, পরিবার থেকে শুধুমাত্র পড়াশুনার খরচটি মেটানো হয়। এর বাইরে আর কোন টাকা তেমন পাওয়া যায় না। তাই নিজে নিজে কিছু একটা আয় করার চেষ্টা করে থাকেন অনেকেই যাতে নিজের মনমত কিছু খরচ করা যায়।
এর বাইরে কেউ কেউ আরো বেশি কিছু ভেবে পড়াশুনার পাশাপাশি আয় করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন। আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত পড়াশুনা করার বা করানোর মূল লক্ষ্যই থাকে টাকা রোজগার করার জন্যে। পড়াশুনা যারা করেননা বা করেননি তারাও যে টাকা রোজগার করেন না তা কিন্তু নয়। তবে পড়াশুনা যারা করেছেন তাদের আয় আর যারা করেননি তাদের আয় ও সম্মানের মধ্যে অনেক শেনীবিন্যাস আমাদের সমাজের কর্তা ব্যাক্তিরা তৈরি করে রেখেছেন । তারা নারীকে সম্মান দিতে না পারায় যতটা দুঃখিত শ্রমের সম্মান দিতে না পারার জন্যে ততটাই আনন্দিত । তাই আপনাকে একটি সম্মানজনক আয় করার মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে বেচে থাকার জন্যে পড়াশুনা করা ফরয। এবং তা অবশ্যই প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা। পড়াশুনা করার মূল এবং একমাত্র লক্ষই যেখানে আর্থ আয় করা, সেখানে পড়াশুনার পাশাপাশি অর্থ আয় করতে শুরু করে দেয়াটাই যারা বুদ্ধিমানের কাজ মনে করেন। আমি তাদেরই দলে।
আমি আজ মূলত লিখব পড়াশুনার পাশাপাশি আর করার প্রাথমিক কিছু আলোচনা নিয়ে । কথাগুলো একেবারেই নতুনদের জন্যে। এই বিষয়ে যারা ইতিমধ্যেই অভিজ্ঞ তারাও আমার লেখাটি শুধুমাত্র এই জন্যে পড়তে পারেন যে, আমি কোথাও কোন ভুল করলে যেন ধরিয়ে দিতে পারেন।
পড়াশুনার পাশাপাশি আয় করব ভাল কথা তবে পড়াশুনার কোন অবস্থায় এসে তা শুরু করব ? আমরা সাধারণত পড়াশুনার ৪টি অবস্থা পার করে থাকি। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চতর শিক্ষা। প্রাথমিক মাধ্যমে পড়াশুনার সময় আয় করার কথা ভাবতে হয় না তবে তাদের কথা ভিন্ন যারা প্রাথমিকের গন্ডি পেরুবার আগেই কর্ম জীবন শুরু করেন। মাধ্যমিকে অনেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি টিউশনি করান যা শুধুমাত্র নিজের পড়াশুনা চালিয়ে নেয়ার উদ্দ্যেশ্যেই । উচ্চ মাধ্যমিক হল পড়াশুনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সময়। এই অবস্থায় এসে কিছু করতে চাইলেও সময় ও সুযোগের অভাবে করা হয়ে উঠে না। তবে অনেকেই কিছু করার পরিকল্পনা নিয়ে থাকেন এই সময়ে যা তারা পরবর্তীতে শুরু করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। কাজেই মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটানো সময়টাই হল আমার মতে কিছু একটা আয় শুরু করার উত্তম সময়।
এখন প্রশ্ন আসে কি দিয়ে শুরু করা যেতে পারে পড়াশুনার পাশাপাশি আয় করা।
১০ বছর আগের তরুনেরা পড়াশুনার পাশাপাশি টিউশনি করিয়ে নিজেদের হাত খরচ মেটানোর কথা ভাবত। আর পড়াশুনা শেষে ভাল একটি চাকরী করে সুখে শান্তিতে জীবন-যাপন করার স্বপ্ন দেখত। পড়াশুনা করার পাশাপাশি টিউশনি বহু পুরনো ধারনা । এই ধারনাটি এখন অকেজো হিসেবে দেখা হলেও সেই সময়ের জন্যে খুবি উপযোগী ছিল। মাঝের সময়ে কোচিং সেন্টারের ধারনাটি আমুল পরিবর্তন নিয়ে আসে সবার জন্যেই। খুব সহজেই কোচিং করিয়ে ভাল পরিমান আয় করা যায় । এই আয় করার পদ্ধতী অনেককেই তাদের উচ্চ শিক্ষিত হবার স্বপ্ন পূরণ করিয়েছে। কিন্তু পরিবর্তিত পৃথিবীতে এখন ছাত্র পড়ানো বা কোচিং সেন্টার চলানোর পেশায় বেশ অনাগ্রহ তৈরি হতে শুরু করেছে তরুণদের মধ্যে। কারন পেশা হিসেবে টিউশনি বা কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রি পড়ানো অনেকাংশেই প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক চাহিদা মেটাতে পারে না। তাছাড়া অতি স্বাধীন চেতা যেই মনোভাব তরুনেরা পোষন করে এবং অর্থনৈতিকভাবে উচ্চ লক্ষ্য তারা নির্ধারণ করে তার সাথে এই পেশা ঠিক মেলে না।
এখনকার সময়ের তরুনেরা, পড়াশুনার পাশাপাশি এমন কিছু করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে যা তার ভবিষৎ পেশাগত জীবনে সহায়ক হবে। ছাত্র জীবনে যা আপাত অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি ভবিষৎ এ পড়াশুনা শেষে সে তার পুরপুরি সময়, শ্রম, মেধা বিনিয়োগ করে নিজেকে অনেক উপরে নিয়ে যেতে পারবে। এই ভাবনাটা মূলত এসেছে সিনিয়রদের দেখেই । একজন ব্যাক্তি ছাত্র জীবনের বেশ অনেকটা সময় শিক্ষকতা পেশার সাথে যুক্ত থেকে পেশাগত জীবনে যখন পা বাড়ায় তখন অনেকেই শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহী হন না। ছাত্র জীবনে আপনি হয়ত পড়াশুনা করছেন রসায়ন নিয়ে পরবর্তীতে ভাল একটি ওষধ কোম্পানীতে বড় চাকরী করার আসায়। আর ছাত্র থাকাকালীন প্রাথমিক কিছু খরচ মিটানোর জন্যে টিউশনি করিয়েছেন। ধরে নিলাম সময়টা ৫ বছর। আপনি যখন ৫ বছর ছাত্র পড়িয়ে আয় করে পেশাগত জীবনে চাকরী, ব্যবসা খুজে পাবেন না আবার শিক্ষকতাকে আপনি পেশা হিসেবে নিতে চাচ্ছেন না বেশিদিন এইভাবে কিছু না করে থাকা যাচ্ছে না। এমন দ্বিধা ধন্দে অনেকেই পরেন। এই দ্বিধা ধন্দ থেকেই আজকের তরুনেরা সিদ্ধান্ত নিতে শিখেছে যে, ছাত্র জীবনে এমন কোন উপায়ে আয় করতে শুরু করব যা আমি আমার পেশাগত জীবনে এসেও চালিয়ে যাব। আজকের তরুণদের মধ্যকার এই ধারনাটি আমাদের দেশকে অনেকটাই বদলে দিয়েছে। ছাত্র জীবনে এক কাজ করে পেশাগত জীবনে এসে অন্য কাজের সাথে মানিয়ে নেয়া কঠিন। আমি ব্যক্তিগতভাবে সব সময় একটি কথা বিশ্বাস করি জীবনের প্রথম আয় যেই কাজের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সেই কাজটিকেই মানুষ সবচেয়ে আরামের ও সবচেয়ে লাভজনক হিসেবে মনে করতে থাকে। যতদিন না আপনি বুঝতে পারবেন যে যেই কাজটি আপনি করছেন তা আপনার পরিবারের খরচ মেটাতে যতেষ্ট নয়। উধাহরন হিসেবে বলা যায়, একজন গার্মেন্টস কর্মী যদি কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করতে চায় তাহলে সে প্রথমেই গার্মেন্টস দেয়ার কথা ভাববে। কারন সে এই কাজটিতে অনেক অভিজ্ঞ আর সে এই ব্যবসাটির লাভ-লস সম্পর্কে ধারনা রাখে।
তাই আপনাকে প্রথমে ঠিক করে নিতে হবে আপনি পেশাগত জীবনে কোন কাজটি বেছে নিবেন। ছাত্র জীবনে যদি কিছু করতে হয় তাহলে সেই কাজটি দিয়েই শুরু করুন যে কাজটিকে আপনি পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে করে ছাত্র জীবনের প্রাথমিক হাতখরচ মেটানোর পাশাপাশি পেশাগত জীবনে আসার আগে আপনি আপনার কাজ সম্পর্কে অনেকটাই ধারনা পেয়ে যাবেন। যারা ব্যাবসা করার কথা ভাবছেন তাদের ক্ষেত্রে এই কথাটি অনেক বেশী প্রযোয্য। তবে শুরুতেই যারা ঠিক করে রেখেছেন যে আপনি পেশাগত জীবনে চাকরী করবেন তাদের জন্যেও এই বিষয়টি কাজে দিতে পারে। তবে যারা স্বাধীন পেশায় আসবেন (ডাক্তার/ইঞ্জিনীয়ার) তাদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোয্য নাও হতে পারে।
যারা ছাত্র জীবনে এক কাজ আর পেশাগত জীবনে ভিন্ন কোন কাজ করতে যান তাদের চেয়ে যারা পেশাগত জীবনে যেই কাজ বা ব্যাবসাটি করবেন সেটি দিয়েই ছাত্র জীবন থেকে অনুশীলন শুরু করেন তারা অনেক বেশী আর দ্রুত সফল হবেন এটাই স্বাভাবিক। কারন পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে পেশাগত জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখমুখি হবার আগেই তারা তাদের কাজ বা ব্যাবসা সম্পর্কে অনেক বেশী ব্যাবহারিক ও বাস্তব জ্ঞান পেয়ে যাবেন।
কোন একটি কাজে পেশাগত জীবনে সফলতা পেতে হলে কাজটি সম্পর্কে অনেক বেশী বাস্তব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। সাধারণত ছাত্র জীবনে প্রয়োজনীয় কিছু অর্থ আয় করতে পারলেই হয়। তাই এই সময়ে কিছু একটা করতে গিয়ে সফল না হলেও খুব বেশী অসুবিধায় পরতে হয় না। আর এই সময়টাতে খুব বেশী আর্থিক যুকি না নিলেও হয়। কোন একটা বিষয়ে উদ্যোগ নিলে বন্ধুরা মিলেই সেটা করে ফেলা যায়। তাই এখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার অনেক সুযোগ থাকে। কোন একটি বিষয় নিয়ে আপনি যখন অনেক বেশী পরিক্ষা করতে পারবেন সেই বিষয়টি যে আপনার নখদপর্নে চলে আসবে সেটা না বললেও বোজা যায় । মূলত এই বিষয়টির উপরই আপনার ভবিষৎ সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে।
তাই আমি সবসময় ই ভাবি ছাত্র জীবনে এমন কোন কাজ বা ব্যবসার সাথে জড়িয়ে না যাওয়া যা নিয়ে আপনি আপনার পেশাগত জীবনে আগাতে চান না। এমন কিছু করা শুরু করুন যা আপনি আপনার পেশাগত জীবনেও চালিয়ে নিবেন। তাহলে পড়াশুনা শেষ করে অন্যদের যেখানে ৫ বছর লাগবে আপনার সেখানে ৫ মাস যতেষ্ট। কারন আপনি ইতিমধ্যেই ৫ বছেরের অভিজ্ঞ।
পড়াশুনার পাশাপাশি কিছু করার ইচ্ছা আমাদের জীবনকে আমাদের সমাজ ও দেশকে অনেকটাই পাল্টে দিতে পারে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষিত বেকার তৈরি করছে। তাই পড়াশুনা শেষ করে কিছু করব এই ভেবে বসে না থেকে অপ্রয়োজনে সময় নষ্ট না করে পড়াশুনার বাইরে যেই সময়টি পাওয়া যায় সেই সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। আর যারা ছাত্র জীবনে একেবারেই কিছু করবেন না বলে ঠিক করে ফেলেছেন তারা শুধুমাত্র পড়াশুনাটাই ভাল করে করুন। কারন, যেকোন প্রতিষ্ঠানই বেষ্ট রেসাল্ট করা ছাত্রদের নিয়োগ দিতে চায়। চাকরী দাতারা ভাল করেই জানেন অতি ভাল ছাত্ররা সব সময় কাজ বা চাকরীর এবং অফিসের বসের অন্ধ ভক্ত হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৩:১১
স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন বলেছেন: ভাল লিখেছেন . . . .কিন্তু অন্য কি কাজ করবো|সেটাইতো খুজে পাই না|কিছু অন্য উপায় বললে ভাল হতো|