![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে দেখলাম-
ভালো রেজাল্টের আশায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের লেজুড়বৃত্তি করে।
শিক্ষকেরা নানা সুবিধা প্রাপ্তির জন্য লাল, নীল, সাদা দল করে।
দলীয় আধিপত্য বিস্তারে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে গুলি করে মারে।
মাগরিবের নামাজের পর কবি আল মাহমুদকে বিশ্ব সাহিত্যের উন্মুক্ত আঙ্গিনায় বলেছিলাম-
আপনি যেটাকে ডাকাতদের গ্রাম বলেছিলেন। সেটা আসলে খুনিদের গ্রাম।
এই খুনিদের গ্রাম আমার না।
বাপের পেনশনের টাকার জন্য এক অফিস থেকে অন্য অফিসে ঘুরে
ক্লান্ত হয়ে গেছি। জুতোর তলি ক্ষয় হয়ে গেছে।
পরহেজগার কেরানি থেকে কর্মকর্তা সবাই নানা আশ্বাস দিয়ে গেছে।
কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
একজন বললেন- দালাল ধরেন। আমার বিবেক বললো- না।
কবি হুমায়ুন আযাদের কবিতার লাইন বুকের ভিতর প্রতিধবনিত হতে থাকে
"এ-বদ্বীপে দালালি ছাড়া ফুলও ফোটে না, মেঘও নামে না "।
অবশেষে বিবেকের বিসর্জন দিয়ে দালাল ধরলাম।
যে কাজ আমার এক বছরে হয়নি। দালাল সেই কাজ এক সপ্তাহেই করে দিলো।
আমিও এবারও বুঝে গেলাম-এই দালালের ভূখন্ড আমার না।
বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, ফোনের লাইন, পাসপোর্ট অফিস, পুলিশ ভেরিফিকেশান,
জমির খাজনা দেয়া, পরীক্ষার সার্টিফিকেট তোলা। সরকারী হাসপাতাল।
সব জায়গায় এই একি দশা।
অফিস আদালতের কাজ হলো - মানুষকে সুবিধা দেয়া।
কিন্তু আমার দেশের প্রতিটি অফিসের মূল কাজ হলো- মানুষকে সমস্যায় ফেলে দেয়া।
কোনো অফিসে ঢুকা মাত্রই আপনি একটা কীটপতঙ্গ ছাড়া আর কিছুই না।
মানুষ নামের মাকড়শারা জাল পেতে বসে আছে আপনাকে ধরার জন্য।
ঘুষের লেনদেন ছাড়া এই জাল থেকে আপনার আর মুক্তি নেই।
আমি উপলব্ধি করলাম- ঘুষের এই স্বর্গভূমি আমার না।
নাগরিক বোধ থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগে ভোটকেন্দ্রে পা রেখে
বুঝতে পারলাম- আমার মতো বেকুব আর কেউ নেই।
আমার কষ্টলাঘবে আমার ভোটখানা আগেই দেয়া হয়ে গেছে।
কিংকর্তব্য বিমুঢ় আমি বুঝতে পারলাম-
এই স্বাধীন দেশে একজন নাগরিকের সমস্ত অধিকার লুট হয়ে গেছে।
এই লুটের দেশ আর আমার না।
তারুণ্য আর যৌবনের সোনালী দিনগুলো পার হয়ে
এখন আমি বুঝতে পারি-
পনের হাজার মাইল দুরে অবস্থিত ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের ভূখন্ডে
মাত্র সাত হাত মাটি ছাড়া আর কোনো কিছুই এখন আমাকে টানেনা।
যার সাড়ে তিন হাতে ঘুমিয়ে আছেন আমার বুকের হৃদপিন্ড বাবা
আর সাড়ে তিন হাতে আমার কলিজার টুকরা মমতাময়ী মা ।
©somewhere in net ltd.