নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরিফ আটলান্টা

আরিফ আটলান্টা › বিস্তারিত পোস্টঃ

না। তোমাদের আর্তনাদ কেউ শুনতে পাচ্ছে না।

২২ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৫৯

না। তোমাদের আর্তনাদ কেউ শুনতে পাচ্ছে না। কবি দারবিশ বলেছিলেন- মুসলমান শাসকগোষ্ঠীর চিন্তা যতদিন না মুক্ত হবে ততদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনও মুক্ত হবে না।


ইসরাইল যেদিন যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দেয় সেদিনই বলেছিলাম- এই বিরতি মানেই দানবের নতুন শক্তি নিয়ে ফিরে আসা। রক্ত পান করতে করতে দানব যখন ক্লান্ত হয়ে যায় তখন তার একটু অবকাশের প্রয়োজন হয়। অবকাশ শেষ হওয়ার পর সে রক্ত পানের নতুন উন্মাদনা নিয়ে ফিরে আসে।

আমরা যখন প্রতিদিন ইফতার -সেহেরি খেতে বসি। দানবরা তখন বসে ফিলিস্তিনী শিশুর রক্ত পান করতে। স্পেশ থেকে পুরো পৃথিবী দেখা যায়। শুধু দেখা যায়না- ফিলিস্তিনের নিষ্পাপ শিশুদের বেঁচে থাকার জন্য করুণ আহাজারি। দেখা যায়না দানবের এই রক্ত পানের দৃশ্য ।

সভ্য পৃথিবী তো দারুন এক কাজ করেছে। স্পেসে আটকে থাকা দু নভোচারীকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। এজন্য পুরো পৃথিবীর মানুষ ওদেরকে প্রশংসার জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছে। ভাবতে অবাক লাগে এই পৃথিবীর মানুষ এরকম একচোখা অন্ধ হলো কেমন করে?

যে সভ্য দুনিয়া নয় মাস আটকে থাকা দুজন নভোচারীকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে পৃথিবীতে জীবিত ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারে , সেই সভ্য দুনিয়া গাজার নিষ্পাপ শিশুগুলোকে দানবের কবল থেকে বাঁচাতে পারেনা।

অথচ, এই মজলুম শুিশু গুলোকে বাঁচানোর জন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন শুধু পৃথিবীর ক্ষমতাবান নিষ্ঠুর শাসকদের একটু সদিচ্ছা।

গাজার বাতাস জুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছে মৃত পড়ে থাকা মানুষের লাশের গন্ধ। যেখানে জানাযার নামাজ হচ্ছে সেখানেও বোমার তাণ্ডব চলছে।
যেখানে চিকিৎসা হচ্ছে সেই হাসপাতালগুলোও গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।

শাসকরা যদি গাজার ভূখন্ডে নিজ শুিশুদের একবার কল্পনা করতে পারতো। তবেই হয়তোবা তাদের হৃদয়ে এতোটুকু দয়ার জন্ম হতো।

গাজার এই নিষ্পাপ শিশুদের হত্যার দৃশ্যগুলো আমার চোখের সামনে পড়লে আমি এড়িয়ে যাই । কারণ- এসব দৃশ্য সারারাত আমাকে আর ঘুমাতে দেয় না। আমার জায়নামাজ অশ্রুতে ভিজে যায়। সিজদার জায়গা জুড়ে অসহায় শিশুদের বেঁচে থাকার করুণ আকুতি ভাসতে থাকে।

দু মিনিট লিফট বন্ধ থাকলে লিফটে আটকে পড়া থাকা মানুষের দম বন্ধ হয়ে আসে ভেবে আমাদের কষ্ট হয়। যেমন কষ্ট হয়েছে স্পেস স্টেশানে নয় মাস আটকে পড়া নভোচারীদের জন্য। সেই একই রকম কষ্টের অনুভূতি কেন গাজায় মৃত্যুর আতঙকে ভীত বিহ্বল হয়ে থাকা শিশুদের জন্য হয়না।


মহাকাশে যারা যায়- তারা স্বেচ্ছায় , সদিচ্ছায় যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যায়। এতে কোনো দূর্ঘটনা ঘটেও যেতে পারে। কিন্তু ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে তা তো কোনো দূর্ঘটনা না। এটা এই সভ্য পৃথিবীর সবচেয়ে সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ড যারা দেখেও দেখেনা- যাদের বিবেক নড়েনা, যারা এই বর্বরতার বিরুদ্ধে উচ্চকিত হয়না, সে কবি হোক, শিল্পী হোক, শাসক হোক, নাগরিক হোক, হিন্দু হোক, বৌদ্ধ হোক, ইহুদি হোক, মুসলমান হোক- আস্তিক হোক, নাস্তিক হোক সবাই হত্যাকারী।


শান্তিতে প্রতিবছর নোবেল প্রাপ্ত গুনী মানুষেরা সবাই একসাথে হয়ে কেন একটা যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে - এই শুিশু হত্যার প্রতিবাদ করতে পারেন না। বিশ্বজুড়ে যেসব মানুষদের গ্রহণযোগত্য রয়েছে সেই সব মানুষেরা কেন এই জুলুম এই হত্যার বিরোধীতা করেন না। কিসের নেশা মানুষকে এতো অন্ধ, এতো বধির আর এতো অভিশপ্ত করে রেখেছে!

সুনিতা উইলিয়ামসকে পৃথিবীবাসী গভীর ভালোবাসায় বরণ করে নিয়েছে। সেই সুনিতা উইলিয়ামস কেন বলতে পারেন না-

দূর মহাকাশে চেরি ফুল ফুটিয়ে লাভ কি - যখন নিজের চোখের সামনেই নিষ্পাপ মানব ফুল গুলোকে আমরা বাঁচাতে পারিনা।

-আরিফ মাহমুদ
মার্চ ২২, ২০২৫ সাল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.