নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরিফ আটলান্টা

আরিফ আটলান্টা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমেরিকায় লাইলাতুল ক্বাদর

২৭ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৫০

গতকাল রাত ছিলো আমেরিকায় লাইলাতুল কদর।

আমার বাড়ির পাশে আটলান্টার সবচেয়ে বড় ইসলামিক সেন্টারটি ছিলো মানুষে কানায় কানায় পরিপূর্ণ।

মূল পার্কিং এ জায়গা পাওয়া ছিলো রীতিমত কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই মসজিদ থেকে দূরে গাড়ি পার্ক করে অনেকটা পথ হেঁটে মসজিদে আসতে হলো।

হুজুরের প্রাসংগিক বয়ানের পর প্রায় রাত পৌনে এগারোটায় ঈশার জামায়াতের পর শুরু হলো খতম তারাবি।

আমি ছিলাম একেবারে পেছনের কাতারে।

আমার আশেপাশে শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। কেউবা পিছনে ছুটোছুটি করছে। অনেক বয়ষ্ক লোক পেছনের দিকে চেয়ারে বসে আছেন। কেউ ক্লান্ত হয়ে ফোন দেখছে।

কেউ কেউ বাইরে গিয়ে একটু হেঁটে এসে আবার নামাজে যোগ দিচ্ছেন।

একজন আফ্রিকান আমেরিকান লোক আমার একেবারে পাশেই গভীর ঘুমে ঘুমিয়ে পড়ে নাক ডাকা শুরু করেছেন।

যে বিষয়টি ভালো লাগলো- কেউ এসে কাউকে ধমক দিয়ে বলছেনা- নামাজ না পড়ে বসে আছেন কেন কিংবা শিশুরা এভাবে ছুটোছুটি করছে কেন।

আফ্রিকান আমেরিকান মানুষটিকেও কেউ বলছেনা- মসজিদে যখন অন্যান্য সবাই নামাজ পড়ছে তখন আপনি এখানে এরকম বেঘোরে নাক ডাকছেন কেন?

যার ইবাদত সে করছে। কারো প্রতি কেউ কোনো জোর জবরদস্তি করছে না।


মনে পড়ে অনেক আগে দেশে ঠিক এমনি এক লাইলাতুল কদরের ঘটনা।

একজন লোক তারাবীর নামাজের সময় মসজিদের পিছনে ঘুমিয়ে পড়েছেন।

সাথে সাথে মানুষ উনাকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে এসেছে। যেন উনি কোনো ফৌজদারি মামলার আসামি। আর মুসল্লিরা এই মামলার আসামি ধরার পুলিশ।

উনাকে জেরা করা শুরু হয়ে গেছে।

মসজিদে কি একরম ঘুমানোর জায়গা?
আর ঘুমাবেনই যখন তখন মসজিদে আসলেন কেন?
নিজের নামাজেরতো ক্ষতি করছেন। আর মসজিদের পরিবেশও নষ্ট করছেন। আরো কত কি?

ভাবলাম- কি এক ভয়ঙ্কর অবস্থা!

সুদ, ঘুষ, দূর্নীতি, জুলুম ইত্যাদির সব কিছু করে মসজিদে নামাজ পড়তে আসলে মসজিদের পরিবেশ নষ্ট হয়না। মসজিদের পরিবেশ নষ্ট হয় শুধু একজন দূর্বল মানুষের মসজিদের ভিতর ঘুমিয়ে পড়লে।

যে মসজিদ শান্তির জায়গা সেখানে অপমানিত করা হলো একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষকে।

একজন বয়ষ্ক মানুষকে এভাবে অপমানিত হতে দেখে আল্লাহ কি খুশি হন না কি নারাজ হন?

শুনেছিতো - তিনটি জিনিসে আল্লাহ খুব নারাজ হনঃ
যখন কেউ কারো প্রতি জুলুম করে, কেউ কারো হক নষ্ট করে আর যখন এক মানুষ অন্য মানুষকে অপমান করে।

অথচ, সুযোগ পেলেই এই তিনটি জিনিসই আমরা করি ।


আর যে জিনিসটা নিয়ে আমাদের সারাক্ষণ চিন্তা - সেটা হলো - অন্য কেউ ইসলামি বিধান সঠিক ভাবে মানছে কি মানছে না তা নিয়ে।

নিজে জান্নাতে যাবো কি যাবো না তার কোনো ঠিক নেই। কিন্তু আমাদের সব টেনশন শুধু অন্যকে জান্নাতে পাঠানো নিয়ে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.