![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মহাভারতের একটা দানবীয় চরিত্রের নাম হলো বাকাসুর। বাকাসুরের সীমাহীন ক্ষুধা। যা নড়ে তাই সে ভক্ষণ করে। যে তাকে খাওয়ায় -তাকেও সে খায়। কিন্তু তারপরও তার ক্ষুধা মিটেনা।
এই সময় একচক্র নগর বাসীরা একটা পরামর্শ করে। তারা মহাবীর ভীমকে নিয়ে আসে বাকাসুরের কাছ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে।
ভীম তাদের কথা শুনে বলেন- আমি না হয় আজকে এক বাকাসুরের কবল থেকে তোমাদের বাঁচালাম। কিন্তু এরপরতে আবার নতুন ক্ষুধা নিয়ে নতুন রুপে নতুন বাকাসুর আসবে। তখন আবার তোমাদের কে বাঁচাবে।
এদিকে বাকাসুর বুঝে ওঠতে পারছেনা - কিভাবে তার এই আগ্রাসী ক্ষুধার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
সে দেবতা শিবের কাছে গিয়ে বলে- আমার ক্ষুধাতো মিটেনা। কি করা যায়।
শিব তাকে বলেন- ক্ষুধা বাড়াতে বাড়াতে তোমার নিজের সর্বনাশ তুমি নিজেই করেছো। এবার বাঁচতে হলে তোমার নিজেকে নিজেই খেতে হবে। এছাড়া তোমার আর বাঁচার কোনো উপায় নাই।
বাকাসুর এবার নিজেকে নিজেই খাওয়া শুরু করে। মুখ দিয়ে শরীরের যে অঙ্গ নাগাল পায় তাই সে খায়। এখন তার শুধু গলা থেকে শুধু মাথা পর্যন্ত আছে। সে বসে পড়ে এক নির্জন মন্দিরের চূড়ায়।
সে বসে বসে দেখে- মন্দিরে যারা আসে তারাও নানা রকমের প্রার্থণা করে। কারো আরো সম্পদ চাই। কারো ক্ষমতা চাই। কারো খ্যাতি চাই। কারো যশ চাই। কারো সন্তান চাই।
মন্দিরে সবার চাই আর চাই। শুধু চাওয়ারই প্রার্থণা। একজন মানুষও বলছেনা- আমার যা আছে তা যথেষ্ট হয়ে গেছে। আমার আর কিছুই চাই না প্রভু।
বাকাসুর ভাবছে- তার না হয় পেটের ক্ষুধা। কিন্তু এই সব মানুষেরতো আরো নানা রকমের ক্ষুধা।
খ্যাতির ক্ষুধা, যশের ক্ষুধা, ক্ষমতার ক্ষুধা- কত মানুষের কত রকমের ক্ষুধা। সমাজ ভর্তি শুধু বাকাসুর। কেউ বড় , কেউ ছোট, কেউ মাঝারি বাকাসুর। যার ক্ষুধা যত বেশি সেই তত বড় বাকাসুর।
এতো ক্ষুধা নিয়ে এই সব মানুষের জীবনে শান্তি কিংবা সুখ আসবে কেমন করে।
আসলে এই পৃথিবীতে ক্ষুধা নিয়ে কারো জীবনে কোনো শান্তি আসেনা। সেটা পেটের ক্ষুধা হোক । যশ, বিত্ত কিংবা ক্ষমতার ক্ষুধা।
সেজন্য কিছুদিন আগে নোমান আলি খান বলেছিলেন- সুখ এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। কিন্তু সেটা নিয়ে কোরআন শরীফের কোথাও কিছু লেখা নেই কেন?
কারণ হলো- নিরবিচ্ছিন্ন সুখ বলতে কোনো কিছুই নেই। আছে শুধু সন্তুষ্টি। আর এই সন্তুষ্টিই হলো জীবনের সবচেয়ে বড় সুখ।
©somewhere in net ltd.