নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরিফ আটলান্টা

আরিফ আটলান্টা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজকের ভূমিকম্প নিয়ে আমার দুপয়সাঃ

২১ শে নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০০

এক) বিবিসির খবরে জানা গেছে দেশে ৫.৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। স্থায়ীত্ব মাত্র ২৩ সেকেন্ড। এই ক্ষণিক কম্পন যদি মাত্রায় সামান্য আরও বাড়তো আর যদি সময়টা আরও কিছুটা দীর্ঘ হতো তবে হয়তো ঢাকা এক মুহূর্তেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত হতো। কোটি মানুষের জীবন আজ শুধুই টিকে আছে মাত্র এক ডিগ্রি কম কম্পন আর কয়েক সেকেন্ডের অনুগ্রহ আর মহান রাব্বুল আলামীনের অসীম দয়ায় ।

দুই) একতলা বা দোতলার মানুষ হয়তো ভয়ে দৌড়ে বের হয়ে যেতে পারে। তাদের অন্তত চেষ্টা করার অবকাশ থাকে। কিন্তু যারা উঁচু ভবনের সাত, আট বা বারো তলায় বসবাস করেন, তাদের জন্য কোনো পালাবার পথ নেই। এমন আকস্মিক বিপর্যয়ে দরজা খোলে না, সিঁড়ি দেখা যায় না,মানুষ কি করবে ভেবে পায়না। মানুষ তখন কেবল ভাগ্যের কাছে সমর্পিত হওয়ার অপেক্ষা করে।


তিন) এ অবস্থায় মানুষের আলোচনা হওয়া উচিত ছিল অপরিকল্পিত নগরায়ন নিয়ে, বিপর্যয়ের পর কিভাবে একটি শহরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়ে। কিন্তু জীবন ফিরে পাওয়া মানুষই কিছুক্ষণ পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু করে তোলেছে কার ওড়না আছে, কে ওড়না পরেনি, কে কেমন পোশাক পরেছে এসব নিয়ে। হায় মানুষ!! আমাদের দৃষ্টি কেন সবসময় নারীর পোষাকেই আটকে থাকে।


চার) পরিবেশ উপদেষ্টার ভাষ্য ঢাকার প্রায় ৯০ শতাংশ ভবনই রাজউকের কোড অনুসারে নির্মিত নয়। প্রশ্ন আসে তাহলে এ ভবনগুলো দাঁড়াল কীভাবে? কে এগুলো নির্মাণ করলো? কে অনুমোদন দিল? উত্তর জানার জন্য বিশেষজ্ঞ দরকার হয় না। কারণ যারা ভবন তৈরি করেছে আর যারা অনুমোদন দিয়েছে সেখানেই ব্যাপক ঘুষের লেনদেন হয়েছে। আমরা কয়েকদিন এই নিয়ে আলোচনা করবো, দায় চাপাবো, তারপর আবার নতুন ভবন উঠবে, আবার ঘুষ চলবে, আবার কোনো বিপর্যয়ের সামনে মানুষ অসহায় হয়ে চেয়ে থাকবে। কিন্তু কেউ দায় নিবেনা।

পাঁচ)ভূমিকম্পের পর মানুষের প্রতিক্রিয়া ছিল বিচিত্র অথচ একই সুরে যেন বাঁধা। মুসলমান আযান দিচ্ছে, হিন্দু উলুধ্বনি করছে, খবর পাঠক সরাসরি সম্প্রচারে কলেমা পড়ছে। সবাই যার যার মতো করে নিজের স্রষ্টাকে স্মরণ করছে। মানুষের পা যখন শক্ত থাকে তখন তার ক্ষমতার দম্ভও থাকে। আর যখন বিপদের মুখোমুখি হয় তখন মানুষের অসহায়তা ও নিবেদন একই স্রোতে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। কারণ এট দ্য এণ্ড আমরা সবাই একই রক্ত মাংসের মানুষ।

ছয়)জীবন, ধনসম্পদ সবই ভীষণ ভঙ্গুর। মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। মানুষ তার হাজারো প্রযুক্তি, গবেষণা সত্ত্বেও ভূমিকম্প, সাইক্লোন, টর্নেডো বা সুনামি থামাতে পারে না। এগুলো মানুষের হাতে নেই। কিন্তু লোভ, হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা এসব থামানোর ক্ষমতা মানুষের ইচ্ছে শক্তির মধ্যেই নিহীত আছে। অন্তত এই শিক্ষা আমরা যেন এই কম্পনের অভিজ্ঞতা থেকে নিতে পারি- প্রকৃতি আমাদের নাড়া দিয়েছে এবার আমরা নিজের ভিতরটাকেও একটু নাড়া দিই। আমরা যেন আরেকটু সহমর্মী হই, আমরা যেন আরেকটু বিশুদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করি।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.