নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একমুঠো জোনাকি

আরিফুন নেছা সুখী

সাংবাদিক ও সাহিত্যিক

আরিফুন নেছা সুখী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজব গাড়িতে মজার ভ্রমণ

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৯

রিয়াশা পড়তে বসেছে। এবার ও নার্সারী ক্লাসে উঠলো। স্বরবর্ণ ব্যঞ্জণ বর্ণ শিখছে। লিখতে ও পড়তে পারে। তবে অল্প অল্প। সে নিজের নামও লিখতে পারে। স্কুলে বাড়ির কাজ দিয়েছে স্বরবর্ণ লেখা। তাই সে বসে বসে স্বরবর্ণ লিখছে। লিখতে লিখতে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে শুয়ে পড়ছে রিয়াশা। অ তে অজগর, আ তে আম, ই তে ইুঁদর...

এমন সময় একটা শব্দ শুনতে পেলো রিয়াশা। মনে হচ্ছে ট্রেনের শব্দ। দূরে কোথাও ট্রেন চলছে। দূরে নয়তো শব্দটা খুব কাছে মনে হচ্ছে। রিয়াশা চমকে ওঠে। এ কোন জায়গা! এটা কি? কিছুই বুঝতে পারছেনা রিয়াশা। মনে হচ্ছে সে একটা ট্রেনে বসে আছে। কিন্তু সেতো খাটে শুয়ে বই পড়ছিলো। ট্রেন এলো কোথা থেকে! ট্রেনটা মাঠ ঘাট পুল পেরিয়ে ছুটছেতো ছুটছে। ট্রেন মাঠে ঘাটে! ট্রেনতো রেল লাইন দিয়ে চলে! কিন্তু রেল লাইনতো দূরের কথা, মাঠ ঘাট কিছুই মানছে না ট্রেনটা। কিছুই বুঝতে পারছেনা সে। ঝমাঝম শব্দ তুলে ট্রেনটা ছুটছেতো ছুটছেই...

এ কি চারপাশ অন্ধকার। মাঝেমাঝে কোথাও লাইট জ্বলছে। মনে হচ্ছে এখন অনেক রাত। দূরে কোথাও বাঁশি বাজছে। রিয়াশা চমকালো। ট্রেনটা এখন বনের মধ্যে। একি! সেতো ট্রেনে না। মনে হচ্ছে এটা একটা গাড়ি। গাড়িটা দেখতে ট্রাকের মতো। আবার ঠিক ট্রাকের মতোও না, অনেকটা ট্রামের মতো। আবার ট্রেনের মতোও মনে হচ্ছে! গাড়িটা ট্রেন, ট্রাক, ট্রাম মিলিয়ে কেমন যেন! রিয়াশা আবার চমকালো। এটা আসলে কি! সেকি ট্রেনে, ট্রাকে, নাকি ট্রামে! কিছুই বুঝতে পারছেনা। গাড়িটা ছুটেই চলেছে। সেতো খেয়ালই করেনি গাড়িটা চালাচ্ছে কে? একি গাড়িটা চালাচ্ছে একটা হাতি! রিয়াশা এবার একটু ভয় পেলো। গাড়ি চালাচ্ছে হাতি! এও কি সম্ভব! কার্টুনে না হয় সবাই সব পারে! কিন্তু এতো বাস্তব। বাস্তবে হাতি গাড়ি চালাবে কিভাবে! শুনেছি বানর মানুষের মত কাজ করতে পারে। কিন্তু হাতি!

রিয়াশার মনে পড়লো গত ঈদে দাদার বাড়িতে সে ট্রনে চড়ে গিয়েছিলো। অনেক মজা হয়েছিলো। বাবা তাকে পুরো ট্রেন ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলো। কিন্তু হাতিকে ট্রেন চালাতে দেখে সে ভয় পেল। মনে সাহস নিয়ে বললো- কে তুমি? হাতিটা বললো আমি এই গাড়ির ড্রাইভার।

রিয়াশা বললো হুম সেতো বুঝলাম তুমি এই গাড়ির ড্রাইভার। কিন্তু তোমার নাম কি?
- আমি ঐরাবত। হাতিটা বললো।
- ও আচ্ছা আমার নাম রিয়াশা। তুমি এই আজব গাড়ি নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?
- আজব গাড়ি না, এটা আমার মজার গাড়ি। আমি আমার মজার গাড়ি নিয়ে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ায়। তুমি কোথায় যেতে চাও বলো? হাতিটা জিজ্ঞেস করলো রিয়াশাকে।

রিয়াশা কিছু না ভেবেই বললো আমি আমার দাদার বাড়ি যেতে চাই। শোঁ করে ছুটে চললো আজব গাড়ি। এক নিমিষেই পৌঁছে গেল রিয়াশার দাদার বাড়ি। রিয়াশা বললো আমাদের আসতেতো সেই সকাল থেকে সন্ধ্যা হয়ে যায়। তুমি এত তাড়াতাড়ি কিভাবে পৌঁছে গেলে? হাতিটা বললো এটা আমার মজার গাড়ি। তুমি মনে মনে যে জায়গায় যেতে চাইবে আমার মজার গাড়ি তোমাকে শাঁ করে সে জায়গায় নিয়ে যাবে। রিয়াশা বললো বাহ! তাহলেতো সত্যি এটা মজার গাড়ি। বলেই সে গাড়ি থেকে নেমে তার দাদার বাড়ির মধ্যে গেল। কিন্তু কেউতো তাকে খেয়ালই করছেনা। ও সবাইকে দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু ওকে কি কেউ দেখতে পাচ্ছে না! ও শারমিন আপু বলে ডাকলো। কিন্তু শারমিন আপু কোনো উত্তরই দিচ্ছে না। রিয়াশা ডেকেই চলেছে। শারমিন আপু ও শারমিন আপু...

এমন সময় মা ডাকলো- রিয়াশা... রিয়াশা। কি বলছো বিড়বিড় করে... স্কুলের সময় হয়ে গেছে, ওঠো ওঠো স্কুলে যেতে হবে। বাড়ির কাজ করেছো, বলো দেখি ঐরাবত মানে কী? কয় ওঠো...

রিয়াশা তড়িঘড়ি করে ঘুম থেকে উঠে বসলো। মনেমনে বললো আমি কোথায়? শারমিন আপুকে ডাকলাম। মা এলো কোথা থেকে? রিয়াশার মা বলেই চলেছে- কয় বলো ঐরাবত মানে কি? রিয়াশা বললো ঐরাবত মানে হাতি। মা বললো শাব্বাশ। রিয়াশা বললো আচ্ছা মা, হাতির নাম কী ঐরাবত? হাতি কি গাড়ি চালাতে পারে? মা হাসলো।

রিয়াশা মাকে জড়িয়ে ধরে বললো, মা ও মা, ঐরাবত মানে কী? মা হেসে বললো কেন- তুমিইতো বললে ঐরাবত মানে হাতি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১১

মহা সমন্বয় বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখেছেন।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০৬

আরিফুন নেছা সুখী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৮

উল্টা দূরবীন বলেছেন: সুন্দর। আমার ব্লগে আমন্ত্রণ।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২০

আরিফুন নেছা সুখী বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.