নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সন্দেহ নেই পৃথিবী দিনে দিনে আধুনিক থেকে আধুনিকতর ও উন্নততর হচ্ছে, নিত্য নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের হুমকিতে কোন মতে টিকে আছে আমাদের এত দিনের কিংবদন্তি কল্পনার সীমানা। প্রযুক্তি বিস্ফোরণ বিশ্বের উৎপাদন কাঠামো আমূল বদলে দিয়েছে আর পুঁজিবাদ লিজ নিয়েছে আমাদের জীবন, মনন ও সংস্কৃতি। বর্তমান সময়ের পরিভাষায় উন্নতি মানে পুঁজিবাদের উন্নতি আর সব কিছুর সুফলের মালিকানা পুজিবাদের কিন্তু কুফলের দায়ে গরিবের মনপলি। পুঁজিবাদে মানুষ মানে গরিব মানুষ, উৎপাদনের ইনপুট মাত্র যার অস্তিত্ব মাপা হয় পরিসংখ্যানে। পুঁজিবাদের সবচেয়ে বড় সফলতা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যাবহৃত সবচেয়ে বেশী দরকারী এবং দামী উপাদান ‘শ্রম’ সবচেয়ে সস্তায় এবং সহজে পাবার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করেছে আর পুঁজিবাদের তাবেদার গণতন্ত্র মানুষকে কয়লার দামে ‘শ্রম’ নামক হিরা বেচতে বাধ্য করছে, পরিনত করেছে বন্ডেড লেবারে। মানুষের চিরচেনা অনেক কষ্টকর কাজই এখন যন্ত্রের ঘাড়ে কিন্তু যন্ত্রের দ্বারা সম্ভব নয় এবং যন্ত্রের চেয়ে কম খরচে সম্ভব এমন সব কাজ এখন মানুষের ঘাড়ে মাত্র দুটো শুকনো রুটির বিনিময়ে। প্রতিটি আলো ঝলমল সুউচ্চ ভবনের গাঁথুনিতে মিশে আছে শত শত আধা-পেটা গরিবের ঘাম, মানুষের রক্তে সাজানো হয় নাগরিক পসরা। প্রতিটি নাগরিক সুখের নীচে চাপা পরে কাল স্রোতে মিশে যায় অজস্র মানুষের বোবা কান্না, দেউলিয়া স্বপ্নেরা পিসে মরে বিকলাঙ্গ হয় বিলাসের বড় বড় চাকাতে। ধরনীর জরায়ুতে ঘামের বীজে ফলা ফসল আর দেহ কলে তৈরী প্রায় সবই চলে যায় জারজ রসনার পুজাতে আর রাতের চোখে ঘুম নামে বুভূক্ষদের গোঙ্গানী সঙ্গীতে।
গত শতাব্দীর সেরা আশির্বাদ পরিবেশ সচেতনতা আর এর অভিশাপ হিসাবে কায়িক শ্রম নির্ভর এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল উৎপাদন ব্যবস্থার ভৌগোলিক ঠিকানা এখন গরীব বিশ্ব যার প্রত্যক্ষ ফল হিসাবে প্রতি রাতে আমার ঘড়ের পাশে লেখা হয় অসংখ্য অচেনা সেলাই দিদি মণিদের অজানা নোনা কাব্য।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৪২
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: নির্মম বাস্তবতা।দারুণ লিখেছেন।এসব বোধহয় আমরা এক কান দিয়ে শ্রবণ করি আর অন্য কান দিয়ে নিজের আত্মবিনাশের পথ প্রশস্ত করি!