নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৯০ সালের পরে যারা কলেজে গিয়েছেন তাদের অধিকাংশই ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে প্রথম যে জ্ঞান অর্জন করেছিলেন তার সারমর্ম হল, "ছাত্র রাজনীতি পঁচে গেছে, এইটা খুবই খারাপ জিনিস, ভাল ছেলেরা এই সব নোংরা বিষয়ে জরায় না"। আমরা রিপুর তাড়নায় মাঝে মধ্যে অকাম করলেও আসলে তো আমরা ভাল ছেলে! এই ভাল ছেলের ভাব মূর্তি বজায় রাখার জন্য চুরি চামারী করে রাজনীতি করলেও পাড়াত চাচার আতংকিত প্রশ্ন, "তুই রাজনীতি টাজনীতি করিসনাতো!" এর উত্তরে বুক চিতিয়ে গর্বের সাথে বলেছি ভাল ছেলেরা রাজনীতি করে না। যার ফলে বাস্তবিক সুবিধা ও প্রয়োজনে রাজনীতি করলেও আমার অবচেতন ভাল ছেলের ভূত কখনই আমাকে রাজনীতিতে নিবেদিত হতে দেয়নি, দেয়নি কোন দলীয় আদর্শকে ধারন করতে বরং আমার ইন্টেলেক্ট শিখিয়েছে কিভাবে ঝুঁকি এরিয়ে ব্যাক্তিক সুবিধা ও ক্ষমতার সঙ্গ পাওয়া যায়। আবার আশি'র পর থেকেই আমাদের কর্ম জীবনে একটা মৌলিক পরিবর্তন প্রকট হতে থাকে। আমাদের পেশা নির্বাচনের চিরায়ত প্রথা অনুযায়ী বেশীর ভাগ মানুষই উত্তরাধিকার সূত্রে পেশা পেত, চাষীর ছেলে চাষী, কামার কুমার জেলে তাঁতী বা বেপারীর ছেলেরা তাদের পূর্বসূরীদের পথ অনুসরন করত যা নানা বাস্তব কারণে আর চাহিদা মেটাতে পারছিল না। সঙ্গত কারণেই এই প্রজন্মের ছাত্রদের মনে তাদের ভবিষ্যত পেশা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা জনিত হতাশা কাজ করত।
৯০ পরবর্তি ছাত্র রাজনীতির এমন কোন গৌরবোজ্জল দৃষ্টান্ত নাই যা রাজনীতিকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে উৎসাহিত করবে। একদিকে ভবিষ্যত পেশার অনিশ্চয়তা অন্য দিকে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে ক্রমবর্ধমান নেতিবাচক প্রচারনা পেশা হিসেবে রাজনীতির কথা মাথায় আসতেই দেয়নি আবার ভাল ছেলের ভাইরাস রাজনীতিতে নিবেদিত প্রাণও হতে দেয়নি। ফলে অনেক রাজনীতি সম্ভাবনাময় তরুনেরা রাজনীতিতেই আসেনি আর যারা এসেছে তাদের মধ্যে রাজনৈতিক গুনাবলী ঠিকমত বিকশিত হয়নি কমিটমেন্ট এর অভাবে। ফলাফল যা হবার তাই, হঠাৎ গজানো বা নাজেল হওয়া নেতার আনাগোনা চারিদিকে, কেউ আর রাজনীতি করে নেতা হতে চায় না, নেতা হয়ে রাজনীতি করতে চায়। এভাবেই সচেতন চালে রাজনীতির মত মেধা ও শ্রমঘন পেশাকে ধারাবাহিক ভাবে মেধা ও শ্রমশূন্য করে শক্তি ও অর্থঘন পেশায় পরিণত করা হয়েছে কর্পোরেট পুঁজির স্বর্গরাজ্য তৈরীর জন্য। দেশপ্রেমিক নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ উৎপাদনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার দীর্ঘ অনুপস্থিতি মোকাবেলার জন্যে এখন দরকার কলেজ হতে শিক্ষাক্রমের পাশাপাশি রাজনীতিকে সবার জন্য বাধ্যতামূলক এবং প্রতিটি শ্রেনীর জন্য নির্দিষ্ট রাজনৈতিক যোগ্যতা আবশ্যিক হিসেবে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভূক্ত করা।
বাংলাদেশের আগামী দশকের অগ্রাধিকার হওয়া উচিৎ রাজনীতিবিদ উৎপাদন!
২| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমাদের রাজনীতি পেশীর।। এখানে নীতি ও আদর্শের বালাই নেই।।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৯
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে গণতন্ত্র না থাকায় মেধাবী ও যোগ্যতর মানুষদের রাজনীতিতে কোন ভবিষ্যৎ নাই। যারা উর্ধ্বতন নেতাদের তেল মাখা এবং নজরানা দিতে পারে, তারাই তরতর করে উপরে উঠে যায়। পেশীশক্তি ও অর্থশক্তি হয়ে ওঠে নেতা হওয়ার বা রাজনীতিবিদ হওয়ার পূর্বশর্ত। এ কারণে মেধাবী ও যোগ্যতররা কখনও রাজনীতি করবে না।