নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দ শ্রমিক! কেবলই গেঁথে যাই শব্দের মালা।

অরণ্য মিজান

শব্দ শ্রমিক! কেবলই গেঁথে যাই শব্দের মালা।

অরণ্য মিজান › বিস্তারিত পোস্টঃ

জনগনের মুরগী আর ঈশ্বরের শেয়াল!

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৩:০৪

মানব ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, ঈশ্বর ভাগ্য নামক মুরগীটি পুরে রেখেছেন অর্থনীতির খাঁচায় যা রয়েছে রাজনীতিবিদ নামক শেয়ালদের জিম্মায় আর ক্ষমতা নামক শয়তানের অধীনে।

জ্ঞান বিজ্ঞানের অন্বেষা মূলত প্রকৃতির দূর্বোধ্য জটিল নিয়মের সরলীকৃত এবং সার্বজনীন উত্তর জানা এবং তা মানব কল্যাণে ব্যবহার করা। আর এই উত্তর খোঁজার কাজটিকে আরও সহজীকরনের লক্ষ্যেই নানা শাখা-উপশাখায় বিভক্ত করা হয়েছে। সমস্ত বিজ্ঞানের ক্ষমতাকেই মানবতার পক্ষে বা বিপক্ষে ব্যাবহার করা যায় আর বাস্তবে ঘটেছেও তাই, পরমানু বিজ্ঞান আক্ষরিক অর্থেই এর জ্বলন্ত উদাহরন। বিজ্ঞান মানব সভ্যতাকে দুই পা এগিয়ে দিলে আবার মানবতাকে এক পা পিছিয়েও দিয়েছে। বিজ্ঞান আর মানবতার এই দ্বন্দের নেট ফলাফলই প্রগতি যা নিরুপন করে সভ্যতার গতি ও প্রকৃতি, আর এটাই প্রকৃতির নিয়ম কেবল মাত্র অর্থনীতি এর ব্যাতিক্রম, যদিও বর্তমানে অর্থনীতি মানেই পূঁজিবাদী অর্থনীতি! গনতন্ত্রে 'জনগন' আর ধনতন্ত্রে 'বাজার' যত নষ্টের গোরা! শিল্প বিপ্লবের প্রত্যক্ষ ফল হিসাবে 'ল্যান্ড-লেবার-ক্যাপিটাল' নির্ভর উৎপাদন কাঠামোর সূত্রপাত হলেও ক্ষমতা ও অস্ত্রের অর্বাচিন ও অযাচিত ব্যবহারে তা খুব শিঘ্রই বস্তুত পক্ষে কেবল মাত্র ক্যাপিটাল নিয়ন্ত্রিত উৎপাদন কাঠামো হিসাবে বিকশিত হতে থাকে যেখানে ‘ল্যান্ড-লেবার’ এর ব্যবহার থাকলেও ভূমিকা থাকে না, ক্যাপিটাল একাই ক্রমান্বয়ে সসস্ত্র ঈশ্বরের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়। এর প্রত্যক্ষ ফলাফল হিসাবে মানুব জীবন ঈশ্বরকে তথা পুঁজিকে আবর্তন করে বেঁচে থাকতে বাধ্য হয়। ইলেকট্রনিক্স বিজ্ঞানের রকেট গতির বিকাশে আমাদের মৌলিক উৎপাদন কাঠামো আমুল বদলে গেলেও অর্থনীতির তাত্ত্বিক কাঠামো এখনও এডাম স্মীথ এর সেই ভ্রান্তিকর ‘ওয়েল্থ অফ নেশন’ আর বায়বীয় ‘মোরাল সেন্টিমেন্ট’ এর গোঁজামিল নির্ভর, কারণ তাতেই পুঁজি ও ক্ষমতার লাভ।

তুলনামুলক ভাবে অর্থনীতি মৌলিক বিজ্ঞানের নবীন শাখা, আর এর জন্ম, উন্মেষ বা বিকাশ জনকল্যাণে বা জনপ্রয়োজনে ঘটেনি, বরং তা পরিকল্পিত ভাবে ব্যাবহৃত হয়েছে জনধোকা দিতে, সামষ্টিক বঞ্চনাকে ব্যাক্তিক সমৃদ্ধির সোপান হিসেবে, আর সে জন্যই জগতের সকল বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের সঠিকতা পর্যবেক্ষক নিরপেক্ষ ভাবে নিরুপন করা গেলেও 'অর্থনীতি বড়ই জটিল বিষয়' জাতীয় ধোঁয়াসার জন্য এর তত্ত্বের সঠিকতা নিরুপনের জন্য লাগে 'বিশেষজ্ঞ' পর্যবেক্ষক যারা অর্থনীতিবিদ হিসেবে বাজারে পরিচিত এবং নানা মুনির মতাদর্শে লালিত ও নানা বেপারীর হালুয়াতে পালিত। বেপারটা আসলে গোপাল ভাঁড়ের 'চোপর' দেখানোর মতই যারা দেখতে পাবে না তারা 'জারজ'! গুনাগুন ও বৈশিষ্টের আলোকে অর্থনীতি কোন বিজ্ঞান নয়, বরং তা ধর্মের মত, “বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর”।

গুন বিচারে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে কার্যকর এবং জঘন্যতম ধর্মীয় মতবাদ হল পূঁজীবাদী অর্থনৈতিক মতবাদ যা বৈজ্ঞানিক যুক্তি, উপযোগীতা ও নৈর্ব্যক্তিক কার্যাকরীতা বিবেচনা না করে 'বাজার', 'চাহিদা' ইত্যাদি ভূতুরে ধারণাকে সুকৌশলে বৈজ্ঞানিক সত্য হিসাবে বিশ্বাস করানো হয়েছে। আমাদের অর্থনীতিবিদগন জগতের সবচেয়ে কার্যকর ও সফল ধর্ম যাজক হতে পারেন কিন্তু কোন ক্রমেই বিজ্ঞানী নয়। সত্যিকার অর্থে আমাদের বর্তমান অর্থনীতি মানব কল্যাণে নয় বরং মানব শোষনেই বেশী কার্যকরী আর সেটাই তার লক্ষ্য। চোখে মনিবের ঠুলি পরানো জ্ঞান পাপীরা অর্থনীতির গতি প্রকৃতির সঠিক ব্যাখ্যা নয় বরং কি ভাবে অর্থনৈতিক নীতির সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হবে সেই ছবক দেন গোঁজামিল আর বায়বীয় শব্দের সাহায্যে, হয়ত এ কারণেই যেখানে দুইজন অর্থনীতিবিদ থাকে সেখানে কম পক্ষে তিনটি মতামত থাকে।
তবে সবচেয়ে বড় দু:খের কথা দু:খ করে কোন লাভ নাই নিজের সহ্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করা ছাড়া কারণ ধর্ম নিয়ে আমরা দুই একটা প্রশ্ন করা শিখলেও অর্থনীতি নিয়ে আমরা এখনো কথা বলাই শিখিনি! বিনা প্রশ্নে কোন কিছু বিশুদ্ধ হয় না, ধর্ম নিয়ে মানুষ যখন প্রশ্ন করতে শিখেছে তখন কোন এক দিন এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তে আসতে পারবে কিন্তু ঈশবর সয়ং প্রশ্নের সম্মূখীন হলেও ঈশ্বরের ভূমিকা ছিনতাইকারী অর্থনীতি এখনো প্রশ্নাতীত বিশ্বাসে প্রতিষ্ঠিত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.