নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দ শ্রমিক! কেবলই গেঁথে যাই শব্দের মালা।

অরণ্য মিজান

শব্দ শ্রমিক! কেবলই গেঁথে যাই শব্দের মালা।

অরণ্য মিজান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিবার পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা দামী সামাজিক সম্পদ

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:২৬

"দেশের লোককে শিশুকাল হইতে মানুষ করিবার সদুপায় যদি নিজে উদ্ভাবন এবং তাহার উদ্যোগ যদি নিজে না করি তবে আমরা সর্ব-প্রকারে বিনাশপ্রাপ্ত হইব, অন্নে মরিব, স্বাস্থ্যে মরিব, বুদ্ধিতে মরিব, চরিত্রে মরিব-ইহা নিশ্চয়।" - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর / শিক্ষাসংস্কার

পরিবার মানব ইতিহাসের প্রাচীনতম, সংখ্যায় বৃহত্তম, দীর্ঘস্থায়ী, অর্থনৈতিকভাবে টেকসই সংগঠন এবং সমাজ গঠনের মৌলিক একক। মানব সভ্যতার ক্রমযাত্রায় পরিবার সবচেয়ে বিশ্বস্ত এবং পরোপকারী সংগঠন। কেবলমাত্র নৈতিক দায়বদ্ধতা বা জৈবিক কারণে নয় মানবজাতির অস্তিত্বের প্রয়োজনেই পরিবার গড়ে উঠেছে ও টিকে আছে ও টিকে থাকবে। মানব গোষ্ঠী আসলে পরিবারের সমষ্টি মাত্র। সমাজ কাঁঠালের মত পরিবারের যৌগিক ফল।

যে কোন মানুষের জীবনে সর্বাধিক সূখ স্মৃতি তার পরিবারকে কেন্দ্র করে, আমাদের পরিবার আমাদের অগ্রাধিকার! আমরা সারা দিন সারা মাস সারা বছর জাপিত জীবনের দায় মেটাতে ব্যাস্ত থাকি। এক দিন যে পরিবারের জন্য যুদ্ধে নেমেছিলাম জীবনের দৌড় সেই পরিবারের সদস্যদের কাছে থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। আমাদের আত্ম কেন্দ্রিক জীবন ক্রমেই আত্মঘাতি হয়ে উঠছে। সূস্থ্য মনোদৈহিক বিকাশের জন্য পারিবারিক সম্পৃতি অপরিহার্য। প্রকৃত সূখের জন্য পারিবারিক শান্তি অপরাহার্য এবং তা সব সময়।

কিন্তু আমাদের রাষ্ট্র সভ্যতার বর্তমান কাঠামোতে ব্যক্তি ও সমষ্টির যত গুরুত্ব পরিবারের গুরুত্ব ততোধিক কম। ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবোধের জোয়ারে পরিবারের সাংগঠনিক ভিত্তি ও প্রভাব এখন ক্ষয়িষ্ণু। তাই পারিবারিক বন্ধন এখন দুর্বল, ক্ষয়িষ্ণু ও অস্বচ্ছ। এর অনিবার্য পরিণতি হিসাবে পারিবারিক ও সামাজিক টেনশন বৃদ্ধি পেয়েছে যা আমাদের জীবনাচরণ ক্রমাগত পাল্টে দিচ্ছে । গতশতাব্দি হতে চলমান প্রযুক্তি বিস্ফোরণ অস্থির, ভঙ্গুর এমনকি আত্নঘাতি সভ্যতার দিকে ধাবমান হয়ে পাল্টে দিচ্ছে জীবনবোধ। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে হতাশা বেড়েই চলেছে, আর কমছে নিরাপত্ত্বাবোধ, সুখ ও স্বস্তি। মানুষ দিনে দিনে বড় বেশী একা হয়ে যাচ্ছে, যার প্রতিফলন ঘটছে জাতীয় জীবনেও, সর্বত্র ঐকমতের বড়ই অভাব, কেবল হানাহানি আর সংঘাত। সভ্যতার শুরু যে সংগঠনটিকে কেন্দ্র করে সর্বত্রই তার ভিত্তি নড়বড়ে যা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ক্রমান্বয়ে নীতি-হীন, স্বার্থপর, আগ্রাসী নরখাদকে পরিণত করছে। পারিবারিক বন্ধন সবল হবার মত সামাজিক পরি-কাঠামো ও প্রণোদনা দুটোরই অভাব নীতি বিপর্যয় ঘটিয়েছে আমাদের ব্যক্তিজীবনেও। তাই আমাদের জাতীয় জীবনে আজ সর্বত্রই নীতি-হীনতার প্রকট আস্ফালন। আর এ সব কিছুর মূলে রয়েছে “পরিবার” নামক আদিমতম সংগঠনটির ক্রমবর্ধমান অকার্যকারিতা।

নিকট অতীতেও আমাদের জীবন ছিল মূলত পরিবার কেন্দ্রিক। প্রকৃত উন্নয়নের জন্য দরকার আমাদের সংসারের উন্নতি। পরিবার হচ্ছে সমাজের বনসাই। আর পরিবারের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ সংসার। তাই সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিবার ভিত্তিক হলেই সংসার বা সমাজ তথা দেশের উন্নয়ন হবে। মানব জীবনের প্রথম শিক্ষা আসে পরিবার থেকে যার প্রভাব বাকী জীবন বহাল থাকে। আমাদের আচরণ ও চরিত্রের উপর পরিবারের প্রভাব ও কার্যকারিতা সর্বাধিক ও দীর্ঘস্থায়ী। মানুষের আচরণ ও দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজের বিবর্তন সাধিত হয়। তাই যে কোন সামাজিক উন্নয়ন/পরিবর্তনের জন্য পরিবার ভিত্তিক উন্নয়ন/পরিবর্তন সর্বাধিক কার্যকরী। আমাদের সামাজিক বিবর্তনে সচেতন ভাবে সংগঠন হিসাবে পরিবারকে কখনোই মূল্যায়ন করা হয়নি, কোন এক অজ্ঞাত কারণে সমাজ বিজ্ঞান এ বিষয়ে বড়ই উদাসীন। আর এজন্যই পৃথিবীর প্রথম সংগঠন এখনো অবৈধ, কারণ এখনো এর কোন প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নাই। পরিবার হচ্ছ সভ্যতার ধারক, মানব অস্তিত্বের বাহক তাই পরিবার বাঁচলে সমাজ বাঁচবে, সমাজ বাঁচলে দেশ বাঁচবে, দেশ বাঁচলে সভ্যতা বাঁচবে।

ক্রম বৃদ্ধমান যান্ত্রিক পশ্চিমা সমাজের সাম্প্রতিক মানবিক উপলব্ধি,”শিশু ও বৃদ্ধ" পালনে পরিবারের বিকল্প নাই। বিশেষ করে নিম্ন জন্মহার, সিঙ্গেল ও সিঙ্গেল প্যারেন্ট পরিবার তাদের প্রধান ক্রমবর্ধমান সামাজিক সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হওয়ায় এবং সূস্থ্য মানবিক বিকাশের জন্য সূস্থ্য পারিবারিক পরিবেশের অপরিহার্যতা নানা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তারা তাদের পরিবার নামক প্রতিষ্ঠানের হেলায় হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য তারা মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প নিচ্ছে, বিশেষ করে ইউরোপের কিছু কিছু দেশ তাদের জিডিপির তিন থেকে সাত শতাংশ পর্যন্ত এই খাতে ব্যায় করছে। বৃটেন “নাথিং ম্যাটার মোর দ্যান ফ্যামিলি” নামে দীর্ঘ মেয়াদী ক্যাম্পেইন শুরু করেছে, ল্যাটিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশীর ভাগ দেশ গ্রীন পেপার কোন কোন দেশ দীর্ঘ মেয়াদী পলিসি পেপার তৈরী করেছে। জাতিসংঘ দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে গত ১৫ মে, ২০১৪ বিশতম বিশ্ব পরিবার দিবসে ঘোষনা করেছে,”ইন্টিগ্রেট ফ্যামিলি ইন পোষ্ট ফিফটিন ডেভেলপমেন্ট এজেন্ডা”। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে বাংলাদেশসহ কিছু দেশ বিশেষ করে দক্ষিন এশিয়ায় যেখানে পরিবার নামক মহামূল্যবান সামাজিক সম্পদ এখনও পোড়া বাড়ির মত টিকে আছে সেখানে এ বিষয়ে তেমন কোনই জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নাই, এমনকি মূল ধারার উন্নয়ন আলোচনাতেও পরিবার নাই!



No matter what you've done for yourself or for humanity, if you can't look back on having given love and attention to your own family, what have you really accomplished?"

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৫

সোনাগাজী বলেছেন:



৮ম শ্রেণীর ফাইনাল পরীক্ষার রচনা হিসেবে নিলে মোটামুটি ভালো হয়েছে।

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:২৩

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: কোন সন্দেহ নেই, বিপদের সময় শুধু পরিবারের লোকজনকেই পাশে পাবেন।

৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৩১

কামাল১৮ বলেছেন: ভালো মানুষরা যে কোন লোকের বিপদের সময় তার পাশে থাকে।পশু পাখিরাও থাকে।

৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কি বলতে চেয়েছেন সেটা আমি বুঝি নাই।

৫| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:০৪

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: আপনার জন্য দোয়া থাকলো। পরপারে ভাল থাকুন।
আপনার হঠাত মৃত্যুর খবর অনেক পরে জানলাম।

৬| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:১৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন

৭| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০২

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার নামটা খুব চেনা জানা (কেননা এনামে সম্ভবত একজন নাট্য পরিচালক আছে)।
এই প্রথম সম্ভবত আপয়ান্র লেখা পড়লাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য হায়- আপনি আপনি আর আমার মন্তব্য পড়ার সুযোগ পাবেন না!!!
ওপারে ভাল থাকুন। আপনার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

৮| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৭

আমি সাজিদ বলেছেন: মানুষ চলে যায় কিন্ত তার পদচিহ্ন রেখে যায়! মাগফিরাত কামনা করি৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.