![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘..মাতাল কোকিল বাসান্ত কুহু তানে
পাগল হাওয়ায় কোন সে দোলা আনে,
প্রানে কি তোর পাস না কিছুর সাড়া ..’
বসন্ত আবার ঘুরে এসে সব কিছু চুরমার করে দিয়ে যায়।মনের দুয়ারে কাল বৈশাখী ঝাড় বইয়ে দিয়ে ঘুমন্ত সব কিছুকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে।সবই আছে কিন্তু কি যেন নেই। হুহু বাতাশ বয়ে যায় বনে। নিসসঙ্গ কোকিল মাতাল হয়ে ডেকে ডেকে ঘুরে বেরায়। ক্লান্ত পথিক আজ জলের তৃষ্ণায় কাতর।প্রকৃতির কিছু একটা হয়েছে। কেন জাপানে দলে দলে মানুষ চেরি ব্লসম দেখতে ভিড় করেছে এই বসন্তে। কে ওদের মাতাল করেছে? চেরি ব্লসম ট্রি নাকি বসন্ত নাকি দুটোই? জাপানে চেরি ব্লসম ফুল ফোটা দেখা একটা উৎসব। আমাদের দেশে এমন উৎসব নেই। চাইলে আমরাও কৃষ্ণচুড়া-রাধাচুড়া, পলাশ-শিমুল ফুল ফোটা দেখার একটা উৎসব করতেই পারি। আমাদের ফুলেও রঙের কমতি নেই। মনের রঙ নিয়ে তো প্রশ্নই উঠে না। চেরি ব্লসম বা ‘সাকুরা’ উৎসবটা জাপান, চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়া - তিনটি দেশেই বসন্তকালের একটা জাতীয় উৎসবে রুপ নিয়েছে। চেরি ব্লসম ট্রি নিয়ে এই তিন দেশের মতামাতির সাথে একটা রেষারেষিও আছে। এই তিনটি দেশেই দুর্দান্ত সুন্দর ফুলবিশিষ্ট এই গাছটির উৎপত্তিস্থল বলে দাবি করে। সে যাই হোক সাদা ও গোলাপী রঙের চেরি ফুলের সৌন্দর্য আসলে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। হাজার বছর ধরে জাপানী মন কে রাঙিয়ে চলছে। এপ্রিলে নদীর দুধারে সারি সারি চেরি ব্লসম ফুলের গোলাপি আভা কিংবা চেরি ব্লসম বনের রাস্তার দু পাশের গোলাপি সাদার ক্যানোপি মনকে না রাঙিয়েই পারেনা।পৃথিবীর নানা প্রান্তের বসন্ত প্রেমিগন জাপানে আসে এ সময়। ধ্যানীর মতো ধ্যানমগ্ন হয়ে নদীর ধারে বসে সে সপ্নসুধা পান করতে একটা কোমল মন দরকার।এমনিই ধ্যানী কোমল মনেরা ছুটে যায় জাপানে। এক থেকে দুই সপ্তাহ জুড়ে এই সুধা পান চলে। ভালো কিছু সব সময়ই ক্ষণস্থায়ী হয়। যে নদীর ধারে চেরি ব্লসম ফুলের শোভা দিনের পর দিন কিংবা মাসের পর মাস দেখলেও মন ভরবে না, যে সৌন্দর্য দেখতে মীনের মতো অপলক চোখ লাগবে, সে রুপও শেষ হয়ে যায়।শুরু হয় তৃষ্ণার্ত মানুষদের নতুন করে অপেক্ষার পালা। এ অপেক্ষা চলবে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত। বছর ঘুরে ঐ সময়টাই যে তাদের তৃষ্ণা মেটাতে চেরি ব্লসম গাছে ফুল ফুটবে। যারা খাটি প্রেমী তারা জাপান যাবে দেখতে আর যারা অর্থের ফাঁদে প্রিয়ার চোখের গাঢ় কালো কাজল আর আলিঙ্গনের উষ্ণ নিঃশ্বাস ভুলতে বাধ্য হয় তাদের জন্য ঢাকায় সোহরাওয়ারদি উদ্যানের শিখা চিরন্তন ঘেসে কিছু চেরি ব্লসম ফুল গাছ রয়েছে। সেখানে গেলে মন ভালো হয়ে যাবে,বসন্তের হুহু বাতাশ বুক চিরে ঢুকে পড়ে কিছুটা সময় আবেগি করে দেবে।
©somewhere in net ltd.