নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

‘ঘুরি, জীবন থেকে পালাতে নয়,জীবনই যেন জীবন থেকে না পালায়’

শিবলী মিঁয়াও

এমএ পাশ ।

শিবলী মিঁয়াও › বিস্তারিত পোস্টঃ

আদমপুর ফরেস্টের বড় গাছগুলো

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৭

ভাল্লুকে কামড়ানো বুড়ো মানুষটার চোখে মুখে একধরনের মৃত্যুভয় মিশ্রিত আনন্দ দেখেছিলাম । তার বৃদ্ধা স্ত্রী তাকে রেখে ভাল্লুকের ভয়ে পালিয়ে না গিয়ে যুদ্ধ করেছে সেই বীরত্ব কোথাও লিখা থাকবেনা, গ্রামের লোকগুলোর মুখে মুখে অনেকদিন কাহিনী হয়ে টিকে থাকবে হয়তো। কারন এদের জীবনে এতো বড় ঘটনা খুব বেশি ঘটে না যে। তারও অনেকদিন পর এ কাহিনী ভুলে যাবে সবাই। আদমপুর ফরেস্টের বড় গাছগুলোও একদিন বিলিন হয়ে যাবে। সেই বড় বড় গাছগুলো, আমরা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে হাটার সময় যে গাছ গুলো বিশাল বুক উঁচু করে সবাইকে চমকে দিয়ে খুব গর্বিত হয়ে ছিল। আমরা অবাক চোখে ওদের দিকে তাকিয়েছিলাম আর ওরা দেখছিল আমাদের। খুব বেশি মানুষ তো এ দিকে আসেনা কাজেই নিজেদের বিশালত্ব দেখিয়ে মানুষকে মুঘধ করে আত্মতৃপ্তিও খুব বেশি পায়না তারা। পাতা ঝরার মাস, গাছে কোন পাতাই আর অবশিষ্ট নেই। বিশাল গাছ জুড়ে প্রশান্তির হলুদ ফুলে ভরপুর। আহ! পাতা ছাড়া বিশাল ঝাঁকড়া গাছ জুড়ে হলুদ ফুলের মেলা বসেছে যেন। মচমচে ঝরা পাতা মাড়িয়ে আমরা এগিয়ে চললাম। আজ সারাদিন জঙ্গলেই হাঁটবো। ঢাকা থেকে গতকাল সকালে ট্রেনে মানুষের পাড়া খেয়ে চিরে চ্যাপ্টা হয়ে শ্রীমঙ্গলে নেমেছি দুপুরে সেখান থেকে আদমপুর ফরেস্টে। ‘অরণ্যর দিনরাত্রি’র মতো ভীষণ নাটকীয় একটা পরিবেশ। বাংলোটা দেখে বারবার আমার ‘অরণ্যর দিনরাত্রি’র কথাই মনে পরেছে। ভিশন নিস্তব্ধ একটা পরিবেশ। এ দিকে ওদিকে নানা ধরনের পাখির ডাক ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। চাপকলের ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করে হাবিব ভায়ের বউয়ের রান্না শুসসাদু খাবার গুলো খেয়ে উদাস হয়ে খেজুর গাছের পাশে বসে থাকলাম কিছুক্ষন। ভরা সন্ধায় অন্ধকার ঠেলে ৫/৬ কিলো দূরের খাশিয়া পুঞ্জিতে যাবার পথটা গাছমছমে। দু পাশে ঘন বন রেখে চাঁদের খুবই সামান্য আলো কেমন এক ভুতুরে পরিবেশ তৈরি করেছে চারদিকে। খাশিয়া পুঞ্জি প্রধানের বাড়িতে চায়ের নেমন্তন শেষ করে আবারও সে পথেই ফেরা। বড় বড় গাছ গুলো এখানেও ভীষণ মুড নিয়ে রাতের বাতাশে হেলছে দুলছে আর দেখছে মানুষগুলোকে। এ মানুষ গুলো এলাকায় নতুন ওরা বুঝতে পেরেছে। বাংলোয় ফিরে তেলাপিয়া মাছের বারবিকিউ নিয়ে বাস্ত হয়ে পড়লাম। অনেক রাত অবধি জেগে খুবই কম ঘুমিয়ে আজ সেই বড় বড় গাছ গুলোকে পেছনে ফেলে ঝিরি পথ বেয়ে হেঁটে যাচ্ছি। সারাদিন এভাবেই হেঁটে ফিরব বাংলোয়। আজ গভীর রাতে ঘুটঘুটে অন্ধকারে এ জঙ্গলে আবার ফিরে আসব। রাতের জঙ্গল আরও অন্যরকম। সব সুধা পান করতে হবে যে। সময় তো বেশি নেই। কাল সকালেই ছুটতে হবে ঢাকায়। এখন হাঁটছি ঝিরি পথদিয়ে। খুবই ঠাণ্ডা পানি। সামনে আর একটা অনেক বড় গাছ দেখতে পাচ্ছি। ওটার নিচে গিয়ে একটু জিরিয়ে নিতে হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.