নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসাদুজ্জামান জুয়েল

আসাদুজ্জামান জুয়েল

রওশনারা বেগম ও আবদুর রশীদ খানের কনিষ্ঠ পুত্র আমি আসাদুজ্জামান জুয়েল। ১৯৭৮ সালের ০৫ জুন শরীয়তপুর জেলার পালং থানা পালং গ্রামের এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবন শুরু মায়ের হাতে। তুলাসার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এস.এস.সি; শরীয়তপুর সরকারী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচ.এস.সি; জাজিরা ডিগ্রী কলেজে থেকে বাণিজ্য বিভাগ হতে বি.কম পাস করার পর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন অনুষদ হতে এলএল.বি ও এলএল.এম সম্পন্ন করি। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই কেটেছে মধুর দিনগুলো। ২০০৯ সালের ০৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্ত হয়ে ২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ ঢাকা বার এসোসিয়েশনে সদস্যভূক্ত হই। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যভূক্ত হয়ে আইন পেশার সাথে যুক্ত আছি। ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতি, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও শরীয়তপুর জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সদস্য হিসাবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। সাংবাদিকতা ও লেখালিখি করি মনের টানে। একই সাথে আইন পেশা ও সাংবাদিকতায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কর্ম জীবন শুরু লেখালিখির মাধ্যমে। দৈনিক ভোরের কাগজ দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু। এর পর দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ, দৈনিক গণমুক্তি সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কাজ করেছি। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬টি। প্রবাসীদের সুখ-দুঃখ নিয়ে লেখা আমার প্রথম উপন্যাস ‘যেমন আছি লন্ডনে’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের একুশে বই মেলায়। দীর্ঘ বিরতির পরে ২০১৯ এর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় ভ্রমণ কাহিনী ‘কলকাতা ভ্রমণঃ জীবনে প্রথম কিছু’; প্রবন্ধ সংকলন ‘সমকালীন ভাবনা’ ও প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘হৃদয়ের শব্দক্ষরণ’। ২০২০ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রবন্ধ সংকল ‘সমকালীন ভাবনা-২’ ও দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘তুই থাকিস পরাণের গহীনে’। এছাড়াও বেশ কিছু বই প্রকাশের অপেক্ষায় আছি। লেখালিখি করি বিভিন্ন ব্লগে। আমার ওয়েবসাইটঃ www.asadjewel.com, নিজস্ব ব্লগঃ www.asadjewel.blogspot.com এছাড়া www.somewhereinblog.net এ নিয়মিত লেখালিখি করি। শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে তিনবার ও লাইব্রেরী সম্পাদক হিসাবে দু্ইবার দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, শরীয়তপুর জেলা ইউনিটের জীবন সদস্য। প্রগতি লেখক সংঘ, শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দ্বায়িত্বে আছি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শরীয়তপুর, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শরীয়তপুর এর আইন উপদেষ্টা হিসাবেও কর্মরত আছি। গরীব-দুঃখীদের মামলা পরিচালনার জন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা শরীয়তপুর জেলা শাখার প্যানেল আইনজীবী হিসাবে দুস্থ্যদের আইনগত সহায়তা প্রদান কাজে নিষ্ঠার সাথে জড়িত আছি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), শরীয়তপুর জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষানিকেতন কর্ম কেন্দ্রীক পাঠাগার, শরীয়তপুরের কার্যনির্বাহী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি দীর্ঘদিন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও অস্ট্রেলিয়ান বার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ইনটেনসিভ ট্রায়েল এডভোকেসী ওয়ার্কশপ, ২০১০ সালে এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার এর উদ্যোগে হিউম্যান রাইটস এন্ড রুল অফ ‘ল’, ২০০২ ও ২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে শিশু ও নারী বিষয়ক রিপোর্টিং কর্মশালা, ১৯৯৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত কম্পিউটার ট্রেড প্রশিক্ষণ, ২০১০ সালে ইউএসএইড-প্রগতি-কালেরকন্ঠ আয়োজিত দুর্নীতি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী ও তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। লেখালিখি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে সমাজ সংস্কারে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার অর্ধপ্রাণ কন্যা রওশন আসাদ প্রিয়ন্তী। সহধর্মীনি মুনমুন সুলতানা লুনা পেশায় শিক্ষিকা। দুই বোন রেহানা আক্তার রেখা এবং কহিনুর আক্তার শিখা এবং একমাত্র ভাই মোহাম্মদ রুহুল আমীন খান আজাদ একজন প্রবাসী। যোগাযোগের জন্য আমাকে মেইল করতে পারেনঃ [email protected]

আসাদুজ্জামান জুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচার বহির্ভূত হত্যা। ভয় হয়, প্রেসরিলিজের বিষয় হতে পারেন আপনিও!

০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১২:৫৯

বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড যুগে যুগে সংঘটিত হয়ে আসছে। এ ধরনের হত্যাকান্ড আজ নতুন কিছু নয়। তবে আগের হত্যাকান্ড নিয়ে মানুষ এত মাতামাতি করতো না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ার কারনে মানুষের হাতের মুঠোয় মূহুর্তের মধ্যেই চলে যায় তথ্য। আবেগী মন সেই তথ্য ঘাটাঘাটি করে, সমালোচনা করে, আলোচনা করে, বিশ্বাস করে, কেউবা অবিশ্বাস করে, করে পোষ্টমর্টেম। মানুষ এখন আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন এবং শিক্ষিত। তাই ইচ্ছে করলেই মানুষকে যা-তা খাওয়ানো যায় না।

আমরা সবাই জানি, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড হচ্ছে এক প্রকার বেআইনী হত্যাকাণ্ড যা সাধারণত রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, সামাজিক ব্যক্তিত্ত্ব, বা অপরাধীকে রাষ্ট্রপ্রদত্ত আইনত বিচারের পূর্বেই হত্যা করা হয়। কিন্তু আমাদের সংবিধান এধরনের হত্যাকান্ড কখনোই অনুমোদন দেয়নি। সংবিধানের কিছু বিষয় বুঝতে রকেট সাইন্স বুঝার মত জ্ঞান প্রয়োজন নেই। সাধারণ কথাগুলো সাধারণভাবেই বুঝা যায়। কিন্তু সরকার কেন যে বুঝতে চায় না সেটাই মাথায় ধরে না। মৌলিক অধিকার পরিপন্থি আরো অনেক কাজই সরকার করে থাকে সেটা যে সরকারই ক্ষমতায় থাক না কেন। যখন সরকারের আসনে বসে তখন জনগণকে তুচ্ছ মনে করে কাজগুলো করে থাকে।

বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড একটা মৌলিক অধিকার পরিপন্থি কাজ। সংবিধানে মৌলিক অধিকার কি তা এখন গুগলে সার্চ দিলেই চলে আসে হাতের মুঠোয়। সংবিধানে মৌলিক অধিকারের কিছু বিষয় তুলে ধরছি যা আমাদের অনেকেরই হয়তো জানা আছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগে উল্লেখ আছে মৌলিক অধিকারঃ

আইনের দৃষ্টিতে সমতাঃ ২৭। সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।

আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকারঃ ৩১। আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষতঃ আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।

জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকাররক্ষণঃ ৩২। আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতা হইতে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।

গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচঃ ৩৩। (১) গ্রেপ্তারকৃত কোন ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্র গ্রেপ্তারের কারণ জ্ঞাপন না করিয়া প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাঁহার মনোনীত আইনজীবীর সহিত পরামর্শের ও তাঁহার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না।
২) গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে গ্রেপ্তারের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের স্থান হইতে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ব্যতিরেকে) হাজির করা হইবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ব্যতীত তাঁহাকে তদতিরিক্তকাল প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না।
৩) এই অনুচ্ছেদের (১) ও (২) দফার কোন কিছুই সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না,
ক) যিনি বর্তমান সময়ের জন্য বিদেশী শত্রু, অথবা
খ) যাঁহাকে নিবর্তনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইনের অধীন গ্রেপ্তার করা হইয়াছে বা আটক করা হইয়াছে।
৪) নিবর্তনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইন কোন ব্যক্তিকে ছয় মাসের অধিককাল আটক রাখিবার ক্ষমতা প্রদান করিবে না যদি সুপ্রীম কোর্টের বিচারক রহিয়াছেন বা ছিলেন কিংবা সুপ্রীম কোর্টের বিচারকপদে নিয়োগলাভের যোগ্যতা রাখেন, এইরূপ দুইজন এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত একজন প্রবীণ কর্মচারীর সমন্বয়ে গঠিত কোন উপদেষ্টা-পর্ষদ্ উক্ত ছয় মাস অতিবাহিত হইবার পূর্বে তাঁহাকে উপস্থিত হইয়া বক্তব্য পেশ করিবার সুযোগদানের পর রিপোর্ট প্রদান না করিয়া থাকেন যে, পর্ষদের মতে উক্ত ব্যক্তিকে তদতিরিক্তকাল আটক রাখিবার পর্যাপ্ত কারণ রহিয়াছে।
৫) নির্বতনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইনের অধীন প্রদত্ত আদেশ অনুযায়ী কোন ব্যক্তিকে আটক করা হইলে আদেশদানকারী কর্তৃপক্ষ তাঁহাকে যথাসম্ভব শীঘ্র আদেশদানের কারণ জ্ঞাপন করিবেন এবং উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য-প্রকাশের জন্য তাঁহাকে যত সত্বর সম্ভব সুযোগদান করিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, আদেশদানকারী কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় তথ্যাদি-প্রকাশ জনস্বার্থবিরোধী বলিয়া মনে হইলে অনুরূপ কর্তৃপক্ষ তাহা প্রকাশে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিতে পারিবেন।
৬) উপদেষ্টা-পর্ষদ কর্তৃক এই অনুচ্ছেদের (৪) দফার অধীন তদন্তের জন্য অনুসরণীয় পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নির্ধারণ করিতে পারিবেন।

বিচার ও দন্ড সম্পর্কে রক্ষণঃ ৩৫। (১) অপরাধের দায়যুক্ত কার্যসংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এইরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোন ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না এবং অপরাধ-সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাঁহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাইবে না।
(২) এক অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারীতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাইবে না।
(৩) ফৌজদারী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হইবেন।
(৪) কোন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাইবে না।
(৫) কোন ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাইবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাইবে না কিংবা কাহারও সহিত অনুরূপ ব্যবহার করা যাইবে না।
(৬) প্রচলিত আইনে নির্দিষ্ট কোন দণ্ড বা বিচারপদ্ধতি সম্পর্কিত কোন বিধানের প্রয়োগকে এই অনুচ্ছেদের (৩) বা (৫) দফার কোন কিছুই প্রভাবিত করিবে না।

সমাবেশের স্বাধীনতাঃ ৩৭। জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।
চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্-স্বাধীনতাঃ ৩৯। (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান করা হইল।
২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ-সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে
(ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক্ ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের, এবং
(খ) সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হইল।

আমাদের সংবিধান আমাদের কতটা অধিকার দিয়েছে তা উপরের লেখাগুলো পড়লেই বুঝা যায়। অথচ আমাদের মৌলিক অধিকার এখন এক যৌগিক অধিকারে পরিনত হয়েছে বা করেছে। ১৯৭৫ সালে যখন বিচার বহির্ভূত হত্যা হতো তখন যে ফরমেটে প্রেস রিলিজ দেয়া হতো এখনও তার কোন ব্যাত্যয় ঘটেনি। সেই পূর্বের ছাপাকৃত ফরমেই মনে হয় প্রেসরিলিজ দেয়া হচ্ছে। ১৯৭৫ সালের ৩ জানুয়ারী দৈনিক ইত্তেফাকে এমনই এক প্রেস রিলিজ ছাপা হয়েছিলো। শরীয়তপুরের এক সোনার ছেলে সিরাজ সিকদার। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সিরাজ সিকদার ছিলেন অকুতোভয় এক মুক্তিযোদ্ধা। বুদ্ধিদীপ্ত এ গেরিলা যোদ্ধার অসাধারণ ভূমিকা তাঁকে অমর ও অনুসরণীয় করে রেখেছে। বিপ্লব পাগল এ বীর গেরিলা যেমন যুদ্ধের মাঠে ছিলেন ভয়হীন, তেমনি রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়ন-গবেষণা পরিচালনা করা, শ্রমিক-কৃষকের মাঝে বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলা এবং তাতে নেতৃত্ব দেয়া খুব অল্প বয়সেই তিনি রপ্ত করেছিলেন। সেই সিরাজ সিকদার ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি চট্রগ্রামে গ্রেফতার হন এবং পরদিন ২ জানুয়ারি গভীর রাতে তাঁকে হত্যা করা হয়। যদিও হত্যাকাণ্ডের ১৭ বছর পর ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের ৪ জুন এই বিষয়ে আদালতে মামলা করা হয়। সেই মামলা এখনো বিচারাধীন। কিন্তু হত্যার পর প্রেস রিলিজে যা লেখা ছিলো তা দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশ পায়। দৈনিক ইত্তেফাকের সেই নিউজটি পড়লেই দেখবেন আজকের প্রেস রিলিজের সাথে কোন পার্থক্য নেই।
“গ্রেফতারের পর পলায়নকালে পুলিশের গুলিতে সিরাজ সিকদার নিহত
গতকাল (বৃহস্পতিবার) শেষ রাত্রিতে প্রাপ্ত পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, ‘পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি’ নামে পরিচিত একটি গুপ্ত চরমপন্থী দলের প্রধান সিরাজুল হক সিকদার ওরফে সিরাজ সিকদারকে পুলিশ ১লা জানুয়ারি চট্টগ্রামে গ্রেফতার করেন। একই দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাহাকে ঢাকা পাঠানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি স্বীকারোক্তিমূলক এক বিবৃতি দেন এবং তাহার পার্টি কর্মীদের কয়েকটি গোপন আস্তানা এবং তাহাদের বেআইনি অস্ত্র ও গোলাবারুদ রাখার স্থানে পুলিশকে লইয়া যাইতে রাজী হন। সেইভাবে ২রা জানুয়ারি রাত্রে একটি পুলিশ ভ্যানে করিয়া তাহাকে ওইসব আস্তানার দিকে পুলিশ দল কর্তৃক লইয়া যাইবার সময় তিনি সাভারের কাছে ভ্যান হইতে লাফাইয়া পড়িয়া পলায়ন করিতে চেষ্টা করেন। তাহার পলায়ন রোধ করার জন্য পুলিশ দল গুলিবর্ষণ করিলে তত্ক্ষণাত্ ঘটনাস্থলেই তাহার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে সাভারে একটি মামলা দায়ের করা হইয়াছে। ‘এখানে উল্লেখ করা যায় যে, সিরাজ সিকদার তাহার গুপ্ত দলে একদল দুর্বৃত্ত সংগ্রহ করিয়া তাহাদের সাহায্যে হিংস্র কার্যকলাপ, গুপ্তহত্যা, থানার উপর হামলা, বন অফিস, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ইত্যাদির উপর হামলা, ব্যাংক, হাটবাজার লুট, লঞ্চ ট্রেন ডাকাতি, রেল লাইন তুলিয়া ফেলার দরুন গুরুতর ট্রেন দুর্ঘটনা, লোকজনের কাছ হইতে জোর করিয়া অর্থ আদায়ের মতো কার্যকলাপের মাধ্যমে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করিয়া আসিতেছিলেন।’”

আমাদের দেশে বিগত প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ‘ক্রসফায়ারে মৃত্যু’ শব্দটি পরিচিতি লাভ করেছে। প্রতিটি ক্রসফায়ারে মৃত্যু পরবর্তী শৃঙ্খলা বাহিনী অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে একই ধরণের বক্তব্য দেয়া হয়। আর বক্তব্যটি হলো আটক পরবর্তী পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলির কারণে মৃত্যু ঘটেছে অথবা আটক ব্যক্তিকে নিয়ে তার দেখানো মতে অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তার অনুগত বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত হওয়া পরবর্তী আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়লে মৃত্যু হয়েছে। এ ধরণের মৃত্যুকে বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড বলা হয় এবং যে কোন সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশের জন্য এ ধরণের হত্যাকান্ড চালানো বিচার বহির্ভূত এবং আইনবিরুদ্ধ। নরহত্যা গুরুতর ও নিকৃষ্ট ধরণের অপরাধ। দেশভেদে নরহত্যার সাজা মৃত্যুদন্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদন্ড। মৃত্যু ঘটানোর অভিপ্রায়ে কোন কার্য দ্বারা মৃত্যু ঘটানোকে দন্ডার্হ (Culpable Homicide) নরহত্যা বলা হয়। দন্ডার্হ নরহত্যাকে খুন হিসেবে গণ্য করা হয়। বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড আইন দ্বারা স্বীকৃত নয় বিধায় এটি দন্ডার্হ নরহত্যা অথবা খুন।

বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বাস জন্মানো না যাবে যে, মৃত্যু ঘটানোর অভিপ্রায়ে হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়নি ততক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বাস করার সঙ্গত কারণ থাকে যে, প্রকৃতই হত্যাকান্ডটি মৃত্যু ঘটানোর অভিপ্রায়ে সংগঠিত হয়েছে। আমাদের দেশে কমিউনিষ্ট নেতা সিরাজ শিকদার পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হওয়ার পরের দিন পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় আটকাবস্থা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে গুলি করা হলে তার মৃত্যু ঘটে। সে সময়কার পুলিশের বক্তব্যটি দেশবাসীর কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি, যদিও তদানিন্তন প্রধানমন্ত্রী সিরাজ শিকদারের মৃত্যু পরবর্তী জাতীয় সংসদে দম্ভভরে বলেছিলেন– ‘কোথায় সিরাজ শিকদার?’ সিরাজ শিকদার বা তার বাহিনী কর্তৃক হত্যাকান্ড বা অপরাধ সংগঠিত হয়ে থাকলেও এ জন্য বিচার বহির্ভুতভাবে তাকে হত্যা আইনের শাসনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

২০০১–এ বিএনপির নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট ক্ষমতসীন হলে কোন এক অজানা কারণে শৃঙ্খলা বাহিনীর অর্ন্তভূক্ত সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এবং কথিত সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত এমন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তিকে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়। এ হত্যা পরবর্তী অপারেশন ক্লিন হার্ট কার্যক্রমকে দায়মোচন দেয়া হয় যেমন দায়মোচন দেয়া হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ হত্যাকান্ড সংগঠন পরবর্তী।

আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অধ্যাদেশ, ১৯৭৯ তে সংশোধনীর মাধ্যমে ২০০৩ সালে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) গঠন করা হয়। র‌্যাবে পুলিশ, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। র‌্যাবকে অপরাধ তদন্তের ক্ষমতা দেয়া হলেও মামলা রুজু ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ক্ষেত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দ্বারস্থ হতে হয়। তাছাড়া সংবিধান ও দেশের প্রচলিত আইনে যে বিধান রয়েছে সে বিধান অনুযায়ী র‌্যাব কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর কোনরূপ কালক্ষেপণ না করে অপরাধীকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করাই সংবিধান ও প্রচলিত আইন। কিন্তু কয়টি ক্ষেত্রে হস্তান্তর করা হয় সে বিষয়ে দেশবাসী সন্ধিহান। ক্রসফায়ারে মৃত্যু ঘটানোর ব্যাপারে র‌্যাবের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ অনুরূপ অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধেও রয়েছে।
সংবিধানের ৩৩(২) অনুচ্ছেদ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৬১ তে সুষ্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, গ্রেপ্তারকৃত একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে যাত্রার সময় ব্যতিরেকে ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে হাজির করতে হবে। কিন্তু র‌্যাব বা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার পরবর্তী যে সব ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন এবং পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় সংবিধানের ৩৩(২) অনুচ্ছেদ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৬১ এর বাধ্যবাধকতা অনুসরণ না করেই অপরাধীদের এ দু’টি বাহিনী গ্রেপ্তারের সঠিক দিন–তারিখ গোপন রেখে ক্রসফায়ারে মৃত্যুর ঘটনা সংগঠনের প্রয়াস নিয়েছে।

পুলিশ, র‌্যাব, শৃঙ্খলা বাহিনী অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যে কোন সদস্য কোন অপরাধী বা তার অনুগত বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষার্থে কতটুকু শক্তি বা বল প্রয়োগ করতে পারবে তাও আইন দ্বারা নির্ধারিত। এ বিষয়ে দন্ডবিধির ধারা ৯৭–এ মনুষ্য দেহ ক্ষুন্নকারী যে কোন অপরাধের বিরুদ্ধে তার স্বীয় দেহ ও অন্য যে কোন ব্যক্তির দেহের প্রতিরক্ষার অধিকার দেয়া থাকলেও সে অধিকারের ব্যাপ্তি এতটুকু বিস্তৃত নয় যে, এ যাবৎকাল ক্রসফায়ারের নামে যে অসংখ্য হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে তাতে একই কাহিনীর পুনরাবৃত্তিতে ক্রসফায়ারের যৌক্তিকতা ও গ্রহণযোগ্যতার সৃষ্টি হয়। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত এবং এ তিনটি বাহিনী ব্যতীত অন্য কোন বাহিনীকে আইনী ঘোষণার মাধ্যমে শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করা হলে সে বাহিনীটিও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী হবে। অপরদিকে বিভিন্ন আইনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলতে পুলিশ বাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, আনসার বাহিনী, ব্যাটালিয়ন আনসার, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, কোস্ট গার্ড বাহিনী ও শৃঙ্খলা বাহিনীসমূহকে বুঝানো হয়েছে। উপরোক্ত ব্যাখ্যা থেকে দেখা যায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীর সদস্যরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অন্তর্ভুক্ত হলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে অপরাপর বাহিনী যতক্ষণ পর্যন্ত আইন দ্বারা শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে ঘোষিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ সকল বাহিনী বা এর কোন একটি শৃঙ্খলা বাহিনী নয়।

আমাদের দেশে বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের ব্যাপারে দেশের সচেতন নাগরিকসহ সুশীল সমাজ দীর্ঘদিন যাবৎ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিজ বক্তব্য তুলে ধরছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাসমূহের অবস্থান একই। বিগত বছরগুলোর ক্রসফায়ারের ঘটনা পর্যবেক্ষণে দেখা যায় একই ধরণের ঘটনা বিএনপি, সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় সংগঠিত হয়েছে এবং হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এ দু’টি দল বিরোধী দলে থাকাবস্থায় একে অপরের শাসনামলে সংগঠিত ক্রসফায়ারে মৃত্যুর ব্যাপারে সোচ্চার থাকলেও ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় এরা কেউ এ ধরণের ঘটনা থেকে নিজেদের নিবৃত্ত রাখতে পারেনি।

দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ সন্ত্রাসী ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পুলিশের ওপর ন্যস্ত। পুলিশ ব্যর্থ হলে অন্যান্য বাহিনীর সহায়তা নেয়ার বিধান থাকলেও তা কখনও পুলিশের মামলা রুজু ও অভিযোগপত্র দায়েরের ক্ষমতাকে খর্ব করে না। পুলিশ বাহিনীর সদস্যের মতো শৃঙ্খলা বাহিনী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বাহিনীসমূহের প্রতিটি সদস্যের নিজ সম্পাদিত যে কোন কর্মের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা রয়েছে। সরকারের প্রশ্রয়ে জবাবদিহিতায় শিথিলতার কারণে একই ব্যাখ্যার পুনরাবৃত্তিতে ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটে চলছে। এতে করে সরকারে থাকাকালীন বিরোধীদের দমন করার উদ্দেশ্যে নেয়া হলেও তাতে কি পূর্ণ সফলতা পাওয়া যায়? আর সে প্রশ্নে না গিয়ে বরং প্রশ্ন হতে পারে কেন এ বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড? তাছাড়া এখনকার সরকারী দল ও দলের নেতাকর্মী ক্ষমতা থেকে বিদায় পরবর্তী একই ঘটনার শিকার যে হবে না সে নিশ্চয়তা কোথায়? বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড বিনা বিচারে হত্যাকান্ডের সাথে তুল্য।

পোশাকধারী বা পোশাকবিহীন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য কর্তৃক বাড়ি অথবা যে কোন স্থান থেকে তুলে নিয়ে হত্যা ও গুমের ঘটনা সাম্প্রতিককালে ক্রসফায়ারের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে। এ ধরণের হত্যাকান্ডও বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের অন্তর্ভুক্ত। ক্রসফায়ারের সাথে এ হত্যাকান্ডের পার্থক্য হলো ক্রসফায়ারের ক্ষেত্রে নিহত ব্যক্তির আত্মীয়স্বজন লাশটি ফিরে পেয়ে সৎকারের ব্যবস্থা করতে পারে যেটি গুমের ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। এমনকি তুলে নেয়া পরবর্তী লাশ ফেরত না পাওয়া গেলে নিহত ব্যক্তির আত্মীয়স্বজনদের দীর্ঘকাল এ ধারণাটি বদ্ধমূল থাকে যে, হয়তো–বা তুলে নেয়া ব্যক্তি জীবিত রয়েছে। এ ধরণের ঘটনা যে কতটুকু বেদনাদায়ক তা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ছাড়া কেউই অনুভব করতে পারবে না। কোনো ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হেফাজতে থাকাকালীন মৃত্যু হলে এই মৃত্যুর সন্তোষজনক কারণ দেখাতে হবে এবং তার না পারলে তার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সদস্য বা সদস্যদের উপরই বর্তাবে।

বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ ও জবাবদিহিতার আওতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আনতে না পারলে একদিন আপনিও হতে পারেন প্রেসরিলিজের অংশ। আজ আপনি ক্ষমতাবান কাল নাও থাকতে পারেন। তাই সংবিধানের মৌলিক অধিকার পরিপন্থি কাজ বন্ধ না করলে একদিন আপসোস করা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না আজকের ক্ষমতাবানদের। তাইতো ভয় হয়, কখন যে কে প্রেসরিলিজ হয়ে যাবেন তা কেউ জানি না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:০৬

রাশেদ রাহাত বলেছেন: বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড যে সরকারের ব্যর্থতার ফসল উহা জনগন জানে। তবে, এখন সময়টা বেশ জটিলতায় যাচ্ছে। কাকে কখন কোন সুরতে ফাঁসিয়ে দেয়য় কে জানে...?

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৩৮

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ রাশেদ ভাই লেখাটা পড়ার জন্য। সব সরকারের সময়েই বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড হয়। তখন তারা বিষয়টা আচ করতে পারেন না, যখন বিরোধী অবস্থানে থাকেন তখনই অনুভব করেন।

২| ০৮ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: পশু আর মানুষের পার্থক্য কই?

১৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৩৮

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: তারা এভাবে চিন্তাই করে না। করলে এমন কর্ম করতে পারতো বলে মনে হয় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.