![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবেগপ্রবন, ভয়ডরহীন, লড়ে যেতে প্রস্তুত শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে।
২৫ অক্টোবর সকাল থেকেই বৃষ্টি ঝড়ছিলো।
ঘরের বাহিরে ঝড়ছিলো মুষল ধারে বৃষ্টি, আর ঘরের ভেতর উদ্বেগ-উৎকন্ঠা!
স্মৃতি ফিরে যাচ্ছিল ফ্লাশ ব্যাকে...২৮ অক্টোবর ২০০৬।
যখন নির্বাচন এবং নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে প্রধান দুই দল রাজপথে মুখোমুখি হয়েছিলো। তৎকালীন সরকার দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার একগুয়েমি আর বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার লগি-বৈঠার সহিংস মনোভাব, অবধারিতভাবে সংঘাতে গড়িয়েছিলো। রাজপথে রক্ত ঝড়েছিলো, লগি-বৈঠা আঘাতে রাজপথে মরেছিলো মানুষ! হয়েছিলো লাসের ওপর উল্লাসের উদ্দাম নৃত্য!
আমি শুনছিলাম- 'সেদিনের নৃশংস মানুষের নারকিয় উল্লাস!
দেখছিলাম- 'মানুষের আঘাতে ঝড়া মানুষের রক্তপাত!
বাহিরে এখনো বৃষ্টি হচ্ছে...
জানালা দিয়ে আসা বৃষ্টির ঝাপটায় আমার স্বস্তি ফেরে।
বৃষ্টির শব্দে বিলীন হয়, ২০০৬ এর সেই নারকিয় উল্লাস! বৃষ্টির পানিতে মিলিয়ে যায় সেদিনের রক্তপাত!
আমি স্মৃতি থেকে বাস্তবে ফিরি। ২০০৬ থেকে ফিরি ২০১৩ এ।
আজ ২৫শে অক্টোবর। আজো নির্বাচন এবং নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে প্রধান দুই দল রাজপথে মুখোমুখি!
আশ্চর্য!!!
সেই অক্টোবর আর এই অক্টোবর একই জায়গা মাড়িয়ে! স্মৃতি আর বাস্তব, ২০০৬ আর ২০১৩ একই সরলরেখায় দাড়িয়ে!
দেশ কি একটুও এগোবে না?
সেই ৯০ থেকে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই দেশে আন্দোলন চলছে। তারপরও প্রতিটি নির্বাচনেই চলছে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা। জনগনের ভোটের অধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এ খেলাই ঘুরেফিরে চলছে ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৬ এ, এমনকি ২০১৩ তেও। গণতন্ত্রের জন্য, প্রভাবমুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবীতে চিৎকার করতে করতেই কি জীবনটা শেষ হয়ে যাবে? দেশটা কি একটুও এগোবে না? আমরা কি আজও এগিয়ে যাবো আরেকটি লগি বৈঠার তান্ডবের দিকে? রাজপথের নৃশংস হত্যাকান্ডের দিকে? আরেকটি ওয়ান/ইলেভেনের দিকে?
এমনই উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা নিয়ে, দেশে সম্ভাব্য সংঘাতময় পরিনতির চিন্তায় আর বৃষ্টির শীতল হাওয়ায় উষ্নতা খুজছিলাম একের পর এক চায়ের কাপে।
কিন্তু সৌভাগ্যবসত সকল দুশ্চিন্তাকে পেছনে ফেলে সংঘাত এড়াতে পেরেছে অক্টোবর, এড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ।
অনেক নাটকের পর সরকার বিরোধীদলকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। এবং বিরোধী দলও শান্তিপূর্নভাবে সমাবেশ শেষ করে। যদিও ২ দিনের মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ না নিলে ৩ দিন হরতালের ঘোষনা এসেছে, তবে সবকিছুই শান্তিপূর্নভাবেই শেষ হয়েছে এবং সংঘাত নিয়ে জনগনের উদ্বেগ-উৎকন্ঠার আপত অবসান হয়েছে।
যদিও ২৫ অক্টোবর নিয়ে সারা দেশবাসীর দুশ্চিন্তা আর দিনশেষের ফলাফলকে তুলনা করা যেতে পারে 'পর্বতের মুষিক প্রসবের' সঙ্গে! তবে মনে রাখতে হবে, এটা ইতিবাচক। এবং সারা দিনের দুশ্চিন্তা ও নানামুখি মূল্যায়ন মিথ্যা হলেও পর্বতের সংঘাতময় পর্বত প্রসবের চেয়েও শান্তির মুষিক প্রসব অনেক উত্তম।
তাই দেশবাসী, সারা দিনের দুশ্চিন্তায় অসংখ চা খেলেও দিন শেষে সম্ভাব্য ক্রাইসিস দেখতে না পাবার জন্য সরকার এবং বিরোধী দলের কাছে অতিরিক্ত খাওয়া চায়ের দাম দাবী করতে পারেন। তবে অতি অবশ্যই তাদের ধন্যবাদ দিয়ে নেবেন সংঘাত এড়ানোয় তাদের প্রচেষ্টার জন্য। সবাই ধন্যবাদ দিতে পারেন স্রষ্টাকে এবং কলংকমুক্ত করতে পারেন ২০০৬ এ কালিমালিপ্ত অক্টোবরকে।
©somewhere in net ltd.