নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তৃতীয় রিপুঃ ক্রিকেটীয় কিন্তু ক্রিকেট নয়।
লেখকঃ সোমনাথ সেনগুপ্ত।
ভারত এ ক্রিকেট টা বড় আবেগের জায়গা; সেটা এতটাই ব্যাপক যে, কে যেন বলেছিল ভারতে ধর্ম দুইটাঃ "সিনেমা ও ক্রিকেট"। আমাদের এই বংগদেশে অবশ্য ক্রিকেট এখনও ঠিক ঐ লেভেল এ না পৌছালেও ঐ ট্র্যাকে ই আছে।
ভারতীয় উপমহাদেশে ক্রিকেট বরাবরই ক্রেজ, আর যেখানেই ক্রেজ, সেখানেই টাকা, ক্রিকেটরে ধর্ম বলছি বলে ধরে নেবেন না, এর সাথে জড়িত সকল টাকা ই সাদা টাকা! উল্টোটা হওয়ার সম্ভাবনাই বরং বেশী। এইখানে এসে ক্রিকেটের সাথে জড়িত বানিজ্য, ক্রিকেটের বানিজ্যিকরণ এর কথা আমাদের সরল মনে এসে উকি মারে, আর ক্রিকেটপ্রেমীরা খানিক হলেও মনঃকষ্টে ভোগেন, তবুও নিজেদের মনকে হয়তো তারা প্রবোধ দেন এই ভেবে যে, “আমার প্রিয় ক্রিকেটার ই না হয় বৈধভাবে দুটো পয়সা কামাচ্ছে, ওদের ও তো সংসার আছে।"
এবং তারা প্রিয় দলের প্রতিটা ম্যাচের বল বাই বল ফলো করেন, চরম উত্তেজনা, আর দেশাত্মবোধক আবেগের থেকে। ভাববেন না, যাদের মধ্যে ঐ দেশাত্মবোধ এর বোধ নাই, তারা ক্রিকেট ফলো করেন না; হয়তোবা কেউ কেউ করেন, সেটা প্রতি বল, এমনকি একজন ক্রিকেটারের প্রতিটা মুভমেন্ট, যেমনঃ সে রুমালটা কোমড়ে গুজল কিনা, হাতের ব্যান্ডটা খুলে পরল কিনা, গলার লকেট টা গেঞ্জির ভিতর থেকে বের করে বাইরে রাখল কিনা, বল করার পূর্বে খানিকক্ষণ শরীরটা স্ট্রেস করল কিনা, খানিক কসরত করল কিনা, ব্যাটার হলে রান সংগ্রহে স্লো কিনা, অস্বাভাবিকভাবে আউট হয়ে গেল কিনা? ভাবছেন এ আবার কে, যে ক্রিকেটপ্রেমী না বাট আপনার থেকে ও বেশী খেয়াল রাখে!
তৃতীয় রিপুঃ ক্রিকেটীয় কিন্তু ক্রিকেট নয় এর লেখক ও পত্রিকাওয়ালারা এদের নাম দিয়েছে "বুকি"! (আমি এর তীব্র প্রতিবাদ করে গেলাম)। আরেকদল আছে, সে আকসু, কিংবা পুলিশ।
একজন ক্রিকেটপ্রেমী বা ক্রীড়া অনুরাগী হয়তোবা খেলা দেখছেন আর ভাবছেন, বোলার কি টাইট বল করছে, ব্যটার রান বের করার কোনও সুযোগই পাচ্ছে না, কিংবা ব্যাটসম্যান বোলাররে কি মাইরটা ই না দিল, ব্যাপক সম্ভাবনা আছে, সবটাই স্ক্রিপ্টেড, যাস্ট অভিনেতারা যে যার রোল প্লে করে যাচ্ছে, আর আপনি উত্তেজনায় রীতিমত, কাপছেন, ঘামছেন!
৯৯ বিশ্বকাপ এ বাংলাদেশের পাকিস্তান বধ সে ও নাকি এমনই কোনও স্ক্রিপ্টেড ড্রামা!
(Click This Link)
এতে নাকি আমাদের সোনার ছেলেদের কোনও কিচ্ছু করার ছিল না, সবই নাকি ভাইয়ের খেলা, ডন দাউদ ইব্রাহিম ভাইয়ের খেলা। ধন্যবাদ ভাইকে, আমাদের ম্যাচটা জিতিয়ে দেবার জন্য।
এইটা স্পয়লার হয়ে গেল, হয় হোক, আমি খেলা ছাইড়া আসা লোক!
এইটা ছোট্ট একটা উদাহরণ দিলাম, ক্রিকেট এ ম্যাচ গড়াপেটা নতুন কিছু না, সংবাদের বদৌলতে আমরা কিছু জানি, আর বেশীরভাগই জানিনা, আর ক্রিকেট গড়াপেটা নিয়ে এই বই।
ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটার আদ্যোপান্ত এই বইয়ে উঠে এসেছে, এমন বহুত তথ্য আছে যা আগে জানা ছিল না, যেগুলো আপনাকে ক্রিকেট কে নতুনভাবে ভাবতে শেখাবে, নতুন করে দেখতে শেখাবে, আপনার পূজনীয়, দেবতুল্য কোনও ক্রিকেটারকে ভেবে আপনার মন ঘৃনায় রিরি করে উঠতে পারে।
লেখার ভাষা সাবলীল ও সহজ, লেখকের নিয়মিত লেখালেখির বদভ্যেস এর বদৌলতে, সুখপাঠ্য (বাট ফিলিংসটা দুখপাঠ্য)।
লেখক যদি লেখাটা দেশভিত্তিক ভাগ না করে ক্রনোলজি অয়াইজ বর্ণনা করতেন, সেক্ষেত্রে আমার জন্য সাধারণ ক্রিকেট দর্শকের জন্য হয়তো সুবিধা হত, তাদের জন্য, যারা খেলার খোজ রাখে না, সংবাদ এসে ফেসবুকে উকি মারে।
আপনি যদি ক্রিকেট এর অন্ধকার দিক নিয়ে জানতে চান, বা আপনি নিজে ক্রিকেট নিয়ে খানিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে থাকেন, তবে আপনি এই বইটা পড়ে দেখতে পারেন।
আর আপনি যদি ক্রিকেট নিয়া আপনার (নিষ্পাপ মনের) কৌমার্য ধরে রাখতে চান, ভুলে ও এ বইয়ের ছায়া মারাবেন না।
পুনশ্চঃ লেখক সোমনাথ সেনগুপ্ত আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড, কবে, কখন, কেন আমরা ফেসবুকে এড হয়েছি জানিনা।
তিনি ফেসবুকে বেশ কয়েকটা সিরিজ নিয়মিত লেখেন, আমি বরাবরই তার এই লেখার অনিয়মিত পাঠক, সেই সুবাদে আমি তার ক্রিকেট নিয়ে শুরুর দিককার লেখার সাথে ও পরিচিত।
অনেক ক্ষেত্রেই আমি প্রচন্ডরকম সংশয়বাদী, এই ভদ্রলোক এর লেখা ক্রিকেটের ব্যাপারে আমাকে সংশয়বাদী করে তুলেছে, আমার মনের সরলতা কেড়ে নিয়েছে, এটা ভারী অন্যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১০:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: একটি বই সম্পর্কে জানলাম।