নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মৌন পাঠক

মৌন পাঠক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেহুদা প্যাচাল

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:৩৭

ডাক্তার মারুফ ভাইর সাথে গল্প হচ্ছিল, বেশ খানিকক্ষণ।

আগে পরিচয় দেই এই ডাক্তারেরঃ সে আমার ঠিক বন্ধু না, আবার এই মুহূর্তে খুব কাছের বন্ধু।
আমাদের অরিজিন একই এলাকায় না, একই ক্যাম্পাস না, তার সাথে পূর্ব পরিচয় ও নাই,
আমাদের বন্ধুত্ব শুধুমাত্র মানসিক মিলের কারনে।

তিনি একজন ডাক্তার, নামেই বুঝতে পারছেন।
এই ভদ্রলোকের সাথে পরিচয় হয় যেচে গিয়ে।
আমার মেয়ে অসুস্থ, তাকে নিয়ে গেলাম স্থানীয় উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে।

আমার যা স্বভাব, অলয়েজ ক্যাজুয়াল, সেই ক্যাজুয়াল ও সাদাসিদা বেশে মেয়েদের নিয়ে গেলাম হাসপাতালে।
সে এক অদ্ভূত দৃশ্যঃ এক লম্বা, ঢেংগা লোক মুখে মাস্ক পরা, মাস্কের ভেতর আগোছালো দাড়ি উকি দিচ্ছে, হাতে লাঠি নিয়ে কিছু পুরুষ- মহিলাকে তাড়াচ্ছে, আরেব্বাপ, দুইটারে তো পিটানি ও দিল; অভিজ্ঞতা থেকে বুঝলাম সে দালাল তাড়াচ্ছে।

যারেহ শালা, এ তো দেখি বেতাল মাল!

টিকেট কেটে গেলাম তার ই রুমে, হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার জনাব ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মারুফ, যে হাতে লাঠি নিয়ে দালাল তাড়ায়।

যথাসময়ে আমাদের ডাক এল, গেলাম তার রুমে, কথা বললাম, মেয়েদের দেখল সময় নিয়ে, প্রেসক্রাইব করল।
যা করি, ফেরার সময় আমার নিজের পরিচয় দিলাম, ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হিসেবে ও সাথে চায়ের দাওয়াত দিলাম।

এই ব্যক্তির সম্বন্ধে কিছু না বললেই নয়, পৌনে তিন বছরের পরিচয়ে তাকে কাছ থেকে যা দেখলাম, সে পুরো ভিন্ন এক ব্যক্তি।
ডাক্তার ও মানুষ হিসেবে সে আমাদের দেখা টাইপের বাইরে।

১) সে অপ্রয়োজনীয় ঔষধ লেখে না, অপ্রয়োজনে টেস্ট লেখে না।
২) টেস্ট একান্তই লিখলে তার কমিশন নিত না; এইটা রোগীরে ছাড় দিত, প্রথম কিছুদিন ল্যাবগুলো এইটা মানলেও, পরবর্তীতে তারা নিজেরাই এইটা নেয়া শুরু করল। এই পর্যায়ে এসে ডাক্তার নিজেই এই কমিশন নেয়া শুরু করল ও এই কমিশনের টাকা থেকে দুঃস্থ রোগীদেরকে আর্থিক সাহায্য দেয়া শুরু করল।
৩) হাসপাতালের প্রশাসনিক কিছু পরিবর্তন আনল ও কাজে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা আনয়ন করল।
৪) হাসপাতাল দালালমুক্ত করতে নিজের হাতে আইন তুলে নিলঃ একবার কি হইল, ধাওয়া খেয়ে এক নারী ব্রোকার পড়ে যায় ও এতে তার হাতের শাখা ভেঙ্গে যায়; এইটারে ধর্মীয় ইস্যু করে তার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা শুরু করল।
৫) লাস্ট ১.৫ বছর ধরে সে একটা চেম্বারে বসেঃ
৬)চেম্বারে সে কোনরুপ মাইকিং করায় না, অর্থাৎ প্রচার প্রচারনা নাই।
৭) ফলস্বরুপ, তার রোগী খুব কম, আবার যেহেতু সে টেস্ট কম দেয়, ল্যাব কর্তৃপক্ষ তার চেম্বারে রোগী কম পাঠায়।
৮) তার মিসেস ও ডাক্তার হওয়ায় দুইজনের আয়ে মোটামুটি চলে যায়।

এই হচ্ছে আমার বন্ধু মারুফ ভাই।
সে দারুন একজন মানুষ ও ডাক্তার, দুখের বিষয়, আমরা ভালো মানুষ ও ডাক্তার চিনিনা।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ভোর ৫:০১

সোনাগাজী বলেছেন:



ভালো।
আপনি কি প্রাইভেট ব্যাংকে?

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৭

মৌন পাঠক বলেছেন: না, সরকারি ব্যাংকে।

২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:১৫

কামাল১৮ বলেছেন: ডাক্তার সাহেব একজন ভালো মানুষ।

৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৪৬

শেরজা তপন বলেছেন: ভাল মানুষের কদর কম- তবে নিশ্চিতভাবে তিনি সুখী মানুষ।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৮

মৌন পাঠক বলেছেন: সুখী মানুষ উইথ সাম হতাশা।

৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২৬

কালো যাদুকর বলেছেন: আপনার ভাগ্য ভাল যে এরকম একজন ভাল ডাক্তারের সাথে আপনার পরিচয় আছে।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৯

মৌন পাঠক বলেছেন: আমার বন্ধু ভাগ্য বরাবরই খারাপ, তবে এই একজন ব্যতিক্রম পেলাম আর কি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.