![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গাড়ি চলছিল ফেনী হয়ে চট্টগ্রামের পথে। হঠাৎ রাস্তার পাশে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ দেখে চোখটা আটকে গেল। মসজিদ মুসল্লিতে পূর্ণ, আসরের নামাজ চলছে। আমি গাড়ি থামিয়ে একটু দাঁড়ালাম। কী অপূর্ব, সুরম্য অট্টালিকা। কী বাহারী কারুকাজ। আয়নার মতো ঝকঝকে মেঝে। বিকেলের আলোয় সাদা পদ্মফুলের মতো মসজিদটি ফুটে আছে। তারপর আমার চোখ পড়ল মসজিদের বাইরে। দেখলাম কয়েকজন দীন ভিখারী মাটিতে বসে আছে। তাদের গায়ে নোঙরা শতচ্ছিন্ন পোশাক, হাতে ফুটো পাত্র, মুখমণ্ডলে অসহায়ত্ব, ক্ষুধা আর দয়াভিক্ষার চিহ্ন প্রকট হয়েছে। একটি শিশুও আছে, আজন্ম দুঃখ-কষ্ট যার শৈশবের লালিত্য লুপ্ত করে দিয়েছে। তাকে দেখে কারো মায়া হবে না, নিজের সন্তানের কথা মনে পড়বে না। মসজিদের বাইরের করুণ মুখগুলো আমার ভেতরে যেন এক ঝড় তুলে দিল। তখনো মুসল্লিরা প্রসন্নমুখে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় নামাজ পড়ছেন। তাদের দেখে আমার মনে হলো, এদের প্রত্যেকের নামাজ মূল্যহীন করে দিয়েছে মসজিদের বাইরে ধূলার মধ্যে বসে থাকা দারিদ্র্যের কষাঘাতে দীর্ণ-জীর্ণ এই মানুষগুলো, বাবা আদমের (আ.) এই সন্তানগুলো।
হায় মসজিদ! তুমি ততদিন আল্লাহর ঘর ছিলে যতদিন আল্লাহর সৃষ্টি মানুষের সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায়, নিপীড়িত মানুষের সমস্যার সমাধানে তোমার ভূমিকা ছিল। কিন্তু সেই ভূমিকা ত্যাগ করার কারণে তুমি আজ আর আল্লাহর ঘর নও। আল্লাহতো মসজিদের বাইরে ধূলার পরে বসে আছেন ভিক্ষাপাত্র নিয়ে। তুমি তো আল্লাহর গজবের বস্তু এখন।
হায় মুসল্লিরা! তোমরা আল্লাহকে পাওয়ার জন্য যেখানে গেছ সেখানে নেই তিনি। যতদিন এই অনাহারী কঙ্কালসার মানুষগুলোর মতো একটি মানুষও সমাজে বাস করবে আর তোমরা তাদের কষ্ট দূর করার জন্য সংগ্রাম করবে না, ততদিন তোমাদের কোনো নামাজ হবে না। তোমরা নামাজের দ্বারা আল্লাহকে উপহাস করছ। এ নামাজ আল্লাহর গজবের কারণ হবে। কেননা আল্লাহই বলেছেন, ধ্বংস হোক সেই মুসল্লিরা, যারা লোকদেখানোর জন্য নামাজ পড়ে।
হায় আলেমসমাজ! আপনারা নিজেদের হীন স্বার্থে আর কতকাল আল্লাহ-রসুলের নামে ভণ্ডামি করে যাবেন? আর কতকাল ধর্মকে জোব্বার পকেটে পুরে ধর্মব্যবসা চালিয়ে যাবেন? আপনারা কবে মানুষের সামনে এই সত্য তুলে ধরবেন যে, আল্লাহর রসুল এমন সুরম্য প্রাসাদোপম মসজিদ নির্মাণের জন্য আসেন নি, তিনি এসেছেন দুঃখক্লিষ্ট মানুষের চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য, আশ্রয়হীনকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য, অন্নহীনকে অন্ন, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেওয়ার জন্য। প্রথম যুগের খলিফারা খেজুর পাতার ছাউনি দেয়া মাটির মসজিদে বসে অর্ধ-দুনিয়া শাসন করেছেন। তখন মান, ইজ্জত ও গৌরবে এই জাতি ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ। তাদের এমন মসজিদ প্রয়োজন হয় নি। নামাজ পড়তে এমন মসজিদ লাগে না, আল্লাহর জমিন পবিত্র। আপনারা কবে স্বার্থচিন্তা বাদ দিয়ে মানুষের জন্য চিন্তা করবেন?
গাড়ি চলতে লাগল আর আমার মনের মধ্যে রসুলাল্লাহর সেই কথাগুলো ঘুরপাক খেতে লাগল, “এমন সময় আসবে যখন ইসলাম শুধু নাম থাকবে, কোর’আন শুধু অক্ষর থাকবে, মসজিদসমূহ জাঁকজমকপূর্ণ ও লোকে লোকারণ্য হবে কিন্তু সেখানে হেদায়াহ থাকবে না, আমার উম্মাহর আলেম সমাজ হবে আসমানের নিচে সর্বনিকৃষ্ট প্রাণী। তাদের সৃষ্ট ফেতনা তাদের দিকেই প্রত্যাবর্তন করবে”।
আল্লাহর শোকর, তিনি আমার জীবনকে মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করার তওফিক দিয়েছেন।
(মসজিদের ছবিটি প্রতীকী)
https://www.facebook.com/asun.system.takei.paltai?fref=photo
১৭ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৬
মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: কিনবেন?
২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
না, কিনব না।
৩| ১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:০২
ভোরের সূর্য বলেছেন: আপনার কথাগুলো মিথ্যা নয়। আপনার সাথে একমত। আল্লাহর ঘরের প্রতি আমার যেমন দায়িত্ব আছে তেমনি এর আশে পাশে না খেতে পাওয়া গরিব দুঃখী মানুষের প্রতিও আমাদের দায়িত্ব আছে।
আমারোও মনে হয় যে কোন মসজিদের অতিরিক্ত জৌলুশ কিংবা বিলাসবহুল কিছু বর্জন করা উচিৎ। বরং নামাজের স্থানের পবিত্রতা রক্ষা করা এবং যতটুকু না হলেই নয় সেটাই করা উচিৎ মসজিদের জন্য। আমরা মার্বেল পাথরের এসি লাগানো মসজিদে নামাজ পড়বো আর এর পাশেই আমার ভাইয়েরা দ্বীন,হীন অবস্থায় থাকবে এটা হতে পারেনা।
আপনি ঢাকা চট্রগ্রামের হাইওয়ের পাশের একটা মসজিদে আপনার দেখা অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে লেখাটা লিখেছেন তাই উচিৎ ছিল সেই ছবিটাই দেয়া। এখন যে কোন মোবাইলেই ছবি উঠানো যায়। আপনি সেই সুন্দর মসজিদের ছবি এবং তার পাশে থাকা অসহায় মানুষ এবং ভিখারিদের ছবি দিলে সেটাই সবচেয়ে ভাল হত। মানে টপিকের সাথে মানানসই।
আর প্রতীকী ছবি দিলেও মনে হয় আপনার বিষয়ের সাথে মিল রেখে ছবি দেয়া উচিৎ ছিল। মানে যে কোন জায়গার সুন্দর মসজিদের সাথে তাঁর পাশে থাকা গরীব, দুঃখী মানুষের ছবি।
আপনি যেই মসজিদের ছবিটা দিয়েছেন সেটা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম আবুধাবির শেখ যায়েদ মসজিদ। সত্যিকার অর্থে সেখান আপনার লেখা সেই দৃশ্যটি দেখা যায় না তাই সেই মসজিদ কে প্রতীকী হিসেবে দেয়া উচিৎ হয়নি আবার আপনার কথাগুলোও ঠিক। আপনার লেখার মধ্যে শুধু মসজিদ না বরং সাথে গরীব মানুষের কথাও আছে। বাংলাদেশে এই দৃশ্য পাওয়া খুব স্বাভাবিক যে সুন্দর মসজিদের সাথে এইসব দুঃখী, ভিখারি মানুষের।
১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:১৩
মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: আসল মসজিদের ছবিটি দেয়াকে আমি সমীচীন মনে করি নি। কারণটা আপনার বোঝার কথা। ধর্মের কথা বলে, হাবিজাবি বুঝিয়ে ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করার দৃষ্টান্ত ধর্মব্যবসায়ীরা বারবার স্থাপন করেছে। তাছাড়া আমার আসল যে উদ্দেশ্য, লেখাটির প্রধান যে আবেদন, তা পূরণ করার জন্য ওই মসজিদের ছবিই দিতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। নির্দিষ্ট একটি মসজিদের বিরুদ্ধে তো আমি কিছু বলছি না যে তার ছবি দেওয়াটা দরকারি। সকল মসজিদের সকল মুসল্লিদের জন্যই এই লেখা। ধন্যবাদ।
৪| ১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:২৯
ভোরের সূর্য বলেছেন: আমার উত্তর মনে হয় আপনি পড়েন নি ভালমত। আবার উত্তরের কিছু অংশ দিলাম নীচে....
আর প্রতীকী ছবি দিলেও মনে হয় আপনার বিষয়ের সাথে মিল রেখে ছবি দেয়া উচিৎ ছিল। মানে যে কোন জায়গার সুন্দর মসজিদের সাথে তাঁর পাশে থাকা গরীব, দুঃখী মানুষের ছবি।
আর আমি এটাও বলেছি যে যেই মসজিদের থেকে আপনার অভিজ্ঞতা সেখানকার ছবি দিলেই ভাল হত। আর না দিলেও অন্য ছবি দিলেও আপনার মূল লেখার সাথে মিল রেখে প্রতীকী ছবি দেয়া উচিৎ ছিল।
আপনি সুন্দর মসজিদের ছবি দিয়েছেন কিন্তু ভাল হত এমন কোন মসজিদের ছবি যেখানে একই সাথে সুন্দর মসজিদ এবং সাথে সাথে গরীব,দুখী মানুষের পাশাপাশি অবস্থান দেখা যায়।
যেমন এই ছবিগুলো প্রতীকী হিসেবে
বা
১৭ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৩৭
মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: আমি আসলে ছবিকে বেশি হাইলাইট করতে চাই নি। তবে হ্যা, আপনি যে ছবিদু'টো দিয়েছেন সে ধরনের ছবি দিলে পোস্টটা আরও সমৃদ্ধ হতো। ধন্যবাদ।
৫| ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৪৯
রিমেশা বলেছেন: চমৎকার অনুভূিত আসাদ ভাই, মনেক নাড়া দেওয়ার মত। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গী থেকে এমন সাহসী লেখা স্টিকি করা দরকার।
১৮ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১০
মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যটা পড়ার পরেই মনে হলো, তাই তো! পজিটিভ ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সাধারণত কোনো মানবিক আবেদনসম্পন্ন লেখা চোখে পড়ে না। আমি অন্তত দেখি না। অথচ ধর্মের প্রথম শর্তই হলো- মানবতার কল্যাণ।
৬| ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৩০
বোকার হদ্দ বলেছেন: ব্যাটা নামায পড়িস, ভাগ!!
১৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪৬
মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: ভ্যালা হলো দেখি ল্যাঠা
নামাজ পড়িস ব্যাটা?
----------------------
হা হা হা হা হা। কাজী নজরুলের এই লাইনটা মনে পড়লেই হাসি পায়। এ জাতিকে তিনি খুব গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
পড়তেছি
আপনার গাড়ির ছবিটা দিলেন নাতো?