নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/asadali.ht

মোহাম্মদ আসাদ আলী

সাংবাদিক

মোহাম্মদ আসাদ আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মভীরু সাধারণ মানুষের সীমাহীন মুর্খতার জন্য কে দায়ী?

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৭

আজকের একটি জাতীয় দৈনিকের ধর্ম পাতায় পাঠকের প্রশ্ন ছিল-

-ঘড়ি কোন হাতে পরতে হয়?
-রাতে নখ কাটতে শরীয়তে নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা?
-অমুসলিম বাবুর্চির রান্না করা খাবার খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা?
-শরীরে ইনজেকশন নিলে কি অজু ভঙ্গ হবে?
-অজ্ঞান অবস্থায় যে নামাজ কাযা হয়ে যায় তা কি পরে পড়তে হবে?

যারা প্রশ্নগুলো করেছেন তাদের ব্যাপারে শেষে বলব, যারা এ বিষয়ে ফতোয়া দেন বা দিচ্ছেন আগে তাদের প্রসঙ্গে বলি।

যারা উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবেন আমাদের সমাজে তারা পরিচিত মাওলানা, মৌলভী, আলেম সাহেব হিসেবে। সওয়াল-জবাব বিষয়টিকে সৃষ্টি ও আজ পর্যন্ত টিকিয়েও রেখেছেন এরাই। এর সাথে ইসলামের কতখানি সম্পর্ক তা আমি মাপতে যাবো না, কারণ সেটা আমার অনধিকার চর্চা। ফতোয়া নিয়ে কথা বলার অধিকার সবার নেই। এ নিয়ে কথা বলার জন্য আপনার প্রথমত যেটা লাগবে তা হলো আরবীয় পোশাক ও দাড়ি, দ্বিতীয়ত কোর'আনের কিছু আয়াত ও হাদীসের বাণী হুবহু মুখস্ত থাকা, তৃতীয়ত আরবী ব্যাকরণ সম্পর্কে বিশেষ করে উচ্চারণরীতি সম্পর্কে বিশেষ পাণ্ডিত্য। এই সব যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলেই আপনি একজন প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবীদ হতে পারবেন আর তখন অন্যান্য বিষয়ের ফতোয়াবাজী করার সাথে সাথে ফতোয়া নিয়েও ফতোয়াবাজী করার অধিকার লাভ করবেন। তাই ফতোয়া নিয়ে কথা বলে নিজ কপালে নাস্তিক বা কাফের ট্যাগ ধারণ করতে আপাতত আমি রাজি নই। আমার কথা উত্তরদাতাকে নিয়ে।

মানুষ অজ্ঞ। তারা নামাজ জানে না, কালাম জানে না, কোর'আন জানে না, হাদীস জানে না, আরবী জানে না, দোয়া জানে না, দরুদ জানে না, শরীয়ত জানে না, মারেফত জানে না, ইজমা জানে না, কিয়াস জানে না, তওহীদ জানে না, রিসালাত জানে না, কী যে জানে না তা-ই জানে না। অন্যদিকে আলেম সাহেবরা, ইমাম সাহেবরা, ওয়ায়েজরা কী জানেন না তা খুজে বের করা মুশকিল। তারা কোর'আনের একটা আয়াতের দশটা করে ব্যাখা জানেন, একটা হাদীসের দশ জায়গার দশ রকমের বর্ণনা জানেন, যুগ যুগ ধরে তাদের পূর্বসুরীরা নিরন্তর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চালিয়ে, তর্ক-বিতর্ক করে যে মাসলা-মাসায়েলের পর্বত নির্মাণ করেছেন তাকে এরা ধারণ করেন। বিশাল ফিকাহ শাস্ত্র তাদের ঠোটের আগায় এসে থাকে। কোন নবীকে কীভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, কোন নবীকে সত্য বলার কারণে হত্যা করা হয়েছে, কোন নবীর কোন অনুসারীর বুকে পাথর চেয়ে নির্মম শাস্তি দেওযা হয়েছে সে ইতিহাসও তাদের পেটে ভুটভাট করছে। যখন তখন তারা সেগুলোকে উদগীরণ করে নিজেদের জ্ঞান জাহির করেন।
এত জ্ঞানের অধিকারী হয়ে তারা কি নিশ্চুপ বসে থাকতে পারেন? পারেন না। তাই তারা জাতির প্রশ্ন শুনেন, চিন্তা করেন, উত্তর দেন। এমন কোনো প্রশ্ন নাই যার উত্তর তারা দিতে পারেন না। আমার দীর্ঘ ২০ বছরের জীবনে কোনো মোল্লার কাছে ফতোয়া জিজ্ঞাসা করে উত্তর পাওয়া যায় নি এমন ঘটনা একটাও দেখি নি। কারণ সম্ভবত তারা সর্বজ্ঞ। তারা সর্বসেরা। তাদের জ্ঞানের কোনো শেষ নেই। কোনো পরিধি নেই। তাদের কোনো ভুল নেই। কোনো অপরাধ নেই।

অতএব বোঝা গেল, সাধারণ মানুষ যতখানি অজ্ঞ, মোল্লারা ঠিক ততখানিই বিজ্ঞ। অন্যদিকে এই মহান বিজ্ঞজনেরা যেহেতু ইসলামী জ্ঞানের ধারক ও বাহক, সুতরাং তাদের কোনো অপরাধও নেই। তারা ফুলের চেয়েও নিষ্পাপ, সূর্যের চেয়েও প্রতাপশালী। কিন্তু রাত না থাকলে যেমন দিনের মূল্য কেউ দিতো না, অসুন্দর না থাকলে সুন্দরের মূল্য বুঝতো না, তেমনই অজ্ঞ সাধারণ মানুষ যতদিন আছে, ততদিনই বিজ্ঞরা এক্সট্রা সম্মানের অধিকারী হয়ে বাচতে পারবে। অজ্ঞরা যদি একবার বিজ্ঞদের মুখাপেক্ষী হওয়া ছেড়ে দেয়, নিজেদের সমস্যার সমাধান নিজেরাই করে নিতে শিখে, ধর্মীয় বিষয়ে নিজেরাই কোর'আন-হাদীস বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে তাহলে এদের জ্ঞানসমুদ্র শুকিয়ে মরা জলাশয়ে পরিণত হবে অল্প দিনেই। সুতরাং আর যাই হোক- অজ্ঞ মানুষ তাদের প্রয়োজন। আপনি অজ্ঞদের দলে থাকলে তাদের মঙ্গল। আপনি জানেন না, আপনি বুঝেন না- এ কথা তাদেরকে স্বর্গের সুখ প্রদান করে। এরপর জানার জন্য যখন তাদের দুয়ারে কড়া নাড়েন তখনই কেবল তারা জ্ঞানের প্রকৃত সার্থকতা উপলব্ধি করেন। নিজের অজান্তেই বলে উঠেন- আলহামদুলিল্লাহ।

তাদের নিজেদের জ্ঞানকে সার্থক করার জন্য তাই দরকার আপনার জ্ঞানকে অবমূল্যায়ন করা। আপনাকে ছোট করা, খাটো করা। এ কারণে আপনার মতো বা আমার মতো সাধারণ মানুষ যখন ইসলাম নিয়ে কোনো বক্তব্য পেশ করতে চায়, মাকড়শার জালে আটকে পড়া জাতিটিকে বন্ধন ছিন্ন করে মুক্ত করতে চায় তখন তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাদের আশঙ্কা প্রশ্ন হয়ে মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে- তোরা ইসলামের কী বুঝিস? ইসলাম এত সহজ? তোরা আরবী জানিস? মুখে দাড়ি আছে?
আসলে তারা ইসলাম নিয়ে ভাবেন না, ভাবেন নিজেদের স্বার্থ নিয়ে, সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে। কথিত বিজ্ঞ সম্প্রদায়ের ওই স্বার্থের বেদিতে বলি হয় কথিত অজ্ঞ সম্প্রদায়। তবু এই অজ্ঞরা ইসলাম শিখতে কথিত বিজ্ঞদের কাছেই যাবে, এবং প্রতারিত হবে। পতঙ্গ যেমন আগুনের শিখা দেখে ঝাপিয়ে পড়ে, তারাও ঝাপিয়ে পড়বে। তাদেরকে বাচাবে কে যখন তারা নিজেরাই নিজেদেরকে আগুনের মাঝে সোপর্দ করছে?

পত্রিকার ধর্ম পাতায় প্রকাশিত পাঠকদের প্রশ্নগুলো আরেকবার পড়ার অনুরোধ করছি। প্রশ্নগুলো পড়ুন, বারবার পড়ুন। ওই প্রশ্নগুলোর মাঝেই বর্তমান মুসলিম জাতির স্পষ্ট চিত্র ফুঠে উঠেছে। সমস্ত পৃথিবী যখন এ জাতির শত্রুতে পরিণত হয়েছে, প্রতিদিনই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও যে জাতি নির্যাতিত হচ্ছে, লাঞ্ছিত হচ্ছে, অনেক জায়গায় নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংসের নেশায় মাতাল হয়ে আছে, তখন এই জাতির ধর্মভীরু মানুষগুলো জাতির নিশ্চিত ধ্বংস দেখেও বিচলিত নয়, যতখানি বিচলিত ঘড়ি ডান হাতে পরতে হবে নাকি বাম হাতে, অজ্ঞান অবস্থায় নামাজ কাযা হলে আবার নামাজ পড়তে হবে কিনা, অমুসলিম বাবুর্চির হাতের রান্না খাওয়া যাবে কিনা- এই সিদ্ধান্তহীনতা নিয়ে। এদের এই কূপমণ্ডূকতা, এই অজ্ঞতা, এই মুর্খতা তথা এই হাস্যকর অবস্থার জন্য কাদের দায়ী করবেন? আল্লাহকে? রসুলকে? ইসলামকে? নাকি এদের অজ্ঞতাপূর্ণ ও মুর্খতায় ভরা এসব প্রশ্নের উত্তর দেবার জন্য যারা নিরন্তর ফিকাহর পাতা মুখস্ত করে চলেছে সেই বিজ্ঞজনদের?

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আপনি একজন মডারেট মুসলিম বলেই এমনটি বলতে পেরেছেন। ভাল বলেছেন।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩১

মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: আমি নিজেকে কেবলই মুসলিম মনে করি। ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৯

দরবেশমুসাফির বলেছেন: তাদের নিজেদের জ্ঞানকে সার্থক করার জন্য তাই দরকার আপনার জ্ঞানকে অবমূল্যায়ন করা। আপনাকে ছোট করা, খাটো করা। এ কারণে আপনার মতো বা আমার মতো সাধারণ মানুষ যখন ইসলাম নিয়ে কোনো বক্তব্য পেশ করতে চায়, মাকড়শার জালে আটকে পড়া জাতিটিকে বন্ধন ছিন্ন করে মুক্ত করতে চায় তখন তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাদের আশঙ্কা প্রশ্ন হয়ে মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে- তোরা ইসলামের কী বুঝিস? ইসলাম এত সহজ? তোরা আরবী জানিস? মুখে দাড়ি আছে?

আপনি ঠিক জিনিসটাই ধরতে পেরেছেন। ইসলাম সেই বুঝতে পারে জাকে আল্লাহ রহম করেন। সকল মানুষই ভুল করে। ভুল করেন না শুধু একজনই। তিনি আল্লাহ। যে বা যারা দাবি করে তারা ইসলামের সব বুঝে গেছে তারা আল্লাহর সাথে নিজেকে তুলনা করে শিরকের মত ঘৃণ্য, অমার্জনীয় অপরাধ করে। এরা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।

আমাদেরকে শত বছরের ধর্মান্ধতার জঞ্জাল আর সেই জঞ্জাল নিয়ে ব্যবসাকারি ভণ্ডদের থেকে মুসলিম জাতিকে উদ্ধার করতে হবে। আমরা যারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছি দায়িত্ব আমাদেরই। দায়িত্ব এড়িয়ে গেলে হবে না।

যুক্তি, বিজ্ঞান আর কুরআনকে সামনে রেখে আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।ইসলামকে শুধু ধুলমলিন কিতাবে নয় প্রদরশন করতে হবে আমাদের জীবনে। অন্ধ জাতিকে মরনঘুম হতে জাগাতে হবে।

আল্লাহ আমাদের সহায় হন।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩২

মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: আল্লাহ অবশ্যই তার মনোনীত মানুষদের সহায় হবেন। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪

উড়োজাহাজ বলেছেন: আপনে খুব খ্রাপ মানুষ দেখছি! ওদেরকে ভাতে মারতে চান?

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৩

মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: আর পারলাম কই?

৪| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৫

মাহ্‌দী হাসান বলেছেন: কক্স কি?

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪

মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: কক্স কি?

৫| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭

নীল ডাইনী বলেছেন: ইসলাম হচ্ছে সবচেয়ে সহজ আধুনিক ধর্ম। এর প্রথম কথাই হল "পড়", কিন্তু আমরা অলস জাতি নিজে পড়ি না, কস্ট করি না, জিজ্ঞাস করি মোল্লাদের, যারা নিজেরাই পড়ার চেয়ে "শুনে " জ্ঞান চর্চা করেছে বেশি।

যদি নিজে কস্ট করে পবিত্র কোরআন পড়ে, আর মাত্র কয়েকটি হাদিস পড়ে সিধ্যান্ত নিয়ে থাকি এবং যেটা না বুঝি সেটা নিয়ে অন্যের/মোল্লাদের সাথে আলাপ করি তখন সঠিক তথ্যটা বের হয়ে আসবে, তখন কেউ ভুল পথে পরিচালিত করতে পারবে না। এখন অনেক গ্রন্থই বাংলায় পাওয়া যায়, তাই সবার উচিত ইকটু সময় নিয়ে কস্ট করে এইগুলা পড়া

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭

মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: আসলে মানুষ তাদের উপর এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে যে, নিজেদের বিবেক-বুদ্ধি খাটানো এক প্রকার ভুলেই গেছে। এরা হুজুর সাহেবের কান দিয়ে শোনে, হুজুর সাহেবের মস্তিস্ক দিয়েই চিন্তা করে। সমস্যাটা এখানেই।

৬| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪২

উড়োজাহাজ বলেছেন: উহু, বাংলা কিতাবে হবে না। বাংলা কিতাব পড়ে কি ইসলাম শেখা যাবে? অবশ্যই আরবী জানতে হইবেক।

৭| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:১০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: নামাজ বিষয়ক প্রশ্নটা ঠিকই আছে। ‌ধর্মভীরু মানুষ যে ইসলামের পথে থাকার চেষ্টা করছে তার জন্য সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে কথা হচ্ছে, ফতোয়াটা সঠিক হচ্ছে কিনা। ‌
আপনার পোস্টের উদ্দেশ্য পরিস্কার আমার কাছে। আর মৌলভীদের ব্যপারে যে সবজান্তা মানসিকতা এটার সাথে আমি একমত। আমি একবার পড়েছিলাম, ইমাম বোখারি কে নাকি টেস্ট করার জন্য তখনকার ইসলামিক স্কলার রা অনেকগুলো জাল হাদিস বর্ণনা করে বলেন, এটা সহীহ কিনা। উনি প্রতিটাতেই ’না’ বলেছিলেন। তাদের আশা ছিল, একবার না একবার তো সহীহ বলে বসবেন উনি!
এখানে ‘উত্তর জানা নেই’ নিয়ে কপি/পেস্ট করলাম ফেসবুক থেকে -

*ইমাম শা’বী (র)কে প্রশ্ন করা হল। উত্তরে তিনি বললেনঃআমার জানা নেই।

প্রশ্নকারীঃ আপনি ইরাকের মুফতি ও ফকীহ অথচ আপনি বলছেন যে আমার জানা নেই,এমন উত্তর দিতে আপনার শরম হচ্ছেনা?

উত্তরে তিনি বলেনঃ ফেরেশতারা ত ঐ সময় শরম পায় নাই যখন তারা বলেছিল, ’’আমরা তো ততটুকুই জানি যতটুকু আপনি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন।‘’

*উতবা বিন মুসলিম বলেনঃআমি ৩৪ মাস আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা) এর খেদমতে ছিলাম।এর মধ্যে কতলোক তাকে প্রশ্ন করেছেন।যার উত্তরে তিনি বলেছেনঃ আমার জানা নেই।

*প্রসিদ্ধ তাবেয়ী সাঈদ বিন মুসায়্যিব যখন কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হতেন তখন বলতেন_হে আল্লাহ!আমাকে ভুল ফতোয়া দেয়া থেকে রক্ষা কর এবং তাদেরকেও ভুল ফতোয়া নেয়া থেকে রক্ষা কর।

*একদা ইমাম শাফেয়ী (র) কে প্রশ্ন করা হল। উত্তর দানে তিনি চুপ থাকলেন।বলা হল উত্তর কেন দিচ্ছেন না?

বললেনঃ আমি ততক্ষন পর্যন্ত উত্তর দেই না যতক্ষন না আমি এই কথা বুঝতে পারি যে,আমার কল্যান কি চুপ থাকার মধ্যে না উত্তর দেয়ার মধ্যে।

*ইবন আবু লাইলা (র)বলেনঃ আমি একশত বিশজন আনসারী সাহাবী (রা)কে দেখেছি। তাদের যে কোন একজন কে কোন প্রশ্ন করা হত তখন তিনি তাদের অন্য একজনকে দেখিয়ে দিত। আর দ্বিতীয় জন তৃতীয় জনকে দেখাত। তৃতীয় জন চতুর্থ জনকে দেখাত। শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন ফিরে আসত প্রথম জনের নিকট।

*আবুল হসাইন আযদী বলতেনঃ মানুষ নিশ্চিন্তে ফতোয়া দিয়ে যাচ্ছে অথচ যদি মাসআলা উমার (রা) এর নিকট পেশ করা হত তাহলে এর উত্তরের জন্য তিনি বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী সাহাবী গনকে একত্রিত করতেন।

*কাসেম বিন মুহাম্মদকে মাসআলা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ এর উত্তর আমার জানা নেই। প্রশ্নকারী বললঃ আপনার নিকট এসেছি,আপনাকে ছাড়া অন্য কাউকে চিনিও না,আমার উত্তর পাওয়া দরকার।

কাসেম বিন মুহাম্মদ বললেনঃ আমার আশেপাশে অনেক লোক জানা আছে, আল্লাহর কসম! আমি এর সঠিক উত্তর জানিনা।

কুরাইশ বংশের এক লোক ঐ প্রশ্নকারীকে বললঃ হে আমার ভাতিজা! কাসেমের সাথেই থাক এই যুগে তার চেয়ে বড় আলেম আর নেই। কাসেম বলতে লাগলেনঃ আমার জিহ্বা কেটে দেয়া আমার জন্য উত্তম। তবুও আমি এমন বিষয়ে কথা বলতে পছন্দ করিনা,যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই।

৮| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৮

ধমনী বলেছেন: বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন-
কাসেম বলতে লাগলেনঃ আমার জিহ্বা কেটে দেয়া আমার জন্য উত্তম। তবুও আমি এমন বিষয়ে কথা বলতে পছন্দ করিনা,যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই।
সত্যিই যাদের জ্ঞান কম তারাই সর্বজ্ঞ হওয়ার ভান করে, সেটা ধর্মীয় হোক বা অন্য যে কোন জ্ঞান।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:২৭

মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: আমিও তা-ই মনে করি। আজ জ্ঞানের বাটকারা সেজে থাকা এইসব অজ্ঞ লোকদের হাতে কুক্ষিগত হয়ে আছে বলেই ইসলাম ও মুসলিম জাতির এই দুরাবস্থা।

৯| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০১

মহসিন আলাম বলেছেন: কোন মুল্লার পেটে গুটা দিলেও "আমার জানা নেই" কথাটা বের হবে কিনা সন্দেহ আছে। ইসলাম যাদের কাছে একটা পণ্য ছাড়া আর কিছু না।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:১৯

মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: হা হা হা। সহমত সহমত।

১০| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২৪

স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: কঠিন কথাগুলো বেশ সহজ সাবলীল ভাবে কিভাবে জানি বলে ফেললেন । অবশ্য এই প্রতিভা আপনাকে আল্লাহ দিয়েছেন । ধন্যবাদ এমন সুন্দর লিখার জন্য । আশা করি, এই লিখা থেকে আলেম শ্রেণিটি এই শিক্ষায় নিবেন যে, তাঁরা ইসলামকে হাস্যরূপে বানাচ্ছে নাকি আল্লাহর দেয়া সেরাতুল মোস্তাকীম (সহজ সরল পথ) ও দীনুল ফেতরাহ (প্রাকৃতিক জীবনব্যবস্থা) অবস্থায় রেখে দিয়েছে? যদি প্রথমটি হয় তবে তাঁরা যেনো সূরা ইবরাহীম ও সূরা বাকারাহর অনুবাদ দেখে নেয় ।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৫০

মোহাম্মদ আসাদ আলী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এদের অজ্ঞতাপূর্ণ ও মুর্খতায় ভরা এসব প্রশ্নের উত্তর দেবার জন্য যারা নিরন্তর ফিকাহর পাতা মুখস্ত করে চলেছে সেই কথিত বিজ্ঞজনরাতো অবশ্যই!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.