![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইদানীং একটি ভারতীয় সিনেমা নিয়ে বেশ মাতামাতি চলছে। সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি বুঝি না হঠাৎ করে ভারতের বিরুদ্ধে কেন আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিনতাইএর আভিযোগ! বস্তুতঃ তারা ৭১-এই এই যুদ্ধ তাদের নামে নথিভুক্ত করেছে এবং এটাই সত্যি! কাজেই ৪ দশক পরে কোন ভারতীয় পরিচালক তাদের দেশের লিখিত ইতিহাস অনুযায়ী কোন চলচিত্র তৈরী করলে তাতে তার কোন দায় নেই।
যে দলিলের (Instrument of Surrender) মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পন এবং আমাদের স্বাধীনতা প্রাপ্তি, সেই দলিল দ্বিপাক্ষিক (ভারত-পাকিস্তান), ত্রিপাক্ষিক (বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান) নয়! যদিও জেনেরাল অরোরা স্বাক্ষর করেছেন ভারত এবং বাংলাদেশ বাহিনীর নামে ‘General Officer Commanding in Chief’ হিসেবে।
বাংলাদেশের পক্ষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণে উপস্থিত ছিলেন এয়ার কমোডর এ.কে. খন্দকার (Deputy Commander-in-Chief of the Bangladesh Armed Forces)। তিনি একজন সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু তিনি সম্ভবত সিভিল ড্রেসে ছিলেন।
আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি যথাযথ আত্মসমর্পণের দলিল হিসেবে সেখানে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনেরেল এম এ জি ওসামানীর উপস্থিতি এবং দলিলে বাংলাদেশ পক্ষে তাঁর স্বাক্ষর থাকা উচিত ছিল। অর্থাৎ দলিলটি ত্রিপাক্ষিক হওয়া উচিত ছিল; দুঃখজনক হলেও সত্য মোটেও সেরকম নয়। স্বাক্ষর অনেক দূরের বিষয়, তিনি সেখানে উপস্থিতই ছিলেন না। কেন তিনি সেখানে ছিলেন না তার কোন সদুত্তর নেই । তবে এই লেখা (Mystery Behind Gen. Osmani’s Absence at the 1971 Surrender Ceremony) থেকে কিছুটা ধারণা পেতে পারেন - Click This Link
জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি প্রথম ত্রিপাক্ষিক চুক্তিটি হয়েছিল ১৯৭৩ সালে সেটি Delhi Agreement নামে পরিচিত, বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ কামাল হোসেন।‘ Instrument of Surrender’ এবং ‘Delhi Agreement’ এর মাঝে আরও একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, সেটি হচ্ছে ‘Simla Agreement’। Simla Agreement-ও দ্বিপাক্ষিক ছিল।
১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ Indo-Pakistani War of 1971 বা এই জাতীয় কাছাকাছি কিছু নামেই অনলাইনে পাবেন। ভারতীয় ওয়েবসাইট তো বটেই, এমনকি উকিপিডিয়াতেও উল্লেখটি নিম্নরুপ:
“The Indo-Pakistani War of 1971 was the direct military conflict between India and Pakistan during the Bangladesh Liberation War”।
এটাও আমাদের মনে রাখতে হবে সেই সময়ে আমাদের এমন কোন অবস্থান ছিল না যে আত্মসমর্পণ দলিলে বাংলাদেশকে অন্তর্ভূক্তি করতে ভারতকে আমরা কোন চাপ দিতে সক্ষম ছিলাম। আরও দুঃখজনক হচ্ছে এই ২০১৪-তে আমাদের অবস্থান উন্নত হয়নি, বরং আরও নাজুক হয়েছে।
কাজেই অতীতে কি হয়েছে সেই চিন্তা না করে আসুন বর্তমানে কি হচ্ছে সেই চিন্তা করি। ৭১-এ স্বাধীনতার দলিল ছিনতাই হয়েছে, তার পর ছিনতাই হয়েছে পদ্মার পানি, বেরুবাড়ী, তালপট্টি; হাল আমলে ট্রানজিট, টিপাই মুখ এবং সর্বশেষ সমুদ্র বক্ষে গ্যাস ব্লক!
অতীত নিয়ে মায়াকান্না না করে আসুন সামনে তাকাই। তাহলে যদি অতীতের ভুল-ভ্রান্তি এবং ক্ষতি কোনভাবে পুষিয়ে নেওয়া যায়।
Instrument of Surrender
এই দলিলটি সংরক্ষিত আছে National Museum in Delhi –তে।
Instrument of Surrender-এর বিবরণ নিম্নরূপ:
INSTRUMENTS OF SURRENDER
The PAKISTAN Eastern Command agree to surrender all PAKISTAN Armed Forces in BANGLA DESH to Lieutenant-General JAGJIT SINGH AURORA, General Officer Commanding in Chief of Indian and BANGLA DESH forces in the Eastern Theater. This surrender includes all PAKISTAN land, air and naval forces as also all para-military forces and civil armed forces. These forces will lay down their arms and surrender at the places where they are currently located to the nearest regular troops under the command of Lieutenant-General JAGJIT SINGH AURORA.
The PAKISTAN Eastern Command shall come under the orders of Lieutenant-General JAGJIT SINGH AURORA as soon as the instrument has been signed. Disobedience of orders will be regarded as a breach of the surrender terms and will be dealt with in accordance with the accepted laws and usages of war. The decision of Lieutenant-General JAGJIT SINGH AURORA will be final, should any doubt arise as to the meaning of interpretation of the surender terms.
Lieutenant JAGJIT SINGH AURORA gives a solemn assurance that personnel who surrender shall be treated with dignity and respect that soldiers are entitled to in accordance with provisions of the GENEVA Convention and guarantees the safety and well-being of all PAKISTAN military and para-military forces who surrender. Protection will be provided to foreign nationals, ethnic minorities and personnel of WEST PAKISTANI origin by the forces under the command of Lieutenant- General JAGJIT SINGH AURORA.
(JAGJIT SINGH AURORA)
Leiutenant-General
General Officer Commanding in Chief
India and BANGLA DESH Forces in the
Eastern Theatre
16 December 1971
(AMIR ABDULLAH KHAN NIAZI)
Leiutenant-General
Martial Law Administrator Zone B and
Commander Eastern Command
(Pakistan)
16 December 1971
আরও মজার বিষয় হচ্ছে Ministry of External Affairs, India –এর সাইটে জেনারেল অরোরার পদবি Instrument of Surrender-এর বিবরণীতে এভাবে লেখা আছে:
Sd/-
JAGJIT SINGH AURORA
Lieutenant General
General Officer
Commanding-in-Chief Eastern Command
(India)
16 December 1971
খেয়াল করুন General Officer, Commanding-in-Chief Eastern Command (India)!
Source:
Instrument of Surrender
Text of Instrument of Surrender
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:২২
আসফি আজাদ বলেছেন: আর কতদিন আমরা কারসাজির স্বীকার হব। এখনও কি আমাদের হুশ হবে না? আমরাই আমাদের বর্তমান দুরাবস্থার জন্য দায়ী।
ধন্যবাদ।
২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৪:০৩
একজন ঘূণপোকা বলেছেন: উপপাদ্য বলেছেন: ইন্ডিয়ার কারসাজিতে সেদিন ওসমানীকে তারা সেখানে থাকতে দেয়নি। শুধু ওসমানী নয় অনেক বীর মুক্তিযুদ্ধা যারা সেদিন বিজয়ে বাংলাদেশের অংশিদ্বারিত্ব চেয়েছিলেন তাদেরকেও থাকতে দেয়া হয়নি।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:২২
আসফি আজাদ বলেছেন: আর কতদিন আমরা কারসাজির স্বীকার হব। এখনও কি আমাদের হুশ হবে না? আমরাই আমাদের বর্তমান দুরাবস্থার জন্য দায়ী।
ধন্যবাদ।
৩| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৭:২৮
দেশপ্রেমিক পোলা বলেছেন: ৭১ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ করেছে আর আমাদের দেশের ৩০ লক্ষ শহীদ গাঁজা খেতে যেয়ে মারা গেছে, আর আমাদের মহান মুক্তিযোদ্ধারা বসে বসে আঙ্গুল চুষেছিলো। ৩০ লক্ষ শহীদের জীবন আর আমাদের লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধাদের এতোবড় অপমান!! আমরা নাকি ৭১ এ অস্ত্র চোরাচালান সহ নানামুখী অপরাধে মেতে ছিলাম! এই দেশের মানুষ কয়লা চোর! এবং শেষ অবধি এই দেশের মানুষ নিজেদের ভারতীয় মনে করে, এবং নাগরিকত্ব পেতে সব কিছুই করতে পারে।
বানর মাথায় তুললে মাথায় উঠে প্রসাব করবে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের মাথায় গবরে ভর্তি এজন্য ভারতকে বিভিন্ন সুবিধা দেই আর বিনিময়ে ভারত আমাদের বাঁশ দেয়।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৩
আসফি আজাদ বলেছেন: পাগলও নিজের ভালো বোঝে, কিন্তু আমরা বুঝি না! সরকার বদলের সাথে সাথে যে দেশের কেবলা পরিবর্তন হয় সেই দেশের কাছে বেশী কিছু আশা করা ঠিক না। আমাদের একটা দল মনে করে বাংলাদেশ আজীবনের জন্য ঋণী ভারতের কাছে, সেই সৈয়দ শামসুল হকের বনবালার মত; যে ঋণ কোন দিন শোধ হবার নয়!
এই চিন্তা ভাবনা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
ধন্যবাদ।
৪| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:১৫
মনসুর-উল-হাকিম বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন, সুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৪
আসফি আজাদ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
৫| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬
কাফের বলেছেন: অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানলাম
এর আগে ১৬ ডিসেম্বর নামে আরেকটা হিন্দি মুভিতে একই কাজ করছে!
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৫
আসফি আজাদ বলেছেন: ১৬ ডিসেম্বর নামের মুভির বিষয়ে জানা নেই। তবে সুযোগ দিলে করবে না কেন?
ধন্যবাদ
৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:২৫
নেক্সাস বলেছেন: উপপাদ্য বলেছেন: ইন্ডিয়ার কারসাজিতে সেদিন ওসমানীকে তারা সেখানে থাকতে দেয়নি। শুধু ওসমানী নয় অনেক বীর মুক্তিযুদ্ধা যারা সেদিন বিজয়ে বাংলাদেশের অংশিদ্বারিত্ব চেয়েছিলেন তাদেরকেও থাকতে দেয়া হয়নি।
আমাদের স্বাধীনতা তো চুরি হয়ে গিয়েছিলো সেদিন ই।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৮
আসফি আজাদ বলেছেন: লেখক বলেছেন: আর কতদিন আমরা কারসাজির স্বীকার হব। এখনও কি আমাদের হুশ হবে না? আমরাই আমাদের বর্তমান দুরাবস্থার জন্য দায়ী।
চুরি যাওয়া স্বাধীনতা এখনও পুনরুদ্ধার করা যায় নি। কবে যাবে তাও জানা নেই; কোন পরিকল্পনাই তো নেই আমাদের।
ধন্যবাদ।
৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৩
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন: উপপাদ্য বলেছেন: ইন্ডিয়ার কারসাজিতে সেদিন ওসমানীকে তারা সেখানে থাকতে দেয়নি। শুধু ওসমানী নয় অনেক বীর মুক্তিযুদ্ধা যারা সেদিন বিজয়ে বাংলাদেশের অংশিদ্বারিত্ব চেয়েছিলেন তাদেরকেও থাকতে দেয়া হয়নি।
আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী পাকিস্তান সেনাবাহিনী ওসমানীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারে না। কারণ বাংলাদেশ জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী কোনো দেশ ছিলো না। ঠিক সে কারণেই ওসমানী সেদিন সেখানে ছিলেন না , আর একে খন্দকার থাকলেও সিভিল পোশাকে ছিলেন ।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:১৬
আসফি আজাদ বলেছেন: যেখানে যুদ্ধমান এক পক্ষ জেনেভা কনভেনশন স্বাক্ষরকারী কিন্তু অন্য পক্ষ নয় সেখানে কি হবে? গ্লাডিয়েটরদের মত একপক্ষের বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলতে থাকবে?
বাংলাদেশ একটি পক্ষ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে। কিন্তু সেই সময়ে আমাদের এমন কোন অবস্থান ছিল না যে আত্মসমর্পণ দলিলে বাংলাদেশকে অন্তর্ভূক্ত করতে ভারতকে আমরা কোন চাপ দিতে সক্ষম ছিলাম। ফলাফল ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক দলিল স্বাক্ষর।
ধন্যবাদ।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:২৩
আসফি আজাদ বলেছেন: এই আলোচনাটা দেখতে পারেন। একটা ধারনা পাবেন। ধন্যবাদ।
Does Geneva Convention apply to countries which aren't signatories? Click This Link
৮| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১৯
ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী অনুপস্থিত কেন ?
শুনি তার মুখেই বক্তব্য:
১২ ডিসেম্বর ওসমানী কলকাতা থেকে আগরতলা হয়ে মুক্তাঞ্চল সিলেটে যান।
১৮ ডিসেম্বর সদর দপ্তরে ফিরে তাকে নিয়ে এসব গুজব শুনে ভীষণ ক্ষুব্ধ হন ওসমানী। তার বক্তব্য নীচে:
"দেখুন আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে যাচ্ছি। কিন্তু দুঃখ হলো স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে আত্মমর্যাদাবোধ সম্পর্কে কোনো চেতনা এখনও জন্ম হয়নি। আমাকে নিয়ে রিউমার ছড়ানোর সুযোগটা কোথায়? কোনো সুযোগ নেই। তার অনেক কারণ রয়েছে। নাম্বার ওয়ান- পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কবে আত্মসমর্পণ করবে আমি জানতাম না। আমি কলকাতা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তাদের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব এসেছে।
নাম্বার টু- ঢাকায় আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আমার যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ এই সশস্ত্র যুদ্ধ ভারত-বাংলাদেশের যৌথ কমান্ডের অধীনে হলেও যুদ্ধের অপারেটিং পার্টের পুরো কমান্ডে ছিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান লেফট্যানেন্ট জেনারেল স্যাম মানেকশ। সত্যি কথা হচ্ছে আমি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো নিয়মিত সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধানও নই। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমার কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারে না। কারণ বাংলাদেশ জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী কোনো দেশ নয়।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে জেনারেল মানেকশকে রিপ্রেজেন্ট করবেন লে.জে অরোরা। জেনারেল মানেকশ গেলে তার সঙ্গে যাওয়ার প্রশ্ন উঠতো। সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে আমার অবস্থান জেনারেল মানেকশর সমান। সেখানে তার অধীনস্থ আঞ্চলিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল অরোরার সফরসঙ্গী আমি হতে পারি না। এটা দেমাগের কথা নয়। এটা প্রটোকলের ব্যাপার। আমি দুঃখিত, আমাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমাদের মধ্যে আত্মমর্যাদাবোধের বড় অভাব।
ঢাকায় ভারতীয় বাহিনী আমার কমান্ডে নয়। জেনারেল মানেকশর পক্ষে জেনারেল অরোরার কমান্ডের অধীন। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করবে যৌথ কমান্ডের ভারতীয় বাহিনীর কাছে। আমি সেখানে (ঢাকায়) যাবো কি জেনারেল অরোরার পাশে দাড়িয়ে তামাশা দেখার জন্য? হাও ক্যান আই!
আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করবেন জেনারেল মানেকশর পক্ষে জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা আর পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে জেনারেল নিয়াজী। এখানে আমার ভূমিকা কি? খামোখা আমাকে নিয়ে টানা হ্যাচড়া করা হচ্ছে।- (তথ্যসূত্র-বৃত্ত)
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল,৪ঠা ডিসেম্বরের পরের ঘটনাবলি!
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫০
আসফি আজাদ বলেছেন: আপনি যে বক্তব্যটি তুলে ধরেছেন তাতে অনেক অসঙ্গতি আছে। প্রতিটি আলাদাভাবে দেখাবার চেষ্টা করেছি। আপনার প্রতিটি প্যারা উল্লেখ করে তার পরেই বক্তব্য তুলে ধরা হল।
১। "দেখুন আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে যাচ্ছি। কিন্তু দুঃখ হলো স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে আত্মমর্যাদাবোধ সম্পর্কে কোনো চেতনা এখনও জন্ম হয়নি। আমাকে নিয়ে রিউমার ছড়ানোর সুযোগটা কোথায়? কোনো সুযোগ নেই। তার অনেক কারণ রয়েছে। নাম্বার ওয়ান- পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কবে আত্মসমর্পণ করবে আমি জানতাম না। আমি কলকাতা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তাদের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব এসেছে।
- পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কবে আত্মসমর্পণ করবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক সেটা জানতেন না! এটাই সমস্ত কিছু খোলাসা করে দেবার জন্য যথেষ্ট। এর অর্থ তাকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। কেন তাকে জানানো হয় নি? কোন উত্তর আছে কি?
২। নাম্বার টু- ঢাকায় আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আমার যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ এই সশস্ত্র যুদ্ধ ভারত-বাংলাদেশের যৌথ কমান্ডের অধীনে হলেও যুদ্ধের অপারেটিং পার্টের পুরো কমান্ডে ছিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান লেফট্যানেন্ট জেনারেল স্যাম মানেকশ। সত্যি কথা হচ্ছে আমি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো নিয়মিত সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধানও নই। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমার কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারে না। কারণ বাংলাদেশ জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী কোনো দেশ নয়।
- জেনেভা কনভনশন সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর উপরেই দেওয়া হয়েছে।
৩। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে জেনারেল মানেকশকে রিপ্রেজেন্ট করবেন লে.জে অরোরা। জেনারেল মানেকশ গেলে তার সঙ্গে যাওয়ার প্রশ্ন উঠতো। সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে আমার অবস্থান জেনারেল মানেকশর সমান। সেখানে তার অধীনস্থ আঞ্চলিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল অরোরার সফরসঙ্গী আমি হতে পারি না। এটা দেমাগের কথা নয়। এটা প্রটোকলের ব্যাপার। আমি দুঃখিত, আমাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমাদের মধ্যে আত্মমর্যাদাবোধের বড় অভাব।
- অরোরা জেনারাল মানেকশকে রিপ্রেজেন্ট করেছেন, আত্মসমর্পণ দলিলে এমন কথা লেখা নেই। বরং তিনি স্বাক্ষর করেছেন ‘General Officer Commanding in Chief of Indian and BANGLA DESH forces in the Eastern Theater’ পদ মর্যাদায়। একবার জেনারেল ওসামানী বলছেন, তিনি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো নিয়মিত সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান নন, আবার বলছেন সার্বভৌম সমতার ভিত্তিতে ওনার অবস্থান জেনারেল মানেকশর সমান! দুটি বক্তব্য পারস্পারিক সাংঘর্ষিক। জেনারেল অরোরা মিত্র বাহিনীর প্রধান ছিলেন, অর্থাৎ আমরা চাই বা না চাই, পছন্দ করি বা না করি, জেনারেল ওসামানীর মর্যাদা সেখানেই ক্ষুণ্ন হয়েছিল। কাজেই এখানে প্রটোকলের কোন বিষয় ছিল না বলেই আমার ধারণা। উনি যে বলেছেন ওনাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে, এটাই সত্য। তবে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে ভারতের পক্ষ হতে।
৪। ঢাকায় ভারতীয় বাহিনী আমার কমান্ডে নয়। জেনারেল মানেকশর পক্ষে জেনারেল অরোরার কমান্ডের অধীন। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করবে যৌথ কমান্ডের ভারতীয় বাহিনীর কাছে। আমি সেখানে (ঢাকায়) যাবো কি জেনারেল অরোরার পাশে দাড়িয়ে তামাশা দেখার জন্য? হাও ক্যান আই!
– এটাই ধ্রুব সত্য, যৌথ বাহিনী অরোরার অধীন ছিল এবং পুরো বিষয়টা ভারতীয়দের নিয়ন্ত্রাধীন ছিল। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু যুদ্ধে বাংলাদেশ একটি অন্যতম পক্ষ ছিল, শুধু অন্যতমই নয়, যুদ্ধটি ছিল বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের জন্য। কাজেই সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব না থাকাটাই প্রশ্ন সাপেক্ষ। যে দলিলের মাধ্যমের পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তি ঘটছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণে জেনারেল ওসামানীর উপস্থিতি কোন তামাশার বিষয় ছিল না, ছিল স্বীকৃতির বিষয়, ছিল গর্বের বিষয়। কাজেই প্রশ্ন হচ্ছে, হোয়াই কুড্যন্ড হি?
৫। আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করবেন জেনারেল মানেকশর পক্ষে জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা আর পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে জেনারেল নিয়াজী। এখানে আমার ভূমিকা কি? খামোখা আমাকে নিয়ে টানা হ্যাচড়া করা হচ্ছে।
- আত্মসমর্ণপন দলিলে কেউ কোন ব্যাক্তির পক্ষে স্বাক্ষর করেননি, যেটা উপরেই পরিষ্কার করা হয়েছে। জেনেরাল অরোরা স্বাক্ষর করেছেন পরিষ্কারভাবে ভারত এবং বাংলাদেশ বাহিনীর প্রধান হিসেবে।
শেষ কথা: যার জন্য এই যুদ্ধ, সে নিজেই যুদ্ধের সমাপ্তিতে অনুপস্থিত! আমার প্রশ্ন, হাউ ক্যান ইট বি? উত্তর সহজ, ইন্ডিয়া চায়নি। আর এই কারণেই পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কবে আত্মসমর্পণ করবে সেটা মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীকে না জানিয়ে তাকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল!
মূল কথা তাঁকে আত্মসমর্পন অনুষ্ঠান থেকে দূরে রাখার জন্য সমস্ত ব্যবস্থাই করা হয়েছিল। হতে পারে সেটা তাঁকে আত্মসমর্পণ কবে হবে না জানিয়ে অথবা সিলেটে তাঁকে বহনকারী হেলিকপ্টার গ্রাউন্ডেড করে। উভয় অবস্থায় ফলাফল একই দাঁড়ায়।
ধন্যবাদ।
৯| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৩৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আসুন বর্তমানে কি হচ্ছে সেই চিন্তা করি। ৭১-এ স্বাধীনতার দলিল ছিনতাই হয়েছে, তার পর ছিনতাই হয়েছে পদ্মার পানি, বেরুবাড়ী, তালপট্টি; হাল আমলে ট্রানজিট, টিপাই মুখ এবং সর্বশেষ সমুদ্র বক্ষে গ্যাস ব্লক!
আবার সবই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে!!!
ফলে সবাই স্পিকটি নট!!!
আর চেতনাধারীদের মাথা নত করার কি প্রতিদানইনা দিল!!!!
নিশ্চয়ই আওয়ামীলীগাররা এটাতে গর্ববোধ করবে!!!!???
নিশ্চয়ই চেতনাধারীরা পুলকিত হবে-৭১কে এভাবে মূল্যায়িত হতে দেখে!!!??
নিশ্চয়ই তাদের ভাবান্তর হবেনা- ৭১এ আমাদের সহযোগীতা করেছে বলে এরম একটু আধটু বললে কি হয় বলে!!!!!???????
ধিক!
৩০ লক্ষ শহীদের আত্মদান, লাখো মা-বোনরে ইজ্জতের প্রতি অবজ্ঞার পরওও যারা ঐরকম ভাববে তাদের চেতনায় লাত্থি মারি!!!!!!
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৯
আসফি আজাদ বলেছেন: বিদ্রোহী লোকজন নিয়ে খুব মুশকিল! এরা যখন তখন যার তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসে! আরে ভাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে হচ্ছে বলেই না সবাই স্পিকটি নট!! বিষয়টা একদম যাকে বলে আর কি চেতনা প্রুফ!!!
তবে আমি বলি কি, এই সব চেতনাধারী যারা মনে করে ভারতের ঋণ কোন দিন শুধবার নয়, তারা কেন ওপার গিয়ে সব উজার করে দিয়ে ঋণ শুধছেন না! তবে তো সব ল্যাঠা চুকে যায়। চেতনাধারীরা বনবালা হতে পারে, কিন্তু আমরা নই। পিন্ডির পিন্ডি চটকে দিয়েছি, ইন শা আল্লাহ্ দিল্লীর পিন্ডিও চটকে দেব।
১০| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪৯
তিক্তভাষী বলেছেন: "ভারতীয়রা ৭১ এর যুদ্ধ তাদের নামে নথিভুক্ত করেছে এবং এটাই সত্যি!"
- কাজেই কেবল তুচ্ছ একটি বলিউড মুভির বিরোধিতার মধ্যেই প্রতিবাদ সীমিত রাখলে চলবে না।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০২
আসফি আজাদ বলেছেন: আমাদের নিজেদের এক হতে হবে। একটি গ্রহণযোগ্য পররাষ্ট্র নীতি তৈরী করতে হবে, সরকার বদলের সাথে সাথে পররাষ্ট্র নীতি বদল হতে পারে না। দেশের স্বার্থ আগে দেখতে হবে।
ধন্যবাদ।
১১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:০০
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আফসোস। তখনো আমরা বাঁশ খাইছি, এখনো খাচ্ছি
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০৪
আসফি আজাদ বলেছেন: আমাদের দেখে কারও সাধ্য আছে বলার যে বাঁশ আমরা আগ্রহ সহকারে যেচে নিয়ে খাচ্ছি না?
ধন্যবাদ।
১২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩৫
আরাফাত হিমু বলেছেন: আসল কথা হচ্ছে আমরাই আমাদের পিছিয়ে রাখছি, ঠকাচ্ছি। কি সার্থ আছে কে জানে... আসুন আমরা সবাই বাঁশ বাগানে ঘুমাই।
লেখাটি দারুন হয়েছে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০৫
আসফি আজাদ বলেছেন: আর ঘুমাতে ডাকবেন না, প্লিজ। দয়া করে লাঠি হাতে তাড়া করুন, ঘুম ভাঙ্গান।
ধন্যবাদ।
১৩| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৩৮
বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: শুধু একটা কথাই বার বার মনে হয়, - আমাদের প্রতিনীধীরাই যেখানে এমন দুর্বলতা দেখায় সেখানে আমরা সাধারণ মানুষ আর কি-ই বা করতে পারি??????!!!!!!!!!!
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০৭
আসফি আজাদ বলেছেন: নেতৃত্ব যখন দিকভ্রান্ত, তখন সাধারণ মানুষের ভোগান্তিই স্বাভাবিক। তবে আমরা যদি হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকি, সেটা আরও বিপদ ডেকে নিয়ে আসবে। আমাদের মত সাধারণ মানুষের উচিত তাদের উপর সার্বিক্ষণিক চাপ প্রয়োগ করা।
ধন্যবাদ।
১৪| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:১২
রাবার বলেছেন: ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মদান, লাখো মা-বোনরে ইজ্জতের প্রতি অবজ্ঞার পরওও যারা ঐরকম ভাববে তাদের চেতনায় লাত্থি মারি!!!!!!
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৩০
আসফি আজাদ বলেছেন: যাদের লাথি মারতে চাচ্ছেন, তাদের লাথি খেলে কিছু যায় আসে না! আর লাথি সেই পর্যন্ত পৌছুবেও না।
৪০ বছর পরে এসে প্রভুকে দিয়ে ইতিহাস নতুন করে লেখাতে চাইলে প্রভু ঈষৎ হাস্য সহকারে তা মেনে নিয়ে আবদার অনুযায়ী লিখে দেবে, এমন ভাবনা বাতুলতা মাত্র।
আগে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তবে যোগ্যতা অর্জনের চাইতে আমাদের বিলীন হবার আগ্রহই বেশী।
ধন্যবাদ।
১৫| ০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৪৫
রূপা কর বলেছেন: অতীত নিয়ে মায়াকান্না না করে আসুন সামনে তাকাই। তাহলে যদি অতীতের ভুল-ভ্রান্তি এবং ক্ষতি কোনভাবে পুষিয়ে নেওয়া যায়।
+++++্
০৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৫৪
আসফি আজাদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৩:৩৫
উপপাদ্য বলেছেন: ইন্ডিয়ার কারসাজিতে সেদিন ওসমানীকে তারা সেখানে থাকতে দেয়নি। শুধু ওসমানী নয় অনেক বীর মুক্তিযুদ্ধা যারা সেদিন বিজয়ে বাংলাদেশের অংশিদ্বারিত্ব চেয়েছিলেন তাদেরকেও থাকতে দেয়া হয়নি।