![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গণিত এবং পরিসংখ্যানে সংখ্যার ব্যবহার আপরিহার্য। কিন্তু সংখ্যার ব্যবহার সঠিক না হলে সেটা ভুল তথ্য প্রদান করতে পারে। অর্থাৎ সংখ্যার ব্যবহার এবং উপস্থাপনে যথেষ্ট সতর্কতা প্রয়োজন; সংখ্যার সঠিক অর্থ বুঝতে তথ্যের সমাবেশ গুরুত্বপূর্ণ।
ধরা যাক, রহিম এবং করিমের কাছে যথাক্রমে ২০০০.০০ টাকা এবং ৪,০০০.০০ টাকা আছে; একই সময় যদু এবং মধুর কাছে যথাক্রমে ১৯৮,০০০.০০ টাকা এবং ২০০,০০০.০০ টাকা আছে। এখন আবুল এসে আপনাকে বলল করিম এবং মধুর কাছে রহিম এবং যদুর চাইতে ২০০০.০০ টাকা বেশি আছে। কাজেই উভয়কেই ২০% কর ধার্য করা যায়!
আবুল আপনাকে একটি সঠিক উপাত্ত দিয়েছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট তথ্য চেপে গেছে যা থেকে আপনি বুঝতে পারতেন করিমের উপর ২০% কর ধার্য করা রীতিমত জুলুম। আবুল আপনাকে শুধু উপাত্ত (সংখ্যা) দিয়েছে কিন্তু কোন তথ্য দেয়নি, কারণ আবুল আপনাকে সঠিক পরিস্থিতি জানাতে চায় না।
আসুন অন্য আরো একটি উদাহরণ দেখা যাক। কামাল বাজারে মাছ কিনতে গেল। সে ৫০০.০০ টাকা দিয়ে একটি বোয়াল মাছ কিনে বাড়ি দিকে হাটা দিল। একই বাজারে জামালও মাছ কিনতে গেল। সে ২০০.০০ টাকা দিয়ে ৩টি বোয়াল মাছ কিনে বাড়ির দিকে হাটা দিল। পথিমথ্যে আবুলের সাথে তাদের দেখা। সে উভয়কে জিজ্ঞেস করল কিরে কি মাছ কিনলি? কত দিয়া কিনলি?
জামাল বলল জ্যাঠা ৩টা বোয়াল কিনলাম ২০০.০০ টাকা দিয়া। কামাল মুখ কাচুমাচু করে বলল আমি ১টা কিনতেই ৫০০.০০ টাকা গেল! আবুল কামালকে ঠাট্টা করে বলল, হ্যারে কি ঠকাটাই না ঠকলি!
কে ঠকল? একই সমস্যা, শুধু উপাত্ত বলা হয়েছে সাথে সংশ্লিষ্ট তথ্য দেওয়া হয়নি। কামালের মাছটি অনেক বড় কাজেই বেশী ওজনের হতে পারে এবং সেটি তাজা হতে পারে। অন্যদিকে জামালের মাছগুলো ছোট হতে পারে এবং পচাও হতে পারে। তথ্য ছাড়া আবুলের নিদান ঘোষনার কারণে কামাল ঠকে যায় নি।
এবার অন্য কোন সমস্যা দেখি। ষন্ডাদার কাছে ২০.০০ টাকা আছে। পাচুদির কাছে ২.০০টাকা আছে। উভয়ের কাছে গড়ে কত টাকা আছে? এ কোন সমস্যা হল? সাধারণ (গাণিতিক) গড় করলেই বেরিয়ে যাবে গড়ে উভয়ের কাছে ১১.০০টাকা আছে। এখন আপনাকে বলা হল কোন একটি গাড়ির গড় গতিবেগ বের করতে। আপনি যদি গাণিতিক গড় দিয়ে গাড়ির গতিবেগ নির্ণয় করতে যান তাহলে হবে না, আপনাকে সেই জন্য হারমনিক গড় ব্যবহার করতে হবে।
অর্থাৎ সমস্যার প্রকার অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে সমাধান বের করতে হবে।
আরো একটি সমস্যা দেখা যাক। আবুল বলল বাংলাদেশে গাড়ি/সড়ক দুর্ঘটনার জন্য পুরুষ চালকরাই দায়ী, কোন নারী চালক দায়ী নয়। পুরুষেরা চালক হিসেবে নারীর চাইতে ভয়ংকর। সে আপনাকে আবারও কিছু সংখ্যা হাজির করল। ধরুন ৪০০০ জন প্রতি বছর এই পুরুষ চালকের হাতে মারা যায়। কিন্তু আবুল আপনাকে বলল না এই ৪০০০ জন প্রতি বছর হাইওয়েতে দুর্ঘটনায় মারা যায় যেখানে কোন নারী চালক কর্মরত নেই। আবুল আপনাকে দেশে মোট কত জন পুরুষ এবং নারী চালক আছেন সেই উপাত্তও দিল না। আবুল আপনাকে মোট দুর্ঘটনার কত শতাংশের জন্য পুরুষ চালক দায়ী এবং কত শতাংশের জন্য নারী চালক দায়ী তাও জানালো না। সে আপনাকে সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ যে তথ্য, অর্থাৎ পুরুষ চালকের কত শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী এবং নারী চালকের কত শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী তা জানালো না!
অর্থাৎ উপরার সকল ক্ষেত্রেই আবুল আপনাকে শুধু কিছু বাছাইকৃত সংখ্যা (উপাত্ত) দিয়ে আপনাকে বিভ্রান্ত করছে। সে কোন তথ্য দিচ্ছে না! কিন্তু কেন?
এবার আসুন আসল প্রসঙ্গে আসা যাক: বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরোধপূর্ণ এলাকা ছিল প্রায় ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটার। রায়ে বাংলাদেশ ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা পেয়েছে।ভারতের ভাগে পড়েছে ৬১৩৫বর্গকিলোমিটার।
“রায়ে ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের বিজয় নিশ্চিত হয়েছে": পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী
আবুল সাহেব সাথে সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো দিলে বুঝতে সুবিধে হত। তথ্যগুলো দেবেন কি?
©somewhere in net ltd.