![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্পর্স করতে চাই তাকে কিন্তু কিছুতেই পারিনা,তবুও আসায় আছি তার পথ চেয়ে।
কেউ জিজ্ঞাসিলে,মোদের প্রেম স্বর্গের দ্বার বেয়ে নেমে এসেছে ধরার বুকে। এই স্বর্গীয় প্রেম আমাদের কাছে পরম পূজনীয় ও আরাধ্যের বিষয়। আমরা দু'জন দু'জনার ভালবাসার প্রশ্নে আমরণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইত্যাদি, ইত্যাদি। এই যুগলতারার পবিত্র ও তীক্ষ্ণ যুক্তির কাছে প্রশ্নকারীর ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা হয়। পরের প্রেক্ষাপট খুব দ্রুত ধমাধম পাল্টে যায়। সাময়িক যৌন উত্তেজনা বা কাম-বাসনা চরিতার্থ করার জন্য দু'জনার সম্মতিতে নির্জনে আলিঙ্গন ও সঙ্গমে কয়েক দফায় তারা স্বর্গীয় সুধা ! পান করে। ভালবাসার এই রথী-মহারথীর বিবাহ বহির্ভূত কৃতকর্মের জন্য স্বর্গীয় আশীর্বাদে প্রেমিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়। আর বিপরীত মেরুর দিকে হাটতে থাকে অন্তঃসত্ত্বার গর্ভস্থ বাচ্চার একমাত্র স্বত্বাধিকারী প্রেমিক পুরুষ! প্রতিজ্ঞাভঙ্গের তীব্র মনোবেদনা নিয়ে দিনাতিপাত করতে থাকে প্রেমিকা! অন্তিমকালে সিদ্ধান্ত হয় গর্ভপাত করানোর। স্বর্গের সমস্ত সুন্দরের আদলে গড়া এই পবিত্র, নিষ্পাপ, দেবশিশু প্রযুক্তির ধারালো ছুরিকাঘাতে গর্ভেই যেমন রক্তাক্ত ছিন্নভিন্ন হয়, অনুরূপভাবে মারাত্মক রক্তাক্ত ছিন্নভিন্ন হয়ে বিক্ষিপ্ত হয় মানবতা।
উষ্কখুষ্ক চুল,লালচে চোখ,বিবর্ণ গায়ের রঙ,ধুলোয় ধূসরিত মাত্রাতীত নোংরা বস্ত্রাদিতে আচ্ছন্ন শরীরের কিয়দাংশ, বাকী অংশ উদাম উলঙ্গ থাকে নিত্যদিন । জীর্ণ-শীর্ণ কঙ্কালসার অবশিষ্ট দেহে বেঁচে থাকার তাগিদে, উদয়াস্ত অগত্যা ভিক্ষের হাত প্রসারিত করে পথচারীর দ্বারে-দ্বারে। পথচারীর রক্তচক্ষু, তীর্যক বাণী,তাচ্ছিল্যপূর্ণ সোহাগ,আর কিছু অর্থ নিয়ে ফেরে ঘরহীন পথ-শিশু।দারিদ্র্যের চরম কষাঘাতে নিঃশেষিত হয়ে যাওয়া বালক পথ-শিশুর অভিসম্পাতের জায়গা জুড়েই থাকে মানবতা।
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পাঁচ বছর বয়সী কন্যার কোলে থাকে দু বছরের বাচ্চা,পাশে চার বছর বয়সী ভাই। দুগ্ধাভাবে দারুণ পিপাসার্ত কচি কন্ঠে কেঁদে উঠে কোলের শিশু, ক্ষুধার নিদারুণ অসহ্য ও তীব্র যন্ত্রণায় ক্ষীণ কন্ঠে কুঁকিয়ে কাঁদে ভাই। মাতা-পিতার অবর্তমানে অভিভাবকত্ব পাওয়া মেয়েটি, বুভুক্ষু ভাইদের করুন হাহাকারে টালমাটাল হয় নিজেকে সামাল দিতে। অপেক্ষায় করুণ চাহনিতে চেয়ে থাকে ক্ষুধিত শিশুরা,গোধূলি লগনে সমাগম হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী, বিকলাঙ্গ ভিক্ষুক বাবা-মার। এই আর্তজন বাবা-মা, ক্ষুধার্ত শিশুর আর্তনাদে দীর্ণবিদীর্ণ হয় মানবতা।
অতি প্রত্যুষে নিদ্রা ভেঙ্গে খালি ব্যাগ হাতে বেরিয়ে পড়ে নিরন্ন টোকাই। গন্তব্য অভিজাত আবাসিক এলাকার বিশালকায় আবর্জনার স্তুপ, যেখানে তার জন্য সমাজের সভ্য মানুষ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ধনভাণ্ডার লুকানো আছে। সমস্ত দিন খোঁজাখুঁজির পর পূর্ণভাবে ভরে উঠে তার ধনভাণ্ডার সমৃদ্ধ ব্যাগ।তার সমস্ত ধন বিক্রি হয় পঞ্চাশ টাকায়,যা দিয়ে সারাদিনের উদর জ্বালা নিবারণ হয়। বেলাশেষে খালি ব্যাগ হাতে ফিরে আসে টোকাই, আর খালি ব্যাগেই আবদ্ধ হয়ে ডুকরে কেঁদে উঠে মানবতা।
নগ্ন নিষ্পাপ শিশু ক্রোড়স্থ জননী, পিতৃ পরিচয়হীন নাবালক শিশু, সত্তোরোর্ধ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং কুকুর! রাস্তার পাশে ডাস্টবিনে একত্রে উচ্ছিষ্টভক্ষণ করে। এই উচ্ছিষ্টভোজী মানুষ ও উচ্ছিষ্টভোজী কুকুর! উচ্ছিষ্টান্ন ভক্ষনের সাথে মানবিকতাও দাঁত কামড়ে হজম করে। তথাচ, তীব্র বৈষম্যপূর্ণ সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে মনুষ্যজাতির বিবেক জাগ্রত হয়না । আর মানুষ-কুকুরে অখাদ্য খাদ্য নিয়ে কাড়াকাড়িতে প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত হচ্ছে মানবতা।
পশু পক্ষীর বিষ্ঠা,মৃত পশু,মানুষের মল-মূত্র,থুথু, পচা বাসি খাবার। সমস্তরকম নোংরা আবর্জনায় ভরপুর নর্দমার পানি যা কোনোভাবেই পান করার যোগ্য না। এমন পানি যখন মস্তিষ্ক বিকারগ্রস্ত উন্মাদ পাগল পান করে তৃষ্ণা মিটায়,তখন খোদ নর্দমা গগনবিদারী আর্তনাদে হাহাকার করে উঠে। এমনতর অ-পানীয় পানি পানে বিকার মস্তিষ্ক পাগলের তৃষিত কণ্ঠনালী ভিজে পিপাসা নিবৃত্ত হলেও,বিবেকবোধ সম্পন্ন মানুষের নিরবতার কারনে প্রতি মুহূর্তে নর্দমা দিয়েই ভেসে যাচ্ছে মানবতা।
চৈত্রের কাঠফাটা রোদেগরমে, হাড়কাপানো শীতের শৈত্যপ্রবাহে, বর্ষার মুষলধারার বৃষ্টিজলে অমানুষিক কায়িক পরিশ্রম করে শিশু-শ্রমিক।এই শিশু দোল খায় অসভ্য, নিষ্ঠুর, কুৎসিত, বৈষম্যপূর্ণ সমাজব্যবস্থার অর্থলিপ্সু হায়েনার বর্বরোচিত আচরণের দোলনায়। এ দোলনায় ধাক্কা দেয় ব্যর্থ রাষ্ট্র, অথর্ব সরকার আর নিশ্চুপ বুদ্ধিহীন বুদ্ধিজীবী।ফলশ্রুতিতে, শিশু-শ্রম নির্ভর কারখানার পিচাশ মালিকের তামার বিষে প্রত্যহ নীল দংশনে দংশিত হচ্ছে মানবতা।
ছদ্মবেশী মদ্যপের স্যাঁতসেঁতে শাদা রুপে আকৃষ্ট হয়ে প্রেমের ফাঁদে ধরা পড়ে গ্রাম্যবালা।তারপর ছাঁদনাতলা হয়ে মধুর ফুলশয্যা পেরিয়ে নাড়িছেঁড়া ধনে ক্রোড় আলোকিত করে সরলা। মাতালের মাতলামির হিংস্র স্বরূপ উন্মোচিত হয় চূড়ান্ত বিচ্ছেদের মাধ্যমে,যখন সমস্ত পানি গড়ানো শেষ। শুরু হয় সতীসাধ্বী জননীর উপর অকথ্য পারিবারিক নির্যাতন। গত্যন্তর না পেয়ে জননীর গন্তব্য ইটের ভাটা। মাতৃত্বের মমতার কাছে শোচনীয় ভাবে পরাস্ত হয়ে বাঁশের তৈরি টুকড়িতে দুধের বাচ্চা ঘুম পাড়িয়ে, ইটের ভাটায় ইট পুড়ে মমতাময়ী মা। মায়ের স্নেহ বঞ্চিত কোলের বাচ্চার আর্তি ও মাতৃত্বকালে মায়ের অমানবিক পরিশ্রমের কারনে,ইটখোলার কালো বিষাক্ত ধোঁয়ার সাথেই শূন্যে ভেসে বেড়ায় মানবতা।
বাঁশের বেড়ার ছোট্ট একটি কুঠরি, তন্মধ্যে বাস করে বিশ-ত্রিশ জন রোহিঙ্গা। গাদাগাদি করে অমানবেতর জীবন যাপন করে। নদী মাতৃক বাংলাদেশে আগত শরণার্থী বৃষ্টির পানির জন্য মুখিয়ে থাকে। তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বৃষ্টির পানি বোতল ভরে সঞ্চিত রাখে।অথচ" আসুন আমরা পানির অপচয় রোধ করি "স্লোগান দিয়ে আমাদের সজাগ করতে হয়।অতিথিপরায়ণ বাঙালী জাতির কাছে আজ আতিথেয়তা যতটুকু অবহেলিত, তার চেয়ে সহস্র গুণ বেশী অবহেলিত মানবতা।
স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি বা শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ, আর এই মানুষই খুন করছে মানুষকে। প্রতিদিনকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা মানুষের কাছে লাশ হচ্ছে মানুষ! মানুষের লাশ দেখে উল্লাসিত হচ্ছে মানুষ! মানুষের লাশ নিয়ে ব্যবসা করছে মানুষ! মানুষের লাশ পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে মানুষের পৃথিবীতে। মানুষের লাশের বিশ্রী দুর্গন্ধে প্রতিনিয়ত রক্তবমি করছে মানবতা।
এভাবেই প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে ভূলন্ঠিত,নিগৃহীত ও পদদলিত হচ্ছে মানবতা। কতিপয় মানবাধিকার-কর্মী আর মানবাধিকার কমিশন দিয়ে মানবাধিকার অর্জিতও হবেনা রক্ষাও হবেনা। প্রয়োজন হচ্ছে প্রত্যেকটা নাগরিকের জন্মগত মানবাধিকার বিষয়ে সচেতন হওয়া,আর প্রত্যেকটা নাগরিকের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সুমহান ব্রত নিয়ে প্রাণপণ প্রচেষ্টার। আর এসব করতে হবে নিজ উদ্যোগেই পরিশ্রমী মানবাধিকার -কর্মী হয়ে। নিদেনপক্ষে আমরা যদি নিজের বিবেকের কাছে মানবিকতা -মানবতার প্রশ্নে পরিশুদ্ধ হয় সেটাও মানবতা প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক ও ফলপ্রসূ হবে। নেলসন ম্যান্ডেলার মুখ নিঃসৃত বাণী ‘টু ডিনাই পিপল দেয়ার হিউম্যান রাইটস ইজ টু চ্যালেঞ্জ দেয়ার ভেরি হিউম্যানিটি 'মানুষের মানবাধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে মানুষের মানবতাকে চ্যালেঞ্জ করা’। সুতরাং আমাদেরই মানবতাবাদী হয়ে মানবতাহীন এই সমাজ ভাঙতে হবে, মানবতার আলোয় নূতন সমাজ গড়তে হবে
সংগৃহীত আল আমীন ও সংযোযিত ।
১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫৩
স্পর্শ বলেছেন: সহমত আপনার সাথে , ধন্যবাদ।
২| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৮
দুর্লভ মশিউর বলেছেন: আসলে কেও নামক প্রানি কারও না।।
৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৫৫
সোজোন বাদিয়া বলেছেন: শ্রদ্ধা রইল এমন একটি পোস্টের জন্য।
৪| ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩১
আমিই মিসির আলী বলেছেন:
৫| ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:০৬
আব্দুল্লাহ ইথার খান বলেছেন: আপনার লেখা মন ছুয়েছে। অনুমতি ছাড়াই কপি দিলাম।
আমি নিজেও মানবতা প্রেমিক। ফেসবুকে আপনার সাথে ফ্রন্ডশিপ করতে চাই আমার নাম Abdullah Ether khan নামে আছে
১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫৫
স্পর্শ বলেছেন: জি ধন্যবাদ ,কোন সমস্যা নেই কপির জন্য , অলরেডি রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছি এক্সেপ্ট করেছেন ।
৬| ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:১০
আব্দুল্লাহ ইথার খান বলেছেন: এবং মুল লেখকের সাথে পরিচয় থাকলে তার সাথে যোগাযোগের লিংক টি দয়া করে দিবেন ।
১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫৯
স্পর্শ বলেছেন: মুল লেখক আমার ছোট ভাই সবে মাত্র এই জগতে পা বাড়িয়েছেন কোন লেখা পোস্ট করার আগে সে আমাকে দেখায় আর বলে এটা লেখেছি কেমন হয়েছে কোন ভুল-ভ্রান্তি আছে কি না বা আর কি করলে লেখা সুন্দর হয় ,আমি সেখান থেকে যে লেখাটা ভাল লাগে ব্লগে পোস্ট করি । আর ফেসবুকে মেসেজ দিয়েন মুল লেখকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব ইনশা আল্লাহ ।
৭| ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:০৭
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: অনেক ভাল লেখা। এমন একটি লেখার জন্য লেখকে অজস্র ধন্যবাদ
৮| ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০৫
আব্দুল্লাহ ইথার খান বলেছেন: কি নামে রিকয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন ?
২২ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৩১
স্পর্শ বলেছেন: সীমান্তের ঈগল
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪০
কানিজ রিনা বলেছেন: কাল ফেজবুকে পায়ে ধরা এই শিশুটিকে
দেখে বলেছিলাম ওটা তোমার বাবা না।
কোথায় মানবতা,পাখিরা বনে সুন্দর, শিশুরা
মা বাবার স্নেহ লালনে সুন্দর। তানা হয়ে
শিশুরা রাস্তায় সুন্দর পাখিরা খাচায় সুন্দর।