![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই পোস্ট পড়ে লেখা
প্রতিটা ঋণ দেওয়ার সময় একটা উদ্দেশ্য থাকে। কেউ হয়তো গবাদি পশু পালন অথবা অন্য যেকোন অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য ঋণ নিয়ে থাকে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সে তা না করে ঋণের টাকা অন্য কাজে লাগায়। শুরুতেই সে যা করে তা হলো তার পুরনো জরাজীর্ণ ঘর কে একটু ঠিকঠাক করে। যা সে পরেও করতে পারতো। কিন্তু সে আগেই তার সুখের দিক চিন্তা করে। আমার মনে হয় যদি ঋণের টাকা যথাযথ কাজে লাগায় তবে তার কিস্তি দিতে কোন অসুবিধা হবার কথা নয়। কিন্তু এই টাকার নগন্য অংশই সে তার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যয় করে। যথন কিস্তি দেবার সময় হয় তখন সে যা করে তা হলো তার ঋণের টাকা থেকেই কিস্তি দেয়া শুরু করে। এভাবে তার কিছু দিন বেশ ভালোই কাটে। কিন্তু দিন এখানেই শেষ হয় না। আস্তে আস্তে তার ঋণের টাকা শেষ হয়ে আসে। তখন সে যায় তার পুরনো মহাজনের কাছে চড়া সুদে ঋণ নিতে। অথবা কিস্তির শেষ পর্যায়ে সে মোটা অংকের টাকা সুদে ধার করে কিস্তি পরিশোধ করে। অনেক এনজিও কিস্তি হিসাবে শুধু সুদের টাকা নেয়। তাদের খপ্পরেই মানুষ আরো দরিদ্র হয়। সুদের টাকা ভালো ভাবে দিতে পারলেও সে আসল টাকা শোধ করতে পারে না। ফলে যা হবার তাই হয়। আবারো মহাজনই ভরসা। এককালীন অনেক টাকা এনে এ যাত্রা সে রক্ষা পায়। কিন্তু খেলাটা শুরু হয় এর পরেই। যেহেতু সে ঋণের টাকা ভালোভাবেই শোধ করতে পেরেছে তাই এনজিওগুলো তাকে আরো বেশি টাকা ঋণ অফার করে। এবং ভুল টা সে আবারো করে। এভাবে পর্যায়ক্রমে তার ঋণের বোঝা ভারী হয়ে উঠে। এটা এতটাই ভারী হয় যে তার সহায় সম্বল বিক্রি করেও তা সে পরিশোধ করতে পারে না। ফলাফল দাঁড়ায় সে আগে যা ছিল তারচেয়েও দরিদ্র হয়ে যায়।
বিষয় টা এখানেই শেষ নয়। এনজিওগুলো তাকে শেখায় একটা ভালো জীবন যাপন প্রণালী। তার হাতে যখন ঋণের টাকা আসে সে তখন ভালো জীবন যাপনের চেষ্টাই করে। এতে করে তার ঋনের টাকাই কিন্তু ব্যয় হয়। অর্থনৈতিক কর্মকান্ড থেকে তা মোটেও সে আনে না। এভাবে সে যে ফাঁদে পড়ে তা থেকে বের হবার উপায় আমার জানা নেই। যদি আপনাদের কারো জানা থাকে তবে জানালে ভালো হবে।
এসব কিছুই নাও হতে পারতো যদি সে ঋণের টাকা যথাযথ ভাবে কাজে লাগাতে পারতো।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১:০০
আশীষ কুমার বলেছেন: ঋণ পরিকল্পনা করেই নেয়। কিন্তু টাকা হাতে পাবার পর তা আর মনে থাকে না। এনজিওগুলোর উচিত এ দিকটা খেয়াল রাখা।
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১:১২
মোজাম্মেল বলেছেন: ভাই নিউক্লিযাস এবং মাটি ও মানুষ দুই জনের সাথেই আমি একমত। আসলে মানুষ দারিদ্র্যের দুষ্টুচক্রের মধ্যে আবর্তিত হচ্ছে। এথেকে বের হওয়ার জন্য স্বল্প সম্পদকে কাজে লাগানোর সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও তার যথাযথ প্রয়োগের বিকল্প নেই।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১:২৪
আশীষ কুমার বলেছেন: পরিকল্পনা ভালোই আছে। শুধু বাসতবায়নের অভাব।
৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৫:১৭
পি মুন্সী বলেছেন: বিশ্বব্যাঙ্ক ও ইউনুস সাহেরে পরস্পরের পরিপূরক:
বিশ্বব্যাঙ্ক ও আইএমএফের স্বার্থ বিদ্যাবুদ্ধিতে গ্লোবাল পূঁজির বা অর্থনীতির যে ডালপালা বিস্তার ঘটানো গিয়েছিল কেন্দ্র থেকে আমাদের প্রত্যন্ত প্রান্ত পর্যন্ত তাতেও দেখা যাচ্ছিল প্রত্যন্ত প্রান্তের ব্যাপক সংখ্যক মানুষ, এই গ্লোবাল পুঁজির বিতরণ চক্রের (money circulation) খাতক হতে পারেনি, বাইরে রয়ে গেছে। গ্লোবাল পুঁজির কোন প্রজেক্ট, পরিকল্পনা - এদের ছুতে পারেনি। অকেজো। অথচ এটা একটা গ্যাপও বটে। পরে থাকা এই গ্যাপটা কাজে লাগিয়ে গ্লোবাল পূঁজির আওতায় আনার কাজটা ইউনুস সাহেবের হাত দিয়ে ঘটেছে। এই কারণে গ্লোবাল পূঁজির স্বার্থ চিন্তায় যাদের ঘুম আসে না তাদের কাছে ইউনুস সাহেবের দাম এত। ইউনুস সাহেব কাজটা সফল করতে চেয়েছিলেন একটু হাতপা খুলে। বিশ্বব্যাঙ্কের ফরম্যাটে কাজ করা, রিপোর্ট দিয়ে টাকা ছাড়া করা, নানান ষ্টান্ডিং শর্ত পূরণ করা - এটা না করে নরওয়েজিয়ান, ইফাদের তহবিল দিয়ে একটু নিজের ছাপ দিয়ে কাজটা করতে চেয়েছিলেন তিনি। ফলাফল হয়েছে একই সংসারে হাড়ি-চুলা ভিন্নের দুই ভাইয়ের সংসারের মত। একই তত্ত্বে তিনি তার মত গ্রামীণ ব্যাঙ্ক চালাচ্ছেন আর বিশ্বব্যাঙ্ক একটা আধা খেচড়া না সরকারি না আধাসরকারি PKSF (পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন) বানিয়ে তার মাধ্যমে অন্যান্য এনজিওকে দিয়ে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবসা করে যাচ্ছে। এই হলো বিশ্বব্যাঙ্ক ও ইউনুস সাহেরে পরস্পরের পরিপূরক সম্পর্ক।
পাঠককে এখানে দুইটা গুরুত্ত্বপূর্ণ পয়েন্টের দিকে নজর ফেরাতে বলব।এক, ৩৫% সুদ দেবার পরেরও আমাদের গ্রামীণ জনগোষ্ঠি ক্ষুদ্রঋণের খাতক। তার মানে এটা গায়ে গতর শেষ করে খাটা এই মানুষের বাধ্য হয়ে কতটূর সইতে পারে তার পটেনশিয়ালিটি বা সক্ষমতা। এত অত্যাচারের পরের বিকল্পহীন নিরুপায়েরা কতটা নিরুপায় তার প্রকাশ। ১৩-২০% সুদে ব্যবসা করা যে কোন বাণিজ্যিকের কাছে ৩৫% সুদের হিসাবে বাণিজ্য এর চেয়ে লোভনীয় আর কি হতে পারে? এর মানে বাণিজ্যিক ব্যঙ্কের সাথে সমান একটা কমপিটিটিভ সুদ হার থাকলে এই সক্ষমতা আরও উপযুক্ত কাজেও লাগানো সম্ভব, খাতকেরও জীবন একটু সহজ করা সম্ভব। কিন্তু উপায় নাই। তবু শেখ হাসিনা এক বলিষ্ঠ "সুদখোর" উচ্চারণে আপাতত ইউনুসকে রাজনীতি থেকে ঠেকিয়ে রাখা গেছে। নইলে বিশ্বব্যাঙ্কের চিড়িয়াখানার প্রদর্শনের এই আইটেমকে নিয়ে আমাদের কপালে আরও দুঃখ ছিল।
দুই: ক্ষুদ্রঋণের মিডিয়া কাভারেজ খুবই উঁচু দরের, ওদিকে গ্রামীণের মাঠকর্মীও নিজেকে একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মনে করে। সাফল্যের কেস ষ্টাডি লিখে সাংবাদিকরা হয়রান। কিন্তু একটা প্রশ্ন কাউকে কখনও করতে দেখিনি।
গ্রামীন ব্যাঙ্কের একজন ঋণ খাতক যদি মাসে তাঁর আয় সর্বসাকুল্ল্যে তিন হাজার টাকা হয়, অন্যভাবে বললে মাসে তিন হাজার টাকা খরচ করে টানাটানিতে তার সংসার চলে তবে এই তিন হাজার টাকার সবটাই কী সে গ্রামীণের ঋণ নিয়ে কারবার করে কামিয়েছে? না কী ঋণ কারবারের বাইরে তাঁর একটা মূল পেশা আছে - রিক্সা চালানো বা কামলা দেয় পুরুষটা আর নারী বা স্ত্রীর নামে ঋণ আনা হয়, স্ত্রীরও আলাদা ছুটা কাজের কিছু আয় আছে - এই সব মিলিয়ে সংসারের আয় মাসে তিন হাজার। এবিষয়ে সরজমিনে দেখা আমার অভিজ্ঞতা হলো, ঐ তিন হাজার টাকার মধ্যে গড়ে পাঁচ থেকে ছয় শত টাকা হলো ঋণ কারবারের অবদান থেকে আসা আয়, আর বাকীটা অন্য যে মূল পেশা বা ছুটা কাজের কথা বললাম সেখানকার অবদান।
তাহলে কথা দাঁড়াল:
১. একটা ক্ষুদ্রঋণ খাতক সংসারে ঋণের অবদান হলো মাসের মুল আয় নয়। ছয় ভাগের একভাগ মাত্র।
২. ঐ খাতক সংসারে শ্রমের মূল পেশা ঋণ-জাত কায়কারবার নয়। অর্থাৎ ঋণ তাকে একটা একক বা নতুন পেশা দিতে পারেনি। বড়জোড় মূল অন্য পেশার একটা সহযোগী আয়ের ক্ষেত্র মাত্র।
৩. গ্রামীণ তাকে এমন পরিমাণ ঋণ দেয়নি যাতে এটাকে ভর করে সে তার পেশা বদল করে ভাল যায়গায় যেতে পারে। আবার, এমনও হতে পারে গ্রামীণের পক্ষে এমন পরিমাণ ঋণ দেয়াই সম্ভব নয় অথবা, এমন পরিমাণ ঋণ নিয়ে ঐ গ্রামে কারবার করে একে মুল পেশা হিসাবে নেবার অর্থনৈতিক কাঠামো, শর্ত নাই। এমন পরিমাণ ঋণ ব্যবহার করে কারবারের সুযোগ নাই।
তাহলে এই পরিস্হিতিতে গ্রামীণের অবদানের চেয়ে দেশের অর্থনীতির ট্রাডিশনাল কায়কারবারের অবদান বেশী; যেটা এখনও তাকে মুল পেশা দিয়ে কোন মতে বাচিয়ে রাখছে। গ্রামীন তাকে তুলনামূলক একটা ভালো পেশায় বদল ঘটাতে পারেনি বা ঋণ তাঁর মূল পেশা বা আয়ের উৎস হবার ধারে কাছে নয়।
অতএব, গ্রামীণের এই সাকসেস ষ্টোরি, কেসষ্টাডির ঢাক পিটিয়ে তোলপাড় করার ন্যায্যতা কোথায়? আমরা কী গল্প শুনতে ভালবাসা এক জাতি? তাই এই ন্যায্যতা?
[উপরের বক্তব্য এই লিঙ্ক Click This Link এর ৯ নম্ব র মন্তব্যে আমার কমেন্টের অংশ।]
১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৪৫
আশীষ কুমার বলেছেন: হুমম। আপনার লেখাটা পড়লাম। কী বলবো??
৪| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:২১
মোহাম্মদ মজিবর রহমান বলেছেন: ভাই খুব খাঁটি কথা।ঠিক এই কথা গুলো আমিও লিখতে চেয়ে ছিলাম।এনজিও গুলো সব ধান্ধাবাজ।ঋণ দেওয়া আর গলায় পাড়া দিয়ে কিস্তি উঠানোই তাদের কাজ।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৪৬
আশীষ কুমার বলেছেন: লিখে ফেলেন। যদিও জানি লিখলে কিছুই হবে না। তবে শান্তি পাবেন এই ভেবে যে আপনি লিখেছেন।
৫| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৬
সিদ্ধার্থ আনন্দ বলেছেন: ড. ইউনুস তো মাক্রো ক্রেডিটে ভর দিয়া এক দক্ষিন এশিয়ার চিন্তা করছেন। নো ভিসা, নো পাসপোর্ট, একই মুদ্রা...
Poverty, an artificial imposition
১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৪৭
আশীষ কুমার বলেছেন: একই মুদ্রা। এপিঠ ওপিঠ এর পুরুত্ব খুবই কম। ট্রান্সপারেন্ট??
৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৪২
সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: সুদের টাকা ভালো ভাবে দিতে পারলেও সে আসল টাকা শোধ করতে পারে না। ফলে যা হবার তাই হয়। আবারো মহাজনই ভরসা।
১০০ ভাগ সত্য বলেছেন ।
২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২৭
আশীষ কুমার বলেছেন: নিজের অভিজ্ঞতা। দেখা বা শোনা নয়।
৭| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৪
সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: ড: ইউনুসকে নিয়ে লেখা http://www.cadetcollegeblog.com/mahmudh/8159
- এই পোষ্ট টা অনেক কাজের , পোষ্ট + মন্তব্যের জবাব সবগুলোই পড়ার মত !
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৫৮
মাটি ও মানুষ বলেছেন: অনেকে আবার ঋণ করে পূর্বের ধার দেনা শেষ করে । এর পর যা হবার তাই হয় । তবে এটা কে কি বলবেন . . দেশের কিছু মানষ এতই দরিদ্র যে এছাড়া আর কোন উপায়ও থাকেনা ।
একটু পরিকল্পনা করে যদি কেউ ঋণ নিতো তাইলে ভাল ফল পাওয়া যেত ।