নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর চাকরি করেছি; অবসর নিয়েছি কর্নেল পদবীতে ২০০৬ সালে। এরপর এযাবৎ প্রিন্সিপাল হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে; এখন অর্কিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা-তে। ‘স্কুল সাইকোলোজি’ নিয়েও কাজ করছি।

আশরাফ আল দীন

কবি, শিক্ষাবিদ ও প্যারেন্টিং এক্সপার্ট

আশরাফ আল দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার গল্প ছোটদের জন্য

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪৪

ছোট্ট বন্ধুরা! আজকে তোমাদেরকে ভালোবাসার গল্প শোনাবো।

এই পৃথিবীতে #আল্লাহ মানুষকে এবং সব প্রাণীকে ভালোবেসে সৃষ্টি করেছেন, আর এত বিচিত্র সৌন্দর্যের ফল-ফুল-গাছ-মাছ-পাখি-#প্রাণী সব কিছুকে অসাধারণ শিল্পীর মতো বিভিন্ন রঙে এবং আকার-আকৃতিতে সাজিয়েছেন মনের আনন্দে। ছোটদের কাছে তার নিজের তৈরি খেলনা-পুতুল যেমন খুব প্রিয় হয় একইভাবে আল্লাহ নিজেও তাঁর নিজের তৈরি এই সব সৃষ্টিকে ভীষণ ভালোবাসেন। তুমিও যদি তাঁর সৃষ্টি করা এই প্রাণীদের একটিকেও খানিকটা যত্ন করো এবং ভালোবাস, তিনি এদের মালিক হিসেবে অবশ্যই তোমার উপর খুশি হবেন। চলো তাহলে, আল্লাহকে খুশি করার জন্যই সব সৃষ্টিকে, এবং সব প্রাণীকে আমরা ভালোবাসতে শুরু করি।

এখন প্রশ্ন হলো, কীভাবে ভালোবাসবো? কোথা থেকে শুরু করবো? ব্যাপারটা মোটেই কঠিন নয়, বরং সহজ। ইচ্ছে করলে তুমিও পারো অন্তত একটা প্রাণীকে লালন পালন করতে, আদর যত্ন করতে এবং বিশেষভাবে ভালবাসতে। এ ধরনের #ভালোবাসার গল্প বলতে চাচ্ছি আমি তোমাদেরকে। এই ভালোবাসার মধ্যে এক ধরনের আনন্দ আছে! #পশু-পাখি আর গাছপালাকে ভালোবাসার মধ্যে এক ধরনের সন্তুষ্টিও আছে। যেটা বলে বোঝানো যাবে না, করে বুঝতে হবে। মজার কথা হলো, তুমি যখন কোন প্রাণীকে ভালোবাসো তখন সে কিন্তু নিজেই বুঝতে পারে যে তুমি তাকে ভালোবাসো।

কাজটা শুরু করার জন্য তুমি কবুতর পুষতে পারো, কুকুর ছানা-বিড়াল ছানা-খরগোশ ছানার মধ্যে যে কোন একটি পুষতে পারো। এমনকি একুরিয়ামে মাছও পুষতে পারো। এরা সবাই তোমার সাথে খেলবে, তোমাকে আনন্দ দেবে, ভালোবাসা দেবে সন্দেহ নেই।

এমন কি পথের যে কুকুরটার কোন মালিক নেই, এমনিতেই পথে পথে ঘুরে বেড়ায় তাকে যদি তুমি একটু আদর করে এক টুকরো রুটি বা একটি বিস্কিট বা খাওয়ার কিছু দাও দেখবে দুই-এক দিনের মধ্যেই সে তোমাকে চিনে ফেলেছে। এরপর থেকে তোমাকে দেখলে সে দূর থেকে দৌড়ে তোমার কাছে আসবে। অন্যদের দেখে যেভাবে পালিয়ে যায়, সেভাবে সে পালিয়ে যাবে না! তোমার কাছে এসে তার ভালোবাসা জানাবে‌। বিড়াল হলে তোমার পায়ের সাথে গা ঘেঁষতে থাকবে। আর তুমি যদি ওর শরীরে বা মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দাও, সে ভীষণ খুশি হবে। তুমি তাকে খেতে দিলে সে আরো খুশি হবে। এরপর থেকে সে তোমার বন্ধু হয়ে যাবে। তুমি হাঁটতে বের হলে, তোমাকে দেখলেই সে তোমার পিছে পিছে বা তোমার আগে আগে হাঁটবে এবং তার চলা, তার লাফানো, তার বিশেষ ধরনের ঘেউ ঘেউ শব্দ শুনে তুমি বুঝতে পারবে সে কতটা আনন্দিত এবং তোমাকে কতটা ভালোবাসে!

আজকে তোমাদেরকে একটি বিশেষ #ভালোবাসার-গল্প বলে শেষ করবো এবং পরে তোমাদেরকে এ ধরনের ভালোবাসার গল্প আমি বলতেই থাকবো, ইনশাআল্লাহ। সত্যি গল্পটা এরকমঃ বাড়িতে সবাই মুরগি পোষে। এক ঝাঁক মুরগি তাদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বাড়ির উঠানে ঘুরে বেড়ায়। কেউ কাছে এলে পালিয়ে যায়, ধরা দেয় না। ধান-গম ছিটিয়ে দিলে খুব সুন্দর খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে খায় কিন্তু কারো কাছে আসে না।

ওই বাড়ির একটি ছোট্ট ছেলে, নাম সায়েম, হাতে কিছু গম নিয়ে মুরগিগুলোকে কাছে ডাকে; মে মাটিতে ছুঁড়ে দেয় না। মুরগিগুলো এসে ওর হাত থেকেই খুঁটে খুঁটে খাবার খায়। সায়েম কখনো মুরগিগুলোকে "সু!" বলে তাড়িয়ে দেয় না। একটি লাল মুরগিকে সায়েমের খুব ভালো লাগে। ওটা কাছে এলে সে ওটার পিঠের উপর আলতোভাবে হাত রেখে #আদর করে। ওকে সে আঘাত করে না, কষ্ট দেয় না, কোনরকম জোরাজুরি করে না বরং আপন করে নিজের কোলের সাথে ধরে রাখে। লাল মুরগি কয়েকদিনের মধ্যেই একথা বুঝে ফেলে যে ছেলেটা তাকে #আদর করে এবং তার কোন ক্ষতি সে করবে না এবং তার কাছে সে বরং আশ্রয় পাবে! ‌এভাবে দিনে দিনে এমন অবস্থা হয়ে যায় যে, সায়েম উঠানের কোণে গিয়ে বসলেই লাল মুরগিটা ওর কাছে আসে, তার কোলে অথবা দুই পায়ের ফাঁকে মাথাটাকে গুঁজে দিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে, তারপর ওকে পিঠে হাত বুলিয়ে আদর করে দিলে সে চলে যায়। দেখতে খুব সুন্দর লাগে! সায়েমও ভীষণ আনন্দ পায়, ভালোবাসার আনন্দ এবং ভালবাসা পাওয়ার আনন্দ! দেখেই বুঝা যায়, ওদের মধ্যে এক প্রকার বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরী হয়ে গেছে। অন্যরা দেখে অবাক হয়ে ভাবে, ছেলেটা মুরগীটাকে কীভাবে এমন পোষ মানালো! ওরা কেউ এই ভালোবাসার স্বাদ নিতে পারে না। জোর করে কি #ভালোবাসা আদায় করা যায়, বলো?

সত্যি অসাধারণ একটি দৃশ্য! তুমিও কি চাও না যে তোমাকে দেখলে একটা মুরগি-ছানা দৌড়ে আসবে তোমার কাছে? অথবা, একটা কবুতর উড়ে এসে তোমার কাঁধের উপর বসবে পরম বিশ্বস্থতায়? তোমাদের মধ্যে যাদের এই সুবিধা আছে তারা চেষ্টা করে দেখতে পারো। আমার মনে হয় আমরা সবাই প্রাণীদেরকে #ভালোবাসা শুরু করতে পারি।

আশরাফ আল দীন।। শিক্ষাবিদ, কবি, গবেষক ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা।
মিরপুর, ১২/০৪/২০২০

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৫৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনন্যসাধারণ  লেখা।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪৫

আশরাফ আল দীন বলেছেন: উৎসাহিত হলাম। ধন্যবাদ।

২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর গল্প।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:১০

আশরাফ আল দীন বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.