নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলী আশরাফ খান

ব্লগে কবিতা, ছড়া এবং কর্মসংস্থানমূলক প্রবন্ধ লিখব বলে আশা করি।

আলী আশরাফ খান

সরকারি চাকুরী করি, কবিতা, প্রবন্ধ লিখি। ভ্রমণ এবং বই পড়া নেশা।

আলী আশরাফ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাজু বাদাম চাষ-কৃষি

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৪

কাজু বাদাম চাষ

মো. আলী আশরাফ খান



বীজ এবং কলম উভয় পদ্ধতিতেই কাজু বাদামের বংশ বিস্তার করা যায়। কলমের মধ্যে গুটি কলম, জোড় কলম, চোখ কলম ইত্যাদি প্রধান। কাজু বাদাম গাছ ৬০-৭০ বছর পর্যন্ত বাঁচে এবং ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। বীজ থেকে পলি ব্যাগে চারা তৈরি করে কিংবা কলম প্রস্তুত করে জমিতে রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের আগে ৭-৮ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে ১ ঘনমিটার আয়তনের গর্ত তৈরি করতে হবে। গর্তে সবুজ সার এবং পরিমাণমত ইউরিয়া ও টিএসপি সার মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ১৫ দিন পর চারা লাগাতে হবে।

চারা রোপণের পর গাছের বয়স তিন বছর হলে প্রথম ফুল এবং ফল আসে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি ফুল ফোটার সময়। এপ্রিল থেকে জুন মাস কাজু বাদাম সংগ্রহকাল। গাছ থেকে সুস্থ ফল সংগ্রহ করে খোষ ছাড়িয়ে তারপর ভালোভাবে রৌদ্রে প্রধান শক্ত গাছের ও শিকড় ছিদ্রকারী পোকা। এ ছাড়া পাতা শোষক পোকা ও পাতা কাটা পোকা প্রভৃত ক্ষতি সাধন করে। পরিমিত পরিমাণে কীটনাশক প্রয়োগ করে কীটপতঙ্গ দমন করা যায়।

কাজু বাদাম সাধারণত ভেজে খাওয়া হয়। ভাজার আগে লবণ পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে তারপর ভাজা হয়, এতে লবণাক্ত কাজু বাদাম পাওয়া যায়। এ ছাড়া ভাজার পর চিনির শিরা তৈরি করে তাতে ডুবিয়ে রেখে মিষ্টি স্বরে কাজু বাদাম পাওয়া যায়। স্ন্যাক্স হিসেবে কাজু বাদাম অত্যন্ত জনপ্রিয় এ ছাড়া বিভিন্ন খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধিতেও কাজু বাদাম ব্যবহৃত হয়। পেস্ট হিসেবেও কাজু বাদাম অনন্য। কাজু বাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল। প্রতি ১০০ গ্রাম খাবারের উপযোগী কাজু বাদামে রয়েছে ৩০.১৯ গ্রাম শর্করা, ১৮.২২ গ্রাম আমিষ ও ৪৩.৮৫ গ্রাম চর্বি। এ ছাড়া ভিটামিন এ বি বি২, বি৩, বি৫, বি৬ বি৯, বি১২ প্রভৃতি ভিটামিন, লৌহ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, জিঙ্ক প্রভৃতি খনিজ উপাদান।

দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ব্রাজিল কাজু বাদামের আদি জন্মস্থান। বর্তমানে উষ্ণমণ্ডলীয় দেশ ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ভারত, কোনিয়া, মোজাম্মিক, তানজানিয়া, মাদাগাস্কার প্রভৃতি দেশে প্রধানত কাজু বাদাম উত্পাদিত হয়ে থাকে।

সাধারণত একটি গাছ থেকে ৫০-৬০ কেজি ফলন পাওয়া যায়। ১ কেজি ফল প্রক্রিয়াজাত করে তা থেকে গড়ে ২৫০ গ্রাম কাজু বাদাম পাওয়া যায়। জাতভেদে ফলনের তারতম্য হয়ে থাকে।

উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলের ফল কাজু বাদাম বর্তমানে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জেলাগুলোয় উত্পাদিত হচ্ছে। আমাদের দেশে একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে কাজু বাদাম চাষ সম্প্রসারণের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে কাজু বাদাম চাষ বেশ লাভজনক। পর্তুগিজ শব্দ ঈধলঁ থেকে ইংরেজি ঈধংযব ি শব্দের উত্পত্তি এর বৈজ্ঞানিক নাম অহধপধত্ফরঁস ঙবপরফবহঃধষব কাজু বাদাম অহধপধত্ফরধপবধব পরিবারভুক্ত এবং অহধপধত্ফরঁস-গণের অন্তর্ভুক্ত। এ গইের প্রজাতির সংখ্যা ২০টি। কাজু আপেলের রং ও আকারের ওপর ভিত্তি করে লাল, হলুদ, গোলাপী প্রভৃতি রং ধারণ করে এবং এর আকার গোলাকার ও নাশপাতির মতো হয়ে থাকে। কাজু বাদাম আম ও আমড়া একই পরিবারভুক্ত বৃক্ষ। এটি একটি চিরহরিত্ মধ্যমাকৃতির বৃক্ষ। প্রাপ্ত বয়স্ক গাছ ১০-১২ মিটার বা ৩২ ফুট পর্যন্ত উচ্চতাসম্পন্ন হয়ে থাকে। পাতা অর্ধডিম্বাকার, কাঁঠালের পাতার মতো দেখতে। প্রশাখার অগ্রভাগে পেনিকল জাতীয় পুষ্পমঞ্জুরিতে ফুল উত্পাদন হয়। প্রতিটি মঞ্জুরিতে ৩০০ থেকে ১৫০০টি পর্যন্ত ফুল থাকে। উভয়লিঙ্গী এবং পুরুষ ফুলের অনুপাত হয় ১ঃ৩-৯ পর্যন্ত। কীটপতঙ্গের সাহায্যে পরাগায়নের কাজ সম্পন্ন হয়। গাছে প্রথমে পুরুষ ফুল এবং পরে উভয়লিঙ্গী ফুল বের হয়। কাজু বাদাম অনেকটা কিডনি আকৃতির, দৈর্ঘ্য ৪-৫ সে. মি. এর ওজন ৫-২০ গ্রাম হয়ে থাকে। ফলের বোঁটা ও পুষ্পাধার স্ফীত হয়ে নাশপাতি আকারের কাজু আপেল (ঈধংযব িধঢ়ঢ়ষব) তৈরি করে। এ আপেলের নিচেই থাকে কাজু বাদাম। কাজু আপেল সুগন্ধযুক্ত এবং সুমিষ্ট। কাজু আপেলের একটি মাত্র বিজ থাকে, যা কাজু বাদাম নামে পরিচিত। দুই স্তরবিশিষ্ট খোলসের মধ্যে থাকে এই বাদাম।

কাজু বাদাম গ্রীষ্মপ্রধান দেশের ফল। এটি অত্যন্ত কষ্টসহিষ্ণু ও খরা প্রতিরোধী বৃক্ষ। উচ্চ তাপমাত্রায় গাছ বেঁচে থাকলেও গুটি অবস্থায় থাকলে ফল ঝরে যায়। অধিক বৃষ্টিপাত ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া ফলনের ওপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। এই গাছ ছায়া সহ্য করতে পারে না, এ জন্য পর্যাপ্ত সূর্যালোক প্রয়োজন হয়।



মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ ভোর ৬:১৮

রাফছান বলেছেন: ভাই আমি এর বীজ পাবো কোথায়। আমার এই গাছের বীজ দরকার। আমার facebook.com/rafsan72

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.