নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলী আশরাফ খান

ব্লগে কবিতা, ছড়া এবং কর্মসংস্থানমূলক প্রবন্ধ লিখব বলে আশা করি।

আলী আশরাফ খান

সরকারি চাকুরী করি, কবিতা, প্রবন্ধ লিখি। ভ্রমণ এবং বই পড়া নেশা।

আলী আশরাফ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্যাশনফল

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৫







ভূমিকা

বাংলাদেশে উৎপাদিত ফল সমূহের মধ্যে প্যাশনফল একটি নতুন সংযোজন। বিদেশী এ ফলটি আমাদের দেশের পার্বত্য এলাকায় প্রায় এক দশক ধরে চাষবাদ হয়ে আসছে। পার্বত্য অঞ্চল ছাড়াও দেশের প্রায় সর্বএই এই ফলটি চাষের সম্ভাবনা বিদ্যমান। এই ফলটি ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এবং এর থেকে তৈরী শরবতে ট্যাং এর স্বাদ বিদ্যমান থাকায় অনেকে এই ফলকে ট্যাং ফল নামে অভিহিত করে থাকেন।



পুষ্টিমান

প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য অংশে থাকে শর্করা ২৩.৩৮ গ্রাম, সুগার ১১.২০ গ্রাম, আঁশ ১০.৪ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৪০৬ কিলোজুল, চর্বি ০.৭০ গ্রাম, ভিটামিন-এ ৬৪ ইউ জি, ভিটামিন বি-২ ০.১৩০ মি গ্রাম, আমিষ ২.২০ গ্রাম, নিয়াসিন ১.৫০০ মি.গ্রাম, ভিটামিন-সি ৩০.০ মিলি গ্রাম। কেলসিয়াম ১২ মি.গ্রাম, লৌহ ১.৬০ মি.গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২৯ মি.গ্রাম, ফসফরাস ৬৮ মি.গ্রাম, পটাশিয়াম ৩৪৮ মি.গ্রাম এবং জিংক থাকে ০.১০ মি.গ্রাম।



উৎপত্তিস্থল

ব্রাজিলের আমাজান অঞ্চলের রেইন ফরেষ্টের নিকটবর্তী স্থান, প্যারাগুয়ে এবং উওর আর্জেন্টিনাকে প্যাশনফলের আদি জন্মস্থান হিসাবে ধরা হয়। সেখান থেকে এই ফল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯১৫ সাল থেকে কোন কোন দেশে বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। তার আগে প্যাশনফল বনে-জঙ্গলে অযত্ন অবহেলায় বেড়ে উঠতো।



ব্যবহার

প্যাশনফলের বীজকে আবৃত করে থাকা হলুদ, সুগন্ধিযুক্ত, জিলাটিনাস পাল্পকে পানিতে দ্রবীভূত করে অত্যন্ত সুস¦াদু এবং উপাদেয় শরবৎ প্রস্তুত করা হয়। এছাড়া এর রস অন্যান্য ফলের রসের সাথে মিশ্রিত করেও পান করা যায়। পাল্পকে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে আইসক্রীম, জুস, স্কোয়াস, জ্যাম ও জেলি প্রস্তুত করা যায় যা অন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত। এই ফলের বীজ এবং খোসা থেকে পেকটিক ও উচ্চ মাএার লিনোলিক এসিড সমৃদ্ধ তেল আহরিত হয়ে থাকে। ফলের রস থেকে পৃথিবীর অনেক দেশে উন্নতমানের মদ প্রস্তুত করা হয়।



ফুল ও ফলের পরিচিত

বেগুনী বা পার্পল প্যাশনফল হতে প্রাকৃতিক মিউটেশনের মাধ্যমে হলুদ প্যাশনফলের উৎপওি হয়েছে যা আকারে ও গুণাগুণে মাতৃপার্পল প্যাশনফল থেকে উন্নত। এর ফুল উভয়লিংগ ধরণের এতে পাঁচটি বৃত্যাংশ,পাঁচটি সাদাটে পাপড়ি, বেগুনী রঙের দুই সারি সুতার মতো পুংকেশর এবং স্ত্রীকেশর থাকে। অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এই ফুলটি বাংলাদেশে “ঝুমকোলতা” নামে সমধিক পরিচিত। প্যাশনফল গোলাকার, ৪-৬ সে.মি লম্বা, পাকলে সবুজাভ হলুদ বা বেগুনী এবং মসৃণ হয়। বীজ কালো বা বাদামী ধরণের হয়, প্রতিটি বীজ হলুদ বা কমলা রঙের সুগন্ধি রসালো পাল্প দ্বারা বেষ্টিত থাকে।



ঔষধীগুণ

ভিটামিন-সি, শর্করা এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ প্যাশনফল সর্দি-কাশি নিরাময়ে বেশ কার্যকর। অনিদ্রা দূরীকরণে সহায়ক এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকরি।



জলবায়ু

সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে ৮০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত স্থানে এই ফল ভাল জন্মে। ১২০ মিলিমিটার সমভাবে বন্টিত বৃষ্টিপাত প্যাশনফল চাষের জন্য উপযোগী। চাষের জন্য উপযুক্ত তাপমাএা হচ্ছে ২০-৩০ডিগ্রী সেলসিয়াস। তাপমাএা ১৫-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে গাছের বৃদ্ধি এবং ফুল আসা বাধাগ্রস্থ হয় এমনকি কম তাপমাএায় পরাগায়নও ব্যাহত হয়। ফুল থেকে ফল ধারণের জন্য দিনের দৈর্ঘ্য সাড়ে ১০ ঘন্টার অধিক হওয়া প্রয়োজন।



মাটি

বেলে দো-আঁশ মাটি প্যাশনফলের চাষাবাদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। এছাড়া এটেল দো-আঁশ মাটিতে এর চাষ ভাল হয়। মাটির পি এইচ ৬.৫ হতে ৭.৫ পর্যন্ত হলে ভাল। ক্ষারিয় মাটিতে চুন প্রয়োগ করলে তা প্যাশনফল চাষের জন্য উপযোগী হয়ে ওঠে।



জাত

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা কেন্দ্র বারি প্যাশনফল-১ নামে একটি জাত উদ্ভাবন করেছে। এই জাতের প্রতিটি ফলের আকার ৬.৮ * ৬.৩ সে.মি। ফলের গড় ওজন ৬৮ গ্রাম যা থেকে ৩০ গ্রাম জুস আহরণ করা যায়। জুসের রং হলুদ এবং টি.এস.এস মান ১৪। এ জাতটির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।



উৎপাদন মৌসুম

জমিতে চারা রোপণের ১৫-১৮ মাসের মধ্যেই প্যাশন গাছে প্রথম ফল আসে। মধ্য ফেব্রুয়ারী থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত ফুল আসার প্রধান মৌসুম যা থেকে জুন-জুলাই মাসে ফল পাওয়া যায়। এছাড়া জুলাই-আগষ্ট মাসেও গাছে কিছু ফুল আসে এবং ডিসেম্বর মাসে তা থেকে ফল পাওয়া যায়।



জমি প্রস্তুত

প্যাশনফল চাষাবাদের জন্য অবশ্যই সুনিস্কাশিত জমি নির্বাচন করতে হয়। পানি জমে থাকে এরূপ জমি প্যাসনফল চাষের জন্য উপযোগী নয়। পাহাড়ী ঢালু জমি এই ফল চাষের জন্য অধিক উপযোগী। নির্বাচিত জমির আগাছা ভালভাবে পরিস্কার করে নেয়া আবশ্যক। চারা রোপণের জন্য ৪০ * ৪০ * ৪০ সে.মি আকারের গর্ত তৈরী করে গর্তের মাটির সাথে গর্ত প্রতি ১০ কেজি গোবর পচা সার, ২০০ গ্রাম টি.এস.পি এবং ২০০ গ্রাম এম.পি সার মিশিয়ে ৭-১০ দিন রেখে দিতে হবে।



সার প্রয়োগ

প্যাশনফল গাছের বৃদ্ধি এবং প্রত্যাশিত ফলন পেতে হলে সময়মত সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছের বৃদ্ধির জন্য ইউরিয়া বা নাইট্রোজেন অন্যতম পুষ্টি উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়া ফসফরাস, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সারও প্রয়োগ করতে হবে।



নিমে¥ বয়স অনুপাতে গাছ প্রতি সারের পরিমাণ উল্লেখ করা হলো।

গাছের বয়স (বছর) গোবর/কম্পোষ্ট (কেজি)ইউরিয়া (গ্রাম)টিএসপি (গ্রাম)এম পি (গ্রাম)

১-৩ ৮ ২০০ ২০০ ৩০০

৪-৬ ১০ ৩০০ ৩০০ ৪০০

৭ বা তদুর্দ্ধ ১২ ৪০০ ৪০০ ৪০০





উপরে উল্লেখিত পরিমাণ সার’এর অর্দ্ধেক বর্ষার আগে এবং বাকি অর্দ্ধেক বর্ষা শেষে গাছের চারদিকের মাটির সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

মাচা তৈরী

বাণিজ্যিক ভিওিতে প্যাশনফল চাষাবাদের জন্য বিভিন্ন ধরণের মাচা তৈরী করা যেতে পারে। একক তার বিশিষ্ট মাচা তৈরীর জন্য চারা থেকে ৩ মিটার দূরত্বে ২.৭৫ মিটার লম্বা আর সি সি খুঁটি ৭৫ সে.মি মাটির গভীরে পুঁতে খুটির মাথায় ১৪ গেজের গ্যালভানাইজড তার বেঁধে দেয়া হয়। চারার গোড়ায় একটি বাঁশের খুঁটি পুতে উপরের তারের সাথে সংযুক্ত করা হয়। গাছ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে তার পর্যন্ত পৌঁছলে গাছের অগ্রভাগ কেটে দিয়ে তারের উপর দুদিকে শাখা বিস্তৃত করা হয়। তারের নিচের কান্ড থেকে কোন শাখা বের হলে উক্ত শাখা কেটে ফেলতে হবে। এছাড়া বাড়ির পাশে মাচা করে কিংবা বিভিন্ন ফল ও শাক-সবজির বেড়ার সাথে প্যাশনফলের গাছ উঠিয়ে দেয়া যায়।

প্যাশনফলের গাছ লতানো হওয়ায় তা বাতাসের প্রতি খুবই সংবেদনশীল। ঝড়ো হাওয়ায় এর শাখা প্রশাখা ভেংগে যায়। ফুল এবং ফল ঝরে পড়ে এবং কখনও কখনও শাখা প্রশাখা মারা যায়। স্থায়ীভাবে বায়ুরোধী এলাকায় এটা চাষ করতে হয়। পাহাড়ী এলাকা এবং ঘন গাছ গাছড়া দ্বারা বেষ্টিত স্থান এর চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী।



বংশ বিস্তার

বীজ থেকে এবং কাটিং ও গ্রাফটিং উভয় পদ্ধতিতেই প্যাশনফলের বংশ বিস্তার করা যায়। পাকা ফলের পাল্প থেকে বীজ আলাদা করে পানি দ্বারা ধুয়ে ছায়ায় শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। সংরক্ষিত বীজের সজীবতা ৩-৪ সপ্তাহ থাকে। বীজ বপণের ২০-২৫ দিনের মধ্যেই অঙ্কুরিত হয়। এরপর বীজতলা থেকে তুলে পলিথিন ব্যাগে স্থানান্তর করতে হয়।



চারা উৎপাদন

গাছের শাখা কেটে বীজতলার মাটিতে ৪৫ ডিগ্রী কোণ করে পুঁতে চারা তৈরী করা যায়। শাখা রোপণের সময় ২/১ টি পাতা রেখে অবশিষ্ট পাতা ফেলে দিতে হয়। তিন মাস পর চারা পলিব্যাগে স্থানান্তর করে জমিতে লাগানোর উপযুক্ত হয়। এছাড়া বীজ থেকে উৎপাদিত চারার মাথা কেটে ষ্টক তৈরী করা হয় এবং গাছের শাখা কেটে ষ্টকের সাথে জোড়া লাগানো হয়। এই পদ্ধতিকে গ্রাফটিং বলা হয়।



রোপণ/বপন পদ্ধতি

বীজ থেকে উৎপাদিত চারার বয়স তিন-চার মাস হলে প্রায় ২৫-৩০ সে.মি লম্বা হয়। এসময় চারা মূল জমিতে লাগানোর জন্য উপযুক্ত হয়। গ্রাফটিং করা চারা এক মাস পরই জমিতে লাগাতে হয়। বীজ থেকে উৎপাদিত চারা আগষ্ট মাসের মধ্যে জমিতে রোপণ করতে হয়। প্রতিটি চারার রোপণ দূরত্ব হবে ৩ মিটার ী ৫ মিটার।



পানি সেচ

চারা রোপণের পর ঝরণার সাহায্যে ১৫-২০ দিন নিয়মিতভাবে পানি সেচ দিতে হবে। আশানুরূপ ফলন পেতে হলে ফুল আসা এবং ফলের বিকাশের সময় মাটিতে যাতে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে প্যাশনফল গাছে মাঝে মাঝে পানি সেচ দেয়া আবশ্যক।



আন্তঃ পরিচর্যা

গাছের গোড়া সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। যাতে কোন ধরণের আগাছা এবং ঘাস জন্মাতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মাঝে মাঝে পুরাতন ও মরা ডাল কেটে ফেলতে হয়। গাছের গোড়ার মাটি শক্ত হয়ে উঠলে কোদালের সাহায্যে ঝুরঝুরে করে দিতে হবে।



রোগ বালাই

হলুদ প্যাশনফলে রোগের আক্রমণ কম হয়। সাধারণতঃ নিম্নোক্ত রোগের প্রাদুর্ভাব হয়ে থাকে।

ক) বাদামী দাগ রোগ : এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ। ছত্রাক পাতা,কান্ড ও ফলে আক্রমণ করে। প্রথমে পাতায় ছোট ছোট বাদামী দাগ দেখা যায় যা ক্রমশঃ বড় হয়। ফলে গভীর বাদামী কেন্দ্র বিশিষ্ট গোলাকার ক্ষত দেখা যায়। শেষে ফল কুঁচকে যায় এবং ঝরে পড়ে।

খ) উডিনেস : কিউকুমবার মোজাইক ভাইরাস দ্বারা এটি সংক্রমিত হয়। এ রোগে আক্রান্ত পাতায় হলুদ দাগ দেখা যায় এবং পাতা চর্মবৎ বিবর্ণ হয়ে পড়ে। আক্রান্ত হলে ফলের আকার ছোট হয়, ফলের খোসা মোটা ও শক্ত হয় এবং পাল্পের পরিমাণ কম হয়। এফিড নামক একধরণের পোকা বাহক হিসেবে এই রোগ ছড়ায়।

গ) ফলের মাছি ঃ পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী মাছি পোকা আধা পাকা ফলের গায়ে ছিদ্র করে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বের হয়েই ফলের পাল্প খেতে থাকে। ডিম পাড়ার ছিদ্র স্থানে ছএাক,ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে ফলকে পচিয়ে ফেলে। আক্রান্ত ফল অবশেষে ঝরে পড়ে।



রোগ বালাই দমন



ক) বাদামী দাগ রোগ দমন করার জন্য নিম্নের প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

- প্যাশনফলের মাচার চারিপাশ সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

- শুকনো ও মরে যাওয়া লতাপাতা নিয়মিতভাবে সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।

- আক্রমণ বেশি হলে ‘রোভরাল’ ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম পরিমাণ মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ৩-৪ বার স্প্রে করে

প্রয়োগ করতে হবে।

খ) উডিনেস রোগে আক্রান্ত হলে বাহক পোকা এফিড দমনের জন্য ম্যালাটাফ/ম্যালাথিয়ন/ম্যালাটক্রা প্রতি লিটার পানির

সাথে ২ মি.লি মিশিয়ে নিয়মিতভাবে স্প্রে করতে হবে।

গ) ফলের মাছি পোকা থেকে প্যাশনফল রক্ষা করতে হলে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

- আক্রান্ত পতিত ফল সংগ্রহপূর্বক তা মাটিতে কমপক্ষে এক ফুট গর্ত করে পুতে ফেলতে হবে।

- মিথাইল ইউজিনল বা সেক্রা ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করে পুরুষ পোকা আকৃষ্ট করে এ পোকা দমন করা যায়।

এক্ষেএে ফল পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথে সেক্রা ফেরোমোন ফাঁদ ১২-১৫ মিটার দূরে দূরে স্থাপন করতে হবে।



পরাগায়ন

প্যাশনফলের ক্ষেএে অধিকাংশ সময় স্ব-পরাগায়ন হয় না এবং সফলভাবে ফল ধারণের জন্য পর-পরাগায়ন সংঘটিত হয়। পর-পরাগায়নের ফলে উৎপাদিত ফলের ওজন, রসের পরিমাণ এবং বীজের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। সাধারণত মৌমাছি, বোলতা এবং কার্পেন্টার মাছি দ্বারা পর-পরাগায়ন সংঘটিত হয়। হলুদ প্যাশনফলের ফুল দুপুর বেলা উন্মুক্ত হয় এবং সন্ধ্যায় বন্ধ হয়ে যায়। হাত দ্বারা কৃওিম পরাগায়ন সম্পন্ন করলে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

পরাগায়নের পর থেকে ফল ধারণ প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে ফলের বৃদ্ধি সর্বোচ্চ হয়। এছাড়া তাপমাএা বেশি থাকলেও ফলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। নিষেক প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ফলের পরিপক্কতা আসতে পায় ৯০ দিন সময় লাগে।



ফল/ফসল সংগ্রহ

প্যাশনফল পাকলে হলুদ রঙ ধারণ করে। এসময় ফলগুলো গাছ থেকে মাটিতে ঝরে পড়তে থাকে। ঝরে পড়া পাকা ফলগুলো ২/১ দিন পর পর সংগ্রহ করা যায়। তাছাড়া সুপক্ক হলুদ রঙের ফল গাছ থেকে হাত দ্বারা সংগ্রহ করা উওম।



ফল সংরক্ষণ

প্যাশনফল সংগ্রহের পর স্বাভাবিক তাপমাএায় ১৪/১৫ দিনের বেশি রেখে দিলে চামড়া কুচকে যায় এবং সুগন্ধি কিছুটা নষ্ট হয়। অপরদিকে ৫-৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাএা এবং ৮০-৯০ % আপেক্ষিক আর্দ্রতায় এই ফল খুব সহজেই ৫-৬ সপ্তাহ পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। তবে দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য এর পাল্প কিংবা জুস বের করে প্রক্রিয়াজাত করে বায়ুনিরোধক টিনের পাএে রাখা উওম ।



প্রধান প্রধান উৎপাদনকারী দেশ সমূহ

ভারত, শ্রীলংকা, নিউজিল্যান্ড, ব্রাজিল, কলোম্বিয়া, বলিভিয়া, ইকুয়েডর, ইন্দোনেশিয়া, পেরু, পুর্তরিকো, ডোমিনিকান রিপাবলিক, হাইতি, আর্জেন্টিনা, অষ্টোলিয়া, পূর্ব আফ্রিকা, মেক্সিকো,পর্তুগাল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া, ফোরিডা এবং হাওয়াই অংগরাজ্যে ব্যাপকভাবে প্যাশনফলের চাষাবাদ হয়ে থাকে।



উপসংহার

বাণিজ্যিক ভিওিতে প্যাশন ফলের চাষ বর্তমানে পাহাড়ী অঞ্চলে একটি অন্যতম লাভজনক ফল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। দেশের অন্যান্য স্থানেও এর সীমিত আকারে উৎপাদন শুরু হয়েছে। গাজীপুর, টাংগাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা প্রভৃতি জেলায় অনেকেই প্যাশনফলের উৎপাদন শুরু করেছেন। যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করে এই সম্ভাবনাময় ফল চাষে অনেকেই শরিক হবেন এমন প্রত্যাশা করছি।

.....................................................................................................



মোঃ আলী আশরাফ খান, চীফ অডিট অফিসার, বিসিক, ঢাকা।

মোবাঃ ০১৭১০৪০৭০৭৪ E.mail: [email protected]



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.