![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি’র রাজনীতি সুস্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে গেছে। দুটি ধারার নেতৃত্বে আছেন যথাক্রমে জেলা বিএনপি সভাপতি আলহাজ্জ্ব এডভোকেট হারুন অর রশীদ এবং খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল।
রাজনীতিতে শ্যামলের আগমন হারুন অর রশিদ সাহেবের হাত ধরেই। বিগত ২০০৮ সনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এডভোকেট হারুন অর রশিদের সাথে ছায়ার মত সঙ্গ দিয়েছেন শ্যামল। হারুন অর রশিদ তখন ভবিষ্যৎ প্রার্থী হিসাবে তরুণ শিল্পপতি খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলকে পরিচয় করিয়ে দেন। শ্যামল ঘুরে বেড়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের প্রতিটি ইউনিয়নে। জায়গা করে নেন সাধারণ ভোটারদের মনে, শ্যামলের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে হারুন অর রশিদ কিছুটা থমকে যান। কার্যক্রম কিছু বিস্মিত হয়ে যায় বিএনপি’র । এ সময় দলের তৃণমূলের সাথে যোগাযোগ আরও বাড়িয়ে দেন শ্যামল। লুৎফুল হাই সাচ্চুর আকস্মিক মৃত্যুতে সদর আসনটি শূন্য হয়ে যায়। আবারও বেজে উঠে নির্বাচনের দামামা। খালেদ হোসেন মাহবুব দল থেকে উপ নির্বাচনের টিকেট নিয়ে আসলে জেলা বিএনপি তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাসী কিছুটা অবাক হয়ে যায়। জেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দও কিছুটা অবাক হয়। কারণ তাদের ধারণা ছিল ৫ বারের নির্বাচিত সাংসদ হারুন অর রশিদ সাহেবকে বাদ দিয়ে অন্য কেউ বিএনপি থেকে নির্বাচন করতে পারবে না। নমিনেশন না পেয়ে হারুন অর রশিদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসলে তাঁর নিজ বাসভবন মৌলভীপাড়ায় সৃষ্টি হয় এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির । উপস্থিত নেতা কর্মীদের চোখের পানি দেখে হারুন সাহেব ও নিজেকে সম্বরণ করে রাখতে পারেনি। আবেগপূর্ন বক্তৃতায় তিনি দলের সবাইকে ধানের শীষের নির্বাচন করার অনুরোধ করেন।
শ্যামল সাহেব ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফিরে আসেন নির্বাচন করার দায়িত্ব নিয়ে। প্রথমেই আসেন হারুন সাহেবের মৌলভীপাড়াস্থ বাসভবনে। দোয়া চান, পাশাপাশি হারুন অর রশিদ সাহেবকে অনুরোধ করেন নির্বাচন পরিচালনা করার। জেলা বিএনপি’র নেতৃত্বে কিছুটা সর্তকতার সাথে শ্যামলের পক্ষে প্রচারণা চালাতে থাকেন। স্বতস্ফুর্তভাবে প্রচারণাতে উনারা ছিল অনেক পিছিয়ে। শ্যামলের পক্ষে নির্বাচন প্রচারণা চালাতে এখানে আসেন অনেক কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতারা। উনারা হেটে হেটে সাধারণ ভোটারদের কাছে শ্যামলের জন্য ভোট প্রার্থনা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী কোন দিন এত জন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নেতাদের স্থানীয়ভাবে দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখেনি। এর মাধ্যমে শ্যামল জেলা বিএনপি নেতৃত্বেকে বুঝিয়ে দেন কেন্দ্রে উনার অবস্থান কতটুকু শক্ত। নির্বাচনে শ্যামল হাজার ভোটে পরাজিত হন মহাজোটের প্রার্থী র.আ.ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরীর কাছে। সবাই আশংকা প্রকাশ করছিল যে, আরও অনেক বেশী ভোটে শ্যামলের পরাজিত হবার কথা। এই আশংকার প্রধান কারণ ছিল হারুন সাহেবের এলাকা বলে পরিচিত পশ্চিম অঞ্চল। নাটাই, কালিসীমা, পয়াগ, নরসিংসার এলাকাগুলোতে পূর্বে দেখা গেছে, হারুন সাহেবের বিপক্ষ প্রার্থীর নাম মাত্র ভোট পেতে। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে খালেদ মাহবুব শ্যামল ব্যস্ত হয়ে পড়েন দলকে গোছাতে। বিএনপি’র মূল শক্তি ছাত্রদলকে নিয়ে আসেন নিজ বলয়ে। ছাত্রদলের আহবায়কের দায়িত্ব দেন শামীম মোল্লাকে। নিয়ে আসেন ছাত্রদলের অধিকাংশ নেতা কর্মীকে। ছাত্রদল গুছাতে গুছাতেই শ্যামল যুবদলকেও ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেন। আহবায়কের দায়িত্ব দেন হারুন সাহেবের ঘনিষ্ঠ অনুসারী মনিরকে। মনির অনেকদিন থেকেই বিএনপি’র রাজনীতির সাথে যুক্ত। কিন্তু যুবদলের বিশেষ কোন স্থান বা পদ পাচ্ছিলেন না। যুবদলের সাবেক সভাপতি হারুন সাহেবের স্নেহধন্য আলী আজমের প্রতি হারুন সাহেবের বেশী মাত্রায় আন্তরিকতা বুঝতে পেরে মনীর চলে যান শ্যামল বলয়ে। ছাত্রদল এবং যুবদলকে নিয়ে শ্যামল চড়ে বেড়াচ্ছেন প্রতিটি গ্রামে। তরুণদেরকে তিনি নিজের প্রতি আকৃষ্ট করতে দারুন ভাবে সফল হন। ছাত্রদল এবং যুবদলকে নিজ বলয়ে আনার পর শ্যামল মনোযোগী হন জেলা বিএনপি’র নেতৃত্বের প্রতি। এখানে এসে কিছুটা হোচট খান শ্যামল। জেলা নের্তৃবৃন্দ খুব আন্তরিকভাবে হারুন সাহেবের প্রতি দূর্বল। তারা সব সময় হারুন সাহেবের বলয়ে নিজেদের অনেক নিরাপদ ভাবে।
বিএনপি’র বর্তমানে যারা উপরের দিকে পদে আছেন তারা সবাই হারুন সাহেবের বদন্যতায় তাদের পদ পেতে অনেকদুর পর্যন্ত সহায়তা পেয়েছে। জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক তার পদের ব্যাপারে হরুন সাহেবের কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ছাত্র রাজনীতির সময় থেকেই হারুন সাহেবের অনুসারী।
হারুন সাহেবের বলয়ে থেকে সবচেয়ে বেশী সম্মানের অধিকারী হয়েছেন সাবেক পিপি শফিকুর রহমান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনিই একমাত্র নেতা যার ছাত্র জীবন কলেজ জীবনের রাজনীতি কর্মকান্ডের কোন স্বচ্ছ ধারণা নেই জনসাধাণের। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর হারুন সাহেবের বদন্যতা উনি পাবলিক প্রসিকিউটর পদটি লাভ করেন। এর পর থেকেই রাজনীতিতে তার অবস্থার ক্রমশ বাড়তে থাকে। মোড়াইলের দুদু সাহেবকে দেখা যেত হারুন সাহেব তথা জেলা বিএনপি’র নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করত। উনার অবর্তমানে এই দায়িত্ব হারুন সাহেব অর্পণ করেন পিপি শফিক সাহেবের উপর। পাশাপাশি পিপি শফিক সাহেব দলীয় রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থন হন- সম্পূর্ণটিই সম্পন্ন হয় হারুন সাহেবের বদন্যতায়। বর্তমানে শফিক সাহেব শহর বিএনপি’র সভাপতি। পাশাপাশি গত উপ নির্বাচনে হারুন সাহেবের কথায় উনি শ্যামলের নির্বাচনী প্রচারনায় দায়িত্ব ছিলেন। পিপি শফিক সাহেবের এই অবস্থানে চলে যাওয়াটা অনেক বিএনপি নেতৃত্বেই ভাল চোখে দেখে না। কিন্তু জেলা সভাপতির নেক নজর থাকায় তিনি অনেকটা নির্ভার।
গত রমজানে জেলা সভাপতি হারুন অর রশিদ সাহেব চলে যান কানাডায়। হারুন সাহেবের অবর্তমানে শ্যামল প্রতিটি রমজানে শহর থেকে প্রতিটি ইউনিয়নে ছুটে বেড়ান। পত্র পত্রিকায় তাকে অবহিত করা হয়েছে ইফতার রাজনীতি হিসাবে। ইফতার রাজনীতিতে শ্যামল নিজের মাঠ গোছানোর ব্যাপারে অনেকদুর এগিয়ে যায়। পাশাপাশি দলের তরুন নেতৃত্বও শ্যামলের অনুরক্ত।
হারুন সাহেব কানাডা থেকে ফিরে আসেন। আসার পর উনি নিরবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন। হারুন সাহেবের অনুপস্থিতিতে শ্যামল উদ্যোগ নেন জেলা বিএনপি’র নেতৃত্বকে নিজের দিকে টেনে আনার। এদিকে হারুন সাহেব কানাডা থেকে ফিরে আসার পর জেলা বিএনপি নেতৃত্বের একটি অংশ উনাকে গন সংযোগের মাধ্যমে নতুন করে হারুন সাহেবকে তথা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস চালিয়ে যেতে থাকে। এর অংশ হিসাবে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তারিখে পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক ভাবে গন সংযোগ করেন।
গন সংযোগে হারুন সাহেব নিজেকে নতুনভাবে আবিস্কার করতে শুরু করেন। জনসমর্থন এবং দলীয় নেতা কর্মীদের ব্যাপক উৎসাহ হারুন সাহেবকে ব্যাপকভাবে উজ্জীবিত করে তোলে। হারুন সাহেবকে এই ভাবে উজ্জীবিত করতে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা যিনি পালন করেছেন তার নাম কার্জন। সে ছাত্রদলের সহ-সভাপতি।দলের একটি বিরাট অংশকে নিয়ে হারুন সাহেবের শোভাযাত্রায় ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। প্রথম গনসংযোগটি সফল হবার পর দলের তৃণমূলের একটি অংশের ব্যাপক দাবী উঠে এ ধরনের কর্মসূচী চালিয়ে নিতে এবং তৃণমূলের এই অংশটি জেলা বিএনপি নেতৃত্বের অংশগ্রহনের উপর গুরুত্বরোপ করে। গত ২৯ তারিখে নিধারণ করা হয় আরেকটি মোটর সাইকেল শোভাযাত্রার। গণ সংযোগে জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ ব্যাপক ভাবে অংশ গ্রহণ করেননি। জেলা বিএনপি’র হাতে গোনা দু’একজন ছাড়া বাকী কাউকে দেখা যায়নি সেখানে। যাদের দেখা গিয়েছে, তাদের মধ্যে একজন হলেন নূরে আলম সিদ্দিকী। সামান্য একজন ব্যবসায়ী থেকে আজ তিনি সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান। এছাড়াও তার বাড়িও হারুন সাহেবের পশ্চিম এলাকায়। আনিছুর রহমান মঞ্জু জয়েন্ট সেক্রেটারী-(১)। উনি কোন এককভাবে হারুন সাহেবের পরিবারের সাথে আত্বীয়তার বন্ধনে যুক্ত। এখানে দেখা গেছে সুহিলপুরের জননেতা জাহাঙ্গীর আলম। যিনি সরাইল আশুগঞ্জ অর্থ্যাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ হতে উনি মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাদের ব্যতীত জেলা বিএনপি’র অন্য কোন প্রথম শ্রেণীর নেতাকে দেখা যায়নি গণ সংযোগে। নতুন একটি ব্যাপার এ দিন লক্ষ্য করা গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপি’র রাজনীতিতে সব সময় একটি ভূমিকা রেখে চলছেন রুহুল আল মাহবুব (মানিক) সাবেক এই ছাত্রনেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। বিএনপি’র মূল শক্তি কান্দি পাড়া শিমরাইল কান্দিতে মানিকের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে অন্যতম হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি আবু শামীম মোঃ আরিফ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান শাহীন, সহ আরও অনেক নিষ্ক্রিয় নেতারা ২৭ সেপ্টেম্বের এ গ্রুপের ব্যাপক অংশগ্রহণ জেলা নেতৃবৃন্দের একটি অংশ ভাল চোখে নেননি। হারুন সাহেবের বলয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এই প্রতিবেদককে জানান, যারা হারুন সাহেবের বাসায় হামলা চালিয়েছে। বোমা মেরেছে বিভিন্ন জায়গায় হারুন সাহেবের বিরোধিতা করেছে তারাই আজ হারুন সাহেবের সাথে হাত মিলিয়েছে। তাদেরকে সাথে নেবার পূর্বে হারুন সাহেব দলীয় ফোরামের এটা নিয়ে কথা বলেন নি।
ঐ দিন শোভযাত্রায় দেখা যায়নি দলের সহ সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা (কচি), যাকে হারুন সাহেব মামা বলে সম্বোধন করেন আত্বীয়তার কারনে। জেলা বিএনপি’র সাধারণ নেতা কর্মীরা জানে হারুন সাহেবের পর এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন তিনি(কচি মোল্লা)। তার অনুপস্থিতি অনেকের চোখে বৈসাদৃশ্য ঠেকে। জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক বেশ কিছুদিন পূর্বে এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন, “আমি জেলার সাধারণ সম্পাদক। যারা এ ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হবার চেষ্টা করছেন । কিন্তু এতে তো দলের পক্ষে প্রচারণা হচ্ছে এবং সবাই খালেদা জিয়া তথা ধানের শীষের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে। এই ব্যাপারে সবাই আমরা একমত।দলীয় ভোটের প্রচারণায় কেউ যদি ব্যাক্তিকে কেন্দ্র করে শোডাউন করতে চায়, তবে তা হবে দলের জন্য ক্ষতিকারক। এটা যারা করে তারা কেউ দলের ভালো চাননা।”
২৭ তারিখে শোভাযাত্রায় দেখা যায়নি জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলামকে, যিনি বিএনপি জেলা রাজনীতির একজন রহস্যময় ব্যক্তি। তার অবস্থান সর্ম্পকে দলের নেতা কর্মীদের সচ্ছ ধারণা নেই। তবে শহরের মিছিল মিটিংয়ে উনার সম্প্রতি উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
এ শোভাযাত্রা সমন্ধে শ্যামল বলয়ের নেতাদের কথা হল, হারুন সাহেব একজন সম্মানিত ব্যক্তি। দলে বা দেশে উনার অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। এখন উনার বয়স ৭০ কোটায়। উনার মত সম্মানশীল ব্যক্তিকে নিয়ে এ ধরনের প্রচারনা চালালে উনার শরীরের উপর দিয়ে প্রচন্ড ধকল যাবে। যা সহ্য করা উনার মত বয়স্ক লোকের পক্ষে সম্ভব নয়। গুটি কয়েক নেতা দলে নিজেদের অবস্থান মজবুত করার জন্য এই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
আলহাজ্জ্ব এডভোকেট হারুন অল রশিদ যিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইতিহাসে সার্বোচ্চ পর্যায়ের একজন সফল ব্যক্তি। জীবনে কোনদিন গোষ্ঠীগত রাজনীতির সাথে আপোষ করেননি। উনার চরম শত্রুও বলতে পারবেন না উনি কারও ক্ষতি করেছেন বা উনার নিকট আত্বীয়রা কোন সময় ওনাকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। দলের কোন কর্মীর অন্যায় আচরণকে উনি কখনও প্রশ্রয় দেন নাই। এ ধরনের ব্যক্তিদের মূল্যায়ণ না করলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। বর্তমান প্রজন্ম হারুন সাহেবকে খুব ভাল করে জানে না। ওরা জানে না এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তিনি কি ভূমিকা রেখেছে? উনি যতদিন ক্ষমতার বলয়ে ছিলেন ততদিন কোন সরকারী অফিসে উনি যান নি। আজ সময় হয়েছে উনাকে মূল্যায়ন করার। আমরা যদি সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মান করতে ব্যার্থ হয়। তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম ও আমাদেরকে সম্মান করবে না। খালেদ মাহবুব শ্যামল যার হাতে বিএনপি’র দায়িত্ব সমর্পন করেছিলেন সয়ং হারুন অর রশিদ সাহেব । অত্যন্ত স্পষ্টভাষী নির্বাক ভদ্রলোক খালেদ মাহবুব শ্যামল হারুন সাহেবের পদাংক অনুসরন করে আছেন। তিনি ও গোষ্ঠীগত রাজনীতিকে প্রশয় দেন না। আজ সামনে সাংসদ নির্বাচন। শ্যামল সাহেব বর্তমানে এ এলাকার হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন । মাছিহাতা সোয়েটার ফ্যাক্টরিতে এলাকার ১৫ হাজারেররও অধিক লোক কর্মরত। এদেরকে ঘিরে গড়ে উঠেছে এর বড় ভোট বলয়। আগামী সাংসদ নির্বাচনে এ ভোট ব্যাংক ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এ বিষয়ে কারো কোন দ্বি-মত নেই।
বিএনপিকে বুঝতে হবে, উনারা নির্বাচন করছেন এমন একজন প্রার্থীর (র.আ.ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী) সাথে যিনি বহুদিন ক্ষমতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিচরন করেছেন। বর্তমানে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে অনেক জনপ্রিয় একজন নেতা। এ তিন বৎসরে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে উল্লেখ্যযোগ্য অনেক কাজ করেছেন। পাশাপাশি উনার অনেক নিকটাত্বীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচু আসনে অধিষ্ঠিত। যাদের দাম বা সম্মান সব সরকারের সময়ই আছে। এ ধরনের ব্যক্তির মোকাবেলা করা সহজ কোন কাজ নয়।
বিএনপি’র বিপুল জনপ্রিয়তাকে ঘরে তোলার জন্য উনার ভূমিকা সবচেয়ে ব্যাপক। জেলা ছাত্রদল যুবদলের কমিটিকে পুর্ণাঙ্গ রূপ দিতে উনি সহায়তা করবেন বলে সবাই আশা করে। বিএনপি’র সব নেতৃত্বের একটি নির্দিষ্ট পতাকা তলে আসতে হবে না হলে আসন্ন সাংসদ নির্বাচনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা সত্বেও ধস নামতে পারে। এ প্রসঙ্গে। একটি কথা উল্লেখ্য করে সমাপ্তি টানছি। দ্বিতীয় মহাযুদ্দের সময় উইসটন চার্চিলের ব্যাপক জনপ্রিয়তায় উনার অবস্থান ছিল সবার উপরে । কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে দেখা গেল উনি পরাজয় বরণ করেছেন। কারণ খুজতে গিয়ে জানা যায় ব্রুট মেজরিটির আশংকায় জনগন উনাকে ভোট দেন নাই। তাই সবাইকে সব কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হবে। সূত্র
©somewhere in net ltd.