নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ্

সকল পরিবর্তনের সাথে আমি ছিলাম। আবারও এসেছি সেই পরম সত্য নিয়ে। তোমাদের মনের মাঝেই লুকিয়ে আছে সেই মহাকালের শক্তি। আজ তাকে জাগাবার দিন এসেছে।

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ

আমি তোমার ভিতরের শক্তি কে জাগতে এসেছি বন্ধু। একবার চোখ মেলে দেখো নতুন এক সূর্য উদয় হয়েছে বাংলার আকাশে। কোনো মৃত্যু, কোনো বাধা, কোনো প্রতিকুলতা এই হৃয়য়ের পরম শক্তি ও সত্য সুন্দরকে বিনষ্ট করতে পারবে না। আমি যুগে যুগে আসি আজও এসেছি শুধু তোমাদের ভিতরের শক্তিকে জাগাতে। আমার এই পথ চলা থামবে না। তোমাদের বাঁচার মাঝে আমি বেঁচে আছি। বেঁচে থাকবো তা যদি কোনো করুন মৃত্যুর মধ্য দিয়েও হয়। আমার বাংলাদেশে নতুন এক গণতন্ত্র এসেছে। যা এই পরিবারতন্ত্রকে ভেঙে সত্যের ভিতরের সত্যকে তুলে এনেছে। আজ আমরা বিশ্বের বড় শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছি। তোমাদের ভালোবাসাই আমাকে তোমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে।

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

“সোহরাব রুস্তুম” :: সময়ের সাথে প্রাসংগীক

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৮

বন্ধু! আজ খুব করে মনে পড়ছে, সেই ছোট্টবেলায় বাবার কোলে শুয়ে শোনা “সোহরাব-রুস্তুম” গল্পটি। বাবা খুব শ্রুতি মুধুর করে গল্প উপস্থাপন করে আমাকে শুনাতেন। পারস্যের কবি ফেরসৌসীর অমর সৃষ্টি সোহরাব ও রুস্তুমের গল্পটি যখন বাবার মুখে প্রথমবার শুনি তখন আমরা পিতা-পুত্র দু’জনেই কেঁদে দিয়েছিলাম।



হায়রে আবেগ! বাবা সারাজীবন কষ্ট করেছেন আজও জীবন নামের যন্ত্রনাকে সুখ ও সমৃদ্ধ করে রূপান্তর করার জন্য দিবানিশি কষ্ট করে যাচ্ছেন। একজন মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সংসারের ঘানী টেনে বেড়ানো যে কত কষ্টের তা মধ্যবিত্ত সমাজের মানুষ হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারবেন। যারা আজ সমাজের উচ্চ শিখরে অঢের অর্থবিত্তের মালিক সেজে চকচকে-ঝকমকে জুতু পরে দামি গাড়ীতে চড়ে বেড়াচ্ছেন। সারাজীবন চুলের মধ্যে স্টাইল করতে করতে আজ যে মাথার চুল হারিয়ে ফেলেছেন তারাও যদি জীবনের ঊষালগ্নের দিকের কথা চিন্তা করেন তাহলেও যে এই মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্তদের ব্যাথা হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে সক্ষম হবেন।



যাই হোক, তখন আমার বয়স ৭ কিংবা ৮ হবে হয়তো। বাবা ইতিহাসের অনেক গল্প শুনাতেন। দুপরের খাবার পর বিছানায় শুয়ে শুয়ে গল্প শুনতাম। কি অসম্ভব আবেগঘন সময়!!!



নজরুলের দুটো গানের কথা লাইন মনে পড়ে গেলঃ



“শত কাঁদিলেও ফিরিবে না সেই শুভ লগনের বেলা”



“ও যশোদা মা, ওর ছেলেবেলা চলে গেলে আর তো পাবি না। :: ও যশোদা মা, ওই দুষ্টটাকে সাজা দিয়ে লুকিয়ে কাঁদিস না”



সত্যিই বাচ্চাদের সাথে আজ যারা খারপ ব্যবহার করেন। তারা কি বোঝেন না। আপনিও বাচ্চা ছিলেন। ওদের মধ্যে যে সৃষ্টি ও সুন্দরের বাস। ওদের ভিতরে যে লুকিয়ে আছে আমাদের জাতির ভবিষ্যত। সেই ভবিষ্যত কে সঠিক গাইড লাইন না দিয়ে, আর্টিস্টিক, ম্যাকি , নষ্ট, ও মন্দের প্রতি ধিরে ধিরে আকৃষ্ট করছেন। আবার বিভিন্ন দোহাই দিয়ে তাদের গাঁয়ে হাত দিতে আপনাদের খারাপ লাগে না? জাতির ভবিষ্যতকে কোন যৌক্তিক দায় দিয়ে আপনারা কাঁদাচ্ছেন।



আরে বুঝতে শিখুন। দুষ্টুমির মধ্যে যে সত্য থাকে। বাচ্চারা যে ভান করতে জানে না। বরং গার্ডিয়ানরা নিয়মিত ভান করে ওদেরকে সারাজীবন অসুন্দরের চাকর হিসেবে গড়ে তুলছেন।



সকল গার্ডিয়ানদের প্রতি আমি বিনীত চিত্ত্বে আবেদন ও মিনতী করছি, আজ এবং এক্ষুনী নিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করুন “আর কোনোদিনও কোনো কারণ বা অকারণে বাচ্চাদের গায়ে হাত তুলবেন না।”



বাচ্চারা যে সুন্দরের প্রতিক ও প্রকাশ। ওরা সমাজব্যবস্থা নামের ব্যবস্থার ভিতর থেকে শরীরে ও মেধায় যে আবরনে জড়িয়ে যেতে থাকে সেটা যে চরম বাজে ও মিথ্যার সমন্বয়ে সৃষ্টি এক বহুদিনের জঞ্জল। স্রষ্টার সৃষ্টিকে বাজে ভাবে ব্যবহারের পরিনাম যে একটি খারাপ সমাজ ব্যবস্থার জন্ম দেয় তার বলী আজ অগনিত নিজ মনের সত্যকে প্রকাশ করার সামর্থ্য না থাকা মানুষ নামের কঙ্কাল গুলো!!! কোনো কঙ্কল জোব্বা দাড়ি নিয়ে, কোনো কঙ্কার স্যুট প্যান্ট, কোনো কঙ্কাল লুঙ্গি গামছা গায় দিয়ে, কোনো কঙ্কাল জিন্স টিশার্ট ইত্যাদি পরে দিবা নিশি এই সমাজের নানান স্তরে বিচরণ করে যাচ্ছেন। এক কঙ্কাল আর এক কঙ্কালকে বিয়ে করছেন। এ যে মানুষ না সব যেনো মিত্যের প্রচারক হয়ে চোখের সামনে ভেসে উঠছে। হারয়ে হাজার বছরের ঐতিহ্যের বাঙালী!!! হায়রে মৃত্যুকে পরওয়া না করে ফাঁসির কাষ্টে ঝুলে কিশোর ক্ষুদিরামের আত্নত্যাগের ফসল? তোমরা কি দেখতে পাও না ঐ সব রাজণীতিক নামের শয়তানদের গায়ে পাথর ছুড়তে না পারলে আপনার সন্তানও যে একদিন সন্তানহারা অসহায় হয়ে সমাজের নানান স্তরে কেঁদে বেড়াবে। আজ এবং এখনই নিজেকে একজন “গর্বিত বাঙালী” হিসেবে বিশ্বের দরবারে মেলে ধরুন। ছিনিয়ে নিয়ে আসুন ঐ রক্তিম সূর্যকে। ও যে বাঙালীর সম্পদ!!!





যাই হোক, ছেলে বেলার শোনা রুস্তুম ও সোহরাবের গল্পটি আমাকে গভির ভাবে কষ্ট দিয়ে ছিলো। আজও সেই দুঃখ সমান ভাবে ফুঁটে উঠেছে। বাংলাদেশের প্রায় সবাই এই গল্পটি জানেন। তারপরও আমি আরও সহযে বর্তমানের সাথে সংগতি রেখে এই গল্পটির প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরার চেষ্টা করছিঃ



মহারীর রুস্তুম ছিলেন পারস্যের সুলতানের প্রধান সেনাপতি ও অনেক শক্তিশালী বীর যোদ্ধা। তিনি এক সময় চিন্তা করলেন অনেক যুদ্ধ বিগ্রহ হয়েছে এবার সংসারী হবেন। তার সাথে তাহমিনা নামের এক আমীরের মেয়ের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ে শাদী সম্পন্ন হবার পরে তিনি তার পরম প্রিয় স্ত্রীকে নিয়ে দিব্যি সুখ শান্তিতে সংসার ধর্ম পালন করতে ছিলেন। তাহমিনাও তার স্বামী মহাবীর রুস্তুম কে নিয়ে সুখের দিনগুলো কাটাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে তাহমিনার গর্ভে মহাবীর রুস্তুমের সন্তানের আগমন বার্তা এসে গেছে। মহাবীর রুস্তুম বাবা হওয়ার বাসনায় আনন্দিত হয়ে যুদ্ধ বিগ্রহ প্রায় ভুলে যেতে বসেছিলেন।



কিন্তু বাধ সাধলেন পারস্য সম্রাটের আজ্ঞাবাহী এক দূত। তিনি এসে রুস্তুম কে সম্রাটের নিমন্ত্রন বার্তা দিলেন এই বলে যে পারস্য শত্রুদের দ্বারা আক্রমন হয়েছে। পারস্যের সম্রাটের আজ্ঞাবাহী বীর রুস্তুম আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলেন না। পারস্যের সম্রাটকে যে রক্ষা করতেই হবে। এই বোধ বালাই নিয়ে অনিচ্ছা সত্তেও সম্রাটের ডাকে তিনি আবারও যুদ্ধের উদ্দ্যেশে রওয়না হন।



যাবার আগে স্ত্রী তাহমিনার হাতে রুস্তুম একটি তাবিজ ধরিয়ে দিয়ে বলেন “তাহমিনা তোমার পেটের সন্তানটি যদি ছেলে হয় তাহলে তুমি তাকে এই তাবিজটি তার বাহুতে বেঁধে দিও। আর যদি মেয়ে হয় তাহলে তাবিজ দেবার দরকার নেই”



তাহমিনার সন্তান ভুমিষ্ট হলো। অসম্ভব সুন্দর এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন তাহমিনা। অপরদিকে রুস্তুম পারস্য সম্রাটের আজ্ঞাবাহী বীর হয়ে অবিরত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

পুত্র সন্তানটির নাম দেয়া হর সোহরাব। তাহমিনা ভেবে দেখলেন রুস্তুম যদি জানতে পারেন যে তার ছেলে হয়েছে তাহলে যে রুস্তম হয়তো পুত্রকে বীর বানানোর উদ্দ্যেশ্যে নিজের কাছে নিয়ে নিবেন। তাহমিনার আদরের মানিক সোহরাবকে নিজের কোলে রাখার জন্য দূতের মাধ্যমে তাহমিনা কৌশলে রুস্তমে কাছে কন্যা সন্তান হয়েছে বলে খবর পৌঁছালেন। রুস্তুম কিছুটা হতাশ হলেন।



যাই হোক, আপনারা সবাই যেতেতু গল্পটি জানেন তাই একদম “সোহরাব-রুস্তুমের” শেষের কয়েকটি দৃশ্যপট আপনাদের বলে তারপর আসল আলোচনা শুরু করবো।

সোহরাব বড় হয়ে একজন বীর রূপে নিজেকে প্রস্তুত করলেন। তার মনে সব সময় তার বাবাকে দেখার বাসনা কাজ করে। কিন্ত তাহমিনা যে সোহরাবক ঘর হারা করতে চান না! মা কোলের সন্তান কে কেনো যুদ্ধ নামক মরন খেলায় ঠেলে দিবেন? যত দিন যায় সোহরাব ততো রুস্তুম কে দেখার জন্য পাগলপ্রায়। পুত্রের মন পিতার স্নেহ পেতে চায়।

রুস্তুমের যুদ্ধ তখনও শেষ হয় নি। এই ত্যাজি বীর শুধু একের পর এক যুদ্ধ করছেন আর জয়ী হচ্ছেন। এই দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধের জন্য রুস্তুম তার প্রিয়তমা স্ত্রী তাহমিনার কাছে আসতে পারছেন না। কিন্তু পত্র মাধ্যমে রুস্তুম তার কন্যা সন্তানের খবর নিতে থাকেন।

সোহরাব তার বাবাকে দেখার জন্য মনে মনে একটি কৌশল স্থাপন করলেন। আর তা হলো সোহরাব তার বংশ পরিচয় গোপন রেখে তার রাজ্যের শাসকের কাছে নিজেকে বীররূপে প্রমান করেন। তারপর শাসকের প্রধান সেনাপতি হয়ে পারস্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করালেন। সোহরাব অবিরত অনেক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সামনে নিজের বিরত্ব প্রমান করতে থাকলেন। শুধু মাত্র পিতার পরশ ও পিতাকে কাছ থেকে দেখা পাবার আশায় আশায়।



সোহরাব ও যে তার বাবা রুস্তুম এর চেয়ে কোনো অংশে কম না। সোহরাবও যে যুদ্ধে হারতে জানে না। অল্পদিনেই যে বীর সোহরাবের বিরত্বগাঁথাও চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো।



তারপর এলো সেই মহেন্দ্রক্ষন। মহাবীর রুস্তম নিজ সন্তান বীর সোহরাবের সম্মুখে দাঁড়ানো। সোহরাব তার পিতাকে দেখে মনে মনে আনন্দিত হলেন। কিন্তু যে নিজের পরিচয় দিতে পারছেন না। কারণ সবার কাছে সোহরাব যে বংশ ও পিতৃপরিচয়ের কথা লুকিয়েছিলেন। রুস্তুমও অবাক হয়ে যুবকটিকে দেখলেন। রুস্তুম মনে মনে ভাবলেন এই ছোকরার সহোস তো কম না! মহাবীর রুস্তুমের সাথে যুদ্ধ করে নিশ্চিত মৃত্যুবরন করতে চাচ্ছে। আজ পর্যন্ত কোনো বীরের সাথেই যে রুস্তুমের হারার রেকর্ড নেই। সোহরাবও কোনোদিন কারও সাথে পরাজয় বরন করেন নি।



পিতা পুত্রের সম্মুখ সমর শুরু হলো। তলোয়ারের শব্দের আওয়াজ বাতসে প্রতিফলিত হচ্ছে। রুস্তুম এই বাচ্চা ছেলের তরবারী চালনা করার স্টাইল ও শক্তি দেখে অবাক। জীবনে এতো বড় বড় বীরের সাথে লড়েছে কিন্তু এতো সময় এতো কৌশলে যে কেউ রুস্তুমকে রুখতে পারে নি। সোহরাব প্রচন্ড রকম ডিফেন্সীভ ভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন আর ভাবছেন পিতা তাকে চিনতে পেরে বুকে জড়িয়ে নিবেন। কিন্তু রুস্তুম যে থামবার পাত্র না। সোহরাবের একটু কলসানটেশন ব্রেক হয়ে যাবার ফলে হঠাৎ মহাবীর রুস্তুমের বজ্রকঠিন তরবারি সোহরাবের বুকে বিধে গেলো। হায়রে নিয়তি। সোহরাব তার নিজেকে সামলাতে না পেরে রুস্তুম কে বললেন “পিতা!!! আমি তোমার ছেলে সোহরাব”



রুস্তুমের বুকে সোহরাব। মহাবীর রুস্তুম এই কথা শুনে অবাক বিশ্মিত হলেন। তারপর নিশ্চিত হবার জন্য সোহরাবের পোশাকে ঢাকা বাহু বেড় করে রুস্তুম তাহমিনার কাছে রেখে যাওয়া তাবিজ দেখতে পান। কি করবেন ভেবে পাচ্ছে না মহাবীর রুস্তুম। নিজের তলোয়ারে তার নিজের সন্তাকেই যে মেরে ফেলেছেন। বীর রুস্তুমের আত্মচিৎকার ধ্বনি বাবা সোহরাব! সোহরাব!! সোহরাব!!! চিৎকারে যুদ্ধ ময়দান সহ সকল আকাশ বাতাস থর থর করে কেঁপে উঠছে। তবুও যে পুত্র সোহরাব আর কোনো দিনও জাগবে না। হায়ের যুদ্ধ!!!



যাই হোক, বন্ধু!!! আমি যে আজও ঐ বীর রুস্তুম কে দেখতে পাই। যারা বাংলাদেশে তার স্ত্রীর কোলে সন্তান রেখে বিদেশে বিদেশীদের সেবা করার জন্য দিবানিশি কষ্ট করে টাকা কামাচ্ছেন। সন্তানের সুখের আশায়, স্ত্রীর ভালো থাকার আশায়। বড়লোক হবার আশায়। পরিবার বড়লোক হয়ে নাম করার আশায়। তারা যে ঐ মহাবীর রুস্তুমেরই মতো যোদ্ধা। তবে এই প্রবাসী বাংলাদেশীরা পারস্যের সম্রাটের সেনাপতি না হলেও এই ব্যবস্যার অসম সম্রাজ্যবাদের দোশর যারা ঐ সম্রাটদের মোতোই নিষ্ঠুর বিভিন্ন বিদেশী কোম্পানী।

কিংবা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড, আর্মি, পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী সহ বিভিন্ন পেশা জীবী ও ব্যাংকারের মধ্যেও অনেক রুস্তুম কে দেখতে পাই। যারা শুধুমাত্র পরিবারের রোজগারের নিশ্চিত করতে, বা সন্তান মানুষ করতে এই পেশাজীবীর নিয়মিত কষ্ট করতে হচ্ছে ও মাসিক বেতনের আশায় আশায় দিন কেটে যায় এবং শুধু মাত্র জিবিকার তাগিদে জীবনের অনেক বছর বিভিন্ন স্থানে কেঁটে যাচ্ছে।

অনেক অনেক স্বপ্ন থাকে তথাপীও প্রিয় স্ত্রী ও সন্তান, পরিবারবর্গকে গ্রামের বাড়ীতে বা অন্য কোথাও রেখে পেশা নির্বাহ করতে হয়। এ যে মধ্যবিত্ত জীবনের বীর রুস্তুম! হায়রে! যে সুখের আশায় এতো কষ্ট সেই সন্তান ধীরে ধীরে লেখা পাড়া করে বড় হতে থাকে।

স্বামীর আমানত সন্তানকে লালন পালন করে রাখেন স্ত্রী অর্থাৎ তাহমিনা। ধীরে ধীরে সন্তানটি স্কুলে যেতে শেখে। বাবা মায়ের স্বপ্ন যে সন্তান অনেক বড় কোনো কিছু হবে। কিন্তু সেভেন এইটে পড়ার সময়ই যে মায়ের কাছে সন্তানকে কেমন যেনো অচেনা মনে হতে থাকে। বাবা মাঝে মাঝে ছুটি পেলে আসেন। সন্তানকে বাজারে নিয়ে বিভিন্ন জিনিস কিনে দেন। বা পরিচিত কারও কাছে পছন্দের বা দরকারী কোনো জিনিস নিয়মিত পাঠাতে থাকেন।



বিদেশে বসে বাবা বীর রুস্তুম চিন্তা করেন আমার জীবনে অনেক বাধা বিপত্তি পেরোতে হয়েছে কিন্তু আমার সন্তান গড়ে উঠবে আদর্শ হয়ে, ভালো লেখাপড়া করে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ম্যাজেস্ট্রেট, ডিসি, এসপি হবে। শুধু মাত্র দু’জন মানুষ চায় অন্যকেউ তাকে ছাড়িয়ে যাক একজন পিতা আর অন্যজন একজন আদর্শ শিক্ষক। বাবার চোখে সন্তানের ভবিষ্যত কল্পনার রূপটি স্পট রূপে ফুটে ওঠে।



ওদিকে মা তাহমিনা দেখেন প্রিয় পুত্র সোহরাব নাইন-টেনে উঠেই বাজে ছেলেদের সাথে মিশতে শিখেছে। সন্তানটি দুষ্ট তবে একটু লেখাপড়ায় মনোযোগী হলেই অনেক কিছুই করতে পারবে। এই বয়সে ছেলেরা একটু আধটু দুষ্টুমি করবে এটাই স্বাভাবিক! পাড়া-প্রতিবেশী, আত্নীয় স্বজনের সাথে আলাপ করলে তারা জানায় ঘরের পুরুষদের সব কিছু জানাতে নেই। ওর বাবা মহাবীর রুস্তুম এমনিতেই দূরে থাকে, অনেক পরিশ্রম করেন, তার উপর ছেলে সম্পর্কে উল্টোপাল্টা কিছু শুনলে কাছে নিয়ে যাবে নতুবা অহেতুক টেনশন করবেন। তাই বীর রুস্তুমের যথা সময়ে অনেক কিছুই জানা হয়ে ওঠে না।

কিংবা মা তাহমিনা তার অনেক যত্ন নিয়ে গড়া কন্যা সন্তানটির পরিবর্তন দেখে অবাক হয়। মেয়েটি জানি কেমন হয়ে যাচ্ছে। ইদানিং লুকিয়ে লুকিয়ে মোবাইল করে। বান্ধবীদেরও বেশ পরিপক্ক মনে হয়। মা তাহমিনা মনে মনে কল্পনা করেন একি ভাবছি!!!, এতো আমার ছোট্ট খুকি। কিছুদিন আগেও ওর বাবা বীর রুস্তুম যে বলে গেছেন “আমার মেয়েটি ডাক্তার হবে, তারপর দেখো কতো সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে আমাদের জীবন।”



দিন কেটে যায়। পরিবারের খরচের সাথে সংগতি রাখা দ্বায়। দ্রব্য মূল্য যে দিনে দিনে বেড়ে যায়। সংসারের খরচ মিটাতে বীর রুস্তুমের যে কতো রকমের ফন্দি ফিকির করতে হয়, তা যে বীর রুস্তুমের অন্তর্জামি জানেন। তবুও অনেক স্বপ্ন। সন্তান বড় হয়ে গেছে। নিজের মাথার চুলও খানিকটা কমেছে। শরীরও আগের মতো না। আর তো কয়েকটা বছর সন্তান যেহেতু লেখাপড়া করছে ওদের একটা ভবিষ্যত তো হবেই। সেই সাথে সন্তানের আয় করা খাবার বীর রুস্তুমও খেতে পারবেন। মহাবীর রুস্তুমের পারস্য কিংবা পশ্চিমা স্যাররা যেভাবে জীবন যাপন করেন। বীর রুস্তুমের সন্তানও যে একজন স্যার হয়ে উঠবেন।

এদিকে মা তাহমিনার সংসারে অনেক কিছু হয়েছে। এই যেমন সোফাসেট, ওয়ার্ডড্রোপ, ফ্রিজ, রাইসকুকার, স্ত্রী, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, টিভি, টিভিতে যে আবার ডিস লাইন আছে তাতে প্রতিদিন স্টার জলসার সিরিয়াল দেখতে বেশ ভালই লাগে কিন্তু সমস্য হলো শুধু ছেলেটা।



এতো বড় হয়েছে বোধ বালাই হয় নি। এখনও নিজের কাপড় নিজে ধুইতে পারে না। খাবার দাবারের ব্যাপারে একদম বাছ বিছার করেন। অন্যের ছেলেপান কিসুন্দর সব মাছ খায়, মাংস খায় আর সোহরাব যে খাবার দাবারে প্রতি উদাসীন।



সোহরাবের এস.এস.সি. রেজাল্ট বেশ ভালো। এইচ.এস.সি পড়ার সময় যতো প্রকার ঝামেলা এসে হাজির। একটু বাইড়ে বেড়োনর সুযোগ পেয়েই প্রথম যে কাজের নামে অকাজ করেছে তা হলো ঐ প্রতিবেশীর মেয়ের সাথে প্রেম-প্রীতি নামের সামান্য কিছু অঘটন ঘটানো। মা তাহমিনা শুনেছেন ঐ মেয়েটি নাকি দারুন বেহায়া! যার তার সাথে মেয়েটি নাকি প্রেম করে। হায় হায় সব গেলো!! নষ্টা কোথাকার!!! আমরা মুরুব্বীদের কতো মান্য করতাম আর এই যুগের ছেলেপান!!!! নিজে নিজে মনের অজান্তেরই মনের ভিতর থেকে কে যেনো এই সব কথা বলতে থাকেন তহামিনাকে লক্ষ্য করে। এই বয়সে ছ্যাকা ট্যাকা খেলে ভালো। পরে আর প্রেমে পড়তে সাহোস পাবে না। লেখাপড়ায় ঠিকই এগিয়ে যাবে। এই বালে নিজেকে সান্তনা দেন তাহমিনা। কিন্তু একটা ব্যাপারে নিজেকে সান্তনা দিতে পারেন না আর তা হলো নিজের ছেলেটিকে যে মাঝে মাঝে অনেক বেশী অপরিচিত হয়ে যায়। এতো টাকা দিয়ে ও করে কি? আর প্রতিদিন সন্ধ্যায় যে বেড় হওয়া বাধ্যতামুলক হয়ে গেছে। অনেক চেষ্টা করেও সোহরাবের বুদ্ধির সাথে পেরে ওঠা মুসকিল! এতো রাত করে কি করে। হায়রে কপাল!!! ছ্যাকা খেয়ে আবার নেশা টেশা শুরু করেছে নাকি? করতেও পারে সিগারেট যে বহুদিন আগে থেকেই খায়। মা তাহমিনাদের আবার ঘ্রান শক্তি অনেক বেশী তিব্র হয়। ছেলেটার চোখ এতো লাল কেনো? ছেলেটি এত বেলা করে ঘুমায় কেনো। মাঝে মাঝে টাকার জন্য এমন হয়ে যায় যেনো মা তাহমিনা ওর শত্রু।



আবার মেয়ে হলে মা তাহমিনা মেয়েকে মোবাইল কিনে দিতে বাধ্য হন। কারণ মোবাইল যে একটি স্টাইলের নাম। ও অনেক বন্ধবির যখন আছে ওর ও যে থাকতে হবে। মা তাহমিনার মাথায় খেলে না মেয়েটিকে এতো মানুষ চেনে কিভাবে? এতো ফোন আসে কোথা থেকে। রাতে মা তাহমিনা ঘুমাবার পরও মেয়েটি যে ঘুমের নাম করে ঘুমায় না। ফিস ফিস করে কার সাথে যে কথা বলে!!! মা তাহমিনা বুঝতে পারেন না। আরও বুঝতে পারে না। যে মেয়েটি এস.এস.সি পরীক্ষায় এতো ভালো রেজাল্ট করেছে। কিন্তু এইচ.এস.সি. পরীক্ষায় এ কি ধরনের রেজাল্ট? তার চেয়েও বড় কথা মা তাহমিনার হাতে মেয়েটি হাতেনাতে তার প্রেমীক সহ ধরা খেয়েছে। হায়রে মান-উজ্জত!!! আমার গর্ভের মেয়ে এরকম কি করে হলো? এ ও কি সম্ভব? তাহমিনা ঘুমের মধ্যে আত্নচিৎকার দিয়ে কেঁদে ওঠে। হায়রে এমন কেনো হবে? ওর বাবা বীর রুস্তুমের আত্মা যে তার মেয়ে। বীর রুস্তুম যদি রূপকথার রাক্ষস হন তাহলে মা তাহমিনার মেয়ে যে ঐ রাক্ষসের প্রাণ পাখি। প্রাণ পাখির গায়ে আঘাত লাগলে মহারীর রুস্তুমের গায়েও যে আঘাত লাগে। আর সেই মেয়ে কিনা কোন একটা নেশাখোর, রংবাজ, রাজনীতি নামের চাঁদাবাজ ছেলেকে ঘরে নিয়ে আসবে। তাও আবার আমি কয়েক ঘন্টার জন্য স্বামী বীর রুস্তুমের টাকা উঠানোর জন্য বাইড়ে গিয়েছিলাম সেই সাথে একটু আত্মিয়র বাসায় যাবো বলে মেয়েকে বলে আসলাম। আর এই সুজোগে..... । আর ওর কত্তো বড় সাহোস? ছিঃ ছিঃ ছিঃ



এদিকে মহাবীর রুস্তুম বেশ কিছু জায়গাজমি কিনেছেন। আগেও কিছু কেনা ছিলো। কেমন যেনো হঠাৎ সবকিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। খুব দ্রুত নগরায়ন হয়ে গেছে। দেশের একটি শ্রেণী কিসব ব্যবসা, বানিজ্য, কন্ট্রাকটারী, চাকুর সূত্রে বিদেশ গিয়ে ফুলে ফেপে তালগাছ হয়ে গেছে। মহাবীর রুস্তুম যে কাজটি ভালো করেছেন তা হলো আগে প্লেস মতো জমি কিনে রেখেছিলেন। কিন্তু তিনি মোটেও বুঝতে পারেন নি যে এই জায়গার দাম এতো তাড়াতাড়ি এতো বেশী বেড়ে যাবে। এতো টাকা মানুষের কাছে আসলো কি করে? আগে বুঝলে আরো কিছু জমি কিনে রাখতেন। তারপরও আফসুস নেই। তবে মাঝে মাঝে কেমন যেনো আনমোনা হয়ে যান। মহাবীর রুস্তুমের চেয়ে বয়সে অনেক ছোট কেউ, বন্ধু বান্ধব, আত্নীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, পুরোনো কোনো কলিগ জায়গা জমির দালালী, রাজণীতি কিংবা টাউট বাটপারী করে অনেক টাকার মালিক হয়ে গেছে। এতো পরিবর্তন হলো কিভাবে?



মহাবীর রুস্তুমের মন ভিষন রকম খারাপ। তার এক বন্ধু বলেছে মহাবীর রুস্তুমের সন্তানটি নাকি তার সামনে ও সিগারেট বিড়ি খায়। পড়ালেখা তো গোল্লায় গেছে। সেশন জটে পরে ৬ বছরের পড়া শেষ করতে ৮ বছর লেগেছে। কিংবা প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি হবার সময় যা ভেবেছে পাশ করার পর দেখে বিপরীত চিত্র। গুন্ডামি বদমাশী বহু করেছে এবার একটি চাকুরী পেলেই হয়। নইলে যে ভালোঘরের মেয়ে বিয়ে করানো যাবে না?



রুস্তুম তার ছেলে বা মেয়েটির জন্য খুব বেশী টেনশন ফিল করেন। মাঝে মাঝে ভাবেন। হায়রে বাপ দাদা গরিব ছিলো কিন্তু একটি সুন্দর পারিবারিক বন্ধন ছিলো। এখন পৈত্রিক জায়গা জমি ভাগ করার সময় সবার আসল চেহারা বেড় হয়ে যাচ্ছে। জমিজামা সক্রান্ত মামলা চালাতেও কম খরচ হয় না। তার উপর ছেলেটার পিছনে শুধু খরচই করে গেলাম কিন্তু ফল কোথায়? এতো ঘোরাঘুরির পরও চাকুরী পাওয়া যাবে না এটা কেমন কথা? সরকারী চাকুরীর জন্য মহাবীর রুস্তুম তার একটি জমি বিক্রি করে ঘুসের টাকা একদম ঠিকঠাক মতো করে দিয়ে দিয়েছিলেন। ঘুস ঠিকই দেয়া হয়েছে কিন্ত কাজ হয়নি। তার উপর একবার টাকা নষ্ট হলো বিদেশে পাঠানোর নাম করে যে দালাল বা কনসালটেন্সী ফার্মে টাকা দেয়া হয়েছিলো। পরে দেখা গেলো সেই অফিসই যে হারিয়ে যেছে। সেই টাকাগুলো থাকলেও একটা ব্যবসা বানিজ্যের ব্যবস্থা করা যেতো। এভাবে মহাবীর রুস্তুমের দিন কেটে যায়।



মহাবীর রুস্তুম যে মেয়েকে তার প্রাণের চেয়েও বেশী ভালোবাসতেন সেই মেয়ে কিনা শেষ পর্যন্ত এমন একটি ছেলেকে কিভাবে বেছে নিলেন? ওদের কি কোনো জাত কুল বলতে কথা নেই। এতো কিছুর পরও যে মেয়ের সংসারকে মহাবীর রুস্তুম মেনে নিয়েছিলো সেই মেয়ের নিজ পছন্দের পাত্রটি কিনা একজন বাটপার। নিয়মিত টাকা দিতে হয় জামাইকে! এই কথা বাইড়ে বললে কি মান ইজ্জত বলে কিছু থাকে। আবার মহাবীর রুস্তুম মনে মনে ভাবেন প্রস্তাবের মাধ্যমেও তো অনেক গুলো বন্ধুর মেয়ের সংসার দেখলাম। সংসারের নিয়মে সংসার তৈরি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সুখ-শান্তি কোথায়?



যে স্বপ্ন দেখে রুস্তুম ও তাহমিনা তাদের সংসারকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তার পরিনাম কি এই? এতো স্বপ্ন কোথায় গেলো? স্রস্টার কাছে কি পাপ করেছিলেন মহাবীর রুস্তম আর মিসেস তাহমিনা? হায়রে কপাল! যাদের এতো আশা নিয়ে বড় করা হল তারা কি বাবা মায়ের সামান্য যে সম্মানটুকু দিতে হয় তাও ভুলে গেছে। জীবন কি শুধুই বাড়ী কেনা? জীবন কি শুধুই জমি বিক্রি করা? জীবন কি শুধুই ছেলের বখাটে হয়ে যাওয়া? জীবন কি শুধুই ঘরের মানস্মানের কথা চিন্তা না করে মেয়ের অপাত্রের হাতে চলে যাওয়া? জীবন মনেই কি পেনশনের নামের শেষ জীবনে কিছু টাকা? জীবন মানেই কি সারাজীবনের রোজগারের টাকা শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করে ধরা খাওয়া? জীবন মানেই কি এমএলএম কোম্পানী বা মাল্টিপারপাসের জালে পা দিয়ে অনেক টাকা হারানোর জ্বালা? জীবন মানেই কি প্রাপ্ত অর্থ চাইতে গেলে দিনের পর দিন ঘুরানো? জীবন মানেই কি জায়গা জমি নিয়ে ঝটলা পকিয়ে মামলা? জীবন মানেই কি সন্তানের জন্য অন্যদের কাছে মুখ দেখাতে পা পাড়ার যন্ত্রনা? জীবন মানেই কি ধার দেনা করা? জীবন মানেই কি আয়ের চেয়ে ব্যায় বেশী? জীবন মানেই কি মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্ত হয়ে জন্ম নেয়াই কি স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকতে না পারা? জীবন মানেই কি বাবা-মা এর চোখের সামনে সন্তান নেসা করে মারা যাওয়ার নাম? জীবন মানেই কি সন্তান উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করতে গিয়ে মারা যাবে?



যাই হোক, মহাবীর রুস্তুম এখন অনেক বেশী অসুস্থ ও দিশেহারা। ছেলে সোহরাব এর সংসারের প্রতি মায়া এসেছে? কিন্তু এত সময় কি করে পাড় হলো? সোহরাবের নামে যে কয়টা কেস ছিলো তা তো শুধু তারুন্যের উদ্দিপনাই ছিলো কিনা সন্দেহ আছে কারণ তার পিছনে যে বি.এন.পি, আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, বিকল্প ধারা, ইসলামী ছাত্র শিবির, জামায়াত ইসলামী নামের একই রকম অনেকগুলো দলের বড় বড় লিডার নামের শয়তানদের হাত ছিলো। তারা যে সোহরাবকে নষ্ট করেছে। সোহরাব আইইএলটিএস করে বিদেশে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু কনসালটেন্সী ফার্ম নামের কিছু দালাল টাকা পয়সা খেয়ে ফেলেছে। এতে সোহরাবের দোষ কোথায়? সোহরাব তো এম.এল.এম নামের প্রতারনার শিকার! সোহরাব তো চাকুরী করতে চেয়েছিলো, ঘুস দিতে হবে বলে রাজিও হয়েছিলো, ঘুস দিয়েও যে চাকুরী হয়নি? বরং যিনি ঘুস খেয়েছেন তিনি যে আজও ধরা ছোয়ার বাইড়ে!!!



হায়রে সমাজ ব্যবস্থা! হায়রে পিপিলিকার উড়তে যাওয়ার পরিনাম! হায়রে নিষ্ঠুর সমাজ ব্যবস্থা!



আমি মহাবীর রুস্তুম কে আদেশ করছি আপনি আবারও তরবারী নিয়ে যদ্ধে ঝাপিয়ে পরুন? আপনার যে তেজী ঘোরাটি ছিলো তা আজও আছে। শুধু নিজের মধ্যে একবার জাগিয়ে তুলুন। সোহরাবকে বুকে টেনে এনে নিয়ে বলুন, “বাবা! আমি তোকে বুঝতে পারি নি। তোর আমার মধ্যে যারা যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়েছে তাদের যে আমি আজ চিনে ফেলেছি। আয় বাবা বুকে আয়”। আর যে শক্তি নিয়ে মহাবীর রুস্তুম আবার জেগে উঠবেন তার একসময়ের প্রভু সমাজপতিদের ধ্বংস করতে, সেই শক্তির নাম যে “বাঙালী চেতনা বোধ”। বাঙালী চেতনা বোধের কাছে ১৯৭১ইং সালে বিশ্ব আত্মসমর্পন করেছেন। আর আজকের এই পৃথিবীকে পরিবর্তন করার জন্য শুধু সত্যিকারের একজন ত্যাগ্যী বীর যিনি ১৯৭১এর স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ও গর্বীত বাঙালী চেতনায় উজ্জিবিত একজন দেশ প্রেমিকই যথেষ্ঠ।



সোহরাব আজ সময় এসেছে। তুমি তোমার বাবার কাছে সবকিছু খুলে বলো। তোমার বাবাকে যারা সারাজীবন দাস বানিয়ে রেখেছে, তার সাথে তোমাকেও যারা রাজনীতি নামের চরম কলঙ্কের সাথে জড়িয়েছে, চাকুরী-বাকরী খোঁজার নাম করে কষ্ট দিয়েছে, বিদেশে পাঠানোর নাম করে যারা টাকা মেরে খেয়েছে। সব প্রতিশোধ যে তোমাকেই নিতে হবে। অহেতুক বাপ-পুত্র কেনো ঝগড়া ঝাটি করে কেনো সময় নষ্ট করেছো? ঐ দেখ তোমাদের জাতাকলে পড়ে তাহমিনার যে আজ সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। সবাইকে একসাথে মেরে ফেলবে এ কেমন কথা?



তারচেয়ে সমাজের ঐ উচু স্তরের লোক কয়জন মারা গেলে দোষ কোথায়? সবার টাকা যারা ভাগ বাটারা করে খাচ্ছে তাদের সাস্তি দেয়া যে আজ ফরজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসুন আমরা সবাই মিলে একতাবদ্ধ হয়ে তিব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলি। যাতে করে এই বাঙালী জাতিকে আর কেউ দাবিয়ে রাখতে না পারে। সবাই মিলে বিশ্বের বুকে গর্বীত বাঙালী রূপে নিজেকে বিলিয়ে দেবো মানবতার কল্যানে। আমাদের তলোয়ার হলো আমাদের ভিতরের সত্য কথা বলার সাহোস।



বন্ধু!!! এই লেখাটি লেখার সময় আমার উপর বেশ কয়েকবার সাইবার আক্রমন করা হয়েছে। আমি এর তিব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। না জানিয়ে কারও ব্যক্তিগত কম্পিউটারে ঢোকা এবং পোষ্ট মুছে দেবার চেষ্টা করা যে অন্যায়। আমার বিশ্বাস কোনো সত্যিকারের বাঙালী আমাকে আক্রমন করতে পারবে না।

আমাকে যারা রুখতে চান তারা আমার সাথে সরাসরি কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন কেনো? আমি তো আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেই সারাদিন থাকি। আমার তো জানতে হবে এই অভাগার শত্রু কারা?





বাংলাদেশের রাস্ট্র প্রধানের একটি স্পষ্ট রূপরেখার খসরা প্রস্তাব:: প্রিয় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে নিবেদিত!!!



মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ্

মালিক/সিইও

মেরী কম্পিউটার্স

কাশিপুর বাজার

বরিশাল।

যোগাযোগঃ ০১৭১৭-০৪৪৯১৯, ০১৮১৯-১০৬৪০৭



https://www.facebook.com/asif.ud



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.