নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানো তো মেয়েরা মায়াবতী হয়। অামি না হয় একটু নিষ্ঠুর হোলাম।

অাসমা সাদিয়া

বলার মত কিছু এখনও অর্জিত হয়নি।

অাসমা সাদিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছাইপাশ-১

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১:২৯

পোস্টঅফিস'
.
অাজকের দিনের শুরুটা করতে হবে নীল শার্টে। মৌ বলে নীল শার্টে যুবক ছেলেদের ভালো লাগে। অামি অবশ্য জিজ্ঞেস করেছিলাম যুবক ছেলে বলার কারন কি! সে বলল, ছোটবেলাতে স্কুলের ছেলেগুলোও নীল শার্ট পরতো। ইউনিফর্ম ছিলো নীল শার্ট। পিচ্চি গুলোকে ততটা ভালোলাগতো না। তবে তার ছোটবেলায় তার যে টিউশন টিচার ছিলো তাকে নীলশার্টে খুব মানাতো! তাকিয়ে থাকতেই ইচ্ছে হতো।
.
নীল কালারের শার্ট পরে অায়নার সামনে দাড়ালাম। নাহ্ মেয়েটার সেন্স অব হিউমার মোটেও ভালো ঠেকলো না। নিজেকে কিম্ভুত ছাড়া অার কিছু মনে হচ্ছে না। মৌয়ের কথা অনুযায়ী অামি নিশ্চয় স্কুলের বাচ্চা ছেলে; যে নীল শার্ট পরলে তাকে ভালো দেখায় না। নিজেকে অসহায় মনে হলো বাচ্চা ছেলেদের মতো। বাচ্চামি ঢাকতে একটা ব্লেজার গায়ে চড়িয়ে নিলাম। কম্বিনেশনটা খারাপ না!
.
মিলনায়তন এ ঘোরাঘোরি করছি। অনেকেই এসেছে। অাড্ডা চলছে জম্পেশ। সবাই যে যার বইজ্ঞান বুক ফুলিয়ে প্রকাশ করছে। কেও কেও অাবার অামার মত ঘোরাঘুরি করছে। হয়তো অামারই মত বই কম কারও অপেক্ষার প্রহর গুনছে। এর মধ্যে অনেকে ফোন করাও শুরু করে দিয়েছে। বেচারা অামিই হয়তো নীলডাউন করে থাকা বাচ্চার মত খাবি খাচ্ছি। কারন অামার কাছে মৌয়ের নম্বরও নেই।
.
মৌয়ের সাথে অামার পরিচয়টা নাটকীয় ভাবে। অামাদের এলাকার সেন্ট্রাল পাঠাগারে প্রথম খোঁজ পাই তার। মেয়েটা শরৎভক্ত। অামি সবে শরৎ শুরু করেছি। শরৎবাবুর বইয়ের পেছনের লাইব্রেরী কার্ডে বেশির ভাগ নামই এই মেয়েটার 'মাসানিয়াত মৌ,মাসানিয়াত মৌ,মাসানিয়াত মৌ!' প্রথমে মনে হলো পাগল নাকি এতো শরৎ শরৎ করে কেন! কি মনে করে একটা শরৎবাবুর বইয়ে লিখলাম, 'একটা বই কয়বার পড়েন? পাগল না পাগলী??' এইতো শুরু..
তার পর থেকে এভাবেই চলতে থাকলো।তবে সেটা চিঠি হিসেবে।কারন সবাই শরতের বই কম অামাদের লেখা বেশি অাগ্রহ নিয়ে পড়তো অাবার মাঝে মাঝে দু'একটা কমেন্টও করতো। শরৎবাবু হয়তো মাঝে মাঝে খুব বিরক্তই হবেন যে তার বইগুলার ওপর এতো অত্যাচার কেনো? তিনি তো অার পোস্টঅফিস না। এতোকিছুর পরও কখনও দেখা হয়নি অামাদের, সেটা শর্তের অংশ। দেখা হবে বই মিলনায়তনে...৭ মাস পর। সেটাই হচ্ছে অবশ্য।
'
-মৌদেবী হাসিখানা থামাইয়া কিঞ্চিৎ অামার দিকে তাকাইবার উপক্রম করিবেন??
-বিশ্বাস করো নীলশার্টে তোমাকে স্কুলে পড়া বাচ্চা লাগছে।
-হইছে অাপনার? অাচ্ছা এটা অাপনার জন্য...
শরৎএর শ্রীকান্ত শেষ পর্ব বইটা ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। ভিতরে ছোট্ট একটা লিফলেট।খুব সামান্য লেখা..
-
'মাসানিয়াত মৌ অাপনাকে খুবই ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি'
.
অামি উঠে পড়লাম। চলে যেতে হবে। মৌ চিরকুটটা খোলার অাগে। নিজের দেয়া চিঠি নিজের সামনে পড়লে অাজব অাজব লাগে।
.
ভয় কে জয় করে লাইব্ররীতে এসেছি। খুজছি 'শ্রীকান্ত শেষ পর্ব'।বইটা খুঁজতে বেগ পেতে হয়েছে কিন্তু পেয়েছি। একটা চিরকুটও অাছে। ' এটাই অামাদের শেষ কথা' জাতীয় কিছু লেখা থাকবে ভেবেছিলাম। তবে তেমন কিছু নেই। লেখা ছিলো,
-
নীলশার্টের যুবক-বাচ্চা,
তোমাকে অাপনাতে বইচিঁর ফলের মালা দিয়ে বরন করে নিলুম। অামি রাজলক্ষ্মী নই। তাই হয়তো তোমাকে পাওয়ার জন্য অত সাধনা অামাকে করতে হয়নি। অবশ্য নিজের হৃদয়খানা অনেক অাগেই তোমার পানে সঁপেছি। তবে নিজের মনের কথা নির্লজ্জের মত অাগে প্রকাশ করতে পারিনি। লাজ রক্ষা করার জন্য ধন্যবাদ মশাই। অামি রাজলক্ষ্মী নই অাগেই বলেছি। তাই ভালোবাসি বলতে অামার বাঁধবে না। 'ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি।'

-0-
অাসমা সাদিয়া

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ২:৩৬

মুহাম্মদ তারেক্ব আব্দুল্লাহ বলেছেন: সহজলভ্য ভালোবাসা।

ভালো লেগেছে বেশ, উল্লখযোগ্য ভাবে : 'ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি।'

২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:০১

অাসমা সাদিয়া বলেছেন: হেহে! সুনীলের কবিতা খুব প্রিয় সাথে এই শব্দটাও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.