নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তত্ত্বাবধায় সরকার এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংবিধানের একচুলও বাইরে তিনি যাবেন না। কিন্তু বিরোধীদলীয় নেত্রী সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন এমন গণআন্দোলনের সূচনা তিনি করবেন যে, কারো মাথায় চুলই থাকবে না। অবশ্য এর জবাবে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে জবাব এসেছে, বিরোধীদলীয় নেত্রীর তো চুলই নেই, তিনি পরচুলা পরে থাকেন। তিনি আবার চুল রাখবেন না কী! যাই হোক চুল নিয়ে এই টানাটানি নিয়ে কয়েক দিন যাবত রাজনীতির ময়দানে বাহাস চলছে। অনেক শ্রোতা, দর্শক এই চুলের বাহাস শুনে ব্যাপক বিনোদিত হচ্ছেন। কিন্তু সচেতন মহল মনে করছেন রাজ-রাজড়াদের এই চুল টানাটানি শেষ পর্যন্ত কতদূর গড়ায় তা নিয়ে চিন্তার বিষয়। কারণটা এই যে টানাটানি শুধু রাজ-রাজড়াদের নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে ততটা ভয়ের কারণ হোত না; টানাটানিতে শেষ পর্যন্ত জনগণের ধমনীটাই না ছিড়ে যায়। কথায় আছে “রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়- উলুখাগড়ার প্রাণ যায়।” কিন্তু এই প্রবাদটিতে মনে হচ্ছে ইদানিং কিছুটা পরির্তন এসেছে। এখন সাদ্দাম হোসেন, গাদ্দাফীদের মত ডিক্টেটররাও মারা পড়ছে। কথায় আছে, “পাটা-পুতায় ঘষাঘষি- মরিচের দফা শেষ।” আমাদের এই আশঙ্কার কারণ আছে এই জন্য যে আমরা “ঘর পোড়া গরু, সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরাই।” তাছাড়া অতীতে আমাদের “চুন খেয়ে মুখ পুড়েছে, এখন দই দেখলেও ভয় পাই।” এবার তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে চুলোচুলি শুরু হলে আমরা সেই চুলোচুলি গ্যালারীতে বসেই দেখব। মাঠে নামব না। যিনি জয়ী হবেন তার পক্ষে জয়গান গাইব। যিনি পরাজিত হবেন তার মাথায় সুযোগ পেলে দু’একটা আঘাত করে আসব। কারণ আমরা “তেলের মাথায় ঢাল তেল, রুক্ষ মাথায় ভাঙ্গ বেল” এই প্রবাদটি ভালই জানি। তাছাড়া গ্যালারীতে বসে যদি একজন শাসক পাই তাহলে আরো একটা সুবিধা হবে। আর তা হোল “ধরি মাছ না ছুই পানি।” অর্থাৎ বিনা শ্রমে ফলপ্রাপ্তি। এতে করে সরকারের যে কোন কাজের বিরোধিতা করার জন্য বিরোধিদলের দাঙ্গা-হাঙ্গামা থেকে আমরা মুক্তি পাব। সাথে আমাদের আরো একটি সুবিধা হবে; “সাপও মরবে আর লাঠিও ভাঙ্গবে না।” কিন্তু যদি চুলোচুলি না হয়, আপসে উভয়পক্ষ দেশটাকে ভাগ বাটোয়ারা করে খেতে বসেন তাহলে আবার আমাদের মত “মরার উপর আবার খাড়ার ঘাঁ পড়বে।” তখন আমাদের “আমও যাবে ছালাও যাবে।” তবে শেষ পর্যন্ত সর্বশেষটাই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ কিছু প্রাণীর লেজ কখনো সোজা হয় না”। হ্যাঁ, তবে একটা সম্ভাবনা আছে। মরার পর নিশ্চয় আমাদের নেতৃবর্গ সোজা হবেন। কারণ “গর্তে ঢোকার সময় সাপও সোজা হয়ে যায়।”
আল্লাহও কোন জাতির ভাগ্য ততক্ষণ পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজেরা পরিবর্তন করে। এই দুই দলের বাইরে রাজনীতিতে কিছু “ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা” আছে যারা দুধের ভাগ পায় না কেবল লাফালাফি কোরেই মরে। তাদের বক্তব্য হোল নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে হবে, গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রশ্ন হোল গণতন্ত্র আবার কিরে বাবা! গণতন্ত্রের তো কোন আগাও নাই মাথাও নাই। এর দুই দিকেই মুখ আর মাঝখানে শুধু পেট। তারা বলেন না সেই পরিবর্তনটা আনবে কে! তারা মুখে খুব “রাজা উজির মারেন।” কিন্তু “বিড়ালের গলায় ঘণ্টাটা বাঁধবে কে” তা দেখিয়ে দেন না। এরা সুশীল। গোলটেবিল আর টকশো তে তেনারা গলা ফাটিয়ে চিৎকার চেচামেচি করেন, কিন্তু এমনভাবে কথা বলেন যে “ধরি মাছ না ছুই পানি।” অর্থাৎ কোন কিছু গায়ে মাখাতে চান না। আবার একটা শ্রেণী আছে যারা কিছু হলেই ইসলাম গেল ইসলাম গেল বলে চেঁচামেচি করেন। আরে বাবা! ইসলাম যাওয়ার কি আছে? ইসলাম থাকলে তো যাবে! সামষ্টিকভাবে ইসলামের আছেটাই বা কী? সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহ আর আল্লাহর উপর আস্থা লিখে আর বাকি আইন নিজেদের বানানো, এ যেন “বিসমিল্লাহ বলে চুরি করতে যাওয়ার” মত। এদের মধ্যে আরেকটা ভাগ আছে। তাদেরকে আলুর সাথে তুলনা করা যায়। আলু যেমন সব তরকারীর সাথে চলে এরাও সন্ত্রাসীরা যেমন মত ভাড়ায় খাটে, তেমনি পয়সার লোভে সবদলের হয়েই ফতোয়া দেন, তাদের সকল কর্মকা- জায়েজ করে দেন। এদেরকে আবার কেউ কেউ ওলামায়ে ছু’ও বলে থাকেন। আরো একটা ভাগ আছে যারা চেতনার বড়ি খেয়ে অচেতন হয়ে আছে। এদেরকে মানসিক রোগী হিসেবে আখ্যা দেওয়া যায়। এদের চেতনা খুব প্রখর। একটা নির্দ্দিষ্ট সময়ে এদের মগজ আটকে আছে। কিছু হলেই এদের চেতনায় আঘাত লাগে। এরা আর ধর্মব্যবসায়ী মোল্লারা মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। একটা ধর্মান্ধ, আরেকটা চেতনান্ধ। এদের দাপাদাপিতে বর্তমানে দেশ চলেছে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এদের সঠিক রাস্তা হেমায়েতপুরে। কিন্তু হেমায়েত পুরে এত পাগল ধরবে কি করে? হেমায়েতপুরের শাখা অফিস তৈরি করতে হবে। না হলে যে উপায় নেই, এরা সব জায়গায় “নাক গলায়।” ডাকলেও কথা বলবে আবার না ডাকলেও কথা বলবে। কথায় আছে “পাগলে কি না বলে আর ছাগলে কি না খায়!” “এরা সব কাজের কাজী।” বলতে পারেন, ‘আপনি কোন কাতারে?’ আমি ভাই কোন কাতারেই পড়ি না। না ঘরকা না ঘাটকা। তবে খেলা যেহেতু হবেই একটা, আমি গ্যালারীতে বাদাম নিয়ে বসেছি খেলা দেখব বলে। এবার আর মাঠে নামছি না। কারণ যাদের হয়ে মাঠে নামব তাদের সবার গোড়া একই। “যেমন পেঁয়াজ গোড়া আর রসুনের গোড়া।”
২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০৮
উড়োজাহাজ বলেছেন: থ্যাঙ্কু স্যার! ভালো একটা প্রসংসাপত্র পেলুম। দেখি এইটা দেখিয়ে কোন কিছু করা যায় কি না। খেয়াঘাটের প্রশংসা! দুটো পত্রিকায় পাঠিয়েছি। কালকে ছাপানো হতে পারে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৫৪
খেয়া ঘাট বলেছেন: হাইস্কুলের সেই বাংলা ব্যাকরণের বাগধারা ও প্রবাদ প্রবচনের অধ্যায়টি মনে পড়লো। ভালো লিখেছেন।