নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সফলতা নিয়ে দুই দলেই সংশয়

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৮







নেতানেত্রীদের অবস্থা যাই হোক, আওয়ামী লীগের ভোটার এবং সমর্থকদের মধ্যে বিরাজ করছে একধরনের সংশয়। শেষ পর্যন্ত উচ্চ পর্যায় থেকে বিএনপিকে বাদ দিয়ে দলটি নির্বাচন করার অটল মানসিকতা তাদেরকে শেষ পর্যন্ত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারবে তো? কেননা মনোনয়ন প্রত্যাশীরা একদিকে উৎসব আমেজের মধ্য দিয়ে মনোনয়নপত্র কিনছেন অন্যদিকে বিরোধীদলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা গ্রেফতারের ভয়ে আত্মগোপনে দিনাতিপাত করছেন, আওয়ামী লীগের অফিসে যখন কর্মচাঞ্চল্যতা, মিষ্টি খাওয়ার ধুম আর বিএনপির নয়াপল্টনের প্রধান কার্যালয়ে তখন তালা, বাইরে পুলিশের সতর্ক পাহারা। এমতবস্থায় নির্বাচন হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে দলের নীতিতে তারা বেশকিছুটা অনাস্থা ও অনির্ভরতা প্রকাশ করছেন। তারা নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চোখে দেখছেন না। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে এই চিত্রটিই ফুটে উঠেছে। অপরদিকে যারা মধ্যপন্থা অবলম্বন করেন না, অর্থাৎ রাজনীতিতে অতটা সক্রিয় নন, শুধু সময় অনুযায়ী ভোট দিয়ে দায়িত্ব খালাস করেন তারা ক্ষমতাসীন দলটি সাম্প্রতিক একরোখা নীতিতে বিরোধী জোটের প্রতি প্রকাশ্যেই সমর্থন দিচ্ছেন। এমন কি সমাজের বুদ্ধিজীবীদের একটি অংশ ধীরে ধীরে বিরোধী জোটের প্রতি দিন দিন ঝুকে যাচ্ছেন। কেননা এখন প্রায়শঃই টকশোগুলোতে কিংবা পত্রিকার কলামে তারা তাদের সমর্থন বিরোধী জোটের পক্ষে তুলে ধরছেন। এই বাস্তবতা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের অন্ধ সমর্থক এবং সুবিধাভোগীরা ছাড়া প্রায় সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।





কখনো নৌকার ব্যালট ছাড়া ভোট দেননি এমন অনেক মাঝ বয়সের আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থকও মনে করছেন কোথায় যেন তার প্রিয় দল ভুল করছে। রাজনীতিতে ভুলের মাশুল অনেক বেশি গুনতে হয়, অভিজ্ঞতা থেকেই তারা তা মনে করে দলের জন্যে শঙ্কায় আছেন। যদিও অপেক্ষাকৃত তরুণ বা নির্বাচনে যেসব আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তাদের সমর্থক মটরসাইকেল বহরে নিয়ে মনোনয়নপত্র কিনতে যাচ্ছেন তারা ছাড়া রা¯ত্মার পাশেই আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মন ভার। চিরদিন তারা বিশ্বাস করেছেন আওয়ামী লীগ গৌরবের দল, এবার তারা শঙ্কিত সে গৌরব আর থাকছে না। তাদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হচ্ছে নিকটজনের কাছ থেকে তাহলে আর ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নেয়া দলের সঙ্গে পার্থক্য থাকল কৈ?

মন্ত্রী এমপিরা না হয় কথার মারপ্যাচে কিংবা ক্ষমতার জোরে উৎরে যাচ্ছেন, কিন্তু যারা নিকটাত্মীয় কিংবা প্রতিবেশী, আড্ডার সাথী তাদের কাছে প্রশ্নবানে জর্জরিত হতে হচ্ছে।



আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে সংখ্যালঘু ভোটারদের একচেটিয়া সমর্থক অনেকে বিবেচনা করেন। কিন্তু তাদের অনেকে খুশি নন। বিশেষ করে সাঁথিয়ায় সংখ্যালঘুদের বাড়ি ঘরে যারা হামলা করেছেন তাদের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ঘুরতে দেখে তারা মর্মাহত হয়েছেন।



অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য “আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি চাই মানুষের শান্তি” এটাও হালে পানি পায় নি। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন তাই যদি হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিচ্ছেন না কেন। তিনি যদি সতিই দেশের মানুষের শান্তি চান তাহলে তিনি সংলাপের জন্য বিরোধী নেত্রীকে আরেকবার আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন না কেন? প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তারই দায় বেশি। এসব কথা চিন্তা করে অনেকেই আগামী দিনের আওয়ামী লীগের সফলতা ব্যর্থতা নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছেন। এই সহজ সরল বিষয়গুলো মাথায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত কর্মী সমর্থকদের বেকায়দা ফেলে দিচ্ছে।



অন্যদিকে সংশয়ে আছে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরাও। কারণ, তারা ঠিক বুঝতে পারছেন না আওয়ামী লীগের এই কঠোর মানসিকতার কারণ কি, আওয়ামী লীগ নেত্রীর আসল উদ্দেশ্য কী। কঠোর দমন পীড়নের মধ্য দিয়ে এবং পাতানো নির্বাচন করে যদি তিনি ক্ষমতায় আসীন থাকেন তাহলে বিএনপিকে কঠিন সংগ্রামের মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু ইতোমধ্যেই বিএনপি তার শক্তি খুইয়ে বসেছে। সাম্প্রতিক শীর্ষস্থানীয় ৫নেতা গ্রেফতার এবং বাকী নেতাদের আত্মগোপন দলকে ব্যাকফুটে পাঠিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের পাঁচ বছরের শাষনকালে অনেক নেতাকর্মীই হয় এখন জেলে, নয় নিস্ক্রিয়। খোদ বিরোধী দলীয় নেত্রীর বড় ছেলে তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারছেন না গ্রেফতারের ভয়ে। এমতবস্থায় দল এই সংগ্রামে সফলতা কতটুকু অর্জন করতে পারবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সংশয়ের আরো কারণ হচ্ছে হরতালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর এ্যাকশনেও। এছাড়াও হরতালে ব্যাপক প্রাণহানী, গুরুত্বপূর্ণ কর্তাব্যাক্তিদের বাসভবন, অফিস-আদালত ও কূটনৈতিক পাড়ায় বোমা হামলার ঘটনায় হরতাল কর্মসূচিকে বিতর্কিত করে তুলছে। তাদের অনেকেই মনে করেন সরকার তরফ থেকে এসব ঘটিয়ে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচীকে ভণ্ডুল করার চেষ্টা চলছে।



এই পরিস্থিতিতে দুটি দলই মানসিক শক্তি অর্জনের জন্য কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করার প্রক্রিয়া হিসেবে বিভিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা যার যার অবস্থানে অনড় মানসিকতার ভান করছেন। এমতবস্থায় যাদের নার্ভ যত শক্ত থাকবে তারাই সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.