![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-"অসাধারন?"
-"অবশ্যই।"
-"কি ধরনের বই? টাইম পাসিং? সামাজিক?"
-"হ্যাঁ সামাজিক, তবে সেই সাথে পড়ার সময়টাও খুব সুন্দর কাটবে। আর পড়া শেষ করার পরেও রেশটা থেকে যাবে, ভুলতে পারবেন না।"
-"আচ্ছা, আচ্ছা। তা কাহিনী কি নিয়ে?"
-"আমাদের বেশ পরিচিত কাহিনী। পীর আর মাজার নিয়ে। কিভাবে গ্রামের সহজ সরল লোকদেরকে কিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষ ধর্মের ভয় দেখিয়ে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেয় সেটা দেখানো হয়েছে।"
-"বুঝলাম, কিন্তু পড়ে কি লাভ?"
-"লাভ ক্ষতি হিসাব করে তো আর পড়িনি, কিন্তু আপনি যদি ব্যবসায়ী মনোভাব নিয়ে, মানে শুধু লাভ খুজে পড়তে চান, তাহলেও বলবো আপনার ক্ষতি হবে না। আগেই তো বোল্লাম উপন্যাসের ঘটনা পীর আর মাজার পূজাকে কেন্দ্র করে। উপন্যাসটা পড়ে পরিষ্কার বুঝতে পারবেন কেমন করে এসব ভন্ডরা ধর্মকে ব্যবহার করে সমাজকে নিয়ন্ত্রন করে। মাজারকে কেন্দ্র করে টাকা-পয়সা আর ক্ষমতা গড়ে তোলে।মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে সেগুলোকে অন্ধবিশ্বাসে পরিনত করে। আর সবচেয়ে বড় কথা এধরনের ভন্ড পীর আমাদের সমাজে এখনো আছে, অনেক বেশি পরিমানেই আছে। গল্পটা পড়লে তাদের বুজরুকি সম্পর্কে বুঝতে পারবেন সহজেই।"
-"পড়া যায় তাহলে?"
-"পড়া বা না পড়া তো আপনার ইচ্ছা। তবে এটুকু বলতে পারি, না পড়লে খুব সুন্দর একটা বই পড়ার অভিজ্ঞতাটা নিতে পারবেন না।"
বলছিলাম বাংলা সাহিত্যের অন্যরকম সুন্দর এক উপন্যাস সম্পর্কে, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর "লালসালু" সম্পর্কে।
লেখক সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ
সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর প্রথম উপন্যাস এটা। এবং নিঃসন্দেহে বলা যায় প্রথম উপন্যাস দিয়েই বাজিমাত করেদিয়েছেন। কুসংস্কারে আচ্ছন্ন মাজারের সেই "লালসালু" টেনে দেখিয়ে দিয়েছেন পীরব্যবসায়ের ভেতরের আসল রূপ। মহব্বতনগরে এক গুমোট শ্রাবনের দিনে প্রথম প্রবেশ করে মজিদ। যে কিনা স্বপ্নে দেখেছে মোদাচ্ছের পীরের মাজার অবহেলায় পড়ে আছে। তাই সে স্বপ্নে পাওয়া মোদাচ্ছের পীরের আদেশে এসেছে মাজার পুনঃ প্রতিষ্ঠা করতে। এরপর ধীরে ধীরে আমরা দেখতে পাই কিভাবে মজিদের উথান হয়, গ্রামের মানুষের উপর তার ক্ষমতার বিস্তার হয়।
১৯৪৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় "লালসালু"। পরে ১৯৬৭ সালে ফরাসি আর ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়।
লন্ডন থেকে প্রকাশিত অনুবাদের প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ নিজে
২০০১ সালে লালসালু উপন্যাসকে চলচ্চিত্রে রূপায়ন করা হয়। সেটির পরিচালক ছিলেন তানভীর মোকাম্মেল। আর অভীনয়ে ছিলেন রাইসুল ইসলাম আসাদ (মজিদ),তৌকির আহমেদ,চাঁদনী,আমিরুল হক চৌধুরী,চিত্রলেখা গুহ,রওশন জামিল,মুনিরা ইউসুফ মেনী,আলী জাকের। চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারে ভূষিত হয়।
©somewhere in net ltd.