![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আতিকুর রহমান ফরায়েজী। মোঃ জহুরুল ইসলাম ও মোছাঃ চাঁদমণি খাতুন-এর তিন পুত্রের মধ্যে বড়। বাবা-মায়ের দেওয়া নাম মোঃ আতিকুর রহমান। বংশীয় ঐতিহ্য অনুষ্ঠানের পর নামের শেষে ফরায়েজী যুক্ত করি। ১৯৯১ সালের ২০ এপ্রিল, বাংলা ০৭ বৈশাখ ১৩৯৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার নওদাবন্ডবিল গ্রামে পিতার বাসভবনে জন্মগ্রহণ করি। বর্তমানের এই রঙ্গ তামাসাময় এবং নিরস সাহিত্যের বাইরে থেকে পরিকল্পিতভাবে সাহিত্য চর্চায় নিজেকে জড়িয়ে রেখেছি। শৈখিন চারুশিল্পিময় আমি অবসর সময় কাটাতে পছন্দ করি- গান শোনা ও সংগিত চর্চায়।
ইদানিং ‘এক লাইনের গল্প’ বা ‘ছয় শব্দের গল্প’ শিরোনামে কিছু গল্প দেখা যাচ্ছে, সেগুলোর সবই অবশ্য অনলাইনে। আসলে এগুলোকে গল্প বলে কি না বা এগুলো আসলে গল্প হবার উপযুক্ত কিনা এবং এধরনের সাহিত্যগুলোর ভবিষ্যৎ কী হতে পারে – এই নিয়ে নতুন একটা সমিকরণ তৈরি হয়েছে। কেউ গল্প লেখেন কয়েক হাজার শব্দ নিয়ে। কেউবা এক লাইনে। এক লাইনে কি সম্ভব পুরো একটা গল্প প্রকাশ করা , নিজের পুরো অুনভুতিটুকু অন্যের মাঝে সঞ্চালন করা, আবেশ তৈরি করে তাকে ঘোরের মধ্যে রাখা?
গল্প সম্পর্কে কথা বলতে গেলে আগে ভাষা সম্পর্কে কিছু কথা বলতে হবে। কারণ ভাষা এবং গল্প একে অপরের সাথে পুঙ্খানুপুঙ্খ লতার মতো জড়িয়ে রয়েছে। ভাষা ও গল্পের প্রধান উদ্দেশ্য মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করা। যখন ভাষা আবিষ্কার হয় ঠিক তখন থেকেই গল্পের আবিষ্কার। অনেকেই বলে থাকেন- গল্প আধুনিক সাহিত্যের সব থেকে কনিষ্ঠ শাখা। তবে যখন মানুষ ভাষা আবিষ্কার করল বা ভাষার আবিষ্কার চলছে সেই সময়েই মানুষ সাংকেতিক ভাষার ব্যবহার শুরু করে। সেটা মোটেও বর্ণকেন্দ্রীক ছিল না। বরং বিভিন্ন পশুপাখি, জীব জন্তুর ছবি এঁকে তারা মনের ভাব প্রকাশ করত। এখানে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন- সে সময়েও কিন্তু গল্প ছিল। এই সাংকেতিক চিহ্নগুলো দেখে অন্য আরেকজনের মধ্যে একটা গল্প কাজ করত। সুতরাং প্রাচীনকাল থেকেই গল্প কোনো না কোনোভাবে প্রবাহমান ছিল। কিন্তু বস্তুত, সাংকেতিক ভাষাগুলো কোনো গল্প ছিল না। সেগুলো কোনো গল্প বহন করলেও সেগুলি গল্পের হয়ে উঠতে পারেনি। হয়ত ‘এক লাইনের গল্প’ও গল্প বহন করে, কিন্তু সেটাও গল্প হয়ে উঠতে পারে না। গল্প হয়ে ওঠার জন্য একটা মাপকাঠি আছে। আর এই মাপকাঠি না থাকলে ‘ছুটি চেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদনপত্র’টিও গল্প বলে গণ্য হতো। কারণ তাতেও গল্প আছে। সাহিত্যের সব থেকে পুরাতন শাখা ‘কবিতা’ সেটাও গল্প হতো। কারণ প্রতিটা কবিতাই গল্প বহন করে।
লেডি মুরাসাকি (১০০-১০১২ খ্রিস্টাব্দ) গল্পকে সাহিত্যে আনার প্রথম প্রয়াস করেন। তার জাপানি ভাষায় লেখা ‘গেঞ্জির উপাখ্যান’ বা ‘টেল অব গেঞ্জি’ গল্পটি পৃথিবীর প্রথম উপন্যাস হিসেবে পরিচিত। তারপর ধিরে ধিরে বিশ্বের সকল সাহিত্যেই গল্প স্থান করে নেয়।
গল্পকে চার স্তরে আলাদা করা যায়। (ক) উপন্যাস, > (খ) উপন্যাসিকা > (গ) বড় গল্প > (ঘ) ছোটগল্প। এই চারটির সংজ্ঞা থেকে গল্পের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে পাওয়া যায়- গল্পে গল্প থাকতে হবে এবং সাবলিল বর্ণনাত্মক হতে হবে। যখন আপনি এক লাইনে গল্প লিখবেন তখন আপনার সাবলিলতা কোথায় প্রয়োগ করবেন? সুতরাং এই শাখাকে গল্প বলা যাবে না।
একটি সম্পূর্ণ মনোভাব যে সমস্ত পদ দ্বারা প্রকাশ করা যায়, তাদের সমষ্টিকে বাক্য বলে। আর এরকম একাধিক বাক্যের সমন্বয়ে গল্প লিখিত হয়। তাহলে এ কথা বলা যায়- ‘এক লাইনের গল্প’ শুধুমাত্র একটি বাক্য ব্যতিত কিছুই নয়, গল্প তো অনেক পরের কথা। একে সাহিত্যও বলা যায় না। কারণ সাহিত্যে ‘আসক্তি’ একটা বড় গুণ। একটি বাক্য শেষ করার পর অন্য বাক্য পড়ার আসক্তি। আর ‘এক লাইনের গল্প’ যেখানে বাক্য সংখ্যাই একটি, সেখানে পরের বাক্য পড়ার আসক্তি কোথা থেকে উৎপত্তি হবে?
গল্পের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করা নয়। গল্পের মূল উদ্দেশ্য মানুষের মনোরঞ্জন করা, কিছু সময়ের জন্য মানুষকে আবেশে রাখা। এক সময় গল্পে শিক্ষামূলক নীতিকথা থাকতো। যা অধিকাংশ সময় পশুপাখি দিয়েই করা হোত। কিন্তু আধুনিক সাহিত্যে এসে ঈশপের মতো পশুপাখি না এনে গল্পকারেরা মানুষের সমাজ, পরিবেশ ও মানষিকতাকে প্রধান্য দিয়েছেন। কিন্তু উদ্দেশ্য সেই মানুষের মনোরঞ্জনই রয়ে গেছে। এখন কথা হচ্ছে- ‘এক লাইনের গল্প’ বা ‘ছয় শব্দের গল্প’ এর মূল উদ্দেশ্য কী ? মানুষের মনোরঞ্জন করা ? মানুষকে আবেশে রাখা ? আপনারা হয়ত বলবেন এক লাইনে বা ছয় শব্দে কীভাবে মানুষের মনোরঞ্জন দেওয়া যায়! আমি বলব যায়। তবে সেটা গল্প হবে না। সেটা হবে খনার বচন। খনার বচন হলো উপদেশমূলক বাক্য। যেগুলো ঈশোপের ন্যায় অনেকটা পশুপাখি নির্ভর। গল্পের উদ্দেশ্যের কাছে ‘এক লাইনের গল্প’ ব্যর্থ।
গল্প বর্ণনায় গল্পের মাধুর্য্যতা পূর্ণতা পায়। একজন গল্পকার থেকে আরেকজন গল্পকারকে আলাদা করা হয় তার গল্প বর্ণনার কারণে। একই বিষয় নিয়ে বিভিন্ন গল্পকার বিভিন্নভাবে গল্প লেখেন। আমরা গল্পগুলো পড়ে বর্ণনার ধরন দেখেই বলে দিতে পারি কোনটা রবীন্দ্রনাথের গল্প, কোনটা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প আর কোনটা তারাশঙ্করের গল্প। কিন্তু এখানে গল্পকারের বর্ণনাশৈলী দেখানোর মতো কিছুই নেই। এক লাইনে গল্পকার কী শৈলী দেখাবে ? বাংলায় একটা প্রবাদ আছে- ‘যেই না শরীর, এক ঘা মারলে আর এক ঘা মারার জায়গা থাকে না’। সাহিত্যের এই শাখার ক্ষেত্রে আমার প্রবাদটা খুব বেশি মনে পড়ছে। যদি এক লাইনের গল্প হয়, তাহলে তো সকল প্রবাদই গল্প হয়ে যাবে। সাহিত্য থেকে প্রবাদ শাখাটার বিলুপ্তি ঘটবে।
গল্পে মনের ভাব প্রকাশ এবং মনোরঞ্জন করতে গিয়ে কিছু নিয়ম নীতি মান্য করতে হয় গল্পকারদেরকে। আপনি যদি একটি গদ্যে দীর্ঘাবয়ব কোনো কথাসাহিত্য রচনা করেন, তাহলে সেটাকে কী বলা হবে? নিশ্চয় ছোটগল্প নয়? এটাকে বলা হবে উপন্যাস। তেমনই যদি উপন্যাসের থেকে একটু ছোট লেখেন অথচ ছোটগল্পের থেকে একটু বড় হয় এবং দীর্ঘাবয়ব কথাসাহিত্য হয় তাহলে সেটাকে নিশ্চয় উপন্যাসিকা বলবেন। সর্বপরি জীবনের কোন বিশেষ মুহূর্তের আবেগ জড়ানো বিষয় নিয়ে যদি কথাসাহিত্য লেখেন সেটাকে অবশ্যই ছোটগল্প বলবেন ? তাহলে আপনি খনার বচন লিখে কেনো তাকে গল্প বানাতে চাইবেন? খনার বচন খনারবচই, সেটা কখনোই গল্প হতে পারে না। হয়তো তাতে গল্প আছে, কিন্তু সেটা গল্প নয়। কলায় ক্যালোরি আছে বলে যদি মনে করেন- কলাই ক্যালরি, তাহলে ভুল করবেন।
যদিও ডেবিট বার্ন, রবার্ট বাঞ্চলি, ইয়ার্ল থেইসনসহ অনেকেই ‘ছয় শব্দের গল্প’ লেখার প্রয়াস করেছেন। তবে প্রথম এক লাইনের গল্পটা লিখেছিলেন হেমিংওয়ে। এখন আপনি তাদের এধরনের একটা গল্পের নাম বলুন তো, যেটা আপনার মনে দাগ কেটে আছে বা আপনার পছন্দ হয়েছে বা জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এমন একটি ‘ছয় শব্দের গল্প’ দেখান যেটা দিয়ে কেউ লেখক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বা কোনো প্রতিষ্ঠিত একজন লেখককে দেখান যিনি তার রচিত ‘ছয় শব্দের গল্প’ নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেছেন? জানি দেখাতে পারবেন না। কারণ তারাও ভেবেছিলেন গল্পের এই শাখাটি অনেক জনপ্রিয় হবে। তারাও ভুলে গিয়েছিল এটি আসলে কোনো গল্পই হচ্ছে না এবং পাঠক এটি গ্রহণ করেনি। আর যে গল্প দিয়ে কোন বই প্রকাশ করাই যাবে না সেটা কী ধরনের সাহিত্য ?
সবসময়ই সাহিত্য প্রকাশের এবং পাঠকের কাছে পৌঁছানোর সব থেকে বড় মাধ্যম বই। যদিও এখন অনলাইনের যুগে কিছু ওয়েবম্যাগ প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু সেগুলো কতটা জনপ্রিয় ? আপনি কী মনে করেন- আপনার একলাইনের গল্প পড়ার জন্য কেউ অনলাইনে কোনো ওয়েবম্যাগ ভিজিট করবে? কখনোই না। কারণ এক লাইন পড়ার জন্য মানুষের এত সময় নষ্ট করার মতো সময় নেই। আবার আপনি যখন বই প্রকাশ করবেন তখন আপনার এই এক লাইনের গল্প পড়ার জন্য কোনো পাঠক কি বই কিনবে ? মোটেই না। তার থেকে তারা ছোটগল্প বা উপন্যাসের বই কিনবেন। উদাহরণস্বরূপ বলি- বেশ কয়েক বছর আগে কিছু লেখক ফেইচবুক স্ট্যাটাস নিয়ে বই প্রকাশ করেছিলেন। তাদের বইয়ের যে দশা হয়েছিল, আপনার বইয়েরও সেই একই দশা হবে।
‘এক লাইনের গল্প’ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে গল্পের থেকে গল্পের শিরোনামই বড় হয়ে যাচ্ছে। অনেকটা প্যাঁ করে ডেকে ওঠার মতো। আরে বাবা একটা গল্প পড়ব- মনে একটা অনুভুতি আসবে না! শুরু করতেই পারলাম না, শেষ! এটা কোন ধরনের তামাসার মধ্যে পড়ে ? আপনি যদি কোন দোকানে গিয়ে চা খেতে চান, সেই অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে হলেও তো আপনাকে দুই লাইন কথা বলতে হবে। আর আপনি একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলবেন এক লাইনে ? আপনার অভিব্যক্তি কতটুকু প্রকাশ পাবে তা বলার আর অবকাশ থাকে না।
সব মিলিয়ে যারা এই বিভাগটাকে সাহিত্যের গল্প বিভাগে স্থান দেবার চেষ্টা করছেন তাদের বলি- সব সময় সাহিত্যে নতুন নতুন বিভাগযুক্ত হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। গল্পের বিষয়বস্তু, বর্ণনার ধরণ পরিবর্তন হয়েছে। সেগুলোর যৌক্তিকতা ছিল। গল্পকারেরা নিয়ম ভেঙে পালাবদল করেননি। অযথা এসব পণ্ডশ্রম না করে ভালোকিছু করুন, পাঠক পড়বে। অযথা নিজের পপুলারিটি বাড়ানোর জন্য জনে জনে মোবাইল কেনার মতো গল্পের শাখা বানিয়ে লাভ নাই। আপনারা কিছুদিন আগে করলেন ‘অণুগল্প’ যদিও অনুগল্পতে ছোটগল্পের সবগুলো বৈশিষ্ট বিদ্যমান, তবু আপনারা তাকে অণুগল্প বলেন। এখন আবার ‘এক লাইনের গল্প’।
কোনো মতেই ‘এক লাইনের গল্প’ বা ‘ছয় শব্দের গল্প’ গল্প নয়। যারা ভাবছেন এই শাখাকে গল্পের মর্যাদা দেবেন আমার মনে হয় তারা গল্পের সংজ্ঞা বোঝেন না। পরিশেষে বলি – এটা গল্প নয়, পাঠকও কখনও এটাকে গ্রহণ করবেন না, সেটা গল্প হোক বা না হোক। এই শাখাটির ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন
১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:১৯
আতিকুর রহমান ফরায়েজী বলেছেন: ধন্যবাদ, আমার সাথে সহমত প্রকাশ করার জন্য
২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:১২
স্রাঞ্জি সে বলেছেন: লাইক দিলুম। সুন্দর বিশ্লেষণ।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:২০
আতিকুর রহমান ফরায়েজী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ
৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮
শামছুল ইসলাম বলেছেন: যুক্তিপূর্ণ লেখা ।
'এক লাইনের গল্প' লেখে মানু্ষের হৃদয় ছোঁয়া যায় না । আর যা হৃদয় ছুঁতে পারে না, তা অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে ।
পোস্টে +++ ।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:২১
আতিকুর রহমান ফরায়েজী বলেছেন: ধন্যবাদ, আমার সাথে সহমত প্রকাশ করার জন্য
৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০০
রাকু হাসান বলেছেন:
বাহ ,চমৎকার লিখেছেন । একমত আপনার সাথে । আপনার করেই বলতে চাই ‘‘কোন মতেই এক লাইনের গল্প বা ছয় শব্দের গল্প কোন গল্প নয় ।
এত কম লাইন বা শব্দ দিয়ে কিভাবে গল্পকার পাঠকের মনোরঞ্জন করবেন ! অনেক টা পাগলমী ছাড়া কিছু না । লেখাটি যথেষ্ট মানসম্মত । বেশি বেশি লিখলে পড়ার সুযোগ পাই । ভাল থাকবেন ।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২১
আতিকুর রহমান ফরায়েজী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। একসময় নিয়োমিত লিখতাম। এখন তেমন আর সময় সুযোগ হয়ে ওঠে না। তবে চেষ্টা করব।
৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: যদি গল্প বলেন তাহলে বলব ফালতু গল্প।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২২
আতিকুর রহমান ফরায়েজী বলেছেন: আমারও তাই মনে হয়।
৬| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৪
বিজন রয় বলেছেন: ++++++++
১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২৩
আতিকুর রহমান ফরায়েজী বলেছেন:
৭| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩৯
ইনাম আহমদ বলেছেন: অনেকে এখানে সহমত ভাই আছেন। আমি একটু আলাদা সুর ধরি। এরকম একলাইনের গল্পকে সাহিত্যের ভাষায় অণুগল্প বলা হয়।
আপনি বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম পড়েছেন? ছদ্মনাম বনফুল? তিনি এই শিল্পের পথিকৃৎ।
ভদ্রলোক প্রচুর ক্ষুদ্র গল্প লিখেছেন। সেগুলোকে আপনি আদৌ সাহিত্য না বলতে পারেন, কিন্তু সেগুলোর অর্থ বহু লেখকের একশা পাতার উপন্যাসের চেয়েও গভীর। একটা এরকম:
গল্প: সমাধান
লেখক: বনফুল
"আকাশ স্নিগ্ধ, বাতাস স্নিগ্ধ, ফল সুন্দর এবং আমার নাম নীহাররঞ্জন হওয়া সত্ত্বেও আমার বিবাহ হইল পাকড়াগ্রামবাসী ক্ষান্তমণী নাম্নী এক পল্লীবালার সহিত, এবং বৎসরান্তে তিনি একটি কন্যারত্ন প্রসব করিয়া তাহার নাম রাখিলেন - বুঁচি। নামকরণটাতে একটু আপত্তি করিয়াছিলাম, তাহাতে বাড়ির এবং পাড়ার সকলে সত্য কথাই বলিল, এই কালো কুচ্ছিত মেয়ে, তার নাম পুষ্পমঞ্জুরী দিবি নাকি? তোর যত অনাছিষ্টি-
মেয়েটা কুৎসিতই ছিলো। রঙ তো কালোই, একটা চোখ ছোট আর একটা বড়, তা ছাড়া কি রকম যেন বোকাহাবা ধরণের, মুখে সর্বদাই লালা ঝরে। পুষ্পমঞ্জুরী নাম দেয়া চলে না, তা ঠিক।
বছর দুই পরে।
ক্ষান্তমণি বুঁচিকে লইয়া বাপের বাড়ী গিয়াছেন। সেদিন রবিবার, কাহারও কাজকর্ম নাই, চণ্ডীমণ্ডপে বসিয়া নানা আলোচনা চলিতেছে। হঠাৎ আমার কথাই উঠিয়া পড়িল।
নৃপেণ বলিলো, এই দেখ না নীহারের অদেষ্ট। হ'ল যদি একটা মেয়ে, তাও আবার এমন কদাকার-
শ্যাম বোস বলিলেন, তা আবার বলতে! বিয়ে দেবার সময় নাকের জরৈ চোখের জলে হতে হবে আর কি। টাকা চাই প্রচুর। হারু খুড়ো তামাকটাতে দু'টান দিয়া কহিলেন, আরে ভাই, আজকাল আবার শুধু টাকা হ'লেই হয় না। লোকে টাকাও চায় রূপও চায় যে। চোখদুটো ছোট-বড় হয়েই আরও মুশকিল কিনা, কি যে হবে-
সকলেরই ঘোরতম দুশ্চিন্তা।
এমন সময় পিওন আসিয়া আমাকে একখানা চিঠি দিয়া গেল।
নৃপেন বলিলো, কার চিঠি হে?
আমি চিঠিটা পড়া শেষ করিয়া বলিলাম, বউ লিখেছে - বুঁচি মারা গেছে কাল।"
ছোট, ক্ষুদ্র এবং সহজ ভাষায় লেখা। কিন্তু ভাবনাটা আর সারমর্মটা অনেক গভীর।
তো আপনি যদি অনুগল্পের বিরোধীতা করেন তো আমি একত হতে পারলাম না, দুঃখিত। আমি আপনার লেখার পুরো অর্থ ধরতে পারিনি। যদি লেখক ভালো মানের হন, তিনি এই বিশটি ছোট বাক্যের মধ্যেও অনেক গভীর চিন্তার প্রকাশ করতে পারেন। নাহলে বইমেলায় নতুন নতুন বহু লেখকের বই পেয়েছি, বিশাল গল্প পড়ে আগামাথা কিছুই ধরা যায় না।
অনুগল্প শুধু বাংলায় নয়, সব ভাষাতেই জনপ্রিয়। আমি নিজেও এটার চর্চা করি। আমার ব্লগে এমন একটা গল্প পাবেন আপনি।
যদি ক্ষুদ্র পরিসরে লেখক পূর্ণ ভাব ব্যক্ত করতে না পারেন তবে এটা তাঁর ব্যর্থতা, পরিসরের নয়।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২৬
আতিকুর রহমান ফরায়েজী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করার জন্য। আমি খুব ভালোভাবেই বনফুল কিংবা বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়কে চিনি। তার লেখা গল্পও পড়েছি অনেকগুলো। আপনি মনে বিষয়টা নিয়ে একটু দ্বিধান্নিত আছেন। অণুগল্প এবং এক লাইনের গল্প কখনো একই বিষয় নয়। এক লাইনের গল্প হলো যে গল্প এক লাইনেই শেষ হয়ে যাবে এবং ছয় শব্দের গল্প হলো যে গল্প ছয় শব্দের হবে। আপনি বনুফুলের একটি গল্প দেখান যেগুলো এক লাইনের বা ছয় শব্দের। কিংবা আপনি যে গল্পটি দিয়েছেন সেটিও এক লাইনের বা ছয় শব্দের গল্প নয়। আশাকরি এবার বুঝতে পেরেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:১২
বাকপ্রবাস বলেছেন: এক লাইনের গল্প’ গল্প নয়। সম্পূর্ণ সহমত, এটা গল্প হতে পারেনা, এটার অন্যকোন নাম দেয়া চলে তবে গল্প নয়।