নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রষ্টা ব্যাতীত সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই বদলাই। সেই বদলানোটা অনেক সময় কাঙ্ক্ষিত আবার অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত হয়। তবে এই দু\'য়ের মাঝেই সুখ আর দুঃখ উভয়ই বিদ্যমান।

আতিক রহমান (স্বপ্ন)

আতিক রহমান (স্বপ্ন) › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাত্রী দেখার একদিন

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:১৯

ভাবী আমার রুমে এসে বলল কালকে রেডি থেক জায়গাযেতে হবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম। ভাবী উত্তর না দিয়ে হাসি মিশ্রিত ভাব নিয়ে বলল সেটা গেলেই দেখতে পারবে। এটা বলেই সে চলে গেল আর আমাকে রেখে কৌতুহলের ভিতর।

পরিকল্পনা অনুযায়ী পরেরদিন ১০টা বাজে কৌতুহল জায়গার দিকে রওয়ানা দিলাম। প্রায় ৪০ মিনিট পর আমরা একটি বাড়ির সামনে এসে উপস্থিত হলাম। তারপর আমি ভাবীকে জিজ্ঞাস করলাম এটা কার বাড়ি আর আমরাই বা এখানে কেন? এই প্রশ্নের প্রত্যুত্তরে ভাবী যা বলল তা শুনে আমার অবস্থা একদম মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামীর মত হয়ে গেল। ভাবী হাসি মিশ্রিত মুখে বলল এটা তোমার শ্বশুর বাড়ি মানে হবু শ্বশুর বাড়ি আরকি। আমাদের এখানে আসার উদ্দেশ্য হল তোমার জন্য বউ নির্বাচন করা। আমি পালাতে চাইলাম কিন্তু পারলাম না। কারণ ভাবী ছাড়াও আমার সাথে আরো দু'জন লোক ছিল আর তারা হলেন আমার শ্রদ্ধেয় মাতাপিতা। যদিও তারা আমায় পরাধীনতার শিকল পড়াতে বদ্ধ পরিকর। ভাবীর কথার অবাধ্য হলেও মা বাবার অবাধ্য ছিলাম না। তাই চুপচাপ নিরীহ আসামীর মত শ্বশুর বাড়ি মানে হবু শ্বশুর বাড়িতে ঢুকলাম। বাড়িতে ঢুকেই বুঝতে পারলাম যে সবকিছুই আগে থেকে পরিকল্পিত ছিল। কারণ বাড়িটা বেশ সাজানো গোছানো ছিল। যা সাধারণত কোন বিশেষ সময়গুলাতে করা হয়। শুধু আমি জানতাম না এই ব্যাপারে।

বাড়ির ভিতর যাওয়ার সাথে সাথে বাড়ির কর্তা মানে আমার হবু শ্বশুর অতি উৎসাহের সাথে আমাদের বরণ করে নিলেন। তারপর আমাদেরকে নিয়ে বসালেন বসার ঘরে। সাথে সাথেই কিছু চা বিস্কুট মিষ্টি আমাদের সামনে পরিবেশন করা হল। আমি হাত বাড়িয়ে নিতে গেলাম কিন্তু ভাবী বাধা দিল। তার ব্যাখ্যানুসারে হবু শ্বশুর বাড়িতে হবু জামাইদের এভাবে হাত বাড়িয়ে নেওয়াটা অভদ্রতা। তাই আমি ভদ্রতা রক্ষার্থে চা, বিস্কুট, মিষ্টি থেকে নিজেকে কিছুটা বিরত রাখলাম।

সাধারণ আলাপচারীতার পর বাবা বললেন এটা আমার ছেলে আতিক। ওর জন্যই আমরা মেয়ে দেখতে এসেছি। হবু শ্বশুর মশাই আমার দিকে ঘোরদৃষ্টিপাত করলেন এবং মিষ্টি মিশ্রিত কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন, বাবা তুমি কি কর? আমি তার হঠাৎ করা প্রশ্নে কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়লাম। তাই ভুল করে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বলতে যেয়ে টমেটো ইঞ্জিনিয়ার বলে ফেলেছি। এই টমেটো ইঞ্জিনিয়ারের একটা ইতিহাস আছে। সেটা সুযোগ হলে পরে বলব। তো যা বলছিলাম, শ্বশুর আমার বিস্ময় ভরা চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকালেন। এমন একটা ভাব যেন মঙ্গলগ্রহ থেকে কোন এলিয়েন নিচে নেমে এসেছে তার মেয়েকে বিয়ে করার জন্য।

এমন বিপর্যয়ের মুহুর্তে ভাবী আমার পক্ষ হয়ে মাঠে নেমে গেলেন আমার ভুলকে শুধরানোর জন্য। ভাবী বলতে শুরু করলেন:-

- আঙ্কেল আসলে হয়েছে কি আতিক টমেটো খুব বেশি পছন্দ করে। তাই আমরা ওকে ক্ষ্যাপানোর জন্য টমেটো ইঞ্জিনিয়ার বলে ডাকি। তাছাড়া ও বিয়ের জন্য আগে কখনো মেয়ে দেখতে যায়নি, এটাই ওর প্রথম মেয়ে দেখা। তাই সে একটু অস্বস্তি বোধ করছে। আর তাই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বলতে যেয়ে টমেটো ইঞ্জিনিয়ার বলে ফেলেছে।
-ও আচ্ছা!

আমার হবু শ্বশুর মশায়ের ও আচ্ছা কথাটা শুনে বুঝতে পারলাম যে ভাবীর উত্তরে তিনি পুরোপুরি সন্তুষ্ট হননি। কিন্তু তিনি কিছু বলতে পারছিলেন না। পাত্রপক্ষ বলে কথা, অসম্মান করা যাবেনা। ঠিক এই মুহুর্তে মা বলে উঠলেন, আপনার মেয়ে কোথায়? তাকে তো এখনো দেখলাম না।
মেয়ে দেখার কথা শুনে হবু শ্বশুর মশাই টমেটো ইঞ্জিনিয়ারের কথাটা সামনে না বাড়িয়ে মেয়েকে আমাদের সামনে নিয়ে আসার জন্য ডাকলেন। ডাকার মিনিট পাঁচেক পরেই লম্বা গোমটা টেনে এক বালিকা হাজির হল। সাথে আছে তার ভাবী। আমি কানে কানে আমার ভাবীকে বললাম মেয়ে আমার পছন্দ হয়ছে। ভাবী একথা শুনে আমার দিকে এমনভাবে তাকাল যেমনটা ক্ষুধার্ত বাঘ কোন শিকার পেলে তাকায়। ফিসফিস করে ভাবী বলতে লাগল
- মেয়ে তো এখনো দেখলেই না পছন্দ করলে কেমন করে?
- আরে! তুমি কি কানা নাকি? চোখের সামনে এমন একটা চাঁদমুখ দাঁড়িয়ে আছে আর তুমি বলছ এখনো দেখিনি!
- গাধা! তুমি যাকে দেখছ এটা এই বাড়ির বউ আর যে লম্বা গোমটা টেনে দাঁড়িয়ে আছে তাকে দেখতেই আমরা এসেছি।
-ধুরু! এত তাড়াহুড়া কিসের ছিল? আমার জন্য অপেক্ষা করতে পারলনা?

এমন সময় মা বলল, মামনি তুমি আমার পাশে এসে বস। পাশে বসিয়ে মা ঘোমটাটা সরিয়ে দিলেন। তারপর মা নিজে নিজেই বলে উঠলেন মাশাল্লাহ। একথা শুনে আমি বুঝলাম পাত্রী মায়ের পছন্দ হয়েছে। আমি একটু আড় চোখে তাকাতেই ভাবি বলে উঠল দেখার জন্য সারাজীবন পড়ে আছে, এখন ভদ্রভাবে বসে থাক। আমি বুঝলামনা আড় চোখে দেখার ভিতর অভদ্রতার কি আছে! বুঝা না বুঝার ভিতর অবাক হয়ে গেলাম যখন শুনলাম তার নাম জুঁই। আলোচনা যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখন আমার মহান ভাবীর সহযোগিতায় আলাদাভাবে কথা বলার একটা সুযোগ পেয়ে গেলাম। ভাবীকে মহান কেন বলছি সেটা বুঝার জন্য গল্পটা পড়তে থাকুন।

এই জুঁই নামটা শুনার পর থেকেই আমার মস্তিষ্কে একটা স্মৃতি নাড়াচাড়া করতে লাগল। সেই স্মৃতিটাই জুঁইকে দেখার আগ্রহ বাড়িয়ে দিল। আমি জুঁই এর সাথে একটা রুমে ঢুকলাম। ঢুকার সাথে সাথেই সে দরজাটা বন্ধ করে আমার দিকে ঘুরে তাকাতেই আমি প্রচণ্ড রকমের ধাক্কা খেলাম। সেই ধাক্কাটা মানসিক ধাক্কা ছিল, শারীরিক না। কারণ আমার স্মৃতিটা সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল। হ্যা এই মেয়ের কাছে মাসখানেক আগে প্রেমের প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলাম। সে তার ক্ষমতাবলে কিঞ্চিত পরিমাণ না ভেবে আমার প্রস্তাবটা না ভেবে প্রত্যাখ্যান করে। আমিও এসব ভুলে গিয়েছিলাম কিন্তু কিভাবে যেন আজ আবার সামনে এসে উপস্থিত। জুঁই এর কথা শুনে স্মৃতি থেকে বেরিয়ে এলাম। সে বলতে লাগল
- প্রেমের প্রস্তাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এখন সোজা দলবল নিয়ে আমার বাসায় চলে এসেছেন বিয়ে করার জন্য। আপনি তো খুব সাংঘাতিক লোক।
- দেখুন আমি জানতাম না যে এটা আপনার বাড়ি। আর পাত্রী দেখার কথা আমাকে আগে বলা হয়নি। এখানে এসেই এই পরিকল্পনা স্বমন্ধে জানতে পারি।
- আমি এত কিছু জানিনা, আপনি এক্ষুণি গিয়ে বলুন যে আপনি আমাকে বিয়ে করছেননা।
- আমি কেন বলব? আপনার পছন্দ হয়না আপনি গিয়ে বলেন। তাছাড়া আপনাকে তো আমার অনেক আগেই পছন্দ হয়ে আছে।
- দেখুন আপনার মত ক্যাঙ্গারু টমেটো ইঞ্জিনিয়ারকে আমি বিয়ে করতে পারবনা।
- আমি টমেটো ইঞ্জিনিয়ার না, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তখন ভুল করে মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছিল। তাছাড়া আপনি নিজে কি?
- কি আমি কি?
- আপনি একটা চলন্ত বটগাছ। দেখলে মনে হয় সারাদিন খাওয়ার উপরেই থাকেন। আপনাকে যে বিয়ে করবে সে তো খাওয়াতেই খাওয়াতেই ফুতুর হয়ে যাবে।
- তাহলে তো ভালই হল, যান গিয়ে না করে দেন।
- এখন আর সেটা সম্ভব না।
- কেন? পাত্রী দেখতে এসেছেন, বিয়ে তো হয়নি।
- হয়নি কিন্তু হয়তে কতক্ষণ। তাছাড়া ছোটবেলাতে আমার একটা শখ ছিল যে আমাদের বাড়িতে একটা বটগাছ থাকবে। সেখানে জিন পরীরা বাসা বাঁধবে। এখন সময় এসেছে সুযোগের সঠিক ব্যাবহার করার।
- আপনি খুব বেশি কথা বলেন। ফালতু!
- হবু বরকে এভাবে বলতে হয়না। এখন তাড়াতাড়ি বাহিরে চলেন কাজী ডাকতে হবে।
- শুনুন! আমার কিছু কথা আছে। আগে আপনাকে সেগুলো শুনতে হবে তারপর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েন। আর আমার মনে হয়না কথাগুলো শুনার পর আপনি বিয়ে করতে রাজি হবেন।
- তাহলে তো শুনতেই হয়। তাড়াতাড়ি বলে ফেলেন, বিয়ের জন্য কাজী ডাকতে হবে।
- আমি একজন ধর্ষিতা।
- কি!!!

- জ্বী! আপনি ঠিকই শুনেছেন। আমি একজন ধর্ষিতা। ধর্ষিতাদের সামাজিক মর্যাদা থাকেনা। তারা অপরাধী না হলেও সমাজ তাদের দিকেই আঙ্গুল তোলে। হউক সে সুন্দরী অথবা নির্যাতিত। তাদের হাত ধরার মত লোকের বড়ই অভাব। না জেনে সবাই ভালবাসার হাত বাড়াই। সত্য জানার পর সেই হাত অদৃশ্য হয়ে যায়। আপনার আগেও অনেকেই আমার দিকে ভালবাসার হাত বাড়িয়েছে। তাদের প্রত্যেকেই না জেনে হাত বাড়িয়েছিল। যখন জানতে পারত তখনই তাদের ভালবাসা বাষ্প হয়ে অদৃশ্য হয়ে যেত।
- আপনি মিথ্যা বলছেন।
- আমি কেন মিথ্যা বলব? মিথ্যা বলে আমার কি লাভ?
- আপনি বিয়েটা ভাঙতে চান। আর এটাই আপনার লাভ।
- আপনি এত বোকা কেন? আমার নিরবতা, আমার উদাসীনতা, আমার কথার ধরণ দেখেও আপনি বুঝতে পারেন না আমি সত্যি না মিথ্যা বলছি?
- মানুষ যখন কঠিন বাস্তবতার সামনে দাঁড়ায় তখন সে দিশেহারা হয়ে যায়।
- তার মানে আপনি এখন দিশেহারা! জানতাম এটাই হবে। সব পুরুষই চাই তার স্ত্রী শুধু তারই হবে, সে নিজেকে পবিত্র রাখবে, নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখবে। অতীত, বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতে সে ছাড়া দ্বিতীয় কোন পুরুষের অস্তিত্ব তার স্ত্রীর মাঝে থাকুক এটা সে চাইনা। আপন তার ব্যাতিক্রম হবেন কেন! আমার মনে হয় এবার আপনি নিজেই এই বিয়ে থেকে সরে দাঁড়াবেন। আর কিছু বলার না থাকলে এবার বাহিরে চলুন। সবাই অপেক্ষা করছে।

সবগুলো কথা শুনার পর আমি নির্বাক হয়ে পড়ি। আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলামনা কি করব। আমি কিছুক্ষণ ভাবলাম এবং একটা সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি বাহিরে আসার সাথে সাথেই ভাবী বলল বিয়ের আগেই এত কথা! বিয়ের পর কি হবে? আমি কোন উত্তর দিলাম না। মা আমার নিরবতা দেখে বুঝতে পারছিলনা মেয়ে আমার পছন্দ হয়েছে কি না। তাই তিনি আস্তে করে জিজ্ঞেস করলেন: মেয়ে পছন্দ হয়েছে? কিন্তু আমি যা বললাম মা তা ভাবতেও পারিনি। আমি মা'কে আস্তে করে বললাম বিয়েটা আজকে হয়ে গেলে কেমন হয়? আমি ভদ্র ছেলে তাই অভদ্রভাবে বলতে পারিনি বিয়েটা আজকেই হতে হবে। এটা শুনার পর মায়ের অজ্ঞান হওয়ার মত অবস্থা কিন্তু তিনি অজ্ঞান হলেন না। মা বিয়ের কথা বাবাকে বললেন কিন্তু তিনি সম্মতি দিলেন না।
আমার নৌকা যখন প্রায় ডুবুডুবু করছে তখনই ভাবী আমার নৌকার মাঝির ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। ভাবী মা বাবাকে রাজী করালেন। তারপর উভয়পক্ষের সম্মতিতে জুঁই এর সাথে আমার বিয়েটা হয়ে গেল।

প্রতিটা নতুন বউ বাসর ঘরে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। জুঁইও আমার অপেক্ষায় বসেছিল। আমি ঘরে ঢুকতেই সে একটু নড়েচড়ে বসল। আমি তার পাশে গিয়ে বসলাম কিন্তু সে দূরে সরে গেল এবং বলল আমাকে বিয়ে করাটা আপনার উচিৎ হয়নি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম না কেন তারপরও সে বলতে থাকল, আমি কখনওই কারো করুণার পাত্র হতে চায়নি। আপনি কেন আমার প্রতি করুণা দেখালেন? তার কথাগুলো শুনার পর আমি শুধু এতটুকুই বললাম:

প্রথম দেখায় হয়েছিলাম দিশেহারা
বলেছিলাম মনের কথা
কিন্তু তুমি দাওনি সাড়া।
আজ যখন বাস্তবতার সামনে দাঁড়ালাম
করুণা নয়, ভিক্ষে নয়
আমার সবটুকু ভালবাসাটাই উজাড় করে দিলাম।

তাকে উদ্দেশ্য করে এত সুন্দর একটা কবিতা শুনালাম এতে সে আনন্দিত না হয়ে বলল
- আপনি হয়ত এখন আবেগের বশবর্তী হয়ে মেনে নিয়েছেন অথবা মন থেকেই মেনে নিয়েছেন কিন্তু আপনার মা বাবা, ভাই বোন, ভাবী তারা কি মেনে নেবে?
- সবাইকে কি তোমার সবকিছু জানতে হবে? আজ থেকে আমি তোমার স্বামী, তুমি আমার স্ত্রী। অতীতে তুমি যে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছ সেটার জন্য তুমি অপরাধী না। আর যে অপরাধ তুমি করনি সেটার শাস্তি তুমি পাবে কেন? নিজেকে কখনো ধর্ষিতা জুঁই মনে করবেনা। আজ থেকে তুমি আতিকের জুঁই। এটাই তোমার বর্তমান পরিচয় আর এটাই হবে তোমার ভবিষ্যৎ পরিচয়। ভুল করেও অতীতের কাল অধ্যায় মুখে আনবেনা।

প্রায় এক বছর পর আমাদের প্রথম সন্তান হল। জুঁই এর বাবা মানে আমার শ্বশুর আমাদের সদ্য ভূমিষ্ঠ মেয়েকে যখন প্রথমবার দেখলেন তখন তার প্রথম উক্তি ছিল, টমেটো ইঞ্জিনিয়ারের মেয়ে তো টমেটোর মতই লাল হয়েছে। তা নাম কি টমেটোই রাখবে নাকি? এই কথা শুনে সবাই হাসতে লাগল।

আমি আর জুঁই আর আমাদের মেয়ে ইকরাকে নিয়ে ভালই চলছে টমেটো ইঞ্জিনিয়ারের টমেটো পরিবার। জুঁই ভুলে গেছে তার অতীত। সে এখন আর নিজেকে ধর্ষিতা বলেনা। সে নিজেকে এখন ইকরার মা বলেই পরিচয় দেই।

#কিছু_কথা
জীবনে অনেক কঠিন মুহূর্ত আসে। অনেক সময় এই কঠিন মুহূর্তে আমরা বিচলিত হয়ে পড়ি। যেটা আমাদের অমঙ্গল ছাড়া কিছু দেই না। এই সময়টাতে যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে ঘুড়ে দাঁড়ানোর দৃঢ় প্রত্যয়, সাহস আর আশেপাশের মানুষগুলির সহযোগিতা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.