নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০০৬ সালে সিডনির এ্যাশফিল্ড পার্কে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক আমাদের শহীদ মিনারের আদলে স্থানীয় সকল ভাষাভাষীর উপযোগ্য এবং, বিশ্বায়নের সমন্বয় করে বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয় যা বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে এবং সেই থেকে এটি অস্ট্রেলিয়া প্রাবাসী বাংলাদেশীদের কাছে গর্বের প্রতীক হয়ে ওঠে । কিন্তু নির্মানের এক যুগ না পেরতেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ তার নাম হারাতে বসেছে। এখন খোদ একুশে একাডেমী সহ প্রাবাসী বিভিন্ন সংগঠন, কমিউনিটি নেতা, লেখক এমনকি সাংবাদিকরা ও এটিকে শহীদ মিনার নামে প্রচার করছে। তারই প্রমান মেলে এই বছর বাংলাদেশ মেডিকেল সোসাইটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে তাদের প্রচার পত্রে। যেখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতি সৌধের পরিবর্তের তারা লিখেছে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ আর স্থান লিখছে এ্যাশফিল্ড শহীদ মিনার প্রাঙ্গন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মেডিকেল সোসাইটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস'র প্রচার পত্র
ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার অমর একুশে উদ্যাপনের প্রচার পত্রে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধের পরিবর্তে তারা ও লিখেছে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ, স্থান লিখছে এ্যাশফিল্ড পার্ক শহীদ মিনার ক্যাম্পাস।
ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার অমর একুশে উদ্যাপনের প্রচার পত্র
ফলে অনেক নতুন প্রবাসীই এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধের নাম জানে না ফলে এটি ও তাদের কাছে শহীদ মিনার নামেই পরিচিতি পাচ্ছে। যার ফলস্রুতিতে গুনগত তাৎপর্য বিশ্লেষণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধের ঐতিহাসিক ভিত্তি এবং সকল ভাষাভাষীর জন্য আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন হারাতে চলেছে।
অথচ ২০০৬ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২১ শে বই মেলা উপলক্ষে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার ম্যাগাজিনে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রফেসর ডঃ ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ , বাংলাদেশের সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা , এবং অস্ট্রেলিয়া নিযুক্ত বাংলাদেশের সেই সময়কার হাই কমিশনার আশরাফ-উদ-দৌলা বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ প্রতিষ্ঠার জন্য একুশে একাডেমী সহ মাতৃভাষাপ্রেমি প্রবাসীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দেন।
সেখানে তারা সকলে একে বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতি সৌধ হিসাবে অবিহিত করেন। একুশে একাডেমীর সেই সময়কালীন সভাপতি নির্মল পাল ও সাঃ সম্পাদক ডঃ সুলতান মাহমুদ তাদের বাণীতেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতি সৌধ হিসাবেই বর্ননা করছেন।
এছাড়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনার নকশার ব্যাখা ও ভিন্ন। শহীদ মিনারের স্থাপতি হামিদুর রহমান তাঁর মূল নকশার ব্যাখা দিয়ে বলেন, 'স্তম্ভগুলো যথাক্রমে মাতৃভাষা, মাতৃভূমি তথা মা ও তাঁর শহীদ সন্তানের প্রতীক। অর্ধবৃত্তাকারে মা তাঁর শহীদ সন্তানের নিয়ে দণ্ডায়মান, মা অনন্তকাল ধরে সন্তানদের রক্ষা করেছেন, যাঁরা তাঁর মর্যাদা রক্ষার জন্য নিজেদের বিসর্জন দিয়ে গেছেন আর সেই জন্য গৌরবান্বিত মা তাঁর সন্তানদের জন্য দোয়া করছেন।
সন্তানদের আত্মত্যাগের মহিমায় মা ঝুঁকে পড়েছেন একটু স্নেহে,আর চারটি সন্তানের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর সন্তানদের দেখতে পাচ্ছেন। '
অন্য দিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতি সৌধ একুশের চেতনা ও বৈশ্বিক একটি ধারনার উপর প্রতিষ্ঠিত । নকশার ইংরেজী অংশটুক পাঠকদের জন্য হবহু তুলে ধরা হলো
International Mother Language Day Monument
Design Specification
The design of the first IMLD Monument is based on
- The International Mother Language Day, 21st February Concept
- Focusing on Mother Language conservation
- Ekushe Academy Australia’s mission to promote Mother language conservation awareness by
upholding the dignity of the Ekushe Concept & the sacrifice of Martyrs among all linguistic
people.
- Target of reaching 6 billion people
The size/shape of the monument considered the limitations, restrictions and obligations of heritage
characteristics recommended by the government and existing Memorials at Ashfield Park.
Specification Details:
- To signify 6 billion people both foundations base and height are respectively: 3m X 3m, & 3m.
- The Base Slab is 1952mmX 1952mm to signify 1952, on which the International Mother
Language stands on. The main Stone will be at the centre of the slab indicating the International
Mother Language Day Concept holding on to the foundation basis of 1952.
- The main stone is Slate Stone, has been selected to symbolise the 1st writing media of language
learning, guiding human beings towards life-term development in literature and education. The
Slate width of 900mm relates 6 billion people in the world.
- The golden plated imprint of Shahid Minar ‘ICON’ will be at the lower part of the front side of the
stone. This will represent our strength and lesson on which the International Mother Language
Day Concept. Below the Shahid Minar, “Amar Bhaiyer Rokte Rangano Ekushe February Ami Ki
Bhulite Pari” will be written and below this “We will remember the Martyrs of 21st February” will
be written to express a commitment towards Mother Language conservation.
- Above the Imprint of Shahid Minar five Alphabets from five Languages will be written in the
form of stone cutting to symbolise the deepest respect to mother language for sustainable
conservation. The Bangla will be at the top, signifying it as the leading language of the
internationally recognised language movement. The five alphabets from each language have been
selected to represent people from five continents.
- To represent globalisation, a Globe will be placed at the top facing Bangladesh and Australia to
signify the origin of the IML Day and the point of this Language Conservation movement. The
globe will be surrounded by “Conserve Your Mother Language” message of the Academy. The
size of the Globe will also correspond 6 billion people to whom the statement is addressed. The
position of the globe beyond the stone will signify the unlimited extended future of the
organization’s message, ‘Conserve your Mother Language’. The rest of the globe will be placed in
the other side of the stone with the message ‘Conserve your Mother Language’ below the globe.
- Five alphabets from seven other languages will be written bellow the message opposite the five
languages in the front.
- The historical information along with the Martyr’s names, date, year and location will by written
underneath the alphabets opposite of the Shahid Minar in the front.
- The Historical information of UNESCO resolution will also be written below the above
information.
- Below the UNESCO resolution, the recognition of the Founder, Unveiling etc will be recorded.
- All other recognitions will be placed on a separate plaque adjacent to the Monument.
তথ্য সূত্রঃMonuments of Australia , একুশে একাডেমি, সিডনি বাংলা
২০১৮ সালের বই মেলা ও প্রভাত ফেরি উপলক্ষে একুশে একাডেমির প্রকাশ করা পোষ্টার
সবচেয়ে লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো ২০০৬ সালে যে স্মৃতি সৌধকে একুশে একাডেমি অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতি সৌধ হিসাবে সারা বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দিল সেই তারাই ২০১৮ সালে এসে বই মেলা ও প্রভাত ফেরি উপলক্ষে প্রকাশ করা পোষ্টার থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতি সৌধ বাদ দিয়ে শুধু শহীদ মিনার বলে উল্লেখ করে। তাহলে কি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতি সৌধ এখন থেকে শহীদ মিনার নামেই পরিচিত হবে ? এই ব্যাপারে একুশে একাডেমি অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সভাপতি ডাঃ আব্দুল ওহাবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ও জানান এটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ তবে যেহেতু একুশ ও শহীদ মিনার ধারনা থেকে এটি এসেছে তাই আবেগের জায়গা থেকে অনেকে একে শহীদ মিনার বলে থাকে। ২০১৮ সালের বই মেলা ও প্রভাত ফেরি উপলক্ষে প্রকাশ করা পোষ্টার থেকে তাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতি সৌধ বাদ দেওয়াকে আনিচ্ছাকৃত বলে উল্লেখ করেন।
তবে এই স্মৃতিসৌধের প্রধান রুপকার নির্মল পাল বেশ হতাশা নিয়ে এই প্রতিবেদক কে বলেন “আমরা উদার হতে পারছি না, ফলে আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য সৃষ্টিকারী এই স্থাপত্য যা শহীদ মিনারের চেতনার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত তা আগলে রেখে অভিবাসী হয়েও দেশীয় ধারনার সংকীর্ণতা নিয়ে চলছি ১৯৯৯ এর পূর্ব আবস্থান নিয়েছি। এর ফলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়াতে সকল ভাষাভাষী তথা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে যে গর্ব আমাদের হয়েছে তার স্বীকৃতি স্বরুপ তথা স্থানীয় প্রশাসন এ্যাশফিল্ড কাউন্সিল থেকে যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধটি পেয়েছি সেই সকল অর্জন ম্লান হতে চলছে।
অন্যদিকে নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে অধুনালুপ্ত এ্যাশফিল্ড কাউন্সিলের মাসিক সভায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে অন্যান্য ভাষাভাষীর অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় হতাশা ব্যক্ত করা হয়।
লেখকঃ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।