নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আইয়ুব মিশর এবং সিরিয়ার প্রথম সুলতান ( সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে ) ২য় পর্ব

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৪৯


শিরকুহ মিশরে শাওয়ার প্রথম আমালরিকের সাথে ক্ষমতার লড়াইয়ে জড়িয়ে যান । তাতে শাওয়ার আমালরিকের কাছে সাহায্য চান । জানা যায় ১১৬৯ সালে শাওয়ার সালাহউদ্দিন কর্তৃক নিহত হয় । তার পরের বছর শিরকুহ মৃত্যুবরণ করেন ।এবং নুরউদ্দিন শিরকুহর জন্য উত্তরাধিকারী বাছাই করেন । কিন্ত আল আদিদ সালাহউদ্দিনকে শাওয়ারের স্থলে উজির পদে নিয়োগ করেন । শিয়া খলিফার অধীনে একজন সুন্নিকে উজির মনোনীত করার কারণ নিয়ে একাধিক মত বেধ থাকে । ইবনে আল আসিরের দাবি করেছেন যে খলিফার উপদেষ্টারা সালাহউদ্দিনের চেয়ে ছোট বা দুর্বল কেউ নেই এবং একজন আমিরও তার আনুগত্য বা তার অধীনতা মানে না এমন পরামর্শ দেওয়ার কারণে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় । এ মতানুযায়ী কিছু মতবিরোধের পর অধিকাংশ আমির তাকে মেনে নেন । আল আদিদের উপদেষ্টারা সিরিয়া ভিত্তিক জেনগি ধারাকে ভেঙে দেয়ার উদ্দেশ্য পোষণ করছিলেন । আল ওয়াহরানি লিখেছেন যে সালাহউদ্দিনের পরিবারের সুনাম এবং তার সামরিক দক্ষতার জন্য তাকে নিয়োগ দেন । ইমাদউদ্দিন আল ইসফাহানির লিখেছেন যে শিরকুহর জন্য সংক্ষিপ্তকালের শোকের পর জেনগি আমিররা সালাহউদ্দিনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাকে উজির হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য খলিফাকে চাপ দেয় । যদিও বিদ্রোহী মুসলিম নেতাদের কারণে অবস্থা জটিল হয় । বেশ কিছু সিরিয়ান শাসক মিশরীয় অভিযানে অবদানের জন্য সালাহউদ্দিনকে সমর্থন করে । আমির হওয়ার পর তিনি প্রভুত ক্ষমতা এবং স্বাধীনতা অর্জন করলেও পূর্বের চেয়ে বেশি পরিমাণে আল আদিদ নুরউদ্দিনের মধ্যে আনুগত্যের প্রশ্নের সম্মুখীণ হন । সে বছরের পরবর্তীতে মিশরীয় সেনাদের একটি দল এবং তার আমিররা সালাহউদ্দিনকে হত্যার চেষ্টা চালান । কিন্তু তার প্রধান গোয়েন্দা আলি বিন সাফওয়ানের গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে তা সকলে জেনে যান । ষড়যন্ত্রকারী নাজি ফাতেমীয় প্রাসাদের বেসামরিক নিয়ন্ত্রণকর্তা মুতামিন আল খিলাফাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে তাকে হত্যা করা হয় । তারপরের দিন ফাতেমীয় সেনাবাহিনীর রেজিমেন্টের ৫০০০০ কালো আফ্রিকান সেনা সালাহউদ্দিনের শাসনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মিশরীয় আমিরের সাথে বিরোধীতা করেন এবং বিদ্রোহে করেন । ২৩ আগস্ট সালাহউদ্দিন এই উত্থান বিনাশ করে । পরে কায়রো থেকে আর কোনো সামরিক হুমকি আসেনি । ১১৬৯ সালের শেষের দিকে নুরউদ্দিনের পাঠানো সাহায্যের মাধ্যমে দামিয়াতের কাছে বৃহৎ ক্রুসেডার বাইজেন্টাইন সেনাবাহিনীকে পরাজিত করা হয় । তারপর ১১৭০ সালে নুরউদ্দিন সালাহউদ্দিনের পিতাকে সালাহউদ্দিনের অনুরোধে এবং বাগদাদের খলিফা আল মুসতানজিদের অনুপ্রেরণায় মিশরে পাঠানো হয় । আল মুসতানজিদ প্রতিপক্ষ খলিফা আল আদিদকে উৎখাত করতে মনস্থির করেন । সালাহউদ্দিন মিশরে তার অবস্থানকে শক্ত করে এবং সমর্থন ঘাটি বিস্তৃত করে । তিনি ওই অঞ্চলে তার পরিবারের সদস্যদের উচ্চপদ প্রদান করেন । মালিকি মাজহাবের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে সালাহউদ্দিন আদেশ দেন । সেই সাথে শাফি মাজহাবের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরী করা হয় ।

১১৭০ সালে মিশরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পর সালাহউদ্দিন অবরোধের মাধ্যমে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন । আমালরিক গাজা থেকে তার টেম্পলার গেরিসন সরিয়ে নেয় যাতে দারুম রক্ষা করতে সহায়তা পাওয়া যায় । কিন্তু সালাহউদ্দিন তার সেনাদের সরিয়ে নেয় এবং গাজার দিকে এগিয়ে আসেন । শহরের দুর্গের বাইরের অঞ্চল ধ্বংস করে দেওয়া হয় । দুর্গে প্রবেশ করতে না চাওয়ায় অধিবাসীদের অধিকাংশকে হত্যা করেন । সে বছরের ঠিক কবে এলিয়াতের ক্রুসেডার দুর্গ তিনি কবে আক্রমণ ও অধিকার করেন তা স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি । এটি আকাবা উপসাগরের একটি দ্বীপের উপর অবস্থিত ছিল । এটি মুসলিম নৌবাহিনীর যাতায়াতে হুমকি ছিল না । কিন্তু ক্ষুদ্র মুসলিম নৌবহরকে তা ব্যতিব্যস্ত করে রাখে ফলে সালাহউদ্দিন এটি দখল করে । ইমাদউদ্দিনের মতে ১১৭১ সালের জুন মাসে নুরউদ্দিন সালাহউদ্দিনকে মিশরে আব্বাসীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠার কথা বলে চিঠি লেখেন । দুই মাস পর শাফি ফকিহ নাজমুদ্দিন আল খাবুশানির উৎসাহে সালাহউদ্দিন তা সম্পন্ন করে । ফকিহ নাজমুদ্দিন শিয়া শাসনের বিরোধী ছিলেন । কয়েকজন মিশরীয় আমির এর ফলে নিহত হয় । আল আদিদকে বলা হয় যে তাদেরকে বিদ্রোহের কারণে হত্যা করা হয়েছে । তারপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন । একটি সূত্রে পাওয়া যায় তাকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল । অসুস্থ অবস্থায় তিনি তার সাথে দেখা করার জন্য সালাহউদ্দিনকে জানান যাতে তার সন্তানদের দেখাশোনার অনুরোধ করতে পারেন । সালাহউদ্দিন তা প্রত্যাখ্যান করেন এই আশংকায় যে এটি আব্বাসীয়দের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হবে । কিন্তু আল আদিদ কী চাইছিলেন তা জানার পর তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন । পাঁচ দিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর আল আদিদ মৃত্যুবরণ করে । কায়রো এবং ফুসতাতে আব্বাসীয় খলিফার নামে খুতবা পাঠ করা হয় এবং আল মুসতাদিকে খলিফা হিসেবে ঘোষণা করা হয় ।২৫ সেপ্টেম্বর সালাহউদ্দিন জেরুজালেম রাজ্যের মরু দুর্গ কেরাক এবং মন্ট্রিয়ালের উদ্দেশ্যে কায়রো ত্যাগ করেন । সিরিয়ার দিক থেকে সেসময় নুরউদ্দিনের আক্রমণ করার কথা ছিল । তার অনুপস্থিতিতে মিশরের ভেতরে ক্রুসেডার নেতারা ভেতর থেকে আক্রমণ করার জন্য বিশ্বাসঘাতকদের মধ্যে সমর্থন বৃদ্ধি করছে এবং বিশেষত ফাতেমীয়রা তাকে পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনতে চায় এমন সংবাদ পাওয়ার পর মন্ট্রিয়াল পৌছার পূর্বে সালাহউদ্দিন কায়রোতে ফিরে আসেন । তার ফলে নুরউদ্দিন একা হয়ে পড়েন ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৯

ভাচুয়াল ফন্ট বলেছেন: ভালো পোস্ট

১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:২৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ শুভেচ্ছা রইল ।

২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:১২

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ
পরেরটির প্রতীক্ষায় রইলাম,
প্রিয়তে।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:০১

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ দিয়েছি একবার গুরে যাণ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.