নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আইয়ুব মিশর এবং সিরিয়ার প্রথম সুলতান ( সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে ) ৩য় পর্ব

১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:২৪


আইয়ুব মিশর এবং সিরিয়ার প্রথম সুলতান ( সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে ) প্রথম পর্ব

আইয়ুব মিশর এবং সিরিয়ার প্রথম সুলতান ( সালাহউদ্দিন ইউসুফ ইবনে ) ২য় পর্ব
১১৭৩ সালের গ্রীষ্মে একটি নুবিয়ান সেনাবাহিনী আসওয়ান অবরোধের জন্য আর্মেনীয় উদ্বাস্তুসহ এগিয়ে আসে । শহরটির আমির সালাহউদ্দিনের সহায়তা চান এবং সালাহউদ্দিনের ভাই তুরান শাহর অধীনে তাদের জন্য সাহায্য পাঠান । এরপর নুবিয়ানরা চলে যান আর ১১৭৩ সালে আবার ফিরে আসেন তবে আবারো তাদের ফিরিয়ে দেন । সেসময় মিশরীয় সেনারা আসওয়ান থেকে অগ্রসর হন এবং নুবিয়ার শহর ইবরিম অধিকার করেন । সালাহউদ্দিন তার শিক্ষক এবং বন্ধু নুরউদ্দিনকে ৬০০০০ দিনার চমৎকার প্রণ্য কিছু রত্ন, উৎকৃষ্ট জাতের গাধা এবং একটি হাতি উপহার হিসেবে পাঠিয়ে দেন । আর এসব দামেস্কে পাঠানোর সময় সালাহউদ্দিন ক্রুসেডার এলাকা আক্রমণের সুযোগ পান । তিনি মরুভূমির দুর্গের উপর আক্রমণ চালাননি । কিন্তু ক্রুসেডার অঞ্চলে বসবাসরত মুসলিম বেদুইনদের সেখান থেকে সরিয়ে আনেন যাতে ফ্রাঙ্করা তাদের কাছ থেকে কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা না নিতে পারেন ।

১১৭৩ সালের ৩১ জুলাই সালাহউদ্দিনের পিতা একটি ঘোড়া দুর্ঘটনায় আহত হন । এবং ৯ আগস্ট তিনি মারা যান । ১১৭৪ সালে সালাহউদ্দিন তুরান শাহকে ইয়েমেন জয় ও এর এডেন বন্দর আইয়ুবী শাসনের অন্তর্গত করার জন্য পাঠান ।১১৭৪ সালের মার্চে নুরউদ্দিন একটি ভূমিকম্পের পর বাগদাদে ফিরে আসেন । অনেক ঐতিহাসিকদের মতে এটি ছিল ইতিহাসের অন্যতম এক ভয়াবহ ভূমিকম্প । নুরউদ্দিন শাসক হিসেবে বিপর্যয়ের খবর শোনার পর ফিরে আসেন । তার কিছু শত্রু তার অনুপস্থিতির সুযোগ নিতে থাকেন । যার কারনে সে ফিরে আসায় তার উপর প্রভাব ফেলে । এর পর থেকে তার সমস্ত মনোযোগ জনগণের উপর ছিল যার ফলে তিনি বিশ্বাসঘাতক এবং হাসান সাহাবর দল যাদেরকে ক্রুসেডাররা সমর্থন করত তাদের কাছ থেকে তার প্রতি হুমকির কথা উপেক্ষা করেন । এবং ১১৭৪ সালে এপ্রিলের শেষের দিকে বিষপ্রয়োগের ফলে গলায় ব্যথা অনুভব করার পর থেকে সমস্যার প্রথম সূত্র পাওয়া যায় । তার পরে চিকিৎসকদের অনেক প্রচেষ্টায় নুরউদ্দিন ১১৭৪ সালে ১৫ মে মৃত্যুবরণ করেন ।

কিছু শক্তিশালী অভিজাত ব্যক্তির দল নুরউদ্দিনের ক্ষমতা তার এগারো বছর বয়সী পুত্র আস সালিহ ইসমাইল আল মালিকের উপর অর্পণ করেন । তার মৃত্যুর ফলে সালাহউদ্দিন ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে তার শক্তিশালী মিত্র হারিয়ে ফেলেন । সালিহর কাছে লেখা চিঠিতে তিনি জানান যে তিনি তার শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন এমনকি তারা যদি মুসলিম দাবিও করে যদিনা তিনি ও তার সমর্থকরা নুরউদ্দিনের নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে ক্রুসেডারদের সাথে মিত্রতা থেকে বিরত থাকেন । নুরউদ্দিনের মৃত্যুর পর সালাহউদ্দিন কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হলেন । তিনি মিশর থেকে ক্রুসেডারদের উপর আক্রমণ করতে পারতেন অথবা সিরিয়ায় সালিহর কাছ থেকে আমন্ত্রণ লাভ করার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারতেন । এছাড়াও বিদ্রোহীদের হাতে পড়ার আগেই তিনি সিরিয়াকে তার শাসনের অংশে পরিণত করতে পারতেন । কিন্তু ইতিপূর্বে তার প্রভুর অধীন ছিল অঞ্চলে হামলা করলে তা তার অনুসৃত ইসলামি বিধানের লঙ্ঘন হতে পারে এবং এই ঘটনা তাকে একজন প্রতারক হিসেবে তুলে ধরতে পারে যা ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাধা তৈরি করবে তিনি এমন আশংকা করেন ।

তিনি দেখতে পান যে সিরিয়া অধিকার আদায় করার জন্য তাকে হয় সালিহর কাছ থেকে আমন্ত্রণ পেতে হবে বা তাকে সাবধান করতে হবে যা ক্রমবর্ধমান নৈরাজ্য ক্রুসেডারদের তরফ থেকে হামলার আশংকা তৈরী করবে । সালিহ যখন আগস্টে আলেপ্পোতে চলে যান তখন শহরের আমির ও নুরউদ্দিনের দক্ষ সেনাদের প্রধান গুমুশতিগিন তার উপর অভিভাবকত্ব দাবি করেন । তিনি দামেস্ক থেকে শুরু করে সিরিয়া এবং জাজিরাতে তার সকল বিরোধীকে পদচ্যুত করার প্রস্তুতি নিলেন । এই জরুরি অবস্থায় দামেস্কের আমির মসুলের দ্বিতীয় সাইফউদ্দিন গাজিকে সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠান । কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন । এর ফলে সালাহউদ্দিনের কাছে সাহায্য চাওয়া হয় এবং তিনি তা প্রদান করেন । সালাহউদ্দিন ৭০০ বর্শাধারী ঘোড়সওয়ার নিয়ে যাত্রা করেন । কেরাক পার হয়ে তিনি বুসরা পৌঁছান । তার বর্ণনা অনুযায়ী সেখানে আমির সৈনিক এবং বেদুইনরা তার সাথে যোগ দেয় এবং তাদের অন্তরের অনুভূতি তাদের চেহারায় ফুটে উঠে । ২৩ নভেম্বর তিনি দামেস্কে ফিরে আসেন । দামেস্কের দুর্গে প্রবেশের আগ পর্যন্ত তিনি তার পিতার পুরনো বাসগৃহে অবস্থান নিলেন । চারদিন পর দুর্গ উন্মুক্ত করলেন ।

তিনি এরপর দুর্গে অবস্থান নেন এবং নাগরিক আতিথেয়তা গ্রহণ করলেন । ভাই তুগতিগিনকে দামেস্কের গভর্নর হিসেবে রেখে সালাহউদ্দিন পূর্বে নুরউদ্দিনের অধিকারে থাকা আংশিক স্বাধীন শহরসমূহের দিকে রওনা দিলেন । তার সেনাবাহিনী হামা সহজে দখল করে নিল । তবে তারা দুর্গের ক্ষমতার জন্য হোমস আক্রমণ এড়িয়ে যান । সালাহউদ্দিন উত্তরে আলেপ্পোর দিকে যাত্রা করেন । গুমুশতিগিন ক্ষমতাত্যাগে অস্বীকৃতি জানালে ৩০ ডিসেম্বর তা অবরোধ করা হয় । সালাহউদ্দিনের কাছে বন্দী হতে পারে ভেবে সালিহ প্রাসাদের বাইরে এসে অধিবাসীদের কাছে আবেদন জানায় যাতে তারা আত্মসমর্পণ না করেন । জনতা তার কথার জাদুতে চলে আসে । সেসময় সিরিয়ায় হাশাশিনদের প্রধান ছিলেন রশিদউদ্দিন সিনান ফাতেমীয় খিলাফত উচ্ছেদ করার কারণে সালাহউদ্দিনের প্রতি বিরূপ ছিলেন । গুমুশতিগিন তাকে অনুরোধ করেন যাতে সালাহউদ্দিনকে তার ক্যাম্পে হত্যা করা হয় । ১১৭৫ সালের ১১ মে তেরজন হাশাশিনের একটি দল সালাহউদ্দিনের ক্যাম্পে সহজে প্রবেশ করে কিন্তু আবু কুবাইসের নসিহউদ্দিন খুমারতেকিন কর্তৃক চিহ্নিত হয়ে পড়ে। সালাহউদ্দিনের একজন সেনাপতির হাতে একজনের মৃত্যু হয় এবং অন্যান্যদের পালানোর সময় হত্যা করা হয় । সালাহউদ্দিনের অগ্রগতি প্রতিহত করার জন্য তৃতীয় রেমন্ড নহরুল কবিরের কাছে তার সেনাদের সমবেত করেন । মুসলিম অঞ্চল আক্রমণের জন্য এটি তাদের কাছে উপযুক্ত ছিল । সালাহউদ্দিনের এরপর হোমসের দিকে যাত্রা করেন । কিন্তু শহরের দিকে সাইফউদ্দিনের কাছ থেকে একটি সাহায্যকারী বাহিনী পাঠানো হয়েছে শুনে ফিরে আসেন ।

ইতিমধ্যে সিরিয়া এবং জাজিরায় সালাহউদ্দিনের প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা যুদ্ধ শুরু করেন । তারা দাবি করতে থাকে সালাহউদ্দিন তার নিজের অবস্থা নুরউদ্দিনের অধীনস্ত ভুলে গেছেন এবং সাবেক প্রভুর সন্তানকে অবরোধ করে তার প্রতি কোনো সম্মান দেখাচ্ছেন না । সালাহউদ্দিন অবরোধ তুলে নিয়ে প্রপাগান্ডা শেষ করার লক্ষ্য স্থির করেন । তিনি দাবি করেন যে তিনি ক্রুসেডারদের কাছ থেকে ইসলামকে রক্ষা করছেন । তার সেনারা হামা ফিরে এসে সেখানকার ক্রুসেডার সেনাদের মুখোমুখি হয়। ক্রুসেডাররা এখান থেকে ফিরে যায় । সালাহউদ্দিন ঘোষণা করেন যে এটি মানুষের অন্তরের দরজা উন্মুক্তকারী বিজয় । তারপর শীঘ্রই ১১৭৫ সালে মার্চে তিনি হোমস প্রবেশ করেন এবং এর দুর্গ অধিকার আদায় করেন ।


সালাহউদ্দিনের সাফল্যের দিক সাইফউদ্দিনকে সতর্ক করে তোলে । জেনগিদের প্রধান হিসেবে তিনি সিরিয়া এবং মেসোপটেমিয়াকে তার পরিবারের বলে বিবেচনা করতেন এবং সালাহউদ্দিন কর্তৃক তার বংশের অধিকৃত স্থান দখল করায় রাগান্বিত হয়ে পড়েন । সাইফউদ্দিন একটি বড় আকারের সেনাদল গঠন করেন এবং সে দলটি আলেপ্পোর দিকে পাঠিয়ে দেন । আলেপ্পোর প্রতিরোধকারীরা এ আশংকায় ছিল । মসুল এবং আলেপ্পোর যৌথ বাহিনী হামায় সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে অগ্রসর হয় । প্রথমে সালাহউদ্দিন দামেস্ক প্রদেশের উত্তর দিকের সমস্ত বিজিত এলাকা ত্যাগ করার মাধ্যমে জেনগিদের সন্ধি করতে চেষ্টা করে । কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করে এবং তাকে মিশর ফিরে যেতে বলেন । সংঘর্ষ অনিবার্য দেখতে পেয়ে সালাহউদ্দিন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেন । যুদ্ধে সালাহউদ্দিনের বাহিনী বিজয়ী হন । সে বিজয়ের ফলে সালিহর উপদেষ্টারা সালাহউদ্দিনকে দামেস্ক হোমস ও হামা এবং আলেপ্পোর বাইরের কিছু শহরে সালাহউদ্দিনের নিয়ন্ত্রণ মেনে নিতে বাধ্য হয় ।



তথ্যঃ
http://www.sunypress.edu/p-284-from-saladin-to-the-mongols.aspx

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:২৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ভালো ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গেল ।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৯

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: জানার জন্য ধন্যবাদ ।

২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:০৩

গেম চেঞ্জার বলেছেন: গল্প নাকি ইতিহাস?

১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৮

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: মনে হচ্ছে কবিতা ।

৩| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:১৫

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: শেষ না করে ঠামবেন্না প্লিজ।
চলুক.........
প্রিয়তে।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আশা আছে তবে ব্লগের অ্যাডমিনেরা ভাল ভাবে লেখতে দিলে ।

৪| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:২২

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: এই ধরনের ইতিহাস ভিত্তিক পোস্ট লিখলে তার রেফারেন্স পোস্টে সংযুক্ত করা বাঞ্চনীয়।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ তথ্যঃ দিয়েছি । আপনার মঙ্গল হোক সেই শুভকামনাই থাকলো ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.