নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঐতিহাসিক সেই চুড়িহাট্টা মসজিদ

২৩ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৫


ঐতিহাসিক সেই চুড়িহাট্টা মসজিদ
প্রাচীন চুড়িহাট্টা মসজিদ বা চুড়িহাট্টা মসজিদ নামেই বেশি পরিচিত । চুড়িহাট্রা মসজিদ বাংলাদেশের অন্যতম একটি ঐতিহাসিক পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন যা ঢাকা মহানগরের পুরোন ঢাকার উমেশ চন্দ্র দত্ত লেন এবং হায়দার বকশ লেনের মাথায় অবস্থিত। স্থানীয়ভাবে মসজিদটি চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদ নামেই পরিচিত । মসজিদটির প্রকৃত অবস্থান ছিল চকবাজারের সামান্য পশ্চিম দিকে ২৬-২৭ শেখ হায়দার বকশ লেন। ইতিহাস বিধদের তথ্যমতে মসজিদটি ৩৬৭বছরের পুরনো একটি মসজিদ । তবে প্রাচীন মসজিদ স্থাপত্যটি বর্তমানে বিলুপ্ত প্রায় সে জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে আধুনিক স্থাপত্য।
চুড়িহাট্টা মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৩০ ফুট ও প্রস্থ ১৩ ফুট । মসজিদটির কোন গম্বুজ ছিল না এবং সমতল ছাদ ছিল। এই হিসাবে মসজিদটি সাধারণ বাঙালি স্থাপত্যের খড়ের ছাদওয়ালা দো চালা ঘরের মতনই ছিল। ডঃ দানীর মতে মসজিদটি আয়তাকৃতির এবং এর চার কোণে চারটা টাওয়ারসদৃশ মিনার ছিল। পূর্বদিকে ৩টি দরজাপথ আছে যার প্রতিটি দুটো পরিপূর্ণ আর্চ বা কীলকে গিয়ে খুলতো। সামনের দিকটা বিভিন্ন আয়তাকৃতি আর কার্ণিশ দ্বারা অলঙ্কৃত ছিল। সামনের দেয়াল প্যানেল দ্বারা অলঙ্কৃত ছিল। তাছাড়াও উত্তর এবং দক্ষিণ দেয়ালে আলো বাতাস চলাচলের সুবিধার জন্য ১টি করে দরজা ছিল । অভ্যন্তরভাগ ঢাকা ছিল সংস্পর্শী দুটো ভোল্টেড ছাদ দ্বারা সংযোগস্থলটা আর মধ্যখানটা ছিল বাঁকানো। তবে এজাতীয় ভোল্টেড ছাদকে উত্তর ভারতীয় পিরামিডাকৃতির স্থাপত্বের সাথে তুলনা করে বাংলাদেশের স্থানীয় স্থাপত্য থেকে পৃথক বলা হয়ছে ।মসজিদটির একটি শিলালিপি পাওয়া যায় আরবি এবং ফার্সি ভাষায় লেখা সেই শিলালিপিতে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনের সূরা তওবার ১৭ এবং ১৮ নং আয়াতের সারমর্ম উপস্থাপিত আছে। সেই

লেখার বাংলা অনুবাদ হলোঃ

আল্লাহুতাআলা বলেন একমাত্র তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ করবেন যারা আল্লাহ ও পরকালের উপর বিশ্বাস রাখেন। নামাজ প্রতিষ্ঠা করেন, যাকাত দেন এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করেন না।
শিলালিপিতে মসজিদটির নির্মাতা হিসেবে মোহাম্মদী বেগ কিংবা মোহাম্মদ বেগ নামের এক ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে। তখন ছিল শাহ সুজার রাজত্বকাল। শিলালিপিটি বর্তমানে মসজিদের ইমামের কাছে রক্ষিত আছে।
বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্য উৎস থেকে জানা যায় মসজিদটি মুঘল আমলের স্থাপত্য নিদর্শন। সুবাদার শাহ সুজার সময়ে ১৬৪৯ সালে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। জেমস ওয়াইযের ১৮৮৪ সালের লেখানুযায়ী মুঘল আমল থেকেই মুসলমান কারিগরেরা কাচের চুড়ি তৈরি করে পুরোন ঢাকার চকবাজারে বেচাকেনা করতেন, তাই এই পুরো এলাকাটি স্থানীয়ভাবে চুড়িহাট্টা নামে পরিচিত। আরো জানা যায় চুড়ির এইসব কারিগরেরা নামায পড়ার জন্যই গড়ে তোলেন মসজিদটি।তবে মসজিদটির নির্মাণ বিষয়ে কিছু আলাদা আলাদা বক্তব্যও পাওয়া যায়। ঐতিহাসিক ডঃ মুনতাসির মামুনের মতে সুবাদার শাহ সুজার নির্দেশে মোহাম্মদী বেগ নামের এক মুঘল কর্মকর্তা মসজিদটি নির্মাণ করেন। তাওয়ারিখে ঢাকা গ্রন্থের প্রণেতা মুনশী রহমান আলী তায়েশ উল্লেখ করেন আগে সেই জায়গায় একটি মন্দির ছিল আর সম্রাট শাহজাহানের আমলে কোনো এক হিন্দু কর্মকর্তা মন্দিরটি নির্মাণ করেন। পরে সুবাদার শাহ সুজা মন্দিরের দেবমূর্তি ফেলে দিয়ে মন্দিরটিকে মসজিদে রূপান্তর করেন। ঢাকার ইতিহাস গ্রন্থের প্রণেতা যতীন্দ্রমোহন রায়ের বিবরণ থেকে জানা যায় ঢাকার নবাব তার কয়েকজন কর্মচারীকে একটি ধর্মমন্দির নির্মাণের জন্য অর্থ দান করেছিলেন। সেই অর্থ ব্যয় করে একটি বাসুদেব মন্দির নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নবাব তার কর্মচারীদের সেই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে বাসুদেব মন্দিরকে মসজিদে পরিণত করেন। এই কথার সমর্থন পাওয়া যায় যখন ইংরেজ আমলে ঢাকার তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট জে টি র্যাং কিন্স মসজিদের মাটি খনন করে একটি বাসুদেব মূর্তি উদ্ধার করেছিলেন।

বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ গ্রন্থে আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া উল্লেখ করেছেন ১৯০৬ সালে মসজিদ প্রাঙ্গনে মাটির নিচে পাথরের একটি বাসুদেব মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল।ব্র্যাডলে বার্টের মতে মাটি খুঁড়ে বাসুদেবের চিত্র অঙ্কিত পাথরখণ্ড পাওয়া গিয়েছিল।কিংবদন্তির ঢাকা গ্রন্থে গ্রন্থকার নাজির হোসেন উল্লেখ করেছেন শাহ সুজার সময়ে জনৈক হিন্দু কর্মকর্তাকে একটি মসজিদ নির্মাণ করতে বললে তিনি মন্দির নির্মাণ করেন। পরবর্তিতে শাহ সুজা তা জানতে পেরে মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করেন।Glimpses of Old Dhaka গ্রন্থে এস. এম. তাইফুর লিখেছেন মসজিদের শিলালিপিতে মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণের কথা উল্লেখ ছিল যদিও তবে বর্তমান শিলালিপিতে তেমন কিছুর উল্লেখ নেই। মন্দিরটি পুরোপুরি ভেঙে সেটিকে মসজিদ বানানো হয়েছিল নাকি মন্দির থেকে বিগ্রহ বিতাড়িত করে স্থাপত্য নকশায় সামান্য পরিবর্তন করে সেটিকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়েছিল সে বিষয়ে ইতিহাসবিধদের তথ্যে মতপার্থক্য আছে । জনাব আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার মতে মন্দির ভেঙেই মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। তবে এভাবেই ঐতিহাসিকভেদে চুড়িহাট্টা মসজিদের ইতিহাসও ছিল বিভিন্ন। তাই মসজিদটির যথেষ্ট ঐতিহাসিক মর্যাদাও ছিল।চুড়িহাট্টার ঐতিহাসিক মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। মসজিদটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব না জেনেই মসজিদ কমিটির লোকজন অপেক্ষাকৃত বৃহদাকৃতির বহুতল মসজিদ নির্মাণের লক্ষ্যে পুরোন মসজিদটি ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেন। জানা যায় ২০০৮ সালের প্রথম দিকেই মসজিদটি ভাঙার কাজ শুরু হয় এবং জুলাই মাস নাগাদ পুরো মসজিদটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। ভেঙে ফেলার পর সেখানে যে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয় সেই শিলালিপিটি ওই মসজিদের দোতলার মিহরাবে লাগানো হয়। অবশ্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এব্যাপারে নিশ্চুপ থাকলেও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর শিলালিপিটি উদ্ধার করবে বলে জানা যায়। তবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এই ভেঙে ফেলা ভবনটিকে আদি ভবন বলে স্বীকার করে না তাদের মতে আদি ভবনটি পাকিস্তান শাসনামলের কোনো এক সময় ভেঙে ফেলা হয়েছিল।পুরোন ধ্বংস করে দেয়া মসজিদটির জায়গায় নির্মিত হয়েছে নতুন মসজিদ ভবন। নতুন ভবনের দোতলার মিহরাবে আদি মসজিদের ফলকটি স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়াও নিচতলার মিহরাব এবং মেঝে গ্রানাইট পাথর দিয়ে ছেয়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া মসজিদে একটি উচু মিনারও স্থাপন করা হয়েছে ।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট ।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:১৬

বিজন রয় বলেছেন: ভাল পোস্ট।
++++

২৩ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:০৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ প্রথম মন্তব্য কারী ভাইকে ।

২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:২৫

এডওয়ার্ড মায়া বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

২৩ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আপনাকেওমন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।

৩| ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৩০

সুমন কর বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

২৩ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সুমন কর ভাই ।

৪| ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮

পুলহ বলেছেন: খুবই বিস্তারিত, তথ্যপূর্ণ পোস্ট! ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ এবং শুভকামনা আপনার জন্য :)

২৩ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

৫| ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৪৩

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন:
মসজিদ মন্দিরের ব্যাপারটা আগ্রহ জাগালো।

২৩ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: মন্তব্যের জন্য প্রিয় কবি অনেক ধন্যবাদ ।

৬| ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৪৫

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম

২৫ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:০৩

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ । মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগল ।

৭| ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:০৯

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার পোস্ট অনেক কিছু জানা হলো ।

২৫ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:০৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই ।আপনার মন্তব্যে অনুপেরিত হলাম ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.